BN/Prabhupada 0102 - মনের গতি



Lecture on SB 5.5.1-8 -- Stockholm, September 8, 1973

তোমরা এখন এরোপ্লেন পেয়েছ, ভাল। কিন্তু তোমরা এমনকি কোন জড় গ্রহেও পৌঁছাতে পারবে না। যদি তুমি চিন্ময় জগতে যেতে চাও, তবে মনের গতিতে চলতে পারে এমন এরোপ্লেন বানাতে পার। অথবা বায়ুর গতিতে। যারা পদার্থবিজ্ঞানী, তারা জানেন যে বাতাসের গতি কত, আলোর গতি কত। তো এই সমস্ত গতির উপরে রয়েছে মনের গতি। যারা পদার্থবিজ্ঞানী, তারা জানে বাতাস এবং আলোর গতি কতো। মন তার থেকেও গতিশালী। তোমাদের অভিজ্ঞতা আছে। এখন তুমি এখানে বসে আছো। অবিলম্বে, এক সেকেন্ডের মধ্যে, তুমি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে, ভারতে যেতে পার। তুমি তোমার বাড়ি যেতে পার, তুমি কিছু দেখতে পার-তোমার মন দিয়ে, অবশ্যই মনের গতিতে। সুতরাং ব্রহ্মসংহিতাতে বলা হয়েছে যে, যদি তুমি মনের গতিবেগের এরোপ্লেন তৈরি কর, যেটার বায়ুর গতিবেগও আছে- পন্থাস্থু কোটি শত বৎসর সংপ্রগ্রমোঃ- এবং সেই গতিতে তুমি যদি কোটি কোটি বছরও ভ্রমন কর, তবুও তুমি গোলক বৃন্দাবন কোথায়, খুঁজে পাবে না। তবুও তুমি খুঁজে পাবে না। পন্থাস্থু কোটি শত বৎসর সংপ্রগ্রমো-বায়োরথাপি মনসো মুনিপুঙ্গবানাম (ব্র.সং ৫.৩৪) এটি এমন নয় যে পূর্বতন আচার্য ও অন্যরা, তারা জানেন না, এরোপ্লেন কি, গতি কি, কিভাবে চলে। নির্বোধের মতো মনে কর না যে তারা যা তৈরি করেছে, সেগুলো কিছুই নয়, তৃতীয়, চতুর্থ এমনকি দশম শ্রেণীরও নয়। সেখানে খুব সুন্দর সুন্দর বিমান আছে। এখন এখানে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে যে আপনি একটি বিমান তৈরি করতে পারেন যা মনের গতিতে চলতে পারে। এখন পরামর্শ হচ্ছে - এটি করুন। আপনি একটি বিমান তৈরি করতে পারেন যা বাতাসের গতিতে চলতে পারে। তারা মনে করে যে আলোর গতিতে চলার মতো, যদি আমরা একটি বিমান তৈরি করতে পারি, তবুও, সর্বোচ্চ গ্রহে পৌঁছানোর জন্য চল্লিশ হাজার বছর লাগবে। তারা ভাবছে, যদি এটা সম্ভব হতো।

কিন্তু এখন পর্যন্ত যতদূর আমরা দেখতে পারি, যারা নাট-বোল্টু নিয়েই ব্যস্ত, কিভাবে এই নিস্তেজ মস্তিষ্ক নিয়ে তারা এই ধরনের জিনিস তৈরি করতে পারেন? সেটা সম্ভব নয়। এটার জন্য অন্য মস্তিষ্ক প্রয়োজন। যোগীগণ যেতে পারেন, যোগীগণ যেতে পারেন। যেমন দুর্বাশা মুনি। তিনি বৈকুন্ঠ লোকে গিয়েছিলেন, এবং তিনি বৈকুন্ঠ লোকে ভগবান বিষ্ণুকে সরাসরি দেখেছিলেন। ক্ষমা প্রার্থনা করার জন্য, কারণ তাঁর চক্র তাকে হত্যা করার জন্য তার পিছনে ধাবিত হচ্ছিল। তিনি একজন বৈষ্ণবকে তিরস্কার করেছিলেন, এটা আরেকটি গল্প। তাই এইভাবে আসলে মানুষের জীবনের উদ্দেশ্যই হচ্ছে, ভগবান এবং তাঁর শক্তিকে জানা এবং তাঁর সাথে আমাদের পুরনো সম্পর্ককে পুনরুজ্জীবিত করা। এটিই প্রধান কাজ। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত তারা কারখানায় নিযুক্ত হচ্ছে, অন্য কাজে, শুকর এবং কুকুরের মত কাজ করা, আর এভাবে তাদের পুরো শক্তি নষ্ট হচ্ছে। শুধু শক্তিই নয়, তাদের চরিত্রও নষ্ট হচ্ছে, তারা কঠোর পরিশ্রম করছে, তাই এত কঠোর পরিশ্রম করার পর তারা অবশ্যই নেশা পান করে। নেশা করার পর তারা মাংস খায়। এগুলোর সমন্বয়ের পরে, তাদের যৌনতৃপ্তির প্রয়োজন হয়। আর এই ভাবে তাদের অন্ধকারে রাখা হয়। এখানে, ঋষভদেবের শ্লোকে, তিনি সতর্কবাণী বলেছেন। তিনি তাঁর ছেলেদের সাথে কথা বলছেন, তাদেরকে সতর্ক করছেন, কিন্তু আমরা এখান থেকে শিক্ষা নিতে পারি। তিনি বলেছেনঃ নায়ং দেহো দেহভাজাং নৃলোকে কষ্টান্‌ কামানর্হতে বিড়ভুজাং যে (শ্রী.ভা.৫.৫.১) কামান মানে জীবনের প্রয়োজনীয়তা। তুমি খুব সহজেই তোমার জীবনের প্রয়োজনগুলো পেতে পার। ক্ষেত্র খনন দ্বারা তুমি শস্য পেতে পার এবং যদি গরু থাকে, তাহলে দুধ পেতে পার। ব্যাস্‌। এটিই যথেষ্ট। কিন্তু নেতারা পরিকল্পনা তৈরি করছে, যদি তারা তাদের চাষাবাদ নিয়েই সন্তুষ্ট থাকে, একটু শস্য আর দুধ, তাহলে কারখানায় কাজ করবে কে? অতএব তারা কর আদায় করছে যাতে তুমি সহজভাবে জীবনযাপন করে বাঁচতে না পার। এই হচ্ছে অবস্থা। এমনকি যদি তুমি ইচ্ছাও কর, আধুনিক নেতারা তোমাকে অনুমতি দেবে না। তারা তোমাকে বাধ্য করবে কুকুর, শুকর আর গাধার মত কাজ করতে। এই হচ্ছে পরিস্থিতি।