BN/Prabhupada 0125 - সমাজ খুব দূষিত



Lecture on SB 1.5.23 -- Vrndavana, August 4, 1974

যে সমস্ত লোক শূদ্রদের চেয়ে নীচ, তাদের পঞ্চম শ্রেণী বলা হয়। প্রথম শ্রেণী ব্রাহ্মণ, দ্বিতীয় শ্রেণী ক্ষত্রিয়, তৃতীয় শ্রেণী বৈশ্য, চতুর্থ শ্রেণী শুদ্র এবং অন্যরা পঞ্চম শ্রেণী। তাদের বলা হয় চন্ডাল। চন্ডাল... ঝাড়ুদার, মুচি, এবং নিচু শ্রেণীর। এখনও ভারতে, এই পঞ্চম শ্রেণীর লোক আছে, ওরা মাংস, শুকর এবং কখনও বা গরুর মাংস খায়। পঞ্চম শ্রেণীর লোক। এখন এটি প্রথা হয়ে গেছে। আর সে একজন প্রথম শ্রেণীর মানুষ। অবস্থাটা দেখ। যেটা ছিল পঞ্চম শ্রেণীর লোকদের কাজ, এখন সেটাই হয়ে গেছে তথাকথিত রাজনীতিবিদদের কাজ তো দেখ। যদি তুমি পঞ্চম শ্রেণীর মানুষদের দ্বারা শাসিত হও, তাহলে কিভাবে সুখী হতে পারবে? সেটা সম্ভব না। কোন সামাজিক শান্তি থাকতে পারে না? সেটা সম্ভব নয়। কিন্তু পঞ্চম শ্রেণীর মানুষও, তিনি কৃষ্ণ ভাবনামৃত আন্দোলনের দ্বারা বিশুদ্ধ হতে পারেন। অতএব এই আন্দোলনের এক বিশাল প্রয়োজন আছে। কারণ বর্তমান মুহূর্তে কোনও প্রথম শ্রেণীর মানুষ নেই, প্রথম শ্রেণীর মানুষ নেই, দ্বিতীয় শ্রেণীর মানুষ নেই। হতে পারে তারা তৃতীয় শ্রেণী, চতুর্থ শ্রেণী, পঞ্চম শ্রেণী, ষষ্ঠ শ্রেণী, এই রকম। কিন্তু তারা শুদ্ধ হতে পারে। এটা হচ্ছে ... এই একমাত্র প্রক্রিয়া এই কৃষ্ণভাবনামৃত আন্দোলন। যে কেউ শুদ্ধ হতে পারে। মাং হি পার্থ ব্যপাশ্রিত্য যেহপি স্যুঃ পাপযোনয়ঃ (ভ.গী.৯.৩২) তাদের বলে পাপ যোনি, নিচু জন্ম, পাপি পরিবার, পাপযোনি। শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন, যেহপি সু পাপযোনয়ঃ। কোন ধরনের পাপযোনি ভাববেন না। মাং হি পার্থ ব্যাপা... "যদি সে আমার আশ্রয় নেয় তাহলে ..." সেই আশ্রয় গ্রহণ করা যেতে পারে কারণ কৃষ্ণের প্রতিনিধিরা প্রচার করছেন।

সুতরাং কোন কিছুর অভাব নেই। সহজভাবে তাকে আশ্রয় নিতে হবে। যেমন শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর আন্দোলন হচ্ছে এই ধরণের প্রচারক বানানো। সর্বত্র যাও " আমার আজ্ঞায় গুরু হৈয়া তার এই দেশ (চৈ.চ.মধ্য ৭.১২৮) "যাও" তিনি পাঠাতেন নিত্যানন্দ প্রভুকে, হরিদাস ঠাকুরকে প্রচার করতে। অনুগ্রহ করে হরে কৃষ্ণ জপ করুন, অনুগ্রহ করে হরে কৃষ্ণ জপ করুন। দয়া করে কৃষ্ণের কাছে আত্মসমর্পন করুন। একসময় রাস্তায় অনেক লোকের ভিড় ছিল। নিত্যানন্দ প্রভু এবং হরিদাস ঠাকুর দেখলেন, তারা জিজ্ঞাসা করলেন "কিসের ভীড়?" "না, দুই ভাই, জগাই এবং মাধাই, এরা সবাইকে খুব উৎপাত করছে। ওরা মাতাল, নারীলোভী এবং মাংস খায়, এবং তারা সর্বদা উৎপাত করে। " তাই নিত্যানন্দ প্রভু অবিলম্বে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, "কেন এইসব মানুষদের প্রথম উদ্ধার করব না? তখন আমার প্রভুর নাম মহিমান্বিত হবে। শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর নাম মহিমান্বিত হবে।

এটি শিষ্যদের কাজ, কিভাবে আধ্যাত্মিক গুরু, পরম্পরার গুণগান করবেন। আমি আমার গুরুদেবকে গুণগান করি, তোমরা তোমাদের গুরুদেবের গুণগান কর, যদি আমরা শুধু তাই করি, গুণগান, তাহলে কৃষ্ণ মহিমান্বিত হন। এটা ছিল নিত্যনন্দ প্রভুর সিদ্ধান্ত যে, কেন এদেরকে প্রথমে উদ্ধার করব না?" কারণ চৈতন্য মহাপ্রভু অবতীর্ণ হয়েছিলেন পতিত আত্মাদের উদ্ধার করার জন্য। এবং ... এবং এই যুগে পতিত আত্মার কোন অভাব নেই।

পতিত পাবন হেতু তব অবতার,
মো সম পতিত প্রভু না পাইবে আর

নরোত্তম দাস ঠাকুর নিজেকে চৈতন্য মহাপ্রভুর চরণ কমলে রেখেছেন। যে "আমার প্রিয় প্রভু, আপনার অবতার এই সব পতিত আত্মাদের উদ্ধার করার জন্য। কিন্তু আমি পতিত আত্মাদের মধ্যে সর্বনিম্ন। তাই আমার দাবী যে প্রথমে দয়া করে আমাকে রক্ষা করুন। " মো সম পতিত প্রভু না পাইবে আর। "আপনি আছেন, আপনার দৃঢ়সংকল্প পতিতদের উদ্ধার করা। তাই আমি সবচেয়ে পতিত, দয়া করে আমাকে উদ্ধার করুন।" তাই কলি-যুগ, মানুষ কষ্ট পাচ্ছে। তারা সব পতিত, সব মাংস খায়, সব মাতাল, সব পঞ্চম শ্রেণীর, ছষ্ঠ-শ্রেণীর মানুষ। তারা গর্বস্ফীত, কিন্তু আসলে তারা পঞ্চম, ছষ্ঠ এবং দশম শ্রেণীর পুরুষ, এমনকি ভদ্রলোকও নয়। অতএব আমার গুরু মহারাজ বলতেন যে "কোনও ভদ্রলোক এখানে থাকতে পারেনা। সমাজ এত দূষিত।" এবং ... কিন্তু, চৈতন্য মহাপ্রভুর সেবা করার সুযোগ রয়েছে। যেহেতু সমাজ এত নিকৃষ্ট সেহেতু সেখানে শ্রী চৈতন্য মহাপ্রভুকে সেবা করার জন্য ভাল সুযোগ রয়েছে। কারণ শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর অবতার এই পতিত আত্মাদের পুনরুত্থিত করার জন্য। আপনি শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর সেবা করার সুযোগ পেয়েছেন ...,তাই শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুকে খুশি করুন, কারণ তিনি চান পতিত আত্মাগুলিকে মুক্ত করতে। শ্রীকৃষ্ণ চেয়েছিলেন। যদা যদা হি গ্লানির্ভবতি ভারত, ধর্মস্য গ্লানির্বভবতি ভারত (ভগবদ গীতা 4.7)। কৃষ্ণ আসেন... এইভাবে.. এইরকম ভগবানের কাজ চলছে। এই সমস্ত দুর্বৃত্তদের পুনরুদ্ধারের জন্য তিনি খুব উদ্বিগ্ন, যারা এই জড় জগতে ঘুরছে। শ্রীকৃষ্ণ সবসময়ই উদ্বিগ্ন। তিনি নিজেই আসেন। তিনি ভক্ত হিসাবে আসেন। তিনি আসেন, তার শুদ্ধ সেবক পাঠান, বিশ্বস্ত পুত্র।

এটি হচ্ছে ভগবানের উদ্বেগ, এই সব পতিত আত্মাদের উদ্ধার করার জন্য। অতএব এই সুযোগ। যোগিনঃ, যোগীরা সারা বিশ্বে ভ্রমণ করছে। কেবল বর্ষার সময়ই তারা বিশ্রাম করছিলেন। এমন না যে, অন্য ঋতুতে শুধু খাওয়া এবং ঘুম। না। কারণ বর্ষাকালে, ভ্রমণ করার জন্য, অসুবিধা আছে, তাই শুধুমাত্র চার মাস। সুতরাং চার মাসের মধ্যে, তারা যেখানেই থাকুক না কেন, কারও দ্বারা সেবা গ্রহণ করেন। ঠিক যেমন একজন সেই সেবক বালকটির মতো, তাদের উদ্ধার হয়। প্রচারের কোন প্রশ্নই ছিল না, শুধুমাত্র সেবা করার সুযোগ দিতেন, তার দ্বারাই পতিত আত্মাদের উদ্ধার হয়ে যেত। কিন্তু তোমাকে যোগ্য হতে হবে, কোন কিছুর জন্য সেবা নেয়া যাবে না। তা নাহলে তোমাকে নরকে যেতে হবে। যদি তুমি সত্যিই পারমার্থিক স্থিতিতে রয়েছ, তাহলে অন্যদেরকে তোমার সেবা করার সামান্য সুযোগ দিলেই সে মুক্ত হতে পারবে। দর্শন বোঝার কোন দরকারই পড়বে না। একজন ভক্তকে এতোটাই নিখুঁত হতে হবে। তাই পন্থা হচ্ছে, যখনই কেউ একজন ভক্তকে দেখবেন, সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে ভূমিতে পড়ে প্রণাম করে তাঁর চরণ স্পর্শ করতে হবে। এই হচ্ছে পন্থা। কারণ চরণ স্পর্শ করার কারণে ... মহৎ-পাদরজোহভিষেকম্‌ (শ্রীমদ্ভাগবত ৫.১২.১২)। যদি কেউ প্রকৃতপক্ষেই পারমার্থিক জীবনে উন্নত হয়, এবং মানুষ তাঁর চরণ স্পর্শ করার সৌভাগ্য নেয় তাহলে তিনিও ভক্ত হয়ে যান। এই হচ্ছে পন্থা।