BN/Prabhupada 0130 - কৃষ্ণ অনেক অবতাররূপে অবতীর্ণ হন



Lecture on BG 4.5 -- Bombay, March 25, 1974

ভগবান শ্রীকৃষ্ণ অনেক অবতার রূপে অবতীর্ণ হন শ্রীকৃষ্ণের অবস্থানটি বোঝার চেষ্টা করুন। তিনি সকলের হৃদয়ে পরমাত্মা রূপে বিরাজমান। ঈশ্বর সর্ব ভূতানাম্‌ হৃদ্দেশে অজুর্ন তিষ্ঠতি (ভ.গী.১৮.৬১) এবং তিনি প্রত্যেককে নির্দেশ দেন। এবং সেখানে অসংখ্য জীব আছে। তিনি অসংখ্য জীবসত্ত্বাকে বিভিন্ন দিক থেকে নির্দেশনা দেন। তিনি কতটাই ব্যস্ত, কল্পনা করার চেষ্টা করুন। তবুও তাঁর অবস্থান একই। গোলক এব নিবসত্য অখিলাত্ম ভূত (ব্রহ্মসংহিতা ৫.৩৭) গোলক এব নিবসতি। কৃষ্ণ তাঁর নিজের প্রকৃত ধাম, গোলক বৃন্দাবনে আছেন, এবং তিনি শ্রীমতী রাধারাণীর সঙ্গ উপভোগ করছেন। সেটি ... মায়াবাদী দর্শন নয়। যেহেতু তিনি সমস্ত জীবের হৃদয়ে নিজেকে বিস্তার করেছেন তার মানে এই নয় যে, তিনি নিজের ধামে শেষ হয়ে গেছেন। না। তিনি সেখানেও আছেন। তিনি কৃষ্ণ। পূর্ণস্য পূর্ণম্‌ পূর্ণমেবাবশিষ্যতে (ঈশোপনিষদ)। এটাই বৈদিক নির্দেশ।

এমনকি ... এখানে আমাদের জড় অভিজ্ঞতা আছে। যদি আপনি এক টাকা পেয়ে থাকেন এবং এর থেকে আপনি এক আনা গ্রহণ করেন, তবে ১৫ আনা থাকবে। আর যদি আপনি দুই আনা গ্রহণ করেন, তাহলে চৌদ্দ আনা থাকবে। যদি আপনি ১৬ আনা গ্রহণ করেন, তাহলে শূন্য হয়ে যায়। কিন্তু কৃষ্ণ এরকম নয়। তিনি নিজেকে সীমাহীন ভাবে প্রসারিত করতে পারেন। তবুও মূল কৃষ্ণ সেখানে আছেন। এই হচ্ছেন কৃষ্ণ। আমরা অভিজ্ঞতা পেয়েছি: এক থেকে এক বিয়োগ করলে শূন্য হয়। কিন্তু চিন্ময় জগতে.. এটাকে পরম বলা হয়। এক বিয়োগ করলে, মিলিয়ন বার এক বিয়োগ করলে, মূল এক একই থাকে। এই হচ্ছেন শ্রীকৃষ্ণ। অদ্বৈত অচ্যুতম্‌ অনাদি অনন্ত রূপম (ব্র.সং ৫.৩৩)

এই কৃষ্ণকে আপনি বুঝতে পারবেন না, বেদেষু, কেবল বৈদিক সাহিত্য অধ্যয়নের দ্বারা। যদিও বৈদিক সাহিত্য মানে, বেদান্ত মানে, কৃষ্ণকে জানা। বেদৈশ্চ সর্বৈরহমেব বেদ্য (গীতা ১৫.১৫) কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত, যেহেতু আমরা কৃষ্ণ বা তার ভক্তের আশ্রয় নিই না, তাই আমরা বুঝতে পারি না যে বেদের উদ্দেশ্য কি। তা সপ্তম অধ্যায় ব্যাখ্যা করা হবে। ময্যাসক্তমনাঃ পার্থ...ময্যাসক্তমনাঃ পার্থ যোগং যুঞ্জন্মদাশ্রয়। মদাশ্রয়। অসংশয়ং সমগ্রং মাং যথা জ্ঞাস্যসি তচ্ছৃণু (গীতা ৭.১) যদি আপনি শ্রীকৃষ্ণকে বুঝতে চান, অসংশয়, কোন সংশয় ছাড়া, এবং সমগ্রম্‌, এবং পূর্ণ, তাহলে আপনাকে এই যোগ পদ্ধতি অনুশীলন করতে হবে।

কি সেই যোগ? মন্মনা ভব মদ্ভ‌ক্ত মদ্‌যাজী মাং নমস্কুরু (গীতা ১৮.৬৫) মদ্‌ আশ্রয় যোগম্‌ যুঞ্জ... যোগম যুঞ্জম, মদাশ্রয়। মদ্‌ আশ্রয়, এই শব্দটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মৎ মানে "আপনি সরাসরি নিতে পারেন ..." - এটা খুব সহজ জিনিস নয়। - "... আমার আশ্রয়, অথবা যে আমার আশ্রয় নিয়েছে, আপনি তাকে আশ্রয় গ্রহণ করুন।" ঠিক যেমন বৈদ্যুতিক শক্তিকেন্দ্র আছে , এবং একটি প্লাগ আছে। ঐ প্লাগটি বৈদ্যুতিক শক্তিকেন্দ্র সাথে সংযুক্ত, এবং যদি আপনি আপনার তারটি প্লাগে চেপে দেন, তাহলে তা থেকে আপনি বিদ্যুৎ পেতে পারেন। একইভাবে যেমনটি এই অধ্যায়ে শুরুতে বর্ণিত হয়েছে, এবম্‌ পরম্পরা প্রাপ্তম্‌ ইমম্‌ রাজর্ষয়ো বিদু (গীতা ৪.২) যদি তুমি পরম্পরা পদ্ধতির আশ্রয় গ্রহণ কর। একই উদাহরণ আপনি যদি পাওয়ারহাউজের সাথে সংযুক্ত প্লাগের আশ্রয় নেন, তবে আপনি তৎক্ষনাৎ বিদ্যুৎ পান। একইভাবে, যদি আপনি একজন ব্যক্তির আশ্রয় নেন যিনি পরম্পরা পদ্ধতিতে আছেন ...

একটি পরম্পরা পদ্ধতি আছে। কৃষ্ণ, তিনি ব্রহ্মাকে নির্দেশ দিয়েছেন, ব্রহ্মা নারদকে নির্দেশ দিয়েছেন। নারদ ব্যাসদেবকে নির্দেশ দিয়েছেন, ব্যাসদেব মধ্বাচার্যকে নির্দেশ দিয়েছেন। মধ্বাচার্য অনেক উপায় নির্দেশ দিয়েছেন। তারপর মাধবেন্দ্র পুরি। মাধবেন্দ্র পুরি, ঈশ্বর পুরি, ঈশ্বর পুরি থেকে ভগবান চৈতন্য। এইভাবে পরম্পরা পদ্ধতিতে। চারটে বৈষ্ণব সম্প্রদায় আছে। রুদ্র সম্প্রদায়, ব্রহ্ম সম্প্রদায়, কুমার সম্প্রদায় এবং লক্ষ্মী সম্প্রদায়, শ্রী সম্প্রদায়।

তাই সম্প্রদায় বিহিনা যে মন্ত্রস্ত্রে নিষ্ফলা মতা। যদি তুমি কৃষ্ণের নির্দেশ সম্প্রদায় থেকে না পাও। তাহলে নিষ্ফলা মতা, তারপর আপনি যা শিখেছেন, তা অর্থহীন। এটা নিরর্থক। এটা দোষযুক্ত। অনেক মানুষ ভাগবদ-গীতা পড়ছে, কিন্ত তারা জানেন না কৃষ্ণ কি। যেহেতু তারা ইবম পরম্পরা পাপ্তম এর মাধ্যমে পান না (ভ..গী. ৪.২)। পরম্পরা, যদি না আপনি পরম্পরাতে না যান ... একই উদাহরণ। যদি আপনি পাওয়ার হাউজে সংযুক্ত প্লাগ থেকে বিদ্যুত না পান, আপনার বাল্ব এবং তারের ব্যবহার কি? এর কোন ব্যবহার নেই।

অতএব কৃষ্ণ কিভাবে বিস্তার হচ্ছে, তা বেদেষু দুর্লভ। যদি আপনি কেবল প্রাতিষ্ঠানিক জ্ঞান পেয়ে থাকেন, তাহলে এটি সম্ভব হবে না। বেদেষু দুর্ল্ভ অদুর্ল্ভ আত্ম ভক্ত (ব্র.সং. ৫.৩৩) এটি ব্রহ্ম-সংহিতার বিবৃতি।