BN/Prabhupada 0192 - অন্ধকার থেকে সমগ্র মানব সমাজটি পান



Lecture on SB 6.1.62 -- Vrndavana, August 29, 1975

ভগবদ্গীতাতে বলা হয়েছে, পরম ব্রহ্ম পরম ধাম পবিত্র পরমম্‌ ভবান্‌ পুরুষম্‌ শ্বাশতম্‌ আদ্যম্‌ (ভ.গী.১০.১২) কৃষ্ণ ভগবানকে বর্ণনা করা হয়েছে পুরুষ রূপে এবং জীবকে বর্ণনা করা হয়েছে প্রকৃতি রূপে। অপরেয়মিতস্ত্বন্যাং প্রকৃতিং বিদ্ধি মে পরাম জীবভূতাং মহাবাহো যয়েদং ধার্যতে জগৎ (ভ.গী ৭.৫) কৃষ্ণ ব্যাখ্যা করেছেন। জড় শক্তি এবং চিন্ময় শক্তি। তাই জীব ভূতা, জীব সত্ত্বা, তাদেরকে ব্যাখ্যা করা হয়েছে প্রকৃতি হিসাবে এবং প্রকৃতি মানে মহিলা। এবং কৃষ্ণকে ব্যাখ্যা করা হয়েছে পুরুষ হিসাবে। তাই পুরুষ হচ্ছে ভোক্তা এবং প্রকৃতি হচ্ছে আস্বাদিত। এইরকম মনে করো না "ভোগ করা" মানে শুধু যৌনতা, না। "ভোগ" অর্থ অধীন হওয়া, পুরুষের আদেশ পালন করা। এই হচ্ছে আমাদের এবং কৃষ্ণের অবস্থান। আমরা অংশ, ঠিক যেমন হাত এবং পা আমার শরীরের অংশ। তাই হাত এবং পায়ের দায়িত্ব আমার আদেশ বহন করা। আমি বলছি আমার পা, "আমাকে সেখানে বহন করে চলো।" তিনি ... এটা অবিলম্বে করবে। আমার হাত - "শুধু এটা নিন।" আমি এটা নিব। হাত এটা নেবে। তাই এই হচ্ছে প্রকৃতি এবং পুরুষ। পুরুষ আদেশ দিচ্ছেন এবং প্রকৃতি দায়িত্ব পালন করছে। এটা বাস্তব ..., এইরকম নয় যে যখনই আমরা প্রকৃতি এবং পুরুষের কথা বলি সঙ্গে সঙ্গে মৈথুনের প্রশ্ন আসবে। না। মানে ... প্রকৃতি অর্থে বাধ্য, পুরুষের বাধ্য। এটি প্রাকৃতিক উপায়। পশ্চিম দেশগুলোতে তারা কৃত্রিমভাবে সমান হওয়ার চেষ্টা করছে, কিন্তু এটি প্রাকৃতিকভাবে সম্ভব নয়। এবং এমন কোন প্রশ্ন নেই।, নিকৃষ্টতা বা শ্রেষ্ঠত্ব। এমন কোন প্রশ্ন নেই। ঠিক যেমন শুরু, শুরুতে, যতো বা ইমানি ভুতানি যান্তি। জন্মাদস্য যতঃ (শ্রী.ভা.১.১.১) কোথা থেকে এই পুরুষ এবং প্রকৃতির সম্পর্ক শুরু ? জন্মাদস্য যতঃ। পরম সত্য থেকে এটি শুরু হয়েছে। সেইজন্য পরম সত্য হচ্ছে রাধা কৃষ্ণ সেই একই পুরুষ এবং প্রকৃতি। কিন্তু রাধারানী একজন সেবক, সেবা করছে। রাধারানী খুব পটু কৃষ্ণকে আকর্ষণ করতে তার সেবার দ্বারা। এই হচ্ছে রাধারানীর অবস্থান। কৃষ্ণকে বলা হয় মদনমোহন। এখানে বৃন্দাবনে মদনমোহন আছে, এবং রাধারাণীকে বলা হয় মদনমোহন মোহিনী। কৃষ্ণ হচ্ছে সর্বাকর্ষক যে...আমরা কুমারীদের দ্বারা আকৃষ্ট হই, এবং কৃষ্ণ কুমারীদের আকর্ষণ করে। তাই তার নাম মদন মোহন। এবং রাধারানীও মহান তিনি কৃষ্ণকে আকর্ষন করেন, তাই তিনি মহান। বৃন্দাবনে, তাই মানুষরা রাধাবানীর জপ কীর্তন করেন, কৃষ্ণের নামের চাইতে বেশী -জয় রাধে।" হ্যাঁ, যদি আপনি চান কৃষ্ণের অনুগ্রহ তাহলে রাধারানীকে খুশী করুন। তাই এটা হচ্ছে পথ।

এখানে বলা হচ্ছে, মনঃ মদন ব্যপিতম "মনঃ বিক্ষিপ্ত।" তাই মদন মোহন কর্তৃক আকর্ষণ না হওয়া পর্যন্ত এই মন বিক্ষিপ্ত থাকবে। যদি আমরা মদনমোহন দ্বারা আকৃষ্ট না হই, এতদিন আমরা মদনমোহনের প্রতি আকৃষ্ট ছিলাম না, আমাদের মদন, মোহন- ব্যপিতম দ্বারা আকৃষ্ট হওয়া উচিত। এই প্রক্রিয়া। এবং যদি না আপনি আপনার মন নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন, যদি না আপনি মদন দ্বারা বিরক্ত হয়ে আপনার মন নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হন, তাহলে মুক্তির বা পরিত্রাণের কোন প্রশ্ন নেই। জীবনের চূড়ান্ত লক্ষ্য কিভাবে এই জড় জগতের বন্ধন থেকে মুক্ত হওয়া যায়, জন্ম, মৃত্যু এবং ত্রিতাপ ক্লেশ। সেটিই হচ্ছে পরিপূর্ণতা। তারা জানে না জীবনের লক্ষ্য কি, সারা বিশ্বের জীবনের পরিপূর্ণতা কি। বিশেষ করে এই যুগে তারা পতিত, তারা জানে না জীবনের লক্ষ্য কি। এসব বড় বড় রাজনৈতিক দল, দার্শনিক, বিজ্ঞানী, তাদের কোন জ্ঞান নেই। তারা অন্ধকারে আছে অতএব, অন্ধকারে বিভ্রান্তিকর বলা হয়। কিন্তু আমরা বুঝতে পেরেছি কৃষ্ণ সুর্যসম। "কৃষ্ণ সূর্যের মতো।" কৃষ্ণ সূর্যসম মায়া অন্ধকার।" এবং এই অন্ধকার মানে মায়া।"

কৃষ্ণ সূর্য সম, মায়া অন্ধকার,
যাহে কৃষ্ণ তাহা নাই মায়ার অধিকার।
(চৈ.চ.মধ্য ২২.৩১)

মামেব যে প্রপদন্ত্যে মায়া মেতাং তরন্তি তে (ভ.গী.৭.১৪) এই হচ্ছে পদ্ধতি,

তাই এটি একটি বড় বিজ্ঞান। কৃষ্ণভাবনামৃত আন্দোলন হচ্ছে সমগ্র মানব সমাজকে ঘোর অন্ধকার থেকে বের করার জন্য সবচেয়ে বৈজ্ঞানিক আন্দোলন।