BN/Prabhupada 0213 - মৃত্যুকে বন্ধ করো তাহলে আমি তোমাদের রহস্যবাদ দেখবো



Morning Walk -- June 17, 1976, Toronto

ভক্ত জীনঃ শ্রীপাদ, আমার মনে একটি প্রশ্ন উত্থাপিত হয়েছে, খ্রিস্টধর্মের মধ্যে ১০০ খ্রিস্টাব্দ থেকে আজ পর্যন্ত রহস্যের ইতিহাস রয়েছে। এখন কিছু বিশিষ্ট রহস্যবিদরা আছেন, কয়েকজন বিশিষ্ট রহস্যবিদ, এবং অনেকে আছেন যারা এত মহান বিশিষ্ট নয়। এখন কিভাবে আপনি এই পুরুষদের শ্রেণীভুক্ত করবেন , এই খ্রিস্টান রহস্যবিদ, প্রোটেস্ট্যান্ট এবং ক্যাথলিক?

প্রভুপাদঃ এটা কিছু যৌগিক রহস্য। এর আধ্যাত্মিক জীবনের সঙ্গে কোন লেনাদেনা নেই। তারা কিছু অলৌকিক চমৎকার দেখতে চান, বিশেষ করে সাধারণ আমজনতা। এই রহস্য শক্তি, কিছু অলৌকিক দেখাবে এবং তাদের আশ্চর্য করে দাও, ব্যাস। আধ্যাত্মিক জীবনের সাথে এর কোন লেনাদেনা নেই।

ভক্ত জীনঃ হয়তো আপনি আমাকে ভুল বুঝেছেন, আমি আসলে ভক্তির অলৌকিকতার কথা উল্লেখ করছি। যেমন ক্রিস্টের সেন্ট জন, অ্যাসিসির সেন্ট ফ্রান্সিস।

প্রভুপাদঃ যদি ভক্তি সেবাতে থাকেন, তাহলে ওই অলৌকিকতার প্রয়োজন কোথায়? কোন প্রয়োজন নেই। ভগবান আমার প্রভু, আমি তার দাস। এইসব আজেবাজে রহস্যের কি প্রয়োজন আছে? ভক্ত জীনঃ আমার মনে হচ্ছে যে এই শব্দ অলৌকিকতা, অনেক লোক এটা নিয়ে বাড়াবাড়ি করছে, বিশেষ করে এই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে।

প্রভুপাদঃ এত লোক, আমাদের এত লোকের সাথে কোন লেনাদেনা নেই। যদি আপনি প্রকৃতপক্ষে ভগবানের সেবক হন, ভগবান আছেন, আপনি দাস। তাই আপনার লেনদেন আছে। শুধুমাত্র ভগবানের আদেশ পালন করা, ব্যাস্‌। কেন আপনি অলৌকিক কিছু দেখতে চান? লোকদেরকে কিছু বাজিগরী দেখানোর জন্য? আপনি ভগবানের সেবা করুন, ব্যাস্‌। এবং এটি খুব সাধারণ কথা, যেটা ভগবানের আদেশ। মন্মনা ভব মদ-ভক্ত মদ যাজী মাং নমষ্কুরু (ভ.গী.১৮.৬৫) অলৌকিকতার প্রশ্ন কোথায়? অলৌকিকতার কোন প্রশ্ন নেই। ভগবান বলেছেন, "সর্বদা আমাকে শরণ করো, আমাকে প্রনাম করো আর আমার পূজা করো।" ব্যাস। অলৌকিকতার কি প্রয়োজন? এগুলো সব মায়াজাল।

ভারতীয় ব্যক্তি: আমি আপনাকে বলছি, আমার মনে হয় একটি ধারণা আছে .... ।

প্রভুপাদঃ আপনি আপনার ভাবে মনে করছেন।

ভারতীয় লোকঃ না স্যার। একটা ভুল ধারনা আছে...

প্রভুপাদঃ আপনার চিন্তার কোন অর্থই নেই যদি না আপনি পরম্পরায় আসেন।

ভারতীয় মানুষ: না, স্যার একটি ভুল ধারণা আছে অলৌকিকতা নিয়ে, তারা বলে যে এটা আধ্যাত্মিক উন্নতির সাথে আসে। আমার মনে হয় তারা এটাই বলার চেষ্টা করছে।

প্রভুপাদঃ সমস্যা এটাই যে আমরা প্রত্যেক জন্মে এই জড়জগতে কষ্ট পাচ্ছি। এবং আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে কিভাবে বাড়ীতে ফিরে যাওয়া যায়, ভগবদ্ধাম ফিরে যাওয়া যায়। সেটা তারা জানে না। তারা কিছু অলৌকিকতা দেখাচ্ছে। কি আপনারা...মৃত্যু বন্ধ করতে পারবেন। তাহলে আমি আপনাদের অলৌকিকতা দেখবো। এইসব আজেবাজে অলৌকিকতা কি? আপনি মৃত্যু বন্ধ করতে পারবেন? এটা কি সম্ভব? তাহলে এই অলৌকিকতার অর্থ কি? সব ভুয়া। আমার সমস্যা হচ্ছে যে আমি একটি শরীর গ্রহণ করেছি এবং দুঃখ পাচ্ছি, কারণ যখনই আমি এই জড় শরীর পাচ্ছি, আমি দুঃখ পাচ্ছি। তারপর আমি আরেকটা শরীর গড়ছি করছি, আমার মৃত্যু হচ্ছে। তথা দেহান্তর-প্রাপ্তি (ভ.গী ২.১৩)। এবং আবার আরেকটা অধ্যায় শুরু হচ্ছে। এইভাবে, এই ঘাস জীবন থেকে দেবতা পর্যন্ত, আ্মরা শুধু শরীর পরিবর্তন করছি এবং মৃত্যু হচ্ছে এবং জন্ম নিচ্ছি। এই হচ্ছে আমাদের সমস্যা। তাই অলৌকিকতা কি করবে? কিন্তু সেটা তারা জানে না, সমস্যা কি। সেটা ভগবদ গীতাতে স্পষ্ট বলা হয়েছে। জন্ম-মৃত্যু-জড়া-ব্যাধি-দুঃখ-দোষানুদর্শনম (ভ.গী.১৩.৯) এই হচ্ছে আপনার সমস্যা। আপনারা বারবার জন্ম নিচ্ছেন এবং মারা যাচ্ছেন, এবং যতদিন আপনি বাঁচবেন কোন সমস্যা থাকবে। জড়া-ব্যাধি। বিশেষ করে বৃদ্ধ বয়েস এবং রোগগ্রস্থ অবস্থা। তাই এটা হচ্ছে সমস্যা। কোন অলৌকিকতা আপনাকে সাহায্য করবে? অলৌকিকতা আপনার জন্ম, মৃত্যু, বার্ধক্য এবং রোগ বন্ধ করতে পারবে? তাহলেই সেটা অলৌকিকতা। অন্যথায়, এই ধরনের আজেবাজে কথা বলার মানে কী? (বিরতি) ... আসল পথ থেকে বিভ্রান্ত করা। তারা জানেই না জীবনের সমস্যা কি। জীবনের উদ্দেশ্য কি। তারা কিছু অলৌকিকতা দেখায়, আর কিছু বদমাশ লোক তাদের পিছনে পড়ে। ব্যাস। "এখানে রহস্যময়।"

ভারতীয়ঃ ভক্তদের সঙ্গ কতটা গুরুত্বপূর্ণ?

প্রভুপাদঃ হ্যাঁ, সতাম্‌ প্রসঙ্গান্‌ মম বীর্যসংবিদো ভবন্তি হৃদ-কর্ণ-রসায়না কথা (শ্রী.ভা. ৩.২৫.২৫) এইজন্য সাধু সঙ্গ প্রয়োজন। ভক্ত সঙ্গ, এটা প্রয়োজন। তাহলে আমাদের জীবন সফল হবে। অলৌকিকতা দ্বারা নয়।