BN/Prabhupada 0243 - একজন শিষ্য গুরুর কাছে জ্ঞান পাবার জন্য আসে



Lecture on BG 2.9 -- London, August 15, 1973

প্রদ্যুম্নঃ অনুবাদ," সঞ্জয় বললেনঃ এই কথা বলার পর, পরন্তপ অর্জুন, ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে বলেছিলেন, 'হে গোবিন্দ, আমি যুদ্ধ করব না এবং তিনি চুপ হয় গেলেন।"

প্রভুপাদঃ আগের শ্লোকে, অর্জুন বলেছেন যে "এই যুদ্ধে কোন লাভ নেই কারণ অন্যদিকে, তারা সবাই আমার আত্মীয়, ভাই, এবং তাদের হত্যা করে, যদি আমি বিজয়ী হই, তবে এর মূল্য কি?" আমরা ব্যাখ্যা করেছি যে, এই ধরনের ত্যাগ কখনও কখনও অজ্ঞতার মধ্যে হয়। প্রকৃতপক্ষে এটা খুব বিচক্ষণতার পরিচয় নয় এই ভাবে, এবং উক্তা "বলছে যে, "তাহলে যুদ্ধে কোন লাভ নেই।" এবং উক্তা, "এটা বলছে যে, "হৃষিকেশ, তিনি ইন্দ্রিয়ের প্রভুর সাথে কথা বলছেন। এবং আগের শ্লোকে তিনি বলছেন, শিষ্যস্তেহং প্রপন্নম্‌ (ভ.গী ২.৭) "আমি আপনার শরণাগত শিষ্য।" তাই শ্রীকৃষ্ণ গুরু হয়েছেন এবং অর্জুন শিষ্য হয়েছেন। পূর্বে তারা বন্ধু হিসেবে কথা বলছিলেন। কিন্তু বন্ধুত্বপূর্ণ জিনিস কোন গুরুতর প্রশ্ন করতে পারে না। যদি একটি গুরুতর জিনিস হয়, তাহলে এটি প্রামাণিক কর্তৃপক্ষদের মধ্যে হওয়া উচিত।

তাই হৃষিকেশম্‌, আমি অনেকবার ব্যাখ্যা করেছি। হৃষিক মানে ইন্দ্রিয় এবং ঈশ মানে প্রভু। হৃশিক-ঈশ এবং সেটা জুড়ে হৃষীকেশ। অনুরূপভাবে, অর্জুনও। গুড়াকেশ। গুড়াক মানে অন্ধকার এবং ঈশ... অন্ধকার মানে অজ্ঞতা।

অজ্ঞান-তিমিরাংন্ধস্য
জ্ঞানাঞ্জন শলাকয়া
চক্ষুর-উন্মিলিতং
যেন তস্মৈ শ্রী-গুরুবে নমঃ

গুরুর কত্তব্য হচ্ছে...একজন শিষ্য, গুরুর কাছে জ্ঞানের জন্য আসেন। প্রত্যেকেই অজ্ঞতায় জন্ম নেয়। প্রত্যেকে। এমনকি মানুষঅ, কারণ তারা পশু রাজত্ব থেকে আসছে, উন্নয়ন থেকে, সুতরাং জন্ম একই, অজ্ঞতা, প্রাণীর মত। সুতরাং, এমনকি যদিও তিনি একজন মানুষ, তবুও শিক্ষার প্রয়োজন হয়। পশু শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে না, তবে একজন ব্যক্তি শিক্ষা গ্রহণ করতে পারেন। সেইজন্য শাস্ত্র বলছে, নায়ং দেহ দেহভাজান্‌ নৃলোকে কষ্টান্‌ কামান্‌ অর্হতে বিড়ভুজান্‌ যে (শ্রী.ভা. ৫.৫.১) আমি এই শ্লোকের অনেক বার ব্যাখ্যা করেছি, এখন .... মানুষের জীবনের নিম্ন পর্যায়ে, আমাদের কঠোর পরিশ্রম করতে হয়, শুধুমাত্র জীবনের চারটি প্রয়োজনের জন্য: আহার, নিদ্রা, প্রতিরক্ষা, এবং মৈথুন ইন্দ্রিয় তৃপ্তি। আসল উদ্দেশ্য ইন্দ্রিয় তৃপ্তি। তাই সবাই খুব কঠিন পরিশ্রম করছে। কিন্তু মানুষ্য জীবনে, কৃষ্ণ আমাদের অনেক ধরনের সুবিধা, জ্ঞান, বুদ্ধিমত্তা দিয়েছেন। আমরা খুব স্বাচ্ছন্দ্যে বাস করতে পারি, কিন্তু তা যেন হয় কৃষ্ণ চেতনায় পরিপূর্ণতা অর্জনের উদ্দেশ্য। আপনি স্বাচ্ছন্দ্যে থাকুন। কোন সমস্যা নেই কিন্তু পশুদের মতন হবেন না, শুধুমাত্র ইন্দ্রিয় সন্তুষ্টি বাড়াতে থাকা। মানবতার প্রচেষ্টা চলছে কিভাবে একটি আরামদায়ক জীবন যাপন করা যায়, কিন্তু তারা আরামদায়ক ভাবে বসবাস করতে চান ইন্দ্রিয় সন্তুষ্টির জন্য। এটি আধুনিক সভ্যতার ভুল। যুক্তাহার বিহারাস্য যোগ ভবতি সিদ্ধিঃ ভগবদ্গীতাতে এটা বলা হয়েছে যুক্তাহার। হ্যাঁ, আপনাকে খেতে হবে, আপনাকে ঘুমাতে হবে, আপনাকে ইন্দ্রিয় তৃপ্তির বাসনা সম্পন্ন করতে হবে, আপনাকে আত্মরক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে - যতটা সম্ভব, এর উপর অধিক মনোযোগ দিতে হবে না। আমাদের খাওয়া উচিত, যুক্তাহার এটি একটি সত্য। কিন্তু অত্যাহার নয়। রূপ গোস্বামী তার উপদেশামৃতে উপদেশ দিয়েছেন,

অত্যাহার প্রয়াসশ্চ
প্রজল্প নিয়মাগ্রহ
লৌল্যম্‌ জনসঙ্গস্য চ
ষড়ভি ভক্তির বিনশ্যতি
(উপদেশামৃত ২)

যদি আপনি আধ্যাত্মিক চেতনায় অগ্রগতি করতে চান - কারণ এটি জীবনের একমাত্র উদ্দেশ্য - তাই আপনাকে বেশি খাওয়া উচিত না, অত্যাহার, বা বেশি জমা করা। অত্যাহার প্রয়াসশ্চ প্রজল্প নিয়মাগ্রহ। এটা আমাদের দর্শন।