BN/Prabhupada 0249 - প্রশ্ন উঠেছিল, কেন যুদ্ধ হয়



Lecture on BG 2.6 -- London, August 6, 1973

সুতরাং অর্জুনের এটা বিবেচনা করার কোন প্রশ্নই ছিল না যে, উনি যুদ্ধ করবেন কি না এটি শ্রীকৃষ্ণ চেয়েছেন, তাই যুদ্ধ হতেই হবে ঠিক যেমন যখন আমরা হাঁটছিলাম, কেউ একজন প্রশ্ন করল "কেন যুদ্ধ হয়?" এটা বোঝা খুব একটা কঠিন বিষয় নয় কারণ আমাদের সবার মধ্যে যুদ্ধ করার প্রবণতা আছে। এমনকি শিশুরা যুদ্ধ করছে, বিড়াল এবং কুকুরেরা যুদ্ধ করছে, পাখিরা যুদ্ধ করছে, পিঁপড়েরা মারামারি করছে। আমরা এইগুলি দেখেছি। সুতরাং একজন মানুষ কেন নয়? যুদ্ধের জন্য উৎসাহ আছে। এটি বেঁচে থাকার একটি উপসর্গ। লড়াই। তাহলে এই লড়াই কখন হবে? অবশ্যই, এই সময়ে, উচ্চাভিলাষী নেতাদের দ্বারা, তারা যুদ্ধ করে। কিন্তু যুদ্ধ, বৈদিক সভ্যতা অনুসারে যুদ্ধ, যুদ্ধের অর্থ ধর্ম যুদ্ধ। ধর্মীয় নীতি অনুসারে। রাজনৈতিক মতামত দ্বারা না, তর্ক। যেমন এখন যুদ্ধ দুটি রাজনৈতিক দলের মধ্যে হচ্ছে,, সাম্যবাদী এবং পুঁজিবাদী দের মধ্যে। তারা শুধুমাত্র যুদ্ধ এড়াতে চেষ্টা করছে, কিন্তু যুদ্ধ চলছে। যেইমাত্র অমেরিকা কোন একটি ক্ষেত্রে প্রভাবশালী হয়, অবিলম্বে রাশিয়াও সেখানে আসে। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার শেষ যুদ্ধে রাষ্ট্রপতি নিক্সন তার সপ্তম নৌবহরে পাঠিয়েছিলেন, ভারত মহাসাগরে, বঙ্গোপসাগর, প্রায় ভারতের সামনে ... এটা অবৈধ ছিল। কিন্তু আমেরিকা খুব গর্বস্ফীত ছিল, তাই সপ্তম নৌবহর পাঠিয়েছিল সম্ভবত পাকিস্তানকে সহানুভূতি দেখানোর জন্য। কিন্তু অবিলম্বে আমাদের বন্ধু রাশিয়া হাজির হয়েছিল। সুতরাং, আমেরিকাকে ফিরে যেতে হয়েছিল। অন্যথায়, আমার মনে হয়, আমেরিকা পাকিস্তানের পক্ষ হয়ে হামলা করত।

তাই এইরকমটা চলছে। আপনি যুদ্ধ বন্ধ করতে পারবেন না। অনেক মানুষ তারা চিন্তা করছে কিভাবে যুদ্ধ থামানো যায়। এটা অসম্ভব। এটি একটি অর্থহীন প্রস্তাব। এটা হতে পারে না। কারণ যুদ্ধের আবেগ প্রত্যেকের মধ্যে আছে। এটি জীবের একটি লক্ষণ। এমনকি শিশু যারা রাজনীতি জানে না, তাদের কোনও শত্রু নেই, তারা পাঁচ মিনিটের জন্য লড়াই করে, তারপর তারা বন্ধু হয়ে যায়। তাই লড়াইয়ের আবেগ আছে এখন, কিভাবে এটি ব্যবহার করা উচিত? আমাদের কৃষ্ণ ভাবনামৃত আন্দোলন আছে। আমরা বলি, চেতনা। আমরা বলি না "যুদ্ধ বন্ধ কর" বা "এটা কর, ওটা কর, এটি ওটা কর" না। কৃষ্ণ ভাবনামৃতের অধীনে সবকিছু করা উচিত। এটি আমাদের প্রচার। নির্বন্ধ কৃষ্ণ সম্বন্ধে। যাই কিছু আপনি করুন না কেন, তার কিছু সম্পর্ক থাকা উচিত কৃষ্ণের সন্তুষ্টির সাথে। যদি কৃষ্ণ সন্তুষ্ট হয় তবে আপনি তার অনুসরণ করুন। এটাই কৃষ্ণ চেতনা। কৃষ্ণেন্দ্রিয় তৃপ্তি বাঞ্ছা তার নাম প্রেম (চৈ.চ.আদি ৪.১৬৫)। এই হচ্ছে প্রেম। যেমন তুমি কারো সাথে প্রেম করো, তোমার প্রেমের জন্য তুমি যেকোন কিছু করতে পারো এবং আমরা কখনো কখনো করেও থাকি। একইভাবে, কৃষ্ণের কাছে এই জিনিস স্থানান্তর করা উচিত। ব্যাস্‌ নিজেকে শিক্ষিত করার চেষ্টা করুন, কিভাবে কৃষ্ণকে ভালবাসতে হয়, কিভাবে কৃষ্ণের জন্য কার্য করতে হয়। এটি জীবনের পরিপূর্ণতা। স বৈ পুংসাম্‌ পরো ধর্ম যতোভক্তির অধোক্ষজে (শ্রী.ভা.১.২.৬)। ভক্তি অর্থ সেবা করা, ভজ সেবায়াম্‌। ভজ-ধাতু, এটি ব্যবহার করা হয় সেবার প্রয়োজনের জন্য, ভজ। আর ভজ, সংস্কৃত ব্যকরন, কিট প্রত্যয়, নামকরনের জন্য। এটা ক্রিয়া। প্রত্যয় আছে, কৃৎ প্রত্যয়, ক্তি প্রত্যয়, অনেক প্রত্যয় আছে, তাই ভজ ধাতু ক্তি, ভক্তির সমান। তাই ভক্তি মানে কৃষ্ণকে সন্তুষ্ট করা। ভক্তি আর কারো প্রতি করা যায় না। যদি কেউ বলে যে 'আমি একজন কালীর বড় ভক্ত, কালী দেবীর," এটা ভক্তি নয়, এটা ব্যবসা। কারণ আপনি যে কোন দেবতাকে উপাসনা করেন, তার পিছনে কিছু উদ্দেশ্য আছে। সাধারণত মানুষ মাংস খাওয়ার জন্য দেবী কালীর ভক্ত হয়ে যায়। এটি তাদের উদ্দেশ্য। বৈদিক সংস্কৃতিতে, যারা মাংস খায় তাদের এই পরামর্শ দেওয়া হয়েছে যে "কসাইখানা বা বাজার থেকে কেনা মাংস খেও না।" প্রকৃতপক্ষে, এই পদ্ধতিটি কোথাও উপস্থিত ছিল না, সারা পৃথিবীতে, কসাইখানা চালনা করা। এটি নতুন আবিষ্কার। আমরা কখনও কখনও খ্রিস্টান ভদ্রলোকের সঙ্গে কথা বলেছি এবং যখন আমরা জিজ্ঞাসা করলাম "প্রভু খ্রীষ্ট বলছেন, 'তুমি হত্যা করবে না, কেন তুমি হত্যা করছ?' তারা প্রমাণ দেয়, "খ্রীষ্টও মাঝে মাঝে মাংস খেতেন।" কখনও কখনও যীশু খ্রীষ্ট মাংস খেতেন, ঠিক আছে কিন্তু যীশু কি বলেছেন যে "আপনি বড়, বড় কসাইখানা চালান এবং মাংস খেতে থাকুন?" ওদের মধ্যে কোন সাধারণ জ্ঞান পর্যন্ত নেই। যিশু খ্রিস্ট হয়তো কখনঅ খেয়েছেন। কখনও কখনও তারা ... খেতে কিছু না থাকলে, আপনি কি করতে পারেন? এটি আরেকটি প্রশ্ন। বড় প্রয়োজনে, যখন মাংস ব্যতীত অন্য কোন খাবার নেই ... সময় আসছে এই যুগে, কলি যুগে, ধীরে ধীরে খাদ্যশস্য কমে যাবে। এটি শ্রীমদ্ভাভাগবতে, দ্বাদশ স্কন্ধে বলা হয়েছে। কোন চাল নেই , কোন গম নেই, কোন দুধ নেই, চিনি পাওয়া যাবে না। আমাদের মাংস খেতে হবে। এই অবস্থা ঘটবে। এবং এমনকি মানুষের মাংস খাওয়া হবে। এই পাপিষ্ঠ জীবন অপমানজনক, ততদিন তারা আরো এবং আরো পাপী হয়ে উঠবে। তানহং দ্বিষতঃ ক্রূরান ক্ষিপামি অজস্রম্‌ অন্ধ যোনিষু (ভ.গী.১৬.১৯) যারা রাক্ষস, যারা পাপী, প্রকৃতির নিয়মে তাদের এই অবস্থার মধ্যে রাখা হয় যে তিনি বেশী পরিমাণে রাক্ষস হবে এবং ভগবান কি এটা সে বুঝতে পারবে না। এই প্রকৃতির আইন। আপনি যদি ভগবানকে ভুলে যেতে চান, তাহলে ভগবান আপনাকে এমন অবস্থায় নিয়ে যাবেন যে আপনি ভগবান কি তা কখনোই বুঝতে পারবেন না। এটা রাক্ষস জীবন। সেই সময় আসছে। বর্তমান সময়ে, এখনও কিছু লোক আগ্রহী জানতে, ভগবান কি? আর্ত অর্থার্থী জিজ্ঞাসু জ্ঞানী (চৈ.চ.মধ্য ২৪.৯৫)। কিন্তু সেই সময় আসছে যখন কোন জ্ঞান থাকবে না, ভগবানকে বুঝতে পারার। সেটা কলি-যুগের শেষের পর্যায় এবং সেই সময়ে কল্কি অবতার আসবেন। সেই সময়ে ভগবৎ ভাবনামৃতের কোন প্রচার হবে না, শুধু হত্যা করা হবে, শুধু হত্যা। কল্কি অবতার এবং তাঁর তরবারি কেবল বধ করবে। তার পর আবার সত্য যুগ আসবে। তারপর আবার স্বর্ণালি যুগ আসবে।