BN/Prabhupada 0367 - বৃন্দাবন মানে যেখানে শ্রীকৃষ্ণ হচ্ছেন কেন্দ্র



Lecture on BG 7.1 -- Bombay, December 20, 1975

তাই কৃষ্ণ ব্যক্তিগতভাবে নির্দেশ দিচ্ছেন ভগবদগীতায়, তাদেরকে বুঝনোর জন্য, সুতরাং আমাদের এই সুবিধা গ্রহণ করা উচিত, অন্যথায় আমরা মানুষ্য জীবনের এই সুযোগ হারাব, কৃষ্ণ কিছু বিড়াল এবং কুকুরকে ভগবত গীতা শেখাচ্ছেন না। তিনি সর্বাধিক প্রভাবশালী ব্যক্তিকে শিক্ষা দিচ্ছেন, ইমম রাজস্বয়ে বিদুঃ (BG 4.2)। সুতরাং ভগবদ গীতা রাজস্বীদের জন্য, খুব ধনী, একই সময়ে একজন ধার্মিক ব্যক্তি। অতীতে সমস্ত রাজারা ছিল রাজস্বী। রাজা এবং ঋষি একসঙ্গে মিলিত। তাই ভগবদ গীতা নিষ্কর্মা বর্গের জন্য নয়। এটি সমাজের প্রধানদের দ্বারা বোঝা উচিত। যদ যদ আচরিত শ্রেষ্ঠস্তত্তদেবেতরো জনাঃ (ভ.গী.৩.২১) তাই যারা সমাজের নেতা হবার দাবি করে, তাদের ভগবদ গীতা শিখতে হবে, কিভাবে একজন বাস্তব এবং প্রকৃত নেতা হবে এবং তারপর সমাজ উপকৃত হবে। এবং যদি আমরা ভগবত গীতা ও শ্রীকৃষ্ণের শিক্ষা অনুসরণ করি, তবে সব সমস্যার সমাধান হবে। এটি একটি সাম্প্রদায়িক ধর্মীয় অনুভূতি বা কট্টরপন্থা নয়। এটা এমন নয়। এটি একটি বিজ্ঞান - সামাজিক বিজ্ঞান, রাজনৈতিক বিজ্ঞান, সাংস্কৃতিক বিজ্ঞান। সবকিছু এখানে আছে। অতএব, আমার অনুরোধ এই যে আপনারা প্রত্যেকেই একজন গুরু হন। এটি চৈতন্য মহাপ্রভুর আদেশ।

তিনি চান প্রত্যেকেই একজন গুরু হোক। কিভাবে? তিনি বলছেন যে:

যারে দেখ তারে কহ কৃষ্ণ উপদেশ
আমার আজ্ঞায় গুরু হহৈয়া তার এই দেশ
(চৈ.চ.মধ্য ৭.১২৮)

এই হচ্ছে গুরু। মনে করুন আপনি পরিবারের সদস্য। তাই অনেক প্রাণী আছে, আপনার ছেলে, আপনার মেয়ে, আপনার বৌমা অথবা শিশু আপনি তাদের গুরু হতে পারেন। একইভাবে আপনি সন্ধ্যায় বসতে পারেন এবং ভগবদ গীতা সম্পর্কে কথা বলতে পারেন, যারে দেখ তারে কহ কৃষ্ণ উপদেশ (চৈ.চ.মধ্য ৭.১২৮)। আপনাকে কিছু নির্মান করার প্রয়োজন নেই। শিক্ষা তো আছে, আপনি শুধু পুনরাবৃত্তি করুন এবং তাদের শুনতে দিন - আপনি একজন গুরু হয়ে উঠুন। এটা একদম কঠিন নয়। এটাই আমাদের প্রচার। আমরা একা গুরু হতে পারি না, কিন্তু আমরা এইভাবে প্রচার করতে চাই, প্রধান মানুষ, বা যেকোন মানুষ, তিনি নিজের পরিবেশে একজন গুরু হতে পারে। যেকেউ এটা করতে পারে। এমনকি একজন কুলি, তারও পরিবার আছে, তার বন্ধু আছে, তাই তিনি অশিক্ষিত হলেও, তিনি কৃষ্ণের নির্দেশনা শুনতে পারেন, তাঁর প্রচার করতে পারেন। এটা আমরা চাই এবং আমরা সব সন্মানিয় সজ্জন, নেতাদের আমন্ত্রণ জানাই, এ্টা শেখার জন্য। এটা খুব সহজঃ মন্মনা ভব মদ ভক্তো মদযাজী মাং নমস্কুরু (ভ.গী.১৮.৬৫) এবং কৃষ্ণের এই আদেশটি সম্পাদন করলে তিনি ভরসা দেন যে, "মাম এবেশ্যসি " তুমি আমার কাছে আসবে।" যদ গত্বা ন নির্বততে তদ ধাম পরমং মম (ভ.গী.১৫.৬)। ত্ব্যত্ত্বা দেহং পুনঃ জন্ম নৈতি মামেতি কৌন্তেয় (ভ.গী.৪.৯)। খুব সহজ জিনিস।

তাই আমাদের একমাত্র অনুরোধ হল সমাজের নেতৃবৃন্দ ভগবদ গীতার শিক্ষাকে গম্ভীরভাবে গ্রহণ করেন, নিজেকে জানুন এবং অন্যদেরকে শেখান এই কৃষ্ণ ভাবনামৃত আন্দোলনকে। এটা খুব কঠিন নয়, এটা খুবই সহজ। সবাই এটা করতে পারেন। কিন্তু ফলাফল হল এই যে যখনি আপনি বুঝতে পারবেন, মানুষ কৃষ্ণকে বুঝবে, জন্ম কর্ম চ মে দিব্যম যো জানাতি তত্ত্বতঃ (ভ.গী৪.৯), যে কেউ কৃষ্ণকে বোঝে, তার ফল ত্যত্ত্বা দেহং পুনঃ জন্ম নৈতি... এই শরীর ত্যাগ করার পর, তিনি আর কোনও জড় শরীর গ্রহণ করেন না। তিনি তাঁর আধ্যাত্মিক পরিচয়ে থাকেন এবং কৃষ্ণের সমাজকে উপভোগ করেন। এটা বৃন্দাবন। গোপীজন বল্লভ। কৃষ্ণ ... কৃষ্ণ, বৃন্দাবন মানে কৃষ্ণ কেন্দ্র। তিনি সবার ভালোবাসার বিষয়। গোপীরা, গোপবালকেরা, বাছুর গুলি, গাভীরা, গাছগুলো, ফল গুলো, ফুল্গুলি, বাবা, মা- সবাই কৃষ্ণের প্রতি আর্কষিত। এটাই বৃন্দাবন। সুতরাং এটি একটি প্রতিরূপ, এই বৃন্দাবন এবং এটি বাস্তব বৃন্দাবন। এটিও বাস্তব। পূর্ণ, কোন পার্থক্য নেই। কিন্তু আমাদের বোঝার জন্য মূল বৃন্দাবন আছে,

চিন্তামনি-প্রকর-সদ্মসু কল্প-বৃক্ষ-
লক্ষাবৃতেষু সুরভির অভিপালয়ন্তম।
লক্ষ্মী-সহশ্র-শত-সম্ভ্রম-সেব্যমানম
গোবিন্দম আদি-পুরুষং তমোহম ভজামি
(ব্র.সং ৫.২৯)।
বেনুং কনন্ত অরবিন্দ-দলায়তাক্ষ
ব্রহাবতম সমসিতাম বুধসুন্দরঙ্গম
কন্দর্প-কোটি-কমলয়ো-বিশেষ-শোভম
গোবিন্দং (ব্র.সং.৫.৩০)।

এটা গোলক বৃন্দাবনের বিবরণ।