BN/Prabhupada 0386 - গৌরাাঙ্গের দুটি পদ - তাৎপর্য প্রথম ভাগ



Purport to Bhajahu Re Mana -- The Cooperation of Our Mind

যার ধন সম্পদ, সেই জানে ভকতি রস-সার। এটা হচ্ছে আরেকটা গান যেটা নরোত্তম দাস ঠাকুর গেয়েছেন, এবং তিনি বলেছেন যে "যিনি ভগবান শ্রীচৈতন্যের চরণপদ্ম গ্রহণ করেছেন, অন্য কথায়, ভগবান শ্রীচৈতন্যের দুটি চরণ যার একমাত্র সম্পদ, সেই ব্যক্তি যিনি জানেন যে ভক্তিমূলক সেবাটি কী। সেই জানে ভক্তি-রস-সার। ভক্তিমূলক সেবা অর্থ কি, বা ভক্তিমূলক সেবা ভাব কি? এটা সেই ব্যক্তি দ্বারা বুঝা যায়। যিনি ভগবান চৈতন্যের চরণকমলকে সর্বস্ব রূপে স্বীকার করেছেন। ভগবান চৈতন্য, তিনি স্বয়ং কৃষ্ণ, এবং তিনি ব্যক্তিগত ভাবে আমাদের ভক্তি সেবা শেখাচ্ছেন। সরাসরি। এইজন্য ভগবান চৈতন্য দ্বারা শেখানো ভক্তিমূলক সেবা পদ্ধতি, সবথেকে সেরা। এতে কোন সন্দেহ নেই। বিশেষজ্ঞ, বা গুরু শিক্ষা দিচ্ছেন তার সেবককে, কিভাবে কাজ করতে হয়। যদি কোন গুরু বা ইঞ্জিনিয়ারিং কাজে দক্ষ এবং তিনি ব্যক্তিগতভাবে তার সহকারীকে শিক্ষা দেয়, সেই শিক্ষা, নির্দেশ হচ্ছে সবচেয়ে উত্তম। একইভাবে, ভগবান শ্রীকৃষ্ণ নিজেই, একজন ভক্তের ভূমিকায়, ভক্তিমূলক সেবা প্রদান করছেন। অতএব, ভগবান শ্রীকৃষ্ণ দ্বারা নির্মিত পথ ভক্তিমূলক সেবায় উন্নতির জন্য সবচেয়ে বাস্তব উপায়। সেই জানে ভক্তি রস সার। সার মানে সারাংশ।

তারপর তিনি বলছেন, গৌরাঙ্গের মধুর-লীলা, যার কর্ণে প্রবেশিলা। এখন তিনি প্রভুর চৈতন্যের লীলাতে এলেন তিনি বলছেন, "ভগবান চৈতন্যের লীলাও দিব্য, ভগবান কৃষ্ণের মতই।" ভগবদ্‌গীতায় বলা হয়েছে যে কেউ এটিকে বুঝতে পারে। দিব্য অবতার, অপ্রকট হওয়া, কর্ম, কৃষ্ণের কার্য, তিনি অবিলম্বে ভগবানে রাজ্যে প্রবেশ করার জন্য যোগ্যতাসম্পন্ন হন। শুধু লীলা এবং কর্ম বুঝতে, কৃষ্ণের দিব্য কার্যক্রম। একইভাবে যিনি চৈতন্যের লীলাতে প্রবেশ করেন, তিনি অবিলম্বে হৃদয়ের সমস্ত কলুষতা থেকে মুক্ত হন। গৌরাঙ্গের মধুর-লীলা, যার কর্ণে প্রবেশিলা। কর্ণে প্রবেশিলা মানে শুধুমাত্র ভগবান চৈতন্যের সন্দেশ প্রাপ্ত করেন। কর্ণ মানে কান। বিনম্রভাবে তাঁর বার্তা শুনতে হবে তারপর অবিলম্বে হৃদয় সমস্ত জাগতিক কলুষতা থেকে মুক্ত হয়ে যায়।

তারপর তিনি বলছেন, যে গৌরাঙ্গের নাম লয়, তার হয় প্রেমোদয়। ভগবানের প্রতি প্রেমের বিকাশ কীভাবে করা যায় সেই বিষয়ে ভক্তরা উদ্বিগ্ন। নরোত্তম দাস ঠাকুর অনুমোদন করেছেন যে যদি কেউ শুধু কীর্তন করেন, শ্রীকৃষ্ণ চৈতন্য প্রভু নিত্যানন্দ... গৌরাঙ্গ মানে যিনি সমস্ত সহযোগীদের সাথে। যখনই আমরা গৌরাঙ্গের নাম নিই, আমরা বলতে চাচ্ছি, এই পাঁচজন মানে: ভগবান নিত্যানন্দ, অদ্বৈত, গদাধর এবং শ্রীবাস সব একসঙ্গে। তাই যে গৌরাঙ্গের নাম লয়, যে কীর্তন করে সে অবিলম্বে, তার মধ্যে ভগবানের প্রেম বিকশিত হবে। যেই গৌরাঙ্গের নাম লয়, তার হয় প্রেমোদয়, তারে মুই যাই বলিহারি। নরোত্তম দাস ঠাকুর বলেছেন,' "আমি তাঁকে প্রশংসা জানাচ্ছি।" কারণ তিনি ভগবানের প্রতি প্রেম গড়ে তুলেছেন। তারপর তিনি বলছেন, গৌরাঙ্গ-গুণেতে ঝুরে, নিত্য-লীলা তারে স্ফুরে। চৈতন্য মহাপ্রভুর দিব্য গুণগুলি শুনলেই তিনি কাঁদেন, তিনি এক সময়ে রাধা এবং কৃষ্ণ মধ্যে প্রেমের ব্যাপার কি তা বোঝেন।

নিত্য লীলা মানে রাধা ও কৃষ্ণের মধ্যে প্রেমের প্রতি আনুগত্য। এটা নিত্য। এটা অস্থায়ী নয়। আমাদের এটা মনে করা উচিত না যে রাধা কৃষ্ণের লীলা, প্রেমের কার্য, শুধু একটি অল্প বয়স্ক ছেলে বা মেয়ের মতোই, আমরা এই জড় জগতে দেখতে পাই। এই ধরনের প্রেম সত্যিকারের প্রেম নয়। এগুলি যৌন আবেদন এবং এগুলি শাশ্বত নয়। তাই এগুলি ভেঙ্গে যায়। আজকে আমি কাউকে ভালোবাসি এবং পরের দিন তা ভেঙ্গে যায়। কিন্তু রাধা-কৃষ্ণের লীলা এরকম নয়। এটা নিত্য। এইজন্য এটা দিব্য কারণ, এবং এটি অস্থায়ী। তাই কেবলমাত্র যিনি চৈতন্যের লীলায় নিমগ্ন হবেন তিনি তৎক্ষণাৎ বুঝতে পারেন রাধাকৃষ্ণের ভালোবাসার বাস্তব অবস্থা কী। নিত্য লীলা তারে স্ফুরে। সে যায় রাধা মাধব, সেই যায় ব্রজেন্দ্র-সুত পাশ। এবং শুধুমাত্র এটা করলেই, সে ভগবৎ ধামে প্রবেশের যোগ্য হবেন। ব্রজেন্দ্র সুত। ব্রজেন্দ্র-সুত মানে বৃন্দাবনে নন্দ মহারাজের পুত্র। তিনি পরবর্তী জন্মে শ্রীকৃষ্ণের সঙ্গ করবেন এটা নিশ্চিত।