BN/Prabhupada 0459 - প্রহ্লাদ মহারাজ একজন অন্যতম অনুমোদিত মহাজন
Lecture on SB 7.9.7 -- Mayapur, February 27, 1977
প্রদ্যুম্ন: অনুবাদ - "প্রহ্লাদ মহারাজ ভগবান নৃসিংহ দেবের উপর তাঁর মন ও দৃষ্টি স্থির করলেন সম্পূর্ণ মনোযোগ সহ, সম্পূর্ণ সমাধিতে। স্থির মন নিয়ে, এক কম্পমান কণ্ঠের দ্বারা তিনি প্রেমসহকারে প্রার্থনা করা শুরু করেন। "
- অস্তৌষী দ্ধরিম একাগ্র-
- মনসা সুসমাহিত
- প্রেম-গদ্গদয়া বাচা
- তন্ন্য়স্ত-হৃদয়েক্ষনঃ
সুতরাং এটি হল প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়াটি আপনি অবিলম্বে আশা করতে পারবেন না, তবে আপনি যদি সাধারণ প্রক্রিয়াটি অনুশীলন করেন খুব সহজেই হয়ে যাবে, যেমনটি শ্রীমদ্ভগবদ-গীতাতে সুপারিশ করা হয়েছে, মন্মনা ভব মদভক্তো মদ্ যাজী মাম্ নমস্কুরু (শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা ১৮।৬৫)। আপনি তৎক্ষণাৎ প্রহ্লাদ মহারাজের পদ পেতে পারেন না। সেটা সম্ভব নয়। প্রক্রিয়াটি হল, সর্বপ্রথম, সাধনা-ভক্তি। প্রহ্লাদ মহারাজের এই পদ ভিন্ন। তিনি মহা-ভাগবত। ইতিমধ্যে অনেক জায়গায় আমরা দেখেছি, তিনি হলেন নিত্য-সিদ্ধ। দুই ধরণের ভক্ত হয়, তিন ধরণের : নিত্য-সিদ্ধ, সাধনা-সিদ্ধ, কৃপা-সিদ্ধা। এই বিষয়গুলি ভক্তিরসামৃতসিন্ধুতে বর্ণিত করা হয়েছে। নিত্য-সিদ্ধের অর্থ তারা পরম ভগবানের শাশ্বত সহযোগী। তাঁদের বলা হয় নিত্য-সিদ্ধ। এবং সাধনা-সিদ্ধের অর্থ এই ভৌতিক জগতে যার পতন হয়েছে, তবে নিয়ম এবং প্রবিধান অনুসারে ভক্তি অনুশীলন করে, শাস্ত্রের উপদেশ, গুরুদেবের নির্দেশ, এইভাবে, একজন নিত্য-সিদ্ধের সমান পদে পৌঁছতে পারে। এই হল সাধনা-সিদ্ধ। এবং আরেকটি আছে। তা হল কৃপা-সিদ্ধ। কৃপা-সিদ্ধ মানে ... ঠিক যেমন শ্রীনিত্যনন্দ প্রভু, তিনি চেয়েছিলেন যে এই জগাই-মাধাইয়ের উদ্ধার হওয়া উচিত। কোনও সাধনা ছিল না। তারা কখনই কোনও নিয়ম এবং প্রবিধান অনুসরণ করেনি। তারা ছিল চোর এবং দুর্বৃত্ত, খুব পতিত অবস্থায়। তবে শ্রীনিত্যানন্দ প্রভু একটি উদাহরণ প্রস্তুত করতে চেয়েছিলেন, যে "আমি এই দুই ভাইকে উদ্ধার করব। তারা যে এতটা পতিত তা উপেক্ষা করে " তাকে কৃপা-সিদ্ধ বলা হয়। সুতরাং আমাদের সর্বদা মনে রাখা উচিত তিনটি বিভাগ রয়েছে: নিত্য-সিদ্ধ, সাধনা-সিদ্ধ এবং কৃপা-সিদ্ধ। কিন্তু যখন তারা সিদ্ধ হন, পূর্ণতাপ্রাপ্ত হন, কোনও প্রক্রিয়া দ্বারা, তারা একই স্তরে থাকেন। কোনও পার্থক্য নেই।
সুতরাং প্রহ্লাদ মহারাজের পদ হল নিত্য-সিদ্ধ। গৌরঙ্গের সঙ্গি গনে নিত্য-সিদ্ধ বলি মানে। শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু, যখন তিনি এসেছিলেন ... কেবল তিনিই নন, অন্যরাও। ঠিক যেমন শ্রীকৃষ্ণের সাথে অনেক ভক্তেরা, তারাও অবতরিত হয়েছিলেন, ঠিক যেমন অর্জুন। অর্জুন হলেন নিত্য-সিদ্ধ, নিত্য-সিদ্ধ বন্ধু। যখন শ্রীকৃষ্ণ বলেছিলেন যে "আমি শ্রীমদ্ভগবদগীতার এই দর্শনটি সূর্যদেবকে বলেছি," ইমাম বিবাস্বতে য়োগম প্রোক্তাবান অহম অব্যয়ম (শ্রীমদ্ভগবদগীতা ৪।১), যা হয়েছিল বহু লক্ষ বছর আগে। বিষয়টি পরিষ্কার করার জন্য অর্জুন জিজ্ঞাসা করলেন যে "শ্রীকৃষ্ণ, আপনি আমার বয়সের। আমি কীভাবে বিশ্বাস করব যে আপনি এত লক্ষ বছর আগে এই দর্শন বলেছেন? " সুতরাং শ্রীকৃষ্ণ কী জবাব দিয়েছিলেন, তোমরা জান, " প্রিয় অর্জুন, আপনি এবং আমি উভয়েই, আমরা বহু, বহুবার অবতরিত হয়েছিলাম। পার্থক্য হল তুমি ভুলে গেছ। তার মানে তুমি তখন উপস্থিত ছিলে, কারণ তুমি আমার নিত্য-সিদ্ধ বন্ধু। আমি যখনই অবতরিত হব, তুমিও অবতরিত হবে। তবে তুমি ভুলে গেছ; আমি ভুলিনি।" এটাই হল জীব এবং ( অস্পষ্ট ) বা ভগবানের মধ্যে পার্থক্য, যে আমরা পরম ভগবানের অতি ক্ষুদ্র অংশ এবং কণিকা; অতএব আমরা ভুলে যেতে পারে।
তবে শ্রীকৃষ্ণ ভোলেন না। এটাই পার্থক্য। সুতরাং নিত্য-সিদ্ধ। প্রহ্লাদ মহারাজকে নিত্য, মহা-ভাগবত, নিত্য-সিদ্ধ হিসাবে বোঝা উচিত। তারা শ্রীকৃষ্ণের লীলা সম্পূর্ণ করতে অবতীর্ণ হন। তাই আমাদের প্রহ্লাদ মহারাজকে অনুকরণ করার চেষ্টা করা উচিত নয়। এটা ঠিক নয়। মহাজনো য়েন গতহ স পন্থাঃ আমি ইত:পূর্বে গতকালই বুঝিয়ে দিয়েছি। প্রহ্লাদ মহারাজ হলেন অন্যতম মহাজন, অনুমোদিত ব্যক্তি, অনুমোদিত ভক্ত। আমাদের তাঁকে অনুসরণ করার চেষ্টা করা উচিত। মহাজনো য়েন গতহ স পন্থাঃ। সুতরাং শ্রুতয়ো বিভিন্নঃ।
- তরকো প্রতিষ্ঠা শ্রুতয়ো বিভিন্না
- নাসৌ মুনির যস্য মতম না ভিন্নম
- ধর্মস্য তত্ত্বম নিহিতম গুহায়াম
- মহাজনো য়েন গতহ স পন্থাঃ
আপনি যুক্তি এবং তর্ক দ্বারা ঈশ্বরকে বুঝতে পারবেন না। সেটি কখনও মনস্থ হবেনা। অনেক মায়াবাদী আছে, তারা নিয়ত সক্রিয় : " ঈশ্বর কি?" নেতি নেতি: "এটি নয়, এটি নয়, এটি নয়। ব্রহ্ম কী?" অতএব সেই প্রক্রিয়াটি দ্বারা আপনি কখনই ঈশ্বর কী তা বুঝতে সক্ষম হবেন না। জ্ঞানে প্রয়াসে উদাপাস্য নমন্ত এব। শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু এই সূত্রটি গ্রহণ করেছেন। জ্ঞান দ্বারা, আপনার পাণ্ডিত্যপূর্ণ বৃত্তি দ্বারা, যদি আপনি বুঝতে চান - আপনি খুব উচ্চমানের পণ্ডিত হতে পারেন - তবে ঈশ্বরকে বোঝার জন্য সেটি আপনার যোগ্যতা নয়। সেটি যোগ্যতা নয়। আপনাকে নিজের অহংকার ত্যাগ করতে হবে "আমি ধনী," "আমি খুব জ্ঞানবান্ ," "আমি খুব সুন্দর," "আমি খুব ...," ইত্যাদি, ইত্যাদি। সেগুলি হল জন্মৈশর্য শ্রুত শ্রী (শ্রীমদ্ভাগবতম্ ১.৮.২৬)। সেগুলি যোগ্যতা নয়। কুন্তীদেবী বলেছেন, অকিঞ্চন গোচরঃ "শ্রীকৃষ্ণ, আপনি অকিঞ্চন গোচরঃ।" অকিঞ্চন। কিঞ্চন এর অর্থ যদি কেউ মনে করে "আমার কাছে এটি আছে; তাই আমি শ্রীকৃষ্ণকে কিনতে পারি," ওহ, না, না। সেটা সম্ভব নয়। আপনাকে শুন্য হয়ে যেতে হবে, অকিঞ্চন গোচরঃ।