BN/Prabhupada 0623 - আত্মা এক দেহ থেকে অন্য দেহে স্থানান্তরিত হচ্ছে
Lecture on BG 2.13 -- Pittsburgh, September 8, 1972
শ্রীল প্রভুপাদঃ
- দেহিনোহস্মিন্ যথা দেহে
- কৌমারম্ যৌবনং জরা
- তথা দেহান্তর প্রাপ্তি
- র্ধীরস্তত্র ন মুহ্যতি
বর্তমান সময়ে এই হচ্ছে সমস্যা। এই দেহের সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ শক্তি সম্পর্কে লোকেদের কোনও শিক্ষা নেই। ভগবদ্গীতায় এটি বর্ণনা করা হয়েছে, 'দেহী'। দেহী মানে দেহের মালিক। আমরা সকলেই, কেবল মানুষজাতিই নয়। মানুষের চেয়ে নিম্নতর প্রজাতির প্রাণিরাও, সমস্ত জীবেরা ... ৮৪ লক্ষ বিভিন্ন প্রজাতির জীব রয়েছে। তাদের বলা হয় দেহী। দেহী মানে এই দেহের মালিক। কুকুর, বিড়াল, মানুষ, রাষ্ট্রপতি, অথবা উচ্চতর বা নিম্নতর, বিভিন্ন প্রজাতির জীব। প্রত্যেকেই দেহের মালিক। আমরা সেটির অভিজ্ঞতা পেতে পারি। আপনার দেহের সমস্ত ব্যথা এবং আনন্দ সম্পর্কে আপনি জানেন। আমি জানি এই দেহের আনন্দ-বেদনাগুলো কি কি। প্রকৃতি আমাদের কর্মক্ষেত্ররূপে এই দেহ দিয়েছে। ভিন্ন ভিন্ন দেহে আমরা ভিন্ন ভিন্ন ধরণের কাজ করে চলছি। এমন নয় যে আপনার আর আমার কার্যক্রম একই। কুকুরের কাজ আর মানুষের কাজ আলাদা। কারণ কুকুর এক ভিন্ন ধরণের শরীর পেয়েছে আর আমি আরেক ধরণের শরীর পেয়েছি। আমরা প্রত্যেকেই। দেহিনোহস্মিন্ যথা দেহে। (গীতা ২.১৩) দেহী বা জীবসত্ত্বা বা জীবনীশক্তি এই দেহের অভ্যন্তরে অবস্থান করছে।
তাই দেহের পরিবর্তন হচ্ছে। দেহিনোহস্মিন্ যথা দেহে কৌমারম্ যৌবনং জরা। (গীতা ২.১৩) কৌমারং মানে কুমার অবস্থা। যৌবনং মানে যৌবনাবস্থা আর জরা মানে বৃদ্ধাবস্থা। বৃদ্ধ দেহ। আমি স্মরণ করতে পারি, আমি একজন বৃদ্ধলোক, আমি স্মরণ করতে পারি, আমার একটি বালক শরীর ছিল, আমার একটি যুবক শরীর ছিল, আর এখন আমি এই বৃদ্ধ শরীরটি পেয়েছি। যদিও বালক বা যুবক শরীরটি আর নেই, কিন্তু আমি রয়ে গেছি। এটি হচ্ছে বাস্তব। সকলেই এটি বুঝতে পারে। তার অতীত, বর্তমান এবং ভবিষ্যত রয়েছে। তোমরা যুবক-যুবতীরা সকলেই এখানে আছো। তোমাদের প্রত্যেকেরই বাল্যাবস্থার বা শৈশবকালীন দেহ ছিল। একইভাবে তোমাদের একটি ভবিষ্যত দেহও হবে। সেটি অপেক্ষা করছে। আমি ইতিমধ্যেই পেয়েছি আর তোমাদের জন্য তা প্রতীক্ষা করছে। তাই অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যত, আমরা আপাতভাবে জীবনের এই সবকটি অবস্থাই বুঝতে পারি। অতএব সিদ্ধান্তটি হচ্ছে যে, যখন আমি আমার এই বৃদ্ধ দেহ যা আমি একহ্ন পেয়েছি... আমার বয়স ৭০ বছর। যখন এই দেহটি শেষ হয়ে যাবে, আমি আরেকটি দেহ পাব। যেহেতু আমি ধারাবাহিকভাবে শৈশব থেকে বাল্য, বাল্য থেকে যৌবন, তারপর বৃদ্ধ দেহও পেয়েছি, তাহলে কেন ভবিষ্যতে কোন দেহ হবে না? এটি একটি সরল সত্য যে জীবাত্মা এক দেহ থেকে অন্য দেহে স্থানান্তরিত হচ্ছে। পারমার্থিক জ্ঞানের এটি একটি মৌলিক নীতি। দেহের সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ শক্তি হচ্ছে চিন্ময় আত্মা। এটি কোন জড় বস্তুর যান্ত্রিক ব্যবস্থাপনা নয়। আধুনিক তথাকথিত বৈজ্ঞানিকেরা, তারা মনে করে এই দেহ হচ্ছে কিছু জড় বস্তুর সমন্বয় মাত্র এবং কোন এক নির্দিষ্ট সময়ে এই জড়ের সমন্বয়টি জীবসত্ত্বার লক্ষণ দেখাতে শুরু করেছে। কিন্তু তা সত্য নয়। যদি তাই সত্যি হোত, তাহলে বৈজ্ঞানিকেরা রাসায়নিক পদার্থ দিয়ে একটি জীবদেহ তৈরি করতে পারতো। কিন্তু বিজ্ঞানীরা আজ পর্যন্ত একটি পিঁপড়ের দেহ পর্যন্ত তৈরি করতে পারে নি, আর অন্যান্য বড় কোন প্রাণী তৈরির কথা আর কিই বা বলার আছে?