BN/Prabhupada 0663 - শ্রীকৃষ্ণের সঙ্গে তোমার হারানো সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠা কর। সেটিই হচ্ছে যোগাভ্যাস



Lecture on BG 6.13-15 -- Los Angeles, February 16, 1969

তমাল কৃষ্ণঃ "যোগাভ্যাসের চরম লক্ষ্যটি কি, তা এখানে সুন্দরভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে।

শ্রীল প্রভুপাদঃ সুন্দরভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। যোগের উদ্দেশ্যটি কি? তারা যোগী হয়ে খুব গর্ব করে আর বিভিন্ন ধরণের যোগ সোসাইটি, ধ্যান, এটা, সেটা ইত্যাদিতে অংশ নেয়। কিন্তু এখানে বলা হয়েছে যোগ অভ্যাস মানে কি। পরিষ্কারভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। পড়।

তমাল কৃষ্ণঃ যোগ অভ্যাস করা মানে কোন জাগতিক সুযোগ-সুবিধা লাভ করা নয়। এর উদ্দেশ্য হচ্ছে সমস্ত জাগতিক অস্তিত্বের নিবৃত্তি সাধন করা।"

শ্রীল প্রভুপাদঃ যতক্ষণ পর্যন্ত তোমার জাগতিক সুখ-সুবিধার দরকার তুমি তা পাবে, কিন্তু সেইটিই জীবনের সকল সমস্যার সমাধান নয়। আমার মনে হয় তোমরা আমেরিকান ছেলে-মেয়েরা যে কোন অন্য দেশের চেয়ে বেশি জাগতিক সুযোগ-সুবিধা ভোগ করেছ। ভারতের চেয়ে অন্তত বেশি, সেটি আমি আমার অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি। আমি অনেক দেশ ঘুরেছি, জাপানেও গিয়েছি। কিন্তু তোমরা অনেক বেশি উন্নত অবস্থানে আছ। কিন্তু তোমাদের কি মনে হয় তোমরা জীবনে শান্তি লাভ করেছ? তোমাদের মধ্যে এমন কেউ আছো যে বলতে পারবে, "হ্যাঁ আমি সম্পূর্ণ শান্তিতে আছি"? তাহলে এই দেশের যুব সম্প্রদায় কেন এতোই হতাশ আর দ্বিধাগ্রস্ত? সুতরাং যতক্ষণ আমরা এই যোগাভ্যাসকে কেবল জাগতিক সুযোগ-সুবিধা পেতে ব্যবহার করব, ততক্ষণ শান্তি লাভের কোন প্রশ্নই আসে না। যোগ অভ্যাস কেবল শ্রীকৃষ্ণকে উপলব্ধি করার জন্য, ব্যাস। অথবা শ্রীকৃষ্ণের সঙ্গে তোমার হারানো সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার জন্য। সেইটিই হচ্ছে যোগ। এরপর পড়।

তমাল কৃষ্ণঃ যে ব্যক্তি সুস্বাস্থ্যের জন্য কিংবা জাগতিক কিছু লাভের আশায় ..."

শ্রীল প্রভুপাদঃ সাধারণত এই সমস্ত যোগাভ্যাস স্বাস্থ্যের উন্নতির নামে চলছে। কেউ কেউ মেদ কমানোর জন্য যাচ্ছে। দেখেছ তোমরা? মেদ কমাতে যাচ্ছে। কারণ তোমরা ধনী দেশ। বেশি বেশি খাও আর মোটা হও, আর তারপর আবার পয়সা দিয়ে যোগ ক্লাসে গিয়ে সেই মেদ কমাও। এসবই চলছে। অন্য একদিন আমি একটি বিজ্ঞাপন দেখছিলাম। "আপনার মেদ কমান"। মেদ বাড়িয়েছিলে কেন? মূর্খ সেটি বুঝবে না যে আমাকে যদি সেটি কমাতেই হয় তাহলে আমি সেটি বাড়াবোই বা কেন? সরল-সাধারণ কিছু খেয়ে সন্তুষ্ট হচ্ছ না কেন? যদি তুমি শস্যদানা, তরি-তরকারী আর হালকা খাবার খাও, তমি কখনই মোটা হবে না। কখনই মোটা হবে না। খাওয়াটা যত সম্ভব কমিয়ে আনো। রাতে খেও না। এইভাবে যোগ অভ্যাস কর। যদি তুমি পেটুক হও,... দুই ধরণের রোগ আছে। পেটুক লোকেরা ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত হয় আর যারা পরিমিত পরিমাণের চেয়ে কম খায় তাদের যক্ষা রোগ হয়। তাই তুমি বেশিও খেতে পার না আর কমও খেতে পার না। যতটা দরকার ততটাই কেবল খাও। যদি তুমি বেশি খাও নিশ্চিত তুমি রোগাক্রান্ত হবে। আর যদি তুমি পরিমাণের চেয়ে কম খাও তাহলেও রোগাক্রান্ত হবে। সে সম্পর্কে ব্যাখ্যা করা হবে। যুক্তাহার বিহারস্য ... যোগ ভবতি সিদ্ধি ন (ভগবদগীতা ৬.১৭) তোমাকে না খেয়ে থাকতে বলা হচ্ছে না, কিন্তু অতিরিক্ত খেও না। আমাদের কর্মসূচী হচ্ছে তুমি কৃষ্ণপ্রসাদ পাও। আহারের প্রয়োজন আছে। যে কোন কিছু অভ্যাসের জন্যই তোমাকে তোমার স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে হবে। তাই আহার করার দরকার আছে। কিন্তু অত্যাহার কর না। আবার প্রয়োজনের চেয়ে কমও খেও না। আমরা বলি না তুমি কম খাও। যদি তুমি দশ পাউন্ড খেতে পার, তো খাও। কিন্তু যদি তুমি দশ পাউন্ড খেতে না পার, তাহলে লোভের বশবর্তী হয়ে তুমি যদি দশ পাউন্ড খাও তাহলে তোমাকে রোগে ভুগতে হবে। তাই এখানে কি বলা হচ্ছে? কোনও জাগতিক সুযোগ সুবিধার জন্য নয়। পড়।