BN/Prabhupada 0725 - বিষয়গুলো এতো সহজ হবে না, মায়া খুব শক্তিশালী



Lecture on SB 7.9.22 -- Mayapur, February 29, 1976

তখন একে মনুষ্য জীবন বলা হবে, যখন কেউ বুঝতে পারে... পশু জীবনে পশুরা বুঝতে পারেনা দুর্ভোগ কি কুকুর বেড়াল মনে করে যে ওরা খুব সুখেই আছে কিন্তু মনুষ্য জীবনে এই উপলব্ধি হওয়া উচিৎ যে "আসলে আমরা সুখে নেই, আমরা কালের চক্রে অনেক ভাবে পিষ্ট হচ্ছি" নিষ্পীড়িয়মানম্‌ । যখন এই বোধ আসে তখন তাকে মনুষ্য জীবন বলা হয় অন্যথায় সে একটা পশু যদি সে মনে করে সে ভালই আছে ... শতকরা ৯৯.৯ ভাগ লোক মনে করে "আমি ভালই আছি" এমনকি কুকুর শুকরের মতো সবচেয়ে জঘন্য অবস্থায় থাকলেও, ওরা ভাবে, "ওহ্‌ আমি সুখেই আছি" এই ধরণের অজ্ঞানতা যতদিন চলতে থাকবে, সে একটা পশু ছাড়া কিছুই না যস্যাত্মবুদ্ধি কুণপে ত্রিধাতুকে স্ব-ধী কলত্রাদিষু ভৌম ইজ্যধীঃ (শ্রীমদ্ভাগবত ১০/৮৪/১৩) এটাই চলছে। আত্মবুদ্ধি, ত্রিধাতুকে যে দেহটি কেবল কফ-পিত্ত ও বায়ু দ্বারা নির্মিত সে ভাবছে "আমি এই দেহ" সারাটা দুনিয়া এই মনোভাবেই চলছে এই কৃষ্ণভাবনামৃত আন্দোলনের কেবল কয়েকজন মাত্র আমরা ঘরে ঘরে যাচ্ছি এবং তাদেরকে বোঝানোর চেষ্টা করছি যে "মশাই, আপনি এই শরীরটি নন" ওরা এসবে পরোয়া করে না, "আমি এই দেহ" "আমি জন বাবু" "আমি ইংরেজ, আমি আমেরিকান, আমি ভারতীয়," - আর আপনারা বলছেন আমি দেহ নই" তাই ওদের বোঝানো খুব কঠিন কাজ এই কৃষ্ণভাবনামৃতকে সামনে এগিয় নিয়ে যেতে গেলে তাই অত্যন্ত ধৈর্য, সহিষ্ণুতা ও অধ্যবসায়ের প্রয়োজন। কিন্তু শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর নির্দেশ,

তৃণাদপি সুনীচেন
তরোরিব সহিষ্ণুনা
অমানিনা মানদেন
কীর্তনীয় সদা হরিঃ
(চৈতন্য চরিতামৃত আদিলীলা ১৭/৩১)

তাই যারা এই কৃষ্ণ ভাবনামৃত প্রচার কার্যক্রম গ্রহণ করেছেন, তাঁদের এটি জানা উচিৎ যে এতে সাফল্য এতো সহজেই আসবে না মায়া অত্যন্ত শক্তিশালী, খুব খুবই শক্তিশালী কিন্তু তারপরেও আমাদেরকে মায়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে যেতেই হবে। এই আন্দোলন হচ্ছে মায়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করা মায়া বদ্ধ জীবকে তাঁর নিয়ন্ত্রণের অধীনে রাখছে এবং আমরা চেষ্টা করছি সেই জীবকে তাঁর করাল গ্রাস থেকে বের করা আনা। এটিই হচ্ছে পার্থক্য কালোবাসিকৃত বিসৃজ্য বিসর্গ শক্তিঃ এই বিসর্গ শক্তিঃ অত্যন্ত শক্তিশালী , কিন্তু তা কারও অধীনে আছে যদিও মায়া অত্যন্ত শক্তিশালী , তবু তিনি শ্রীকৃষ্ণের অধীনে আছেন ময়াধ্যক্ষেণ প্রকৃতি সূয়তে স চরাচরম্‌ (গীতা ৯/১০) যদিও প্রকৃতি খুব সুন্দরভাবে কাজ করছে বলতে চাচ্ছি যে তিনি তাঁর একটি বিরাট দায়িত্ব সম্পাদন করছেন যেমন মেঘ আসার সঙ্গে সঙ্গে কোন উজ্জ্বল আলো নেই এক সেকেন্ডের মধ্যে অনেক বড় বড় মেঘ আসতে পারে এবং ধ্বংস নিয়ে আসতে পারে সেটি সম্ভব। এই হচ্ছে মায়ার কাজ কিন্তু তবু তিনি ভগবান শ্রীকৃষ্ণের অধীনে আমরা দেখি সূর্য কতো বিশাল পৃথিবীর চেয়ে ১৪০ লক্ষ গুণ বড় সকাল বেলা তোমরা দেখেছ যে তা কতো তাড়াতাড়ি উদয় হচ্ছে সূর্যের গতি প্রতি সেকেন্ডে ১৬ হাজার মাইল । তাহলে কীভাবে তা হচ্ছে ? যস্যাজ্ঞয়া ভ্রমতি সংভৃতকালচক্রো গোবিন্দম্‌ আদি পুরুষম্‌ তম অহম্‌ ভজামি (ব্রহ্মসংহিতা ৫/৫২) তা শ্রীগোবিন্দের নির্দেশে হচ্ছে , তাই তিনি হচ্ছেন বিভু তিনি বিশাল , কিন্তু আমরা জানি না যে তিনি কতোটা বিশাল তাই আমরা মূর্খের মতো কোন ভণ্ড প্রতারককে ভগবান বলে মেনে নিই আমরা জানি না ভগবান মানে কি। আজকাল এসবই চলছে , আমরা মূর্খ অন্ধ যথা অন্ধৈ উপনিয়মানাঃ। আমরা অন্ধ, আর অন্য একটা অন্ধ আমাদেরকে নেতা হয়ে নিয়ে যাচ্ছে "আমি ভগবান, তুমি ভগবান, প্রত্যেকেই ভগবান।" কিন্তু ভগবান আসলে সেরকম নন এখানে বলা হচ্ছে ভগবান কে ... কালোবাসিকৃতবিসৃজ্য বিসর্গ শক্তিঃ তিনি কাল ও সৃষ্টিশক্তির ওপর নিয়ন্ত্রণ করেন" তিনি হলেন ভগবান