BN/Prabhupada 0778 - মানব সভ্যতার প্রতি সবচেয়ে বড় অবদান হচ্ছে জ্ঞান



Lecture on SB 6.1.17 -- Denver, June 30, 1975

নিতাইঃ "এই জড় জগতে শুদ্ধভক্তদের পদাঙ্ক অনুসরণ করে যারা ভাল ব্যবহার সম্পন্ন এবং সমস্ত ভাল গুণাবলী দ্বারা পূর্ণ যেহেতু তাঁরা পূর্ণভাবে ভগবান নারায়ণের সেবার আশ্রয় নিয়েছেন তাদের জীবন সম্পূর্ণ পবিত্র তাঁরা নির্ভীক এবং শাস্ত্র অনুমোদিত।"

প্রভুপাদঃ

সধৃচীনো হ্য অয়ম্‌ লোকে
পন্থান্‌ ক্ষেমোহকুভ্যঃ
সুশীলঃ সাধবো যত্র
নারায়ণ-পরায়ণঃ
(ভাগবত ৬/১/১৭)

তাই শাস্ত্রে বলা হচ্ছে ভক্তসঙ্গ ... নারায়ণ-পরায়ণঃ মানে ভক্ত। নারায়ণ-পরঃ যারা জীবনের চরম লক্ষ্য হিসেবে নারায়ণের শরণ নিয়েছেন নারায়ণ, কৃষ্ণ, বিষ্ণু - তাঁরা সবাই একই তত্ত্ব, বিষ্ণুতত্ত্ব। মানুষ জানে না যে নারায়ণ, শ্রীবিষ্ণু বা শ্রীকৃষ্ণের পূজা করার স্তর হচ্ছে সর্বশ্রেষ্ঠ স্তর এবং তা নিশ্চিত সাফল্যের স্তর। ঠিক যেমন আমরা ইনস্যুরেন্স পাই, তেমনই এই স্তর নিশ্চিত। কার দ্বারা নিশ্চিত? শ্রীকৃষ্ণের দ্বারা নিশ্চিত। শ্রীকৃষ্ণ নিশ্চিত করছেন। অহম্‌ ত্বাম্‌ সর্বপাপেভ্য মোক্ষয়িস্যামি (গীতা ১৮.৬৬) কৌন্তেয় প্রতিজানীহি ন মে ভক্তঃ প্রণশ্যতি (গীতা ৯/৩১) অপি চেৎ সুদুরাচারো ভজতে মাম্‌ অনন্যভাক্‌ সাধুরেব স মন্তব্য (গীতা ৯/৩০) অনেকবার নিশ্চিত করা হয়েছে। নারায়ণপর। শ্রীকৃষ্ণ ব্যক্তিগতভাবে বলেছেন, "আমি তোমাকে রক্ষা করব"। মানুষ অজ্ঞানতা বা পাপকর্মের ফল ভোগ করছে অজ্ঞানতার কারণে তারা পাপকর্ম করছে এবং তার ফল ভোগ করছে। ঠিক যেমন একটি শিশু অজ্ঞানতার বশবর্তী হয়ে আগুন ধরছে এবং ফলে তার হাত পুড়ে এবং সে কষ্ট পায়। তুমি বলতে পারো না যে "শিশুটি অবুঝ, তাও আগুন লাগল।" না। এটি প্রকৃতির নিয়ম, অজ্ঞানতা। অজ্ঞানতার কারণে পাপ করা হয়। তাই মানুষকে জ্ঞানের পর্যায়ে আসতে হবে। অজ্ঞানতার অজুহাত দেখিয়ে কিছু হবে না। যদি তুমি আদালতে গিয়ে বল যে, "মহাশয়, আমি জানতাম না যে আমাকে শাস্তি পেতে হবে, চুরি করার কারণে আমাকে ছয় মাসের জন্য জেলে যেতে হবে। এটা আমার জানা ছিল না..."। না। জানো বা নাই জানো, তোমাকে জেলে যেতেই হবে

তাই মনুষ্য জীবনের জন্য সবচেয়ে বড় অবদান হচ্ছে জ্ঞান। অজ্ঞানতায় থাকা, অন্ধকারে থাকা সেটি মানব সমাজ নয়, সেটি কুকুর বেড়ালের সমাজ ... কারণ তারা অজ্ঞানতায় আছে, কেউই ওদের জ্ঞান দিতে পারবে না, আর ওরাও জ্ঞান নিতে পারবে না। তাই মানব সমাজে জ্ঞান বিতরণের জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে সেটি সবচেয়ে বড় অবদান। এবং সর্বশ্রেষ্ঠ জ্ঞান আছে বৈদিক শাস্ত্রে। বেদৈশ্চ সর্বৈঃ (গীতা ১৫.১৫)। এবং সমস্ত বেদে বলা হয়েছে মানুষের জানা উচিৎ ভগবান কে। সেটিই আমরা চাই (পাশ থেকে)ঃ আওয়াজ করো না। বেদৈশ্চ সর্বৈঃ। মানুষ জানে না। সারা পৃথিবী জানে না যে প্রকৃত জ্ঞান কি। তারা ইন্দ্রিয় তৃপ্তির জন্য অস্থায়ী জিনিস নিয়েই ব্যস্ত কিন্তু তারা জানে না যে জ্ঞানের প্রকৃত লক্ষ্য কি ন তে বিদুঃ স্বার্থ গতিম্‌ হি বিষ্ণুং (ভাগবত ৭/৫/৩১) জ্ঞানের পরম লক্ষ্য হচ্ছে ভগবান শ্রীবিষ্ণুকে জানা। সেটিই জ্ঞানলাভের লক্ষ্য অথাতো ব্রহ্মজিজ্ঞাসা। জীবস্য তত্ত্বজিজ্ঞাসা (ভাগবত ১/২/১০) এই মানুষ জন্ম হচ্ছে পরম সত্যকে জানার জন্য। সেটিই হচ্ছে জীবন। এবং সেই পরম সত্যকে জানতে না চেয়ে আমরা যদি কেবল কিছু একটা খেয়ে পড়ে বাঁচতেই ব্যস্ত হয়ে থাকি কীভাবে আরাম করে ঘুমাতে পারি অথবা আরাম করে মৈথুন জীবন ভোগ করতে পারি এসব পশুদের কাজ। পশুর প্রবৃত্তি। মানব সমাজের উদ্দেশ্য হচ্ছে ভগবানকে জানা। সেটিই হচ্ছে মনুষ্যসুলভ কাজ ন তে বিদুঃ স্বার্থ গতিম্‌ হি বিষ্ণুম্‌ দুরাশয়া যে বহিরর্থমানিনাঃ (ভাগবত ৭/৫/৩১) এই কথা না জেনে ওরা কেবল অস্তিত্বের সংগ্রাম করে চলেছে তারা বহিরঙ্গা শক্তির সাথে কোন ভাবে আপস করে সুখী হতে চাইছে। বহিরর্থমানিনাঃ। আর লোকজন, নেতারা, অন্ধা যথান্ধৈঃ উপনীয়মানাঃ (ভাগবত ৭/৫/৩১) বড় বড় বিজ্ঞানী, দার্শনিকদের জিজ্ঞাসা কর, "জীবনের পরম উদ্দেশ্য কি?" তারা জানে না। তারা শুধু বিভিন্ন তত্ত্ব দেবে। ব্যাস্‌। জীবনের পরম উদ্দেশ্য হচ্ছে ভগবানকে জানা