BN/Prabhupada 0817 - কেবল "আমি খ্রিষ্টান, আমি হিন্দু, আমি মুসলমান", এসবে কোন লাভ নেই



751019 - Lecture BG 04.13 - Johannesburg

সুতরাং আমাদের অবশ্যই ধর্মীয় পদ্ধতি গ্রহণ করা উচিত। এটাই মনুষ্যধর্ম। আপনি যে কোনও ধর্মব্যবস্থা গ্রহণ করুন, তবে আপনার অবশ্যই জানা উচিত যে ধর্মের উদ্দেশ্য কী, এই নয় যে কেবল ভান করবে "আমি খ্রিস্টান," "আমি হিন্দু," "আমি মুসলমান।" তবে ধার্মিক হওয়ার উদ্দেশ্য কী? তা আপনার অবশ্যই জানা উচিত। সেটাই হল বুদ্ধিমত্তা। কেবল "আমি খ্রিস্টান," "আমি হিন্দু," "আমি মুসলিম" বলে গর্বিত হবেন না। ঠিক আছে, আপনার কোনও ধরণের পদবি রয়েছে। তবে শ্রীমদ্ভাগবত বলেন যে ধর্মব্যবস্থা নিখুঁত। সেটা কি? স বৈ পুংসাং পরো ধর্মো যতো ভক্তিরধোক্ষজে (শ্রীমদ্ভাগবত ১/২/৬)। "সেই ধর্ম, সেই ধর্মব্যবস্থা, নিখুঁত।" স বৈ পুংসাং পরো। পরো অর্থাৎ নিখুঁত, কোনও ত্রুটি ছাড়া। সেটা কি? যতো ভক্তিরধোক্ষজে: "যার দ্বারা, সেই ধর্মীয় ব্যবস্থার অনুগামী হয়ে, আপনি যদি ভগবানের ভক্ত হয়ে থাকেন, তবে তা নিখুঁত। তিনি বলেন না যে আপনি হিন্দু হন বা আপনি মুসলমান হন অথবা আপনি খ্রিস্টান বা বৌদ্ধ বা অন্য কিছু হয়ে যান। এটি অত্যন্ত উদার, যে যেই ধর্ম ব্যবস্থাই গ্রহণ করুন, তাতে কোনও ক্ষতি নেই; ঠিক আছে। তবে পরিণামটি দেখুন। পরিণামটি কি? যতো ভক্তিরধোক্ষজে: আপনি ভগবানেকে বুঝতে পেরেছেন কিনা এবং আপনি ভগবানের উপাসক হয়ে উঠেছেন কিনা। অতএব আপনার ধর্ম নিখুঁত। কেবল 'আমি খ্রিস্টান,' 'আমি হিন্দু,' 'আমি মুসলমান,' এই চিহ্নিতকরণের কোনও লাভ নেই। শ্রীমদ্ভাগবতে তাও ব্যাখ্যা করা হয়েছে।

ধর্মঃ স্বনুষ্ঠিতঃ পুংসাং
বিশ্বকসেনকথাসু যঃ
নোৎপাদয়েদ্ রতিং যদি
শ্রম এব হি কেবলম্
(শ্রীমদ্ভাগবত ১/২/৮)।

ধর্মঃ স্বনুষ্ঠিতঃ, আপনি যে ধর্মই অনুসরণ করেন না কেন তাতে কিছু যায় আসে না। এবং আপনি খুব সুন্দরভাবে নির্বাহ করছেন। সেই ধর্মব্যবস্থা অনুযায়ী, আপনি নিয়ম এবং প্রবিধানগুলি অনুসরণ করছেন এবং সবকিছু করছেন। ধর্মঃ স্বনুষ্ঠিতঃ পুংসাং: "যত্নসহকারে সেই ধর্মীয় নীতি নির্বাহ করে," বিশ্বকসেনকথাসু যঃ, "আপনি যদি ভগবান সম্পর্কে আরও বেশি করে বুঝতে অধীর না হন ..." বিশ্বকসেনকথা... বিশ্বকসেন অর্থাৎ ভগবান। কথাসু যঃ, নোৎপাদয়েদ্ রতিং যদি: "আপনি যদি আরও বেশি করে ভগবান সম্পর্কে শুনতে অনুরক্ত না হন, তবে তা হল "শ্রম এব হি কেবলম্," "কেবল সময়ের অপচয়।" কেবল সময়ের অপচয়, কারণ ধর্মের অর্থ ধর্মং তু সাক্ষাদ্গবত্প্রণীতং (শ্রীমদ্ভাগবত ৬/৩/১৯)। ধর্ম অর্থাৎ ভগবান প্রদত্ত আদেশ, এবং আপনি তা অনুসরণ করেন। এটিই হল ধর্মের সরল সংজ্ঞা। অন্যান্য ধর্মীয় অনুষ্ঠান, এটাই মূলনীতি গির্জায় যাওয়া বা মন্দিরে যাওয়া, এগুলি ভেতরের বিস্তারিত ব্যাপার তবে প্রকৃত ধর্ম মানে, ধর্মের সারমর্ম হল, ধর্ম, অর্থাৎ ভগবানের আদেশ অনুসরণ করা। ব্যাস্‌। সেটাই ধর্ম। ধর্মং তু সাক্ষাদ্‌ ভগবৎপ্রণীতং।

আপনি ধর্ম তৈরি করতে পারেন না। এবং যা প্রকৃত ধর্ম, যদি আপনি অনুসরণ করেন, তবে আপনি ধার্মিক। প্রকৃত ধর্ম হল ভগবানের আদেশ। সেটাই হল... ভগবানকে বোঝার জন্য প্রত্যেকে ধর্মের কিছু নীতি অনুসরণ করে। এবং আমাদের বৈদিক ব্যবস্থায় জীবনের একমাত্র উদ্দেশ্য হল ভগবৎ উপলদ্ধি করা। অথাতো ব্রহ্ম জিজ্ঞাসা। মানব জীবনে আমাদের অন্য কোনও কর্ম নেই। অন্যকিছু না। অন্যান্য কর্ম, বিড়াল এবং কুকুরও করছে এবং আমরাও করছি। তা স্বাভাবিক। এমন নয় যে অন্যান্য প্রাণীরা, তারা অনাহারী। তারাও খাদ্য গ্রহণ করছে এবং আমরাও খাদ্য গ্রহণ করছি। তবে সুবিধাটি হল, অন্যান্য প্রাণীরা মানুষের চেয়ে নিম্নতর, জীবিকা উপার্জন করার জন্য তাদের কোনও কৰ্ম বা কোনও পেশা অনুসরণ করতে হয়না অথবা একটি দেশ থেকে অন্য দেশে যেতে হয়না। এটাই তাদের সুবিধা। এবং আমাদের অসুবিধাটি হল আমরা উত্তম খাদ্যদ্রব্য সন্ধানের চেষ্টা করছি এবং সম্পূর্ণ বিশ্ব ভ্রমণ করছি, এবং তবুও আমরা পাচ্ছি না। সুতরাং তাদের আরও ভাল সুবিধা আছে। পাখিরা, ছোট পাখিরা, তারা সকালে, খুব ভোরবেলায় উঠে পরে এবং তারা কূজন করে এবং উড়ে যায়, কারণ তারা নিশ্চিত যে "আমরা যেখানেই যাই, আমাদের খাদ্য প্রস্তুত।" এবং সেটি সত্য। তারা যে কোনো গাছে যায়। পাখিটি কি খাবে? চার, পাঁচটি ছোট ফল। তবে একটি গাছে অসংখ্য ফল আছে রয়েছে এবং অসংখ্য গাছ আছে। একইভাবে, যে কোনো প্রাণী নিন, এমনকি হাতিও। আফ্রিকাতে অনেক হাতি আছে, কয়েক লক্ষ হাতি। তারা একবারে চল্লিশ কেজি খায়, কে এই খাবার সরবরাহ করছে? তাদের কোনও কৰ্ম নেই। তাদের কোনও পেশা নেই। তারা কিভাবে খাচ্ছে? হুঁ?