BN/Prabhupada 0834 - ভক্তি শুধু ভগবানের জন্য প্রযোজ্য



Lecture on SB 3.25.19 -- Bombay, November 19, 1974

জড় গুণের দ্বারা কম প্রভাবিত হতে চাইলে জ্ঞান, বৈরাগ্য ও ভক্তির স্তরে উন্নীত হতে হবে। অন্যথায় তা সম্ভব না। এবং সেই একই প্রক্রিয়ার ওপর আবারও জোর দেওয়া হচ্ছেঃ ন যুজ্যমানায়া ভক্ত্যা ভগবতি (শ্রীমদ্ভাগবতম্‌ ৩.২৫.১৯)... ভক্তি কোথায় প্রযুক্ত হতে হবে? কেউ কেউ বলে, "আমি ভক্তি পেয়ে গেছি।" তোমার ভক্তি কোথায়? "এখন আমার স্ত্রীর প্রতি খুব ভক্তি আছে। আমি ওকে খুব ভালবাসি। আমি তার খুব যত্ন নিই। আমি ওকে দেখতে না পেলে পাগল হয়ে যাই"। এই ধরণের ভক্তির কথা এখানে বলা হয় নি। "আমার পরিবারের প্রতি ভক্তি আছে। আমার দেশের প্রতি ভক্তি আছে। দেবী দুর্গার প্রতি ভক্তি আছে। আমার অনেক দেব-দেবীদের প্রতি ভক্তি আছে ... " না। সেই ধরণের ভক্তি কাজে লাগবে না । তাই এখানে বিশেষভাবে বলা হয়েছে, ভক্ত্যা ভগবতি। ভগবতি - "পরমেশ্বর ভগবানের প্রতি" , কোন ভগবান? আজকাল অনেক ধরণের ভগবান আছে না। সেই রকম ভগবান নয়। কোন ধরণের? অখিলাত্মনি। তুমি এই তথাকথিত ভগবানকে জিজ্ঞাসা কর, "আপনি কি অখিলাত্মনি"? আপনি কি সবার হৃদয়ে আছেন? আমি এখন বলতে পারবেন আমি কি ভাবছি?

তাই ভগবান মানে তিনি অবশ্যই অখিলাত্মা হবেন। এইসব তথাকথিত ভগবানদের দ্বারা ভ্রান্ত পথে পরিচালিত হবে না। সবকিছুই বলা আছে। ভগবান মানে অখিলাত্মনি। তিনি সর্বজ্ঞ। শ্রীকৃষ্ণ ভগবদ্গীতাতে বলছেন, ঈশ্বর সর্বভূতানাম্‌ হৃদ্দেশে (গীতা ১৮/৬১) যদি তুমি ঈশ্বর হও, তাহলে তোমাকে অবশ্যই সকলের হৃদয়ে বাস করতে হবে। সর্বস্য চাহম্‌ হৃদি সন্নিবিষ্টঃ (গীতা ১৫/১৫) ঈশ্বর... শ্রীকৃষ্ণ হলেন ঈশ্বর তাই তিনি বলেছেন, সর্বস্য চাহম্‌ হৃদি সন্নিবিষ্টঃ "আমি সকলের হৃদয়ে উপবিষ্ট।" তাহলে তুমি যদি ঈশ্বরই হবে, ভগবানই হবে, তাহলে তুমি নিশ্চয়ই আমার হৃদয়েও আছ? তুমি কি জান আমি এখন কি ভাবছি? অখিলাত্মনি সমস্ত ব্যাপারগুলি খুব সূক্ষ্মভাবে খতিয়ে দেখতে হবে। ভক্তি কেবল ভগবানের জন্য এমনটা না যে, "আমার ভক্তি এই দেবতার জন্য, ঐ দেবতার জন্য... আমার পরিবারের জন্য, আমার দেশের জন্য, আমার সমাজের জন্য, আমার স্ত্রীর জন্য, আমার বেড়ালের জন্য, আমার কুকুরের জন্য"। তা ভক্তি নয়। সেগুলি নকল মাত্র। সেটি কাম। সেটি বাসনা। তা ভক্তি নয়। ভক্তি মানে ভগবতি। ভগবতি মানে অখিলাত্মনি।

তাই যদি আমাদের এই কৃষ্ণভাবনায় উন্নতি হয়, ভক্তি, তাহলে আমাদের জীবন সার্থক হবে। ব্রহ্মসিদ্ধয়ে। পূর্ণ আত্ম-উপলব্ধি সম্ভব হবে। তাই বলা হয়েছে, সদৃশ অস্তি শিবঃ পন্থাঃ। "না, আর কোন বিকল্প নেই।" যদি তুমি ... ব্রহ্ম সিদ্ধয়ে। ব্রহ্ম, পরব্রহ্ম হলেন কৃষ্ণ। ব্রহ্ম সিদ্ধয়ে মানে এই সম্পর্ক বুঝতে পারা... "আমি ব্রহ্ম"। ঠিক আছে, অহম্‌ ব্রহ্মাস্মি। কিন্তু পরব্রহ্মের সাথে তোমার কি সম্পর্ক? সেটি হচ্ছে ব্রহ্মসিদ্ধয়ে ব্রহ্ম এবং পরব্রহ্ম। দুই ব্রহ্ম আছেন কেন...? আত্মা, পরমাত্মা, ঈশ্বর, পরমেশ্বর। অনুচেতন ও পরমচেতন। নিত্যো নিত্যানাম্‌ চেতনশ্চেতনানাম্‌ (কঠোপনিষদ ২/২/১৩) এসব কিছু হচ্ছে বৈদিক তথ্য। সবসময় দুটি বিষয় থাকবে। আত্মা, পরমাত্মা, ব্রহ্ম, পরব্রহ্ম। এবং ব্রহ্ম সিদ্ধয়ে মানে শুধু এটা বোঝাই নয় যে, "আমি ব্রহ্ম" কিন্তু আমাকে অবশ্যই পরব্রহ্মের সাথে আমার সম্পর্ক বুঝতে হবে। সেটি হচ্ছে ব্রহ্ম সিদ্ধয়ে তার মানে আমাদের অবশ্যই পরম ব্রহ্মকে জানতে হবে। সেই পরম ব্রহ্ম হচ্ছেন শ্রীকৃষ্ণ