BN/Prabhupada 0851 - চর্বিত বস্তুর পুনরায় চর্বণ। এটাই হচ্ছে জাগতিক জীবন



750306 - Lecture SB 02.02.06 - New York

চর্বিত বস্তুর পুনরায় চর্বণ। এটাই হচ্ছে জাগতিক জীবন নিতাইঃ এইভাবে স্থির হয়ে, তাঁর সর্বব্যাপক শক্তির দ্বারা যিনি সকলের হৃদয়ে স্থিত, সেই পরমাত্মার সেবা করা উচিৎ কারণ তিনি নিত্য, অনন্ত পরমেশ্বর ভগবান তিনিই জীবনের পরম লক্ষ্য। এবং তাঁর সেবা করার দ্বারা জীবনের বদ্ধ অবস্থা থেকে মুক্তি লাভ করা যায়।"

প্রভুপাদঃ

এবম্‌ স্বচিত্তে স্বত এব সিদ্ধাত্মা
প্রিয়োহর্থো ভগবান অনন্তঃ
তম্‌ নিবৃত্ত নিয়তার্থো ভজেত
সংসারহেতু পরমশ্চ যত্র
(ভাগবত ২.২.৬)

কাল রাতে আমরা আলোচনা করছিলাম যে কেন একজন ব্যক্তি তাঁর ভরণপোষণের জন্য সেই ব্যক্তির কাছে ভিক্ষা করবে যে তার সম্পদের গর্বে গর্বিত সে তার নিজের থাকার ব্যবস্থা করতে পারে জীবনের বাঁচার অবস্থা হচ্ছে আহার- নিদ্রা- ভয়- মৈথুনম্‌ (হিতোপদেশ ২৫) যতক্ষণ কেউ বৈরাগীর আশ্রমে থাকে ... তাঁকে প্রথমে যৌন জীবন ত্যাগ করতে হবে এবং ভয়ের অবস্থা ত্যাগ করতে হবে সেটা হচ্ছে ত্যাগ। যেমন এখানে অনেক ব্রহ্মচারী, সন্ন্যাসী আছে তাঁরা ত্যাগীর আশ্রমে থাকার কথা, বিশেষ করে সন্ন্যাসী, ব্রহ্মচারী এবং বানপ্রস্থ ত্যাগ। প্রথম ত্যাগ হচ্ছে ইন্দ্রিয় তৃপ্তি পরিত্যাগ করা। তাই যিনি ত্যাগীর আশ্রমে আছেন, তাঁকে স্বামী বলা হয় স্বামী মানে প্রভু। বা গোস্বামী গো মানে ইন্দ্রিয়, স্বামী মানে প্রভু যিনি তাঁর ইন্দ্রিয়ের ওপর নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছেন তিনি গোস্বামী বা স্বামী না হলে, কেউ যদি তাঁর ইন্দ্রিয়ের দাস হয়, তাহলে কিভাবে সে স্বামী বা গোস্বামী হবে? প্রত্যেকটি কথার অর্থ আছে তাই ত্যাগ করতে হবে। এটা হচ্ছে জাগতিক জীবন জাগতিক জীবন মানে যেখানে সবাই ইন্দ্রিয় তৃপ্তিতে যুক্ত এবং সেটিকেই সভ্যতার উন্নতি ধরা হচ্ছে সেই একই ইন্দ্রিয় তৃপ্তি কিন্তু ভিন্ন ভিন্ন ভাবে, একই নেশা, একই মাংসাহার একই মৈথুন জীবন হয় এই ক্লাবে নয়তো বিবস্ত্র হয়ে আরেকটা ক্লাবে। তাই একই কাজ চলছে পুনঃ পুনশ্চর্বিত চর্বণানাম্‌ (ভাগবত ৭/৫/৩০), চর্বিত বস্তুর চর্বণ এটাই জাগতিক জীবন ত্যাগী জীবন মানে এই ইন্দ্রিয় তৃপ্তি

শেষ করা, ঠিক শেষ করা নয়, অন্তত নিয়ন্ত্রণ করা। সেটাই বৈরাগ্যের জীবন এবং বৈরাগী জীবন অবলম্বন না করলে তুমি ভগবদ্ধাম যেতে পারবে না ঠিক যেমন তোমার হাত রয়েছে সেই হাতে এমন কিছু আছে যা ভাল নয় আর তুমি যদি এর থেকে ভাল কিছু নিতে চাও, তোমাকে এটি ফেলে দিতে হবে এবং তারপর ভাল জিনিসটি গ্রহণ করতে হবে একই সঙ্গে দুটি জিনিস রাখতে পারবে না, তা সম্ভব না। তাই জাগতিক জীবন আর পারমার্থিক জীবনের মধ্যে পার্থক্য কি? জাগতিক জীবন মানে সমস্যা পূর্ণ। প্রতি পদে পদে পদম্‌ পদম্‌ যদ্‌ বিপদাম্‌ (ভাগবত ১০/১৪/৫৮) শুধু বিপদজনক আমরা খুব আরাম করে ক্যাডিলাক মোটর গাড়ি চড়ছি কিন্তু আমরা বিপদের ওপর চড়ছি, ব্যাস্‌। আমরা গাড়ি চড়ছি, যে কোন মুহূর্তে এই গাড়ি দুমড়েমুচড়ে যেতে পারে, বিশেষ করে তোমাদের দেশে যে কোন মুহূর্তে। তাহলে কি আমি ঘরে বসে থাকব? না, এমনকি ঘরেও অনেক বিপদ আছে আমরা বিপদের মধ্যে আছি। আমরা শুধু এর প্রতিকার করার চেষ্টা করছি আর সেয়াই সভ্যতার উন্নয়ন বলে বলা হচ্ছে পশুরা প্রকৃতির সুরক্ষার ওপর নির্ভর করে আমরা মানুষ, আমরা আমাদের উন্নত বুদ্ধিমত্তা কাজে লাগাচ্ছি, উচ্চতর বুদ্ধি - একই কথা রাশিয়া একটি অস্ত্র বানাচ্ছে, কি নাম, পারমাণবিক বোমা

নিউক্লিয়ার , হ্যাঁ। আর আমেরিকাও চেষ্টা করছে আর কুকুর বেড়াল তাদের নিজেদেরকে নখ দাঁত দিয়ে রক্ষা করতে চেষ্টা করছে তাই মূল কথাটি হচ্ছে সুরক্ষা সুরক্ষা... এর মানে এই নয় আমরা উন্নত জীবন পেয়েছি বলে কুকুর বেড়ালের চেয়েও, তাই আমাদের সুরক্ষা করতে হয় না। আমাদেরও প্রতিরক্ষা করার দরকার পড়ে কিন্তু উন্নত উপায়ে। উন্নত উপায়েও নয়, শেষ পর্যন্ত আমাদের মরতেই হবে যাই হোক, আমরা ভাবছি এটা হচ্ছে প্রতিরক্ষা করার উন্নতর উপায়