BN/Prabhupada 0875 - তোমার নিজের ভগবানের নাম নাও। এতে আপত্তি কি - কিন্তু ভগবানের নাম কীর্তন কর



750519 - Lecture SB - Melbourne

তোমার নিজের ভগবানের নাম নাও। এতে আপত্তি কি - কিন্তু ভগবানের নাম কীর্তন কর আমরা ভগবানকে দেখতে পারি না। দেখতে পারি, কিন্তু তৎক্ষণাৎ নয় যখন আমরা উন্নত তখন আমরা ভগবানকে দেখতে পারব , তাঁর সঙ্গে কথা বলতে পারব কিন্তু এখন যেহেতু আমরা যোগ্য নই, তাই আমরা যদি জানতে পারি যে এটা হচ্ছে ভগবানের নাম , চল কীর্তন করা যাক। তাহলেই হল এটা কি খুব কঠিন? কেউ কি বলবে এটা কঠিন কাজ? ভগবানের নাম কীর্তন করা। তাহলে কি হবে? চেতোদর্পণ মার্জনম্‌ (চৈতন্য চরিতামৃত অন্ত্যলীলা ২০.১২) যখন তুমি ভগবানের নাম কীর্তন করবে, তাহলে তোমার হৃদয় যেটি আয়নার মতো ... ঠিক যেমন, তুমি যেমন তোমার মুখ আয়নাতে দেখতে পারবে, তেমনই, তুমি তোমার অবস্থান হৃদয়ের আয়নাতে দেখতে পারবে, হৃদয়ের অভ্যন্তরে। তুমি দেখতে পারবে, এর নাম ধ্যান।

বর্তমানে আমাদের হৃদয় সমস্ত জড় কলুষতায় আবৃত "আমি ভারতীয়", "আমি আমেরিকান", "আমি এটা", "আমি সেটা", এগুলো সব হচ্ছে কলুষতা। তোমাকে এগুলো পরিষ্কার করতে হবে ঠিক যেমন আয়নাতে যদি ধুলোর স্তর পড়ে থাকে, তোমাকে তা মার্জন করতে হবে। তাহলে তুমি তোমার আসল চেহারা দেখতে পারবে। শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু বলেছেন, চেতোদর্পণ মার্জনম্‌ "ভগবানের নাম জপ করার দ্বারা তোমার চিত্তের সব কলুষ মার্জন হবে" খুব সহজ কথা। জপ করতে থাকো। এবং এর ফলে তোমার অবস্থান কি হবে? ভব মহাদাবাগ্নি নির্বাপণম্‌ "জড় জগতের দুঃখময় অস্তিত্বের সব দাবানল নিভে যাবে।" কেবল এই পদ্ধতিতেই, জপ করা। যদি এই হরে কৃষ্ণ জপে তোমার কোন আপত্তি থাকে, যদি তোমাদের নিজস্ব কোন নাম জপ করার থাকে ভগবানের যেই নামই আছে না কেন, তুমি সেটাই জপ কর এটা আমাদের আন্দোলন, আমরা বলি না যে তোমাকে... কিন্তু শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু গ্রহণ করেছেন যে হরের্নাম (আদিলীলা ১৭/২১) তোমার কোন আপত্তি না থাকলে হরে কৃষ্ণ জপ করতে পার আর যদি মনে কর যে, "হরে কৃষ্ণ ভারত থেকে এসেছে, আমরা এটা জপ করব না," ঠিক আছে, তুমি তোমার নিজের ভগবানের নামই জপ কর। এতে কি আপত্তি আছে? কিন্তু ভগবানের দিব্য নাম জপ কর। সেটাই আমাদের প্রচার

চেতোদর্পণ মার্জনম্‌ ভবমহা দাবাগ্নি নির্বাপণম্‌ (চৈতন্য চরিতামৃত অন্ত্যলীলা ২০.১২) আর যেই মাত্র তুমি তোমার হৃদয় মার্জন কর, তাহলে সমস্ত উদ্বেগ... ন শোচতি ন কাঙ্ক্ষতি (গীতা ১২/১৭)। তুমি ক্রমান্বয়ে উন্নতি করবে তখন তুমি বুঝতে পারবে যে, "আমি আমেরিকানও না, ভারতীয়ও না, আমি বেড়াল না, কুকুর না, পক্ষান্তরে আমি ভগবানের নিত্য অংশ" যদি তুমি বুঝতে পার তুমি ভগবানের নিত্য অংশ , তাহলে তুমি তোমার কর্তব্যও বুঝতে পারবে ঠিক যেমন তোমার দেহে অনেক অঙ্গ প্রত্যঙ্গ আছে তোমার হাত আছে, পা আছে, মাথা আছে, তোমার আঙ্গুল আছে, কান আছে, নাক আছে - অনেক অঙ্গ আছে দেহের এইসব অঙ্গের কাজ কি? দেহের অঙ্গগুলির কাজ হচ্ছেঃ দেহকে সঠিকভাবে ব্যবস্থা করা, দেহের সেবা করা ঠিক যেমন এই আঙ্গুল আমি একটু অস্বস্তি অনুভব করছি, সঙ্গে সঙ্গে আঙ্গুল বেরিয়ে এসে সেই অংশের সেবা করবে তাই ভগবানের অংশের কাজ হচ্ছে ভগবানের সেবা করা সেটাই একমাত্র কাজ, স্বাভাবিক বৃত্তি তাই যখন তুমি ভগবানের সেবায় নিযুক্ত থাকো, কারণ তুমি তখন বুঝতে পার - ভগবানের নাম জপের দ্বারা তুমি বুঝতে পারবে ভগবান কে এবং তাঁর উপদেশ কি, তিনি কি চান, তিনি আমার থেকে সেবা চান, তাহলে তুমি তাঁর সেবায় যুক্ত হবে সেটাই তোমার জীবনের পূর্ণতা। তাই হচ্ছে কৃষ্ণ ভাবনামৃত আন্দোলন চেতোদর্পণ মার্জনম্‌ ভবমহা দাবাগ্নি নির্বাপণম্‌ , শ্রেয়কৈরবচন্দ্রিকা বিতরণম্‌ আর যেই মাত্র তোমার কলুষ দূর হবে, তখন তোমার জীবনের প্রকৃত উন্নতি শুরু হবে