BN/Prabhupada 0896 - যখন আমরা গ্রন্থ বিতরণ করছি, সেটি কৃষ্ণভাবনামৃত



730417 - Lecture SB 01.08.25 - Los Angeles

ত্যক্ত্বা দেহম্‌ পুনর্জন্ম নৈতি মামেতি কৌন্তেয় (গীতা ৪/৯) তুমি যদি কৃষ্ণভাবনাময় হও, তাহলে এর ফল হবে এই দেহ ত্যাগ করার পরে কৃষ্ণ বলেছেন, ত্যক্ত্বা দেহম্‌, এই দেহ ত্যাগের পর পুনর্জন্ম নৈতি, তুমি আর এই জগতে দেহ ধারণ করবে না। সেটাই চাই। ধর, আমি এই মুহূর্তে খুব ভাল আছি আমার দেহ খুব আরামদায়ক একটা অবস্থায় আছে, কিন্তু মৃত্যু আছে, এবং তারপর আরেকটি জন্ম আছে তাই এই দেহ ত্যাগ করার পর আমি যদি কোন কুকুর বেড়ালের দেহ পাই তাহলে আমার এই আরামদায়ক অবস্থার কি অর্থ থাকল? কারণ মৃত্যু তো নিশ্চিত, এবং জন্মাতম্‌, তথা দেহান্তরম্‌ দেহান্তরম্‌ মানে তোমাকে আরেকটি দেহ পেতেই হবে যদি তুমি না জান যে কি ধরণের দেহ তুমি পেতে যাচ্ছ ... তুমি জানতে পার, সেটা শাস্ত্রে বলা আছে যে তুমি যদি অমুক অমুক মনোবৃত্তি বজায় রাখ তাহলে এই এই ধরণের দেহ পাবে তাই আরামদায়ক অবস্থায় আমি যদি নিজেকে একটা কুকুরের মনোভাবে রাখি, তাহলে পরের জীবনে আমাকে কুকুর হতে হবে। তখন তোমার এই আরামদায়ক পরিস্থিতির আর কি মূল্য থাকে? আমি একটা আরামদায়ক অবস্থায় হয়ত কুড়ি বছর, পঞ্চাহস বছর বা বড়জোর একশ বছর থাকতে পারি আর সেই আরামদায়ক অবস্থানের পর আমাকে যখন এই দেহ ছাড়তে হবে যদি আমার মনোবৃত্তির কারণে আমি কুকুর বা বেড়াল বা ইঁদুর হই তাহলে এইসব আরামদায়ক জীবনের কি লাভ?

এই লোকগুলো এই সব কথা জানে না তারা এই যুগে, বিশেষ করে কলিযুগে., ভাবে যেঃ "আমিয়ারামদায়ক অবস্থায় আছি, আমার অনেক টাকা আছে। আমার যথেষ্ট জায়গাজমি আছে। আমার যথেষ্ট আরামের ব্যবস্থা আছে, যথেষ্ট খাদ্য আছে তাই যেই মুহূর্তে এই দেহ শেষ হয়ে যাবে, আমাকে আর দেহ গ্রহণ করতে হবে না তাই যতক্ষণ বেঁচে আছি, আমি সুখে বাঁচব"। এই হচ্ছে আধুনিক দর্শন। ভোগবাদ। কিন্তু সেটা বাস্তব সত্য কুন্তীদেবী তাই উদ্বিগ্নঃ অপুনর্ভব দর্শনম্‌ (ভাগবত ১/৮/২৫) অপুনর্ভব - পুনর্জন্ম আর না যদি তুমি সবসময় কৃষ্ণকে দেখ, সেটিই কৃষ্ণ ভাবনামৃত কৃষ্ণভাবনামৃত মানে সর্বদা কৃষ্ণের কথা চিন্তা করা তোমার চেতনা কৃষ্ণের চিন্তায় নিমগ্ন থাকবে

তাই আমরা বিভিন্ন ধরণের সেবার নিযুক্তি দিয়েছি আমাদের শক্তির দিকপরিবর্তন করা উচিৎ নয়। যখন আমরা গ্রন্থ বিক্রি করছি... সেটাই কৃষ্ণ ভাবনামৃত, আমরা গ্রন্থ বিতরণ করছি। কিন্তু আমরা যদি ভাবি যে এই গ্রন্থ বিক্রিকে আমরা গয়না বিক্রিতে পরিবর্তন করতে পারি, তাহলে সেটি কোন ভাল বুদ্ধি নয় সেটি খুব ভাল বুদ্ধি নয়। তাহলে আমরা স্বর্ণকার হয়ে যাবে পুনর্মুষিক ভব। আমরা আবারো ইঁদুর হয়ে যাব আমাদের অত্যন্ত সাবধান থাকা উচিৎ যে আমাদের কৃষ্ণভাবনামৃত যেন কোনভাবেই পরিবর্তিত না হয়ে যায়। তাহলে তুমি নরকে যাবে। কৃষ্ণভাবনামৃতে কোন বিপদ, কোন ভোগান্তি থাকলেও আমাদের তা সহ্য করা উচিৎ সেটি হচ্ছে...। আমাদের উচিৎ সেই ধরণের বিপদকে স্বাগত জানানো। এবং কৃষ্ণের কাছে প্রার্থনা করা প্রার্থনাটি কি? তত্তেহনুকম্পাম্‌ সুসমীক্ষমাণঃ (ভাগবত ১০/১৪/৮) "হে ভগবান এটি আপনার বিশেষ করুণা যে আমাকে এই বিপদের অবস্থায় ফেলা হয়েছে" সেটাই ভক্তের দৃষ্টিভঙ্গি। তিনি বিপদকে বিপদ বলে দেখেন না। তিনি একে কৃষ্ণের কৃপা বলে ভাবেন? কোন ধরণের কৃপা? ভুঞ্জান এবাত্মকৃতবিপাক্ম্‌। "আমরা কৃত কর্মের ফলে, আমার অনেক ভোগান্তি ছিল কিন্তু আপনি আমাকে কেবল অল্প একটু দুঃখ দিয়ে সেই দুঃখ কমিয়ে দিয়েছেন।"