BN/Prabhupada 0902 - অভাবটি হচ্ছে কৃষ্ণভাবনামৃতের। কৃষ্ণভাবনাময় হলে সবই অপর্যাপ্ত থাকবে
730415 - Lecture SB 01.08.23 - Los Angeles
প্রভুপাদঃ এই হচ্ছে জাগতিক জীবনের শুরু। কৃষ্ণের প্রতি ঈর্ষাপরায়ণ হওয়া। "কৃষ্ণ কেন ভোক্তা হবে? আমি হব ভোক্তা। কৃষ্ণ কেন গোপীদের সাথে উপভোগ করবে? আমি কৃষ্ণ হব এবং গোপীদের সমাজ বানিয়ে আমি উপভোগ করব" এর নাম মায়া। কেউই ভোক্তা হতে পারে না তাই শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন, "ভোক্তারম্ যজ্ঞ (গীতা ৫/২৯) শ্রীকৃষ্ণ হচ্ছেন একমাত্র ভোক্তা। আর আমরা যদি তার তৃপ্তির জন্য জিনিসপত্র সেবায় লাগাই তাহলেই আমাদের জীবন সার্থক। আর আমি যদি তাঁকে অনুকরণ করতে চাই, "আমি ভগবান হব আমি একজন অনুকরণকারী ভোক্তা হব।" তাহলেই তা মায়া। আমাদের একমাত্র কাজ হচ্ছে... ঠিক যেমন গোপীদের জীবনের মতো ন্যায়। কৃষ্ণ উপভোগ করছেন, আর তারা সেই সেবার জন্য সমস্ত উপাদান দিচ্ছ, হ্যাঁ, এটা ভক্তি। কৃষ্ণই দিচ্ছেন... দাস এবং প্রভুর মতো। মনিব সেবকের জন্য সবকিছুই সরবরাহ করছেন কিন্তু সেবকের কাজ তার মনিবের আদেশ পালন করা। ব্যাস্। এতো বহুনাম্ যো বিদধাতি কামান্ নিত্যো নিত্যানাম্ চেতশ্চেতনামা্। (কঠোপনিষদ ২/২/১৩) এগুলো সব বৈদিক নির্দেশ, তথ্য। শ্রীকৃষ্ণ তোমার জীবনের সবকিছু বিশালভাবে সরবরাহ করছে কোন অভাব নেই। কোন অর্থনৈতিক সমস্যা নেই। তুমি কেবল কৃষ্ণের সেবা করতে চেষ্টা কর। তাহলেই সবকিছু ঠিক আছে কারণ তিনি হৃষীকেশ। এবং ... যদি কৃষ্ণ চান, অনেক সরবরাহ থাকবে ঠিক যেমন তোমাদের দেশে প্রচুর সরবরাহ আছে। অন্যান্য দেশে... আমি সুইজারল্যান্ড গিয়েছিলাম। ওখানে সবকিছুই আমদানী করা। কোন সরবরাহ নেই। কেবল বরফের সরবরাহ আছে। (হাসি) যত খুশি বরফ নিয়ে যাও। দেখছ? ঠিক তেমনই সবকিছুই শ্রীকৃষ্ণের নিয়ন্ত্রণে। যদি তুমি ভক্ত হও, তাহলে কোন বরফ সরবরাহ নয়, কেবল খাবার সরবরাহ হবে। আর যদি তুমি ভক্ত না হও, তাহলে বরফ চাপা থাকো। (হাসি)। ব্যাস্ মেঘের দ্বারা আবৃত থাকো। সবকিছুই শ্রীকৃষ্ণের অধীনে।
তাই আসলে কোন কিছুর অভাব নেই। অভাব কেবল কৃষ্ণভাবনামৃতের। তাই যদি তুমি কৃষ্ণভাবনাময় হও, তাহলে কোন অভাব নেই, সবকিছুই প্রচুর পরিমাণে পাবে। এই হচ্ছে পন্থা। ত্বয়া হৃষীকেশ... আর এখানে বলা হয়েছে ত্বয়া হৃষী... যথা হৃষীকেশ খলেন দেবকী (ভাগবত ১/৮/২৩) এই পৃথিবী বিপদে পরিপূর্ণ। কিন্তু কুন্তিদেবী বলছেন, যেহেতু দেবকি তোমার ভক্ততুমি তাঁকে রক্ষা করেছ তাদের ঈর্ষাপরায়ণ ভাইদের দেয়া দুর্দশা থেকে। যেই মাত্র ভাই শুনলো যে "আমার বোনের অষ্টম গর্ভ আমাকে হত্যা করবে," ওহ্ সে সঙ্গে সঙ্গে দেবকীকে হত্যা করতে উদ্যত হয়। দেবকীর স্বামী তাঁকে শান্ত করেন। একজন স্বামীর কর্তব্য সুরক্ষা দেওয়া "আমার প্রিয় ভ্রাতা, তুমি কেন তোমার বোনের প্রতি ঈর্ষাপরায়ণ? চরমে সে তোমাকে মারবে না, তার সন্তান তোমাকে মারবে। সেটাই সমস্যা। আমি সমস্ত পুত্রদের তোমার হাতে দেব, তুমি যা খুশি করতে পার। তুমি কেন এই সরল মেয়েটিকে মারতে চাইছ, সে নববিবাহিতা? সে তোমার ছোট বোনের মতো, তোমার মেয়ের মতো। তোমার উচিৎ তাঁকে সুরক্ষা দেয়া। তুমি এসব কি করছ?"
কংস শান্ত হয়েছিল। সে বসুদেবের কথায় বিশ্বাস করল যে তিনি তাঁর সমস্ত সন্তানদের তার হাতে দেবেন "যদি তুমি চাও, মারতে পার" তিনি ভাবলেন, "আমার এখন বর্তমান অবস্থাটি ঠিক করা উচিৎ অবশ্য পরে যখন সে তার ভাইপোদের হাতে পাবে, তখন যে এই হিংসা ভুলেও যেতে পারে... কিন্তু সে কখনও কখনও ভোলে নি। সে সেই সব সমস্ত সন্তানদের হত্যা করল এবং ওনাদের কারাগারে রাখল। সুচার্পিতা বদ্ধ্য অতিচিরাম্ (ভাগবত ১/৮/২৩)আমেরিকান মানে অনেক দিনের জন্য এইভাবে সে বেঁচে গেল। অবশেষে, দেবকীকে বাচানো গেল। ঠিক তেমনই আমরা যদি দেবকী এবং কুন্তির অবস্থান গ্রহণ করি। কুন্তী, তাঁর সন্তান - পঞ্চপাণ্ডবদের নিয়ে তিনি বিধবা হওয়ার পর... সমস্ত পরিকপনা ছিল ধৃতরাষ্ট্র-এর "আমার ছোট ভাইয়ের ছেলেদের আমরা কীভাবে মারব? কারণ আমি ভাগ্যবশত অন্ধ ছিলাম, তাই আমি রাজ্য সিংহাসন পাই নি আমার ছোট ভাই পেয়েছে, এখন সে মারা গেছে তাই আমার ছেলেরা অন্তত তা পাক" সেটা ছিল ধৃতরাষ্ট্রের নীতি। "আমি পাই নি"। এটাই জাগতিক প্রবণতা। "আমি সুখী হব, আমার পুত্রেরা সুখী হব আমার সম্প্রদায় খুশি হবে, আমার জাতি খুশি হবে এসব হচ্ছে প্রসারিত স্বার্থপরতা। কেউই শ্রীকৃষ্ণের কথা ভাবে না। কীভাবে কৃষ্ণকে সুখী করা যায়। সবাই তার নিজের মতো করেই ভাবছে। "আমি কীভাবে সুখী হব, আমার ছেলেমেয়েরা কীভাবে সুখী হব। আমার জাতি কীভাবে সুখী হব, আম্র সমাজ সুখী হবে, আম্র জাতি..." বেঁচে থাকার সংগ্রাম। সর্বত্রই এটা দেখবে। এটাই জড় অস্তিত্ব। কেউই ভাবছে না কীভাবে শ্রীকৃষ্ণকে সন্তুষ্ট করা যায়।
তাই এই কৃষ্ণভাবনামৃত আন্দোলন অত্যন্ত মহান। ভাগবত এবং শ্রীমদ্ভাগবত গীতা থেকে তা বুঝতে চেষ্টা কর। এবং হৃষীকেন হৃষীকেশ সেবনম্ (চৈতন্য চরিতামৃত ১৯/১৭০) এবং তোমার ইন্দ্রিয়গুলো নিযুক্ত করতে চেষ্টা কর ইন্দ্রিয়ের অধিপতির সেবায়। তাহলেই তুমি সুখী হবে।
অনেক ধন্যবাদ।
ভক্তঃ জয় শ্রীল প্রভুপাদ