BN/Prabhupada 0970 - জিহবাকে সর্বদা ভগবানের মহিমা কীর্তনে নিযুক্ত রাখতে হবে
730400 - Lecture BG 02.13 - New York
এটিই আমাদের অবস্থান যে আমরা আমাদের সীমিত ইন্দ্রিয় ও মানসিক জল্পনা কল্পনার দ্বারা শ্রীকৃষ্ণকে জানতে পারি না তা সম্ভব নয়। আমাদের নিযুক্ত করতে হবে - সেবোন্মুখে হি জিহবাদৌ - জিহ্বা থকে শুরু । জিহ্বা সবচাইতে বড় শত্রু। আর এটা সবচাইতে ভাল বন্ধুও। যদি তুমি জিহবাকে যা খুশি করতে দাও ধূমপান, মদ খাওয়া, মাংসাহার, এটা সেটা, তাহলে এটা তোমার সবচাইতে বড় শত্রু আর যদি তুমি জিভকে এসব অনুমোদন না দাও, তাহলে তুমি জিভ নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে তাহলে সবগুলি ইন্দ্রিয় তুমি খুব সহজেই নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে
- তার মধ্যে জিহ্বা অতি লোভময় সুদুর্মতি,
- তাকে জেতা কঠিন সংসারে
- কৃষ্ণ বড় দয়াময়, করিবারে জিহ্বা জয় ,
- স্বপ্রসাদ অন্য দিলা ভাই
- সে অন্নামৃত পাও রাধাকৃষ্ণ গুণ গাও,
- প্রেমে ডাক চৈতন্য নিতাই
- (ভক্তিবিনোদ ঠাকুর)
তাই জিহ্বা সর্বদা ভগবানের মহিমা কীর্তনে নিযুক্ত রাখতে হবে সেটিই হচ্ছে জিহবার কাজ জিহবাকে কৃষ্ণপ্রসাদ ছাড়া আর কিছুই খেতে দেয়া উচিত নয় তাহলেই তুমি মুক্ত হবে , কেবল জিহবাকে নিয়ন্ত্রণ করার দ্বারা আর যদি তুমি জিহবাকে যা খুশি করতে দাও,তাহলে অত্যন্ত কঠিন হয়ে যাবে তাই কৃষ্ণ যেমনটা বলেছেন যে চিন্ময় শিক্ষা শুরু হয়য় এই জ্ঞান থেকে যে আমি এই দেহ নই আর ইন্দ্রিয়ের তৃপ্তি বিধান করা আমার কাজ নয়, কারণ আমি দেহটি নই যদি আমি এই দেহটি নাইই হয়ে থাকি তাহলে কেন এই শরীরের তৃপ্তি নিয়ে আমি এতো ভাববো? দেহ মানে ইন্দ্রিয়। সেটিই প্রথম শিক্ষা
তাই কর্মী, জ্ঞানী, যোগী, এরা সবাই দেহের চাহিদা পূরণ করতে চাইছে কর্মীরা তা সরাসরি করছে 'খাও, পিও, ফুর্তি কর' - এই হল ওদের নীতি। জ্ঞানী, সেও কেবল এটিই বুঝতে চেষ্টা করছে আমি দেহ নই 'নেতি নেতি নেতি নেতি' - এটা নয়, এটা নয়, এটা নয় , এটা নয় যোগীরাও হঠযোগের মাধ্যমে তাদের ইন্দ্রিয় সংযমের চেষ্টা করছে তাই তাদের সমস্ত কাজের কেন্দ্র হচ্ছে দেহকে নিয়ে আর আমাদের দর্শন শুরুই হচ্ছে, 'আমি এই দেহ নই', বুঝতে পারছ? যখন তারা এই দেহ নিয়ে অধ্যনের এম এ পাশ করবে তখন তারা বুঝতে পারবে তাদের আসল কাজ কি কিন্তু আমাদের দর্শন শুরুই হচ্ছে 'তুমি তোমার দেহ নও। আবার স্নাতকোত্তর শিক্ষাও হচ্ছে , তুমি এই দেহটি নও । সেটিই কৃষ্ণের শিক্ষা। ভারতে আমাদের বহু বড় বড় রাজনীতিবিদ আর পণ্ডিত আছে তারা ভগবদগীতার ওপর ভাষ্য লেখে নিজেদের দেহগত ধারনার ওপর ভিত্তি করে আমরা দেখেছি আমাদের দেশে যে মহান নেতা মহাত্মা গান্ধীর ছবি গীতার সাথে কিন্তু তিনি তার সারাটি জীবন ধরে কি করে গেছেন, "আমি ভারতীয়, আমি ভারতীয়" জাতীয়তা মানে দেহাত্মবুদ্ধি ".আমি ভারতীয়, আমি আমেরিকান, আমি ক্যানাডিয়ান" কিন্তু আমরা এই দেহটি নই। তাহলে 'আমি ভারতীয়' , আমি আমেরিকান, আমি ক্যানাডিয়ান' এসবের প্রশ্ন আসছে কোথা থেকে? ওদের কোন জ্ঞানই নেই,, দেহাত্মবুদ্ধিতে আছে, সম্পূর্ণ ওতেই মগ্ন হয়ে আছে এবং তারপরও ওরা ভগবদগীতার ভাষ্যকার। ভেবে দেখ এ কেমন কৌতুক আর ভগবদগীতা শুরুতেই শেখাচ্ছে তুমি এই দেহ নও আর তার দেহাত্মবুদ্ধিতে আছে । তাহলে ভেবে দেখ তাদের অবস্থাটা কি তারা কেনই বা ভগবদগীতা বুঝবে ? যদি কেউ মনে করে, আমি এই জাতির, আমি এই দেশের, এই পরিবারের আমি এই সম্প্রদায়ের , আমি এই দলের, আমি এর আমি ওর, আমি এই ধর্মের , সবকিছুতেই দেহাত্মবুদ্ধি