BN/Prabhupada 1004 - কৃুকুর বেড়ালের মতো খেটে খেটে মরাটা কোন বুদ্ধিমত্তা নয়
750713 - Conversation B - Philadelphia
স্যন্ডি নিক্সনঃ কৃষ্ণভাবনামৃত অর্জনের জন্য কি কি পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়? কিভাবে একজন অর্জন করতে পারে...
প্রভুপাদঃ হ্যাঁ, কৃষ্ণভাবনামৃতের মাধ্যমে আপনি জীবনের লক্ষ্য অর্জন করতে পারবেন। বর্তমান পরিস্থিতিতে আমরা একটি দেহ ধারণ করছি, আর কিছুদিন পর আমরা মারা যাচ্ছি, এরপর আরেকটি দেহ ধারণ করছি। আর সেই দেহটি হচ্ছে আমাদের কর্ম অনুসারে। চুরাশি লক্ষ্য বিভিন্ন প্রজাতির দেহ রয়েছে। আমরা এদের যে কোন একটি পেতে পারি। আমাদেরকে একটি দেহ গ্রহণ করতে হবে। এটিকে বলে আত্মার দেহান্তর প্রাপ্তি। সুতরাং কারো যদি এই চেতনা থাকে যে "আমি নিত্য। কেন আমি দেহ পরিবর্তন করছি? কিভাবে এর সমাধান করা যায়?" এটিই হচ্ছে বুদ্ধি। কুকুর বিড়ালের মতো পরিশ্রম করা আর মরে যাওয়া নয়। এটি বুদ্ধি নয়। যে এই সব সমস্যার সমাধান করে, সেই বুদ্ধিমান। সুতরাং এই কৃষ্ণভাবনামৃত আন্দোলন হচ্ছে জীবনের সমস্ত সমস্যার চূড়ান্ত সমাধান।
স্যন্ডি নিক্সনঃ কৃষ্ণভাবনামৃতে একজনকে কি ধরণের পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যেতে হয়?
প্রভুপাদঃ কোন পরিবর্তন নয়। চেতনা রয়েছে। এখন এটি আবর্জনায় পূর্ণ। আপনাকে এটি পরিষ্কার করতে হবে, এরপর কৃষ্ণভাবনামৃত... ঠিক যেমন জল। প্রকৃতিক ভাবে জল পরিষ্কার, স্বচ্ছ। কিন্তু যখন এতে আবর্জনা মিশ্রিত হয়, এটি কর্দমাক্ত হয়ে যায়; আপনি পরিষ্কার ভাবে দেখতে পাবেন না। কিন্তু আপনি যদি এর সমস্ত ময়লা আর মাটিকে ফিল্টার করেন, তাহলে পুনরায় মূল অবস্থায় ফিরে আসবে-পরিষ্কার, স্বচ্ছ জল।
স্যন্ডি নিক্সনঃ কৃষ্ণভাবনার সাথে সম্পর্কিত হওয়ার ফলে সমাজে আরও ভালো কার্যকারিতা সম্পাদন করে? প্রভুপাদঃ হুম? গুরুদাসঃ কৃষ্ণভাবনাময় হওয়ার ফলে কি সমাজের কাজ আরও ভালোভাবে সম্পাদিত হয়?
প্রভুপাদঃ এর মানে কি?
রবীন্দ্র স্বরূপঃ তিনি কি আরও ভালো নাগরিক হন?
স্যন্ডি নিক্সনঃ এছাড়াও সামাজিকভাবে অথবা সাংস্কৃতিকভাবে কি সে সমাজে আরও ভালোভাবে কাজ করতে পারে? প্রভুপাদঃ বাস্তবেই দেখতে পারছেন। তাঁরা মাতাল নয়, তাঁরা মাংসাহারী নয়। শরীরবৃত্তীয় দৃষ্টিকোণ থেকে, তাঁরা খুব পরিচ্ছন্ন। তাঁরা কখনও বহু রোগের দ্বারা আক্রান্ত হবে না। এরপর তাঁরা মাংসাহার করে না মানে, এটি হচ্ছে সবচেয়ে পাপময় কর্ম, নিজের জিহ্বার লালসায় অন্যদের হত্যা করা। ভগবান মানব সমাজকে আহারের জন্য অনেক কিছু দিয়েছেনঃ সুন্দর ফল, সুন্দর ফুল, ভালো শস্য, চমৎকার দুধ। আর দুধ থেকে আপনি শত শত রকমের পুষ্টিকর খাদ্য তৈরি করতে পারবেন। কিন্তু তারা সেই কৌশলটি জানে না। তারা বড় বড় কসাইখানা চালাচ্ছে আর মাংস খাচ্ছে। কোন বাছবিচার নেই। এর মানে তারা এমন কি সভ্যও নয়। মানুষ যখন সভ্য না হয়, সে একটি প্রাণীকে হত্যা করে খেতে পারে, কারণ সে জানে না কিভাবে খাদ্য উৎপাদন করতে হয়। ঠিক যেমন আমাদের নব বৃন্দাবনে একটি খামার ভূমি রয়েছে। সেখানে আমরা চমৎকার সব দুগ্ধজাত দ্রব্য তৈরি করছি, প্রতিবেশীরা আসেন, তারা অবাক হন যে দুধ থেকে শত রকমের পদ তৈরি করা হয়েছে।
সুতরাং তার মানে এরা এমন কি সভ্যও নয়, দুধ থেকে কিভাবে পুষ্টিকর খাদ্য তৈরি করা যায়। দুধ... গাভীর মাংস আর রক্ত খুব পুষ্টিকর, এটি আমরাও স্বীকার করি, কিন্তু একজন সভ্য মানুষ এই রক্ত আর মাংসকে ভিন্ন উপায়ে ব্যবহার করেন। দুধ রক্ত ছাড়া আর কিছু নয়। কিন্তু এটি দুধে রূপান্তরিত হয়েছে। আবার এই দুধ থেকে আমরা অনেক কিছু তৈরি করছি। আমরা দই বানাচ্ছি, ঘি বানাচ্ছি, ছানা তৈরি করছি আরও অনেক। আবার এই উপাদানগুলোকে শস্য দানা, ফল আর সব্জির সাথে মিশিয়ে শত রকমের পদ তৈরি করছি। এটিই হচ্ছে সভ্য জীবন, এমন নয় যে সরাসরি একটি প্রাণীকে হত্যা কর আর খাও। এটি অসভ্য জীবন। গাভীর রক্ত আর মাংসকে পুষ্টিকর হিসেবে গ্রহণ করে আপনি এটিকে সভ্য উপায়ে ব্যবহার করুন। আপনি কেন হত্যা করবেন? এটি নির্দোষ প্রাণী। এটি শুধু ভগবান প্রদত্ত ঘাস আহার করে আর দুধ সরবরাহ করে। আর দুধ খেয়ে আপনি বাঁচতে পারেন। আর এর কৃতজ্ঞতা স্বরূপ কি এর গলা কেটে দেয়া? এটিই কি সভ্যতা? আপনি কি বলেন?
জয়তীর্থঃ এটি কি সভ্যতা?
স্যন্ডি নিক্সনঃ না, আমি আপনার সাথে শতভাগ একমত। আমি চাই আপনি আমার কথা না বলে এই কথাগুলো বলুন। আমি আপনাকে প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করছি যাতে আশা করছি যে আমাকে উদ্দেশ্য করে কিছু বর্ণনা করা হবে না, শুধু ছোট কিছু প্রশ্ন...
প্রভুপাদঃ সুতরাং এই সমস্ত ব্যাপারগুলো হচ্ছে জীবনের অসভ্য উপায়, তাহলে তারা কিভাবে ভগবানকে জানতে পারবে? এটি সম্ভব নয়।
স্যন্ডি নিক্সনঃ আমি এগুলো অন্যদের জন্য জিজ্ঞাসা করছি, অবশ্যই সেই ক্ষেত্রটা কৃষ্ণভাবনাময় বুঝাচ্ছে না।
প্রভুপাদঃ ভগবানকে জানা মানে, একজনকে অবশ্যই প্রথম শ্রেণীর নাগরিক হতে হবে। ঠিক যেমন বিশ্ববিদ্যালয় বলতে বোঝায় প্রথম শ্রেণীর ছাত্র, একইভাবে, ভগবদ্ভাবনাময় হওয়া মানে প্রথম শ্রেণীর মানুষ হওয়া বোঝায়।