BN/Prabhupada 1022 - কীভাবে ভগবানকে ভালবাসতে হয় সেটি জানাই হচ্ছে সর্বশ্রেষ্ঠ ধর্ম



730408 - Lecture SB 01.14.44 - New York

সুতরাং প্রথম কথা হচ্ছে যে আমাদের ভালবাসতে শিখতে হবে স বৈ পুংসাম্‌ পরো ধর্ম (ভাগবত ১/২/৬)। সেইটি হল সর্বোত্তম ধর্ম। যে ধর্ম তুমি অনুসরণ করছ, যতো ভক্তিঃ অধোক্ষজে যদি তুমি জানো যে কীভাবে ভগবান অধোক্ষজকে ভালবাসতে হয়... তাহলে পরের প্রশ্ন হচ্ছে "আমি কাকে ভালবাসব"? তাই শ্রীকৃষ্ণের আরেকটি নাম হচ্ছে অধোক্ষজ অধোক্ষজ মানে 'ইন্দ্রিয়াতীত' এই জগতে আমরা যা কিছু ভালবাসি তা আমাদের ইন্দ্রিয়ের গোচরীভূত, আমাদের আয়ত্ত্বের মধ্যে আমি একটি মেয়ে বা ছেলেকে ভালবাসি, আমার দেশকে ভালবাসি, আমার সমাজক, আমার কুকুর, সবকিছুকে ভালবাসি। কিন্তু এই গুলো সব তোমার ইন্দ্রিয়ের অনুভূতির মধ্যে। কিন্তু ভগবান তোমার ইন্দ্রিয়ানুভূতির অতীত। কিন্তু তবু তোমাকে তাঁকে ভালবাসতে হবে, আর সেটিই হচ্ছে ধর্ম। ভগবান ইন্দ্রিয়ানুভূতির ঊর্ধে, কিন্তু তুমি তাঁকে ভালবাসছ, যদিও তা তিনি ইন্দ্রিয়ানুভূতির ঊর্ধ্বে, তাহলেই তুমি ভগবানকে উপলব্ধি করতে পারবে। সেবোন্মুখে হি জিহবাদৌ স্বয়মেব স্ফুরত্যদঃ (ভক্তিরসামৃতসিন্ধু ১/২/২৩৪) যারা শ্রীকৃষ্ণকে ভালবাসে না, তারা ভাববে, "এইসব বোকালোকগুলো কিছু মার্বেলের পুতুল নিয়ে এসেছে, আর কেবল সময় নষ্ট করছে,"। দেখলে? কারণ তার মধ্যে কোন প্রেম নেই। তার কোন ভালবাসা নেই। তাই সে শ্রীকৃষ্ণের আরাধনাকে উপলব্ধি করতে পারবে না, ভালবাসার অভাব। এবং যিনি শ্রীকৃষ্ণকে ভালবাসেন, যেমন শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু ... যেই মাত্র তিনি শ্রীজগন্নাথ মন্দিরে প্রবেশ করেছেন, "এই তো আমার প্রাণনাথ"। তিনি সঙ্গে সঙ্গে মূর্ছিত হয়ে গেলেন। তাহলে এই দুয়ের পার্থক্যটি কোথায়...

এই হচ্ছে তফাতঃ একজন ভগবদপ্রেমিক তিনি সর্বত্র শ্রীকৃষ্ণকে উপস্থিত দর্শন করেন,

প্রেমাঞ্জনচ্ছুরিত ভক্তিবিলোচনেন
সন্তঃ সদৈব হৃদয়েষু বিলোকয়ন্তি
(ব্রহ্মসংহিতা ৫/৩৮)

যদি প্রকৃতপক্ষেই তুমি ভগবনাকে ভালবেসে থাকো, তুমি সর্বত্রই তাঁকে দর্শন করবে, প্রতি পদক্ষেপে। প্রতি পদক্ষেপে। ঠিক প্রহ্লাদ মহারাজের মতো। প্রহ্লাদ মহারাজ যখন তাঁর পিতার দ্বারা আক্রান্ত হয়েছেন, তিনি একটি স্তম্ভের দিকে তাকিয়েছিলেন, তাঁর পিতা ভাবলেন হয়তো এই স্তম্ভের মধ্যে তাঁর ভগবান আছেন, তাই তিনি তৎক্ষণাৎ জিজ্ঞাসা করলেন, "তোর ভগবান এই স্তম্ভের মধ্যে আছে?" "হ্যাঁ, বাবা"। "ওহ্‌" সঙ্গে সঙ্গে তা ভেঙ্গে দিলেন। ভক্তের কথা রাখার জন্য ভগবান সেখান থেকে বেরিয়ে এলেন।

তাই ভগবানের আবির্ভাব ও অন্তর্ধান হয় তাঁর ভক্তদের জন্য।

পরিত্রানায় সাধুনাম্‌
বিনাশায় চ দুষ্কৃতাম্‌
(গীতা ৪/৮)