BN/Prabhupada 0927 - তুমি কীভাবে কৃষ্ণকে বিশ্লেষণ করবে? তিনি অসীম। তা অসম্ভব



730423 - Lecture SB 01.08.31 - Los Angeles

যারা প্রথমে শ্রীকৃষ্ণকে বিশ্লেষণ করবে বলে ভাবছে, যে তিনি ভগবান কিনা, তারা প্রথম শ্রেণীর ভক্ত নয়। যাঁদের ভগবানের প্রতি স্বতঃস্ফূর্ত প্রেম রয়েছে, তাঁরাই ভগবানের সর্বোন্নত ভক্ত তুমি কীভাবে শ্রীকৃষ্ণকে বিশ্লেষণ করবে? তিনি অসীম। তাই তা অসম্ভব। তাই আমাদের শ্রীকৃষ্ণকে নিয়ে বিশ্লেষণ করা উচিৎ নয়। তা অসম্ভব। আমাদের ইন্দ্রিয়ের ক্ষমতা অতি সীমিত আমরা কীভাবে কৃষ্ণকে নিয়ে গবেষণা করব? তা কোনভাবেই সম্ভব নয়। কৃষ্ণ যতটুকু আমাদের কাছে নিজেকে প্রকাশ করেন, ততটুকুই আমাদের জন্য যথেষ্ট। চেষ্টা করতে যেও না।

নেতি নেতি... এটা নয়, এটা নয়, ঠিক মায়াবাদীদের মতো। তারা ভগবানকে খুঁজতে চেষ্টা করছে , ভগবান কোথায়, ভগবান কে। নেতি, তারা কেবল "এটা নয়" করে যাচ্ছে। তাদের দর্শন 'এটা নয়'-এর ভিত্তি করা। কোনটি কি তারা তা জানেই না। তথাকথিত বিজ্ঞানীরাও পরম কারণ খুঁজতে চেষ্টা করছে, কিন্তু তাদের পন্থাও "এটা নয়"। যতটা, যতটা তারা অগ্রসর হচ্ছে, কেবল পাচ্ছে, "এটা নয়" আর আসল বস্তুটি কি তা তারা কোনদিনই জানতে পারবে না। কোনদিন খুঁজে পাবে না। ওরা বলতে পারে, "এটা নয়", কিন্তু আসলে কোনটা ঠিক - তা ওরা কখনও বলতে পারবে না। তা সম্ভব নয়।

পন্থাস্তু কোটিশতবৎসর সংপ্রগম্যো
বায়োরথাপি মনসো মুনিপুঙ্গবানাং
সোহপ্যস্তি যৎ প্রপদসীম্ন্যবিচিন্ত্যতত্ত্বে
গোবিন্দম্‌ আদি পুরুষম্‌ তমহম্‌ ভজামি
(ব্রহ্মসংহিতা ৫/৩৪)

শ্রীকৃষ্ণের কথা আর কিই বা বলার আছে, এমনকি তারা চাঁদে যাবার চেষ্টা করছে আসলে ওরা জানেই না ওটা কি? বাস্তবে। তাহলে ওরা ফিরে আসছে কেন? ওরা যদি জানতই ওটা কি তাহলে এতদিনে ওরা ওখানেই থাকতে পারত। তারা বিগত কুড়ি বছর ধরে চেষ্টা করছে কেবল দেখেই যাচ্ছে, "এটা নয়। এখানে কোন জীব নেই। ওখানে বসবাস করার কোন সম্ভাবনা নেই।" অনেক অনেক না কেবল। তাহলে হ্যাঁ-টা কি? না, তা তারা জানে না। এবং এটা কেবল একটা গ্রহ মাত্র। চাঁদ গ্রহটি কেবল একটা নক্ষত্র।

বিজ্ঞানীরা বলে, নক্ষত্রগুলো সব সূর্য, কিন্তু আমাদের তথ্য অনুযায়ী, ভগবদগীতাতে বলা হয়েছে, নক্ষত্রাণাম্‌ যথা শশী। শশী মানে চন্দ্র, অনেক গুলো নক্ষত্রের একটি। তাহলে চাঁদের অবস্থানটি কি? সূর্যের প্রতিফলনের কারণে চন্দ্র উজ্জ্বল। আমাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সূর্য একটি কিন্তু আধুনিক বিজ্ঞানীরা বলে অনেক সূর্য আছে, নক্ষত্রগুলো। আমরা সেটি মানি না। এটি কেবল একটা ব্রহ্মাণ্ড। অনেক সূর্য আছে, অসংখ্য, কিন্তু প্রতিটি ব্রহ্মাণ্ডে একটা করে সূর্য, অনেক নয়। এই ব্রহ্মাণ্ডে আমরা যা অভিজ্ঞতা পাচ্ছি, তা আমাদের ত্রুটিযুক্ত দর্শনে... আমরা জানি না, আমরা জানি না যে কতগুলো নক্ষত্র আছে, কতগুলো গ্রহ আছে। তা অসম্ভব। তাই এই জাগতিক জিনিসগুলো যা আমাদের সামনে আছে সেইগুলিই আমরা গুণতে পারছি না,, বুঝতে পারছি না, তাহলে পরমেশ্বর ভগবানের কি কথা যিনি এই ব্রহ্মাণ্ড সৃষ্টি করেছেন? তাই তা সম্ভব নয়।

তাই ব্রহ্মসংহিতায় বলা হয়েছে, পন্থাস্তু কোটিশতবৎসর সংপ্রগম্যোঃ (ব্রহ্মসংহিতা ৫/৩৪) পন্থাস... কোটিশতবৎসর। মহাশুন্য একটি অসীম স্থান। এখন একটা উড়োজাহাজ বা স্পুটনিক বা ক্যাপসুল নিয়ে যাও... তারা অনেক কিছুই বানিয়েছে। চলতে থাকো। কথা হচ্ছে, কতক্ষণ চলতে পারবে, কত ঘণ্টা, কত বছর? না। পন্থাস্তু কোটিশতবৎসর কোটি কোটি বছর তোমার বেগে তুমি চলতে থাক, পন্থাস্তু কোটিশতবৎসর সংপ্রগম্যো। আর কীভাবে যাব? বর্তমানে যে উড়োজাহাজ চলছে তা হয়ত বাতাসের বেগে যাচ্ছে এই বেগে নয়, এই গতিতে নয়, ঘণ্টাপ্রতি ৫০০ বা হাজার মাইল বেগে, না। বায়ুর গতি কত?

স্বরূপ দামোদরঃ ছিয়ানব্বই হাজার মাইল প্রতি সেকেন্ড।

প্রভুপাদঃ ছিয়ানব্বই হাজার মাইল প্রতি সেকেন্ড। এসব বৈদিক শাস্ত্রে উল্লেখ করা হয়েছে যে, কেউ যদি বাতাসের বেগেও যায়, প্রতি সেকেন্ডে ৯৬ হাজার মাইল বেগেও তাহলে কল্পনা কর বাতাসের বেগ। পন্থাস্তু কোটিশতবৎসর সংপ্রগম্যো বায়োরথাপি সেই বিমানে করে বাতাসের বেগেও যদি যাওয়া যায় সেই গতিতে, এবং লক্ষ লক্ষ বছর ধরে। তারপর বলা হচ্ছে এমনকি বাতাসের গতিতেও না, মনের গতিতেও যদি যায়।