BN/Prabhupada 0733 - সময় অত্যন্ত মূল্যবান - কোটি স্বর্ণমুদ্রা দিয়েও এক মুহূর্ত সময় ফিরে পাওয়া যাবে না
Lecture on SB 7.6.1 -- San Francisco, March 15, 1968
চাণক্য পণ্ডিতের একটি সুন্দর শ্লোক আছে। তোমরা শুধু দেখ যে সময়কে কতো গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচনা করা হয়েছে। এই শ্লোকের মাধ্যমে তুমি তা জানতে পারবে। চাণক্য পণ্ডিত বলেছেন...... চাণক্য পণ্ডিত ছিলেন একজন বিখ্যাত রাজনীতিবিদ। তিনি কখনও কখনও ভারত সম্রাটের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তো তিনি বলেছেন, আয়ুষঃ ক্ষণ একোহপি ন লভ্যঃ স্বর্ণকোটিভিঃ। তিনি বলেছেন, " এক মুহূর্ত, তোমার জীবন কালের একটি মাত্র মুহূর্ত ...... " মুহূর্ত। ঘণ্টা বা দিনের কথাতো বলাই বাহুল্য, শুধু মুহূর্ত তিনি জীবনের প্রতিটি মুহূর্তের হিসাব করেছেন। ঠিক যেমন আজকে, ১৫ মার্চ, ১৯৬৮, এখন সাড়ে সাতটা কিংবা সাতটা পঁয়ত্রিশ। এখন এই ১৯৬৮ সালের ৭ঃ৩৫ মিনিট চলে যাওয়ার সাথে সাথেই ৭ঃ৩৬ হয়ে গেল। তুমি ১৯৬৮ সালের ১৫ মার্চ সন্ধ্যা ৭ঃ৩৫ মিনিট আর ফিরিয়ে আনতে পারবে না। তুমি যদি লক্ষ লক্ষ ডলারও খরচ কর, "দয়া করে ফিরে আস," না, শেষ। তাই চাণক্য পণ্ডিত বলেছেন যে "সময় খুব গুরুত্বপূর্ণ।" তুমি যদি লক্ষ লক্ষ স্বর্ণ মুদ্রাও খরচ কর, একটি মুহূর্তও ফিরিয়ে আনতে পারবে না। যা হারিয়ে যায় তা ভালোর জন্য হারিয়ে যায়। ন চেৎ নিরর্থকং নীতঃ"এত গুরুত্বপূর্ণ সময়কে যদি তুমি বিনা কাজে নষ্ট কর, কোন লাভ ছাড়া," ন চ হানি ততো অধিকা, "শুধু কল্পনা কর তুমি কি পরিমান হারাচ্ছ, তুমি কতোটা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছো।" যেই জিনিসটা তুমি লক্ষ টাকা দিয়েও আর ফিরে পাবে না, সেটা যদি বিনা কাজে হারিয়ে যায়, তুমি কি পরিমান হারাচ্ছো, শুধু কল্পনা করে দেখ।
ঠিক একই ব্যাপারঃ প্রহ্লাদ মহারাজ বলেছেন ধর্মম্ ভাগবতম্ (SB 7.6.1), কৃষ্ণভাবনাময় বা ভগবৎভাবনাময় হওয়া এত গুরুত্বপূর্ণ যে তোমার এমনকি এক মুহূর্ত সময়ও নষ্ট করা উচিত নয়। এক্ষুনি আমাদের শুরু করা উচিত। কেন? দুর্লভম্ মানুষম্ জন্ম। (SB 7.6.1) মানুষম্ জন্ম। তিনি বলেছেন যে এই মানব দেহ, এটি খুব দুর্লভ। বহু বহু জন্মের পর এটি লাভ হয়। কিন্তু আধুনিক সভ্যতায়, মানব জীবন যে কতোটা গুরুত্বপূর্ণ সেটা তারা বোঝে না। তারা মনে করে এই দেহটা হচ্ছে কুকুর বিড়ালের মতো ইন্দ্রিয় সুখ ভোগ করার জন্য। কুকুর বিড়াল, তারাও চারটি নীতি অনুযায়ী জীবনকে উপভোগ করছে। আহার, নিদ্রা, ভয়, মৈথুন। সুতরাং মানব জীবন কুকুর বিড়ালের মতো নষ্ট করার জন্য নয়। মানব জীবনের অন্য কিছু উদ্দেশ্য রয়েছে। আর এই "অন্য কিছু" হচ্ছে কৃষ্ণভাবনা বা ভগবৎভাবনা। কারণ মানব দেহ ছাড়া অন্য কোন দেহে ভগবান কে জানা যায় না। এই জগত কি, আমি কে, আমি কোথা থেকে এসেছি, আমাকে কোথায় যেতে হবে। মানব জীবনের উদ্দেশ্য হচ্ছে এই সকল বিষয় জানা। তাই তিনি বলেছেন যে "ছোট বেলা থেকে......" প্রকৃতপক্ষে এটি অপরিহার্য। ছোট বেলা থেকে, স্কুল, কলেজ গুলোতে এই ভাগবত ধর্ম বা কৃষ্ণভাবনামৃত শিক্ষা চালু করা উচিত। এটি প্রয়োজন কিন্তু তারা তা বোঝে না। তারা মনে করে এই ছোট জীবনটিই সব, এই দেহটিই সবকিছু, পরবর্তী কোন জীবন নেই। তারা পরজন্মে বিশ্বাস করে না। এই সব হচ্ছে অজ্ঞানতার কারণে। জীবন নিত্য, আর এই ছোট জীবনটি হচ্ছে পরবর্তী জীবনের প্রস্তুতি।