BN/Prabhupada 0073 - বৈকুন্ঠ অর্থাৎ উৎকন্ঠাহীন

Revision as of 08:13, 2 December 2021 by Soham (talk | contribs)
(diff) ← Older revision | Latest revision (diff) | Newer revision → (diff)


Lecture on BG 10.2-3 -- New York, January 1, 1967

এটি এমন নয় যে এই সঙ্গে এসে তোমাকে এটি করতে হবে। তুমি এই কলাকৌশল শিখে নিয়ে বাড়িতেও তা অনুশীলন করতে পার। তুমি তোমার বাড়িতেও এই ধরণের সুন্দর সুন্দর পদ তৈরি করতে পার, শ্রীকৃষ্ণকে নিবেদন করতে পার। এটি খুব কঠিন কিছু নয়। আমরা প্রতিদিন তা তৈরি করে শ্রীকৃষ্ণকে নিবেদন করি আর মন্ত্র জপ করি,

নমো ব্রহ্মণ্যদেবায়
গোব্রাহ্মণ্যহিতায় চ
জগদ্ধিতায় কৃষ্ণায়
গোবিন্দায় নমো নমঃ

এই যা। এটি খুব কঠিন নয়। প্রত্যেকেই খাদ্যসামগ্রী তৈরি করতে পারে আর শ্রীকৃষ্ণকে নিবেদন করে সেটা গ্রহণ করতে পারে, এরপর পরিবারের অন্যান্য সদস্য অথবা বন্ধুদের নিয়ে বসে শ্রীকৃষ্ণের চিত্রপটের সামনে জপ কীর্তন করতে পারে,

হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে
হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে

আর একটি পবিত্র জীবন অতিবাহিত করতে পারে। শুধু এর ফলাফলটা কি হয় দেখ। যদি প্রত্যেক বাড়িতে, প্রত্যেক ব্যক্তি শ্রীকৃষ্ণকে জানার জন্য এই নীতিগুলো অনুশীলন করে, এটি হয়ে উঠবে... সমগ্র পৃথিবী বৈকুণ্ঠে পরিণত হবে। বৈকুণ্ঠ মানে যেখানে কোন কুণ্ঠা বা উদ্বিগ্নতা নেই। বৈকুণ্ঠ। বৈ মানে নেই, আর কুণ্ঠ মানে উদ্বিগ্নতা। এই পৃথিবী উদ্বিগ্নতায় পূর্ণ। সদা সমুদ্বিগ্ন ধিয়াম অসদগ্রহাত (শ্রীমদ্ভাগবত ৭.৫.৫)। কারণ আমরা এই অস্থায়ী জড় অস্তিত্বের জীবন গ্রহণ করেছি, তাই আমাদেরকে সবসময় উদ্বিগ্নতায় ভারাক্রান্ত হয়ে থাকতে হয়। চিন্ময় জগত, যেখানকার গ্রহলোক গুলোকে বলা হয় বৈকুণ্ঠ, ঠিক তার বিপরীত অবস্থা হচ্ছে এখানে। বৈকুণ্ঠ মানে উদ্বিগ্নতা বিহীন।

আমরা উদ্বিগ্নতা থেকে মুক্ত হতে চাই। প্রত্যেকেই নিজেকে উদ্বিগ্নতা থেকে মুক্ত করার চেষ্টা করছে, কিন্তু সে জানে না কিভাবে এই উদ্বিগ্নতা দূর করা যায়। উদ্বিগ্নতা থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য নেশার আশ্রয় গ্রহণ করার ব্যাপারটি কোন কাজেই আসে না। এটি একটি মাদকদ্রব্য। এটি হচ্ছে বিস্মরণ বা ভুলে যাওয়া। মাঝে মাঝে আমরা কিছু সময়ের জন্য সবকিছু ভুলে যাই, কিন্তু পুনরায় যখন আমরা চেতনায় ফিরে আসি, সেই একই উদ্বিগ্নতা আর সেই একই জিনিস থেকে যায়। তাই এটি তোমাকে সাহায্য করবে না।

যদি তুমি উদ্বিগ্নতা থেকে মুক্ত হতে চাও, তুমি যদি প্রকৃতপক্ষেই নিত্য আনন্দময় আর জ্ঞানময় জীবন চাও, তাহলে এটিই হচ্ছে উপায়। এটিই হচ্ছে পন্থা। তোমাকে শ্রীকৃষ্ণকে জানতে হবে। এখানে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে যে ন মে বিদুঃ সুরগণাঃ (ভগবদ্গীতা ১০.২)। কিন্তু একটি উপায় রয়েছে। সেবোন্মুখে হি জিহ্বাদৌ স্বয়মেব স্ফুরত্যদঃ(ভক্তিরসামৃতসিন্ধু ১.২.২৩৪)। এটি হচ্ছে একটি প্রক্রিয়া। শ্রীমদ্ভাগবতমের বিভিন্ন জায়গায় এই প্রক্রিয়াটির কথা বিভিন্নভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। যেমন ধর এক জায়গায় এটি বলা হয়েছে যে

জ্ঞানে প্রয়াসমুদপাস্য নমন্ত এব
জীবন্তি সন্মুখরিতাং ভবদীয়বার্তাম্‌
স্থানে স্থিতাঃ শ্রুতিগতাং তনুব্যাঙ্‌মনোভির্যে
প্রায়শোহজিত জিতোহপ্যসি তৈস্ত্রিলোক্যাম
(শ্রীমদ্ভাগবত ১০.১৪.৩)।

এটি খুব সুন্দর একটি শ্লোক। এটি বলা হয়েছে যে অজিত, কেউ তাঁকে জানতে পারে না। ভগবানের আরেকটি নাম হচ্ছে অজিত। অজিত মানে কেউ তাঁকে জয় করতে পারে না। কেউ তাঁর সামনে যেতে পারে না। তাই তাঁর নাম হচ্ছে অজিত। তো অজিত জিৎ হচ্ছেন। অজিত জিতোহপ্যসি। যদিও ভগবান হচ্ছেন অজ্ঞেয়, অজেয়, তবু তিনি জিত হচ্ছেন। কিভাবে? স্থানে স্থিতাঃ।