BN/Prabhupada 0080 - কৃষ্ণ তার সখাদের সাথে খেলতে খুব বেশি পছন্দ করেন: Difference between revisions

(Created page with "<!-- BEGIN CATEGORY LIST --> Category:1080 Bengali Pages with Videos Category:Prabhupada 0080 - in all Languages Category:BN-Quotes - 1967 Category:BN-Quotes - L...")
 
No edit summary
 
Line 7: Line 7:
[[Category:BN-Quotes - in USA]]
[[Category:BN-Quotes - in USA]]
<!-- END CATEGORY LIST -->
<!-- END CATEGORY LIST -->
<!-- BEGIN NAVIGATION BAR -- TO CHANGE TO YOUR OWN LANGUAGE BELOW SEE THE PARAMETERS OR VIDEO -->
<!-- BEGIN NAVIGATION BAR -- DO NOT EDIT OR REMOVE -->
{{1080 videos navigation - All Languages|French|FR/Prabhupada 0079 - Je n'ai aucun mérite|0079|FR/Prabhupada 0081 - Sur le soleil les corps sont faits de feu|0081}}
{{1080 videos navigation - All Languages|Bengali|BN/Prabhupada 0079 - আমার কোন শ্রেয় নেই|0079|BN/Prabhupada 0081 - সূর্য লোকে শরীর অগ্নি দিয়ে তৈরি|0081}}
<!-- END NAVIGATION BAR -->
<!-- END NAVIGATION BAR -->
<!-- BEGIN ORIGINAL VANIQUOTES PAGE LINK-->
<!-- BEGIN ORIGINAL VANIQUOTES PAGE LINK-->
Line 18: Line 18:


<!-- BEGIN VIDEO LINK -->
<!-- BEGIN VIDEO LINK -->
{{youtube_right|GWbsIO858T8|কৃষ্ণ তার অল্প বয়স্ক বন্ধুদের সাথে খেলতে খুব বেশি পছন্দ করেন<br />- Prabhupāda 0080}}
{{youtube_right|GWbsIO858T8|কৃষ্ণ তার সখাদের সাথে খেলতে খুব বেশি পছন্দ করেন<br />- Prabhupāda 0080}}
<!-- END VIDEO LINK -->
<!-- END VIDEO LINK -->


Line 30: Line 30:


<!-- BEGIN TRANSLATED TEXT -->
<!-- BEGIN TRANSLATED TEXT -->
এই মাত্র অনত্র নাহি শুনি অবধুত যাহার শ্রবনে চিত্ত হয় অবধুত , কৃষ্ণ বৎসৈর অসংখ্যাতি শুকদেব বানি কৃষ্ণ সঙ্গে কতো গোপ সংখ্যা নাহি জানি ([[Vanisource:CC Madhya 21.18-19|চৈ.চ.মধ্য ২১.১৮-১৯]]) গোপ। কৃষ্ণ তুমি জান , ওনার ধামে , উনি একজন ষোল বছরের বালক। এবং তার প্রধান লীলা হচ্ছে গরু চড়ানো, তার বনধু, ছেলে বনধুদের নিয়ে । এবং তাদের সঙ্গে খেলা করা , এইটা তার দিনের কাজ। তাই শুকদেব গোস্বামী একটি সুন্দর শ্লোক লিখেছেন, যে এই বালকরা যারা কৃষ্ণের সাথে খেলছে, তাদের পূর্বের জীবনগুলিতে তারা পবিত্র কর্মকাণ্ডের ধাপগুলি জমা করেছিল। কৃৎ-পুন্য-পুঞ্জ্যা ([[Vanisource:SB 10.12.11|শ্রী.ভা.১০.১২.১১]]) সকাম বিজাহ্রু ইত্যম সতাম ব্রহ্ম-শুখানুভুত্যা। এখন শুকদেব গোস্বামী লিখছেন। এই ছেলেরা যারা কৃষ্ণের সাথে খেলছে, তারা কার সাথে খেলছে? তারা খেলা করছে পুরম সত্যের সাথে, যারা মহান ঋষিদের দ্বারা অসাধারণ বলে মনে করা হয়। ইত্যাম সতাম ব্রহ্ম... ব্রহ্ম সুখা। ব্রহ্ম, চিন্ময় ব্রহ্ম উপলব্ধি। ব্রহ্ম উপলব্ধির ভাণ্ডার এখানে, কৃষ্ণ। এই বালকেরা যারা এই কৃষ্ণের সাথে খেলছে, সে ব্রহ্ম উপলব্ধির  জলাধার। ইত্যম সতাম ব্রহ্ম সুখানুভুত্যা দর্শম গতানাম পরাদৈবতেনা। এবং দশ্যাম গতানাম, যারা ভগবানকে গুরু হিসাবে গ্রহণ করেছেন, তার মানে ভক্তরা, তাদের জন্য এই কৃষ্ণ সর্বোচ্চ প্রভু। অসঙ্গতিবাদীদের জন্য তিনি সর্বোচ্চ ব্রহ্ম, এবং সঙ্গতিবাদীদের জন্য তিনি সর্বোচ্চ প্রভু হয়। এবং মায়াসৃতানাম নারদ্বারকেন। এবং যারা বস্তুবাদের অধীনে আছে, তাদের জন্য তিনি সাধারণ ছেলে। মায়াসৃতানাম নারদ্বারকেন সকাম বিজাহ্রু কৃৎ-পুন্যা-পুঞ্জাহ ([[Vanisource:SB 10.12.11|শ্রী.ভা.১০.১২.১১]]) তাঁর সাথে এইসব ছেলেমেয়ে্রা, যারা লক্ষ লক্ষ ,লক্ষাধিক ধর্মীয় কার্যকলাপ করেছেন, এখন তারা কৃষ্ণের সাথে খেলা করার সু্যোগ পেয়েছে , মুখোমুখি, যেমন সাধারন ছেলেমেয়েরা খেলা করে। তেমনভাবে কৃষ্ণ তার ছোট ছেলেমেয়েদের সাথে খেলতে খুব পছন্দ। যেটা ব্রহ্মসংহিতাতে বর্ননা করা আছে। সুরভীর অভিপালয়ন্তম, লক্ষ্মী-সহস্র-শত-সংভ্রম সেব্যমানম (ব্র.সং. ৫.২৯) তাই এই জিনিস এখানে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। এক এক গোপ করে বৎস চারন কোটি অরবুদ শঙ্খ, পদ্ম, তাহার গনন ([[Vanisource:CC Madhya 21.20চৈ.চ.মধ্য ২১.২০]]) এখন অনেক বন্ধু আছে, গাভী বালক, কেউ গণনা করতে পারে না। কেউ না ... সীমাহীন, সবকিছু সীমাহীন। তাদের অসংখ্য গরু, সীমাহীন সংখ্যক বন্ধু, সবকিছু সীমাহীন। বেত্র, বেনু ডালা, সৃঙ্গ, বস্ত্র, অলঙ্কার, গোপ গনের যতো, তারা নাহি লেখা পর ([[Vanisource:CC Madhya 21.21|চৈ.চ.মধ্য ২১.২১]]) এখন এই রাখাল ছেলেদের, তারা হাতে একটি বেত আছে, বেত্র। তাদের প্রত্যেকে বাঁশি আছে, বেত্র বেনু ডালা। এবং পদ্ম ফুল, এবং সৃঙ্গার, একটি বাঁশি। সৃঙ্গার বস্ত্র এবং খুব সুন্দরভাবে পরিহিত। এবং অলঙ্কার পূর্ণ। ঠিক যেমন কৃষ্ণ পরিহিত, একইভাবে, তার বন্ধু, রাখাল ছেলেদের পরিহিত । আধ্যাত্মিক জগতে যখন যাবেন , কে কৃষ্ণ আর কে কৃষ্ণ না আপনি বুঝতে পারবেন না। সবাই কৃষ্ণের মতন দেখতে , বৈকুন্ঠ জগতে সবাই বিষ্ণুর মতন। এটা স্বরূপ্য মুক্তি। জীব, যখন আধ্যত্মিক জগতে প্রবেশ করে, তারা কৃষ্ণ বা বিষ্ণুর মতন হয়ে যায়- সেখানে কোনও পার্থক্য নেই -কারন এটা চিন্ময় জগৎ। এখানে পার্থক্য আছে। অসহিষ্ণুতাবাদী, তারা বুঝতে পারে না যে, ব্যক্তিত্বের ক্ষেত্রেও কোন পার্থক্য নেই। যত তাড়াতাড়ি তারা ব্যক্তিত্ব  হিসাবে চিন্তা করে, ওহ, তারা মনে করেন যে একটি পার্থক্য আছে। তাহলে মুক্তি কি? হ্যাঁ প্রকৃতপক্ষে সেখানে কোনও পার্থক্য নেই। পার্থক্য শুধুমাত্র কৃষ্ণের ব্যক্তিত্ব এবং অন্যদের 'ব্যক্তিত্ব, তাদের চেতনা এই  যে "কৃষ্ণ আমাদের প্রেমের উদ্দেশ্য।" এটাই.। কৃষ্ণ হচ্ছে কেন্দ্রবিন্দু। এইভাবে পৃথক ছেলে মেয়ে এবং কৃষ্ণ । সবাই আধ্যাত্মিক সুখ ভোগ করছে।  
:এমত অন্যত্র নাহি শুনিয়ে অদ্ভুত।
 
:যাহার শ্রবণে চিত্ত হয় অবধূত
 
:'কৃষ্ণবৎসৈরসংখ্যাতৈঃ' - শুকদেব-বাণী।
 
:কৃষ্ণ-সঙ্গে কত গোপ - সংখ্যা নাহি জানি।
 
:([[Vanisource:CC Madhya 21.18|চৈচ মধ্য ২১, ১৮-১৯]])  
 
গোপ। শ্রীকৃষ্ণ, তোমরা জান, তাঁর ধামে তিনি ঠিক ষোল বৎসরের একটি বালক, আর সেখানে তাঁর প্রধান লীলা হচ্ছে তাঁর রাখাল বন্ধুদের সঙ্গে গাভীদের গোচারণ ভূমিতে নিয়ে যাওয়া, আর তাঁদের সাথে খেলা করা। এটি হচ্ছে শ্রীকৃষ্ণের দিবাভাগের কাজ। শুকদেব গোস্বামী খুব সুন্দর একটি শ্লোক লিখেছেন, যে সমস্ত বালকেরা শ্রীকৃষ্ণের সাথে খেলা করছে, তাঁদের পূর্ব জন্মের বহু পুঞ্জীভূত পুণ্যকর্ম সঞ্চিত ছিল। কৃতপুণ্যপুঞ্জাঃ ([[Vanisource:SB 10.12.7-11|শ্রীমদ্ভাগবত ১০.১২.১১]])। সাকং বিজহ্রুঃ ইত্থং সতাং ব্রহ্মসুখানুভূত্যা। এখন শুকদেব গোস্বামী লিখছেন। এই সমস্ত বালকেরা যারা শ্রীকৃষ্ণের সাথে খেলছে, তারা কার সাথে খেলছে? তারা পরম সত্যের সাথে খেলছে, যাকে অনেক মহান মহান সাধুরা অব্যক্ত বলে বর্ণনা করে থাকেন। ইত্থং সতাং ব্রহ্ম... ব্রহ্মসুখ। ব্রহ্ম, চিন্ময় ব্রহ্ম উপলব্ধি। শ্রীকৃষ্ণ হচ্ছেন ব্রহ্ম সুখের আধার। তাই এই সমস্ত বালকেরা শ্রীকৃষ্ণের সাথে খেলা করছে, তিনি হচ্ছেন ব্রহ্মসুখের আধার। ইত্থং সতাং ব্রহ্মসুখানুভূত্যা দাস্যং গতানাং পরদৈবতেন। এবং দাস্যং গতানাং, যারা পরম পুরুষোত্তম ভগবানকে প্রভু রূপে গ্রহণ করেছেন, মানে ভক্তরা, তাঁদের কাছে শ্রীকৃষ্ণ হচ্ছেন পরদেবতা। নির্বিশেষবাদীদের কাছে তিনি হচ্ছেন পরমব্রহ্ম, আর সবিশেষবাদীদের কাছে তিনি হচ্ছেন পরম পুরুষোত্তম ভগবান। আর মায়াশ্রিতানাং নরদারকেণ। মায়াশ্রিত সাধারণ মানুষদের কাছে তিনি একটি মানব শিশু। মায়াশ্রিতানাং নরদারকেণ সাকং বিজহ্রুঃ কৃতপুণ্যপুঞ্জাঃ ([[Vanisource:SB 10.12.7-11|শ্রীমদ্ভাগবত ১০.১২.১১]])। এই সমস্ত বালকেরা, যাদের জন্ম জন্মান্তরের পুঞ্জীভূত পুণ্যকর্ম রয়েছে, এখন তাঁরা শ্রীকৃষ্ণের সাথে মুখোমুখি খেলা করার সুযোগ পাচ্ছে, ঠিক যেমন সাধারণ বালকেরা খেলে থাকে। একইভাবে শ্রীকৃষ্ণও তাঁর তরুণ রাখাল বন্ধুদের সাথে খেলা করতে খুব ভালোবাসেন। ব্রহ্মসংহিতায় এটি উল্লেখ করা হয়েছে। সুরভীরভিপালয়ন্তম্‌, লক্ষ্মীসহস্রশতসম্ভ্রমসেব্যমানং (ব্রহ্মসংহিতা ৫.২৯)এই জিনিস গুলো এখানেও ব্যাখ্যা করা হয়েছে।  
 
:এক এক গোপ করে যে বৎস চারণ
 
:কোটি, অর্বুদ, শঙ্খ, পদ্ম, তাহার গণন
 
:([[Vanisource:CC Madhya 21.20|চৈচ মধ্য ২১.২০]])
 
সেখানে এতো পরিমাণ বন্ধু, গোপবালক রয়েছে যে কেউ তা গণনা করতে পারে না। কেউ না... অসংখ্য, সবকিছুই অসংখ্য। তাঁদের রয়েছে অসংখ্য গাভী, অসংখ্য গোপবালক, সবকিছুই অসংখ্য।
 
:বেত্র, বেণু, দল, শৃঙ্গ, বস্ত্র, অলংকার।
 
:গোপগণের যত, তার নাহি লেখা-পার
 
:([[Vanisource:CC Madhya 21.20|চৈচ মধ্য ২১.২০]])
 
এই সমস্ত গোপবালকদের হাতে রয়েছে বেত্র বা বেত। এবং তাঁদের প্রত্যেকের একটি করে বাঁশিও রয়েছে। বেত্র, বেণু, দল। একটি করে পদ্মফুল, আর একটি করে শিঙা। শৃঙ্গর বস্ত্র, খুব সুন্দর পোশাক। আর অলংকারপূর্ণ। শ্রীকৃষ্ণ যেমন করে সুসজ্জিত, তাঁর বন্ধুরাও ঠিক একইভাবে সুসজ্জিত। তুমি যখন চিন্ময় জগতে যাবে, তুমি বুঝতে পারবে না কে কৃষ্ণ আর কে কৃষ্ণ নয়। প্রত্যেকেই শ্রীকৃষ্ণের মতো, একইভাবে বৈকুণ্ঠ জগতেও প্রত্যেকেই দেখতে বিষ্ণুর মতো। এটিকে বলে সারূপ্য মুক্তি। জীব যখন চিন্ময় জগতে প্রবেশ করে, তারাও ঠিক শ্রীকৃষ্ণ বা বিষ্ণুর মতো হয়ে যায় - কোন পার্থক্য থাকে না - কারণ সেটি পরম। এর মধ্যেও সেখানে পার্থক্য থাকে। নির্বিশেষবাদীরা বুঝতে পারে না যে ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্য থাকা সত্ত্বেও কি করে পার্থক্য থাকে না। যখনই তারা ব্যক্তিস্বাতন্ত্রের কথা ভাবে, ওহ্‌, তারা ভাবে এখানে একটি পার্থক্য রয়েছে। তাহলে কিসের মুক্তি? হ্যাঁ। আসলে সেখানে কোন পার্থক্য নেই। পার্থক্যটা হচ্ছে শুধু মাত্র শ্রীকৃষ্ণের ব্যক্তিত্ব্য আর অন্যদের ব্যক্তিত্ব্য, তাঁরা সচেতন যে "শ্রীকৃষ্ণ হচ্ছেন আমাদের ভালোবাসার বিষয়।" এই যা। কেন্দ্র হচ্ছে শ্রীকৃষ্ণ। এইভাবে আলাদা আলাদা ছেলে, মেয়ে, শ্রীকৃষ্ণ, প্রত্যেকেই চিন্ময় আনন্দ উপভোগ করছে।
<!-- END TRANSLATED TEXT -->
<!-- END TRANSLATED TEXT -->

Latest revision as of 09:17, 2 December 2021



Lecture on CC Madhya-lila 21.13-49 -- New York, January 4, 1967

এমত অন্যত্র নাহি শুনিয়ে অদ্ভুত।
যাহার শ্রবণে চিত্ত হয় অবধূত
'কৃষ্ণবৎসৈরসংখ্যাতৈঃ' - শুকদেব-বাণী।
কৃষ্ণ-সঙ্গে কত গোপ - সংখ্যা নাহি জানি।
(চৈচ মধ্য ২১, ১৮-১৯)

গোপ। শ্রীকৃষ্ণ, তোমরা জান, তাঁর ধামে তিনি ঠিক ষোল বৎসরের একটি বালক, আর সেখানে তাঁর প্রধান লীলা হচ্ছে তাঁর রাখাল বন্ধুদের সঙ্গে গাভীদের গোচারণ ভূমিতে নিয়ে যাওয়া, আর তাঁদের সাথে খেলা করা। এটি হচ্ছে শ্রীকৃষ্ণের দিবাভাগের কাজ। শুকদেব গোস্বামী খুব সুন্দর একটি শ্লোক লিখেছেন, যে সমস্ত বালকেরা শ্রীকৃষ্ণের সাথে খেলা করছে, তাঁদের পূর্ব জন্মের বহু পুঞ্জীভূত পুণ্যকর্ম সঞ্চিত ছিল। কৃতপুণ্যপুঞ্জাঃ (শ্রীমদ্ভাগবত ১০.১২.১১)। সাকং বিজহ্রুঃ ইত্থং সতাং ব্রহ্মসুখানুভূত্যা। এখন শুকদেব গোস্বামী লিখছেন। এই সমস্ত বালকেরা যারা শ্রীকৃষ্ণের সাথে খেলছে, তারা কার সাথে খেলছে? তারা পরম সত্যের সাথে খেলছে, যাকে অনেক মহান মহান সাধুরা অব্যক্ত বলে বর্ণনা করে থাকেন। ইত্থং সতাং ব্রহ্ম... ব্রহ্মসুখ। ব্রহ্ম, চিন্ময় ব্রহ্ম উপলব্ধি। শ্রীকৃষ্ণ হচ্ছেন ব্রহ্ম সুখের আধার। তাই এই সমস্ত বালকেরা শ্রীকৃষ্ণের সাথে খেলা করছে, তিনি হচ্ছেন ব্রহ্মসুখের আধার। ইত্থং সতাং ব্রহ্মসুখানুভূত্যা দাস্যং গতানাং পরদৈবতেন। এবং দাস্যং গতানাং, যারা পরম পুরুষোত্তম ভগবানকে প্রভু রূপে গ্রহণ করেছেন, মানে ভক্তরা, তাঁদের কাছে শ্রীকৃষ্ণ হচ্ছেন পরদেবতা। নির্বিশেষবাদীদের কাছে তিনি হচ্ছেন পরমব্রহ্ম, আর সবিশেষবাদীদের কাছে তিনি হচ্ছেন পরম পুরুষোত্তম ভগবান। আর মায়াশ্রিতানাং নরদারকেণ। মায়াশ্রিত সাধারণ মানুষদের কাছে তিনি একটি মানব শিশু। মায়াশ্রিতানাং নরদারকেণ সাকং বিজহ্রুঃ কৃতপুণ্যপুঞ্জাঃ (শ্রীমদ্ভাগবত ১০.১২.১১)। এই সমস্ত বালকেরা, যাদের জন্ম জন্মান্তরের পুঞ্জীভূত পুণ্যকর্ম রয়েছে, এখন তাঁরা শ্রীকৃষ্ণের সাথে মুখোমুখি খেলা করার সুযোগ পাচ্ছে, ঠিক যেমন সাধারণ বালকেরা খেলে থাকে। একইভাবে শ্রীকৃষ্ণও তাঁর তরুণ রাখাল বন্ধুদের সাথে খেলা করতে খুব ভালোবাসেন। ব্রহ্মসংহিতায় এটি উল্লেখ করা হয়েছে। সুরভীরভিপালয়ন্তম্‌, লক্ষ্মীসহস্রশতসম্ভ্রমসেব্যমানং (ব্রহ্মসংহিতা ৫.২৯)। এই জিনিস গুলো এখানেও ব্যাখ্যা করা হয়েছে।

এক এক গোপ করে যে বৎস চারণ
কোটি, অর্বুদ, শঙ্খ, পদ্ম, তাহার গণন
(চৈচ মধ্য ২১.২০)।

সেখানে এতো পরিমাণ বন্ধু, গোপবালক রয়েছে যে কেউ তা গণনা করতে পারে না। কেউ না... অসংখ্য, সবকিছুই অসংখ্য। তাঁদের রয়েছে অসংখ্য গাভী, অসংখ্য গোপবালক, সবকিছুই অসংখ্য।

বেত্র, বেণু, দল, শৃঙ্গ, বস্ত্র, অলংকার।
গোপগণের যত, তার নাহি লেখা-পার
(চৈচ মধ্য ২১.২০)।

এই সমস্ত গোপবালকদের হাতে রয়েছে বেত্র বা বেত। এবং তাঁদের প্রত্যেকের একটি করে বাঁশিও রয়েছে। বেত্র, বেণু, দল। একটি করে পদ্মফুল, আর একটি করে শিঙা। শৃঙ্গর বস্ত্র, খুব সুন্দর পোশাক। আর অলংকারপূর্ণ। শ্রীকৃষ্ণ যেমন করে সুসজ্জিত, তাঁর বন্ধুরাও ঠিক একইভাবে সুসজ্জিত। তুমি যখন চিন্ময় জগতে যাবে, তুমি বুঝতে পারবে না কে কৃষ্ণ আর কে কৃষ্ণ নয়। প্রত্যেকেই শ্রীকৃষ্ণের মতো, একইভাবে বৈকুণ্ঠ জগতেও প্রত্যেকেই দেখতে বিষ্ণুর মতো। এটিকে বলে সারূপ্য মুক্তি। জীব যখন চিন্ময় জগতে প্রবেশ করে, তারাও ঠিক শ্রীকৃষ্ণ বা বিষ্ণুর মতো হয়ে যায় - কোন পার্থক্য থাকে না - কারণ সেটি পরম। এর মধ্যেও সেখানে পার্থক্য থাকে। নির্বিশেষবাদীরা বুঝতে পারে না যে ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্য থাকা সত্ত্বেও কি করে পার্থক্য থাকে না। যখনই তারা ব্যক্তিস্বাতন্ত্রের কথা ভাবে, ওহ্‌, তারা ভাবে এখানে একটি পার্থক্য রয়েছে। তাহলে কিসের মুক্তি? হ্যাঁ। আসলে সেখানে কোন পার্থক্য নেই। পার্থক্যটা হচ্ছে শুধু মাত্র শ্রীকৃষ্ণের ব্যক্তিত্ব্য আর অন্যদের ব্যক্তিত্ব্য, তাঁরা সচেতন যে "শ্রীকৃষ্ণ হচ্ছেন আমাদের ভালোবাসার বিষয়।" এই যা। কেন্দ্র হচ্ছে শ্রীকৃষ্ণ। এইভাবে আলাদা আলাদা ছেলে, মেয়ে, শ্রীকৃষ্ণ, প্রত্যেকেই চিন্ময় আনন্দ উপভোগ করছে।