BN/Prabhupada 0165 - শুদ্ধিকৃত কার্যকলাপ-ই হল ভক্তি: Difference between revisions
(Created page with "<!-- BEGIN CATEGORY LIST --> Category:1080 Bengali Pages with Videos Category:Prabhupada 0165 - in all Languages Category:BN-Quotes - 1966 Category:BN-Quotes - L...") |
No edit summary |
||
Line 7: | Line 7: | ||
[[Category:BN-Quotes - in USA, New York]] | [[Category:BN-Quotes - in USA, New York]] | ||
<!-- END CATEGORY LIST --> | <!-- END CATEGORY LIST --> | ||
<!-- BEGIN NAVIGATION BAR -- | <!-- BEGIN NAVIGATION BAR -- DO NOT EDIT OR REMOVE --> | ||
{{1080 videos navigation - All Languages| | {{1080 videos navigation - All Languages|Bengali|BN/Prabhupada 0164 - পথ সহজ করতে বর্নাশ্রম-ধর্ম প্রতিষ্ঠা করা আবশ্যক|0164|BN/Prabhupada 0166 - আপনি বরফ স্খলন বন্ধ করতে পারবেন না|0166}} | ||
<!-- END NAVIGATION BAR --> | <!-- END NAVIGATION BAR --> | ||
<!-- BEGIN ORIGINAL VANIQUOTES PAGE LINK--> | <!-- BEGIN ORIGINAL VANIQUOTES PAGE LINK--> | ||
Line 18: | Line 18: | ||
<!-- BEGIN VIDEO LINK --> | <!-- BEGIN VIDEO LINK --> | ||
{{youtube_right|KV-50u1foXY| | {{youtube_right|KV-50u1foXY|শুদ্ধিকৃত কার্যকলাপ-ই হল ভক্তি<br />- Prabhupāda 0165}} | ||
<!-- END VIDEO LINK --> | <!-- END VIDEO LINK --> | ||
Line 30: | Line 30: | ||
<!-- BEGIN TRANSLATED TEXT --> | <!-- BEGIN TRANSLATED TEXT --> | ||
'পরম চেতন', এটি ভগবদ্গীতায় ব্যাখ্যা করা হয়েছে। সেই অধ্যায়ে যেখানে জীব এবং ঈশ্বরের মধ্যে পার্থক্য আলোচনা করা হয়েছে। ক্ষেত্র-ক্ষেত্রজ্ঞ। এই ক্ষেত্রজ্ঞ বর্ণনা করতে গিয়ে বলা হয়েছে ভগবানও ক্ষেত্রজ্ঞ অথবা 'চেতন', এবং জীব বা জীবসত্তা, তারাও চেতন। কিন্তু পার্থক্য এই যে একটি জীবসত্তা কেবল তার নিজ সীমিত শরীর সম্পর্কেই জ্ঞাত। কিন্তু ভগবান সকল শরীর সম্পর্কেই জ্ঞাত। ঈশ্বরঃ সর্বভূতানাং হৃদ্দেশেহোর্জুন তিষ্ঠতি ([[Vanisource:BG 18.61 (1972)|গীতা. ১৮.৬১]]) ভগবান প্রত্যেকটি জীবের হৃদয়ের অন্তঃস্থলে বাস করেন, তাই তিনি প্রত্যেকটি জীবের মনস্তাত্ত্বিক গতিবিধি, কার্যকলাপ ইত্যাদি সম্পর্কে পূর্ণরূপে জ্ঞাত। আমাদের এটি ভুলে যাওয়া উচিত নয়। এটিও ব্যাখ্যা করা হয়েছে যে পরমাত্মা, বা পরমপুরুষ ভগবান সকলের হৃদয়ে ঈশ্বর এবং নিয়ন্ত্রণকর্তারূপে বিরাজমান এবং তিনি নির্দেশনা প্রদান করছেন। তিনি নির্দেশনা দিচ্ছেন। সর্বস্য চাহং হৃদি সন্নিবিষ্ট ([[Vanisource:BG 15.15 (1972)|গীতা.১৫.১৫]]) তিনি প্রতেকের হৃদয়ে বিরাজ করছেন এবং জীবের বাসনা অনুযায়ী তাদের কাজ করার নির্দেশনা দিচ্ছেন। | |||
কি করতে হবে জীব তা ভুলে যায়। প্রথমে, জীব একটি নির্দিষ্টভাবে কাজ করার জন্য সঙ্কল্পবদ্ধ হয়, এবং তারপর সে তার নিজকৃত কর্মের ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ায় জড়িয়ে পড়ে। কিন্তু এক ধরণের শরীর ত্যাগ করার পর, যখন সে অন্য এক ধরণের দেহে প্রবেশ করে ... ঠিক যেমন আমরা এক ধরণের পোষাক পরিবর্তন করে অন্য এক ধরণের পোষাক পরিধান করি, ঠিক তেমনই, এই ভগবদ্গীতায় এটি বর্ণনা করা হয়েছে যে বাসাংসি জীর্ণানি যথা বিহায় ([[Vanisource:BG 2.22 (1972)|গীতা - ২.২২]]) ঠিক যেভাবে একজন ব্যক্তি বিভিন্ন পোষাক পরিবর্তন করে, একইভাবে জীবও বিভিন্ন শরীর পরিবর্তন করে, আত্মা এক দেহ থেকে আরেক দেহে স্থানান্তরিত হয় এবং অতীতের কার্যকলাপের ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া টেনে নিয়ে আসে। সুতরাং এই ধরণের কার্যকলাপ তখনই পরিবর্তন করা যায় যখন জীব সত্ত্বগুণের স্তরে বিরাজ করে, সে তখন প্রকৃতিস্থ হয় এবং বুঝতে পারে তার কি ধরনের কার্যকলাপ গ্রহণ করা উচিত, এবং যদি সে তা করে, তবেই তার অতীত কার্যকলাপের সমস্ত ক্রিয়া-প্রক্রিয়াসমূহ পরিবর্তন করা যেতে পারে। সেজন্য কর্ম নিত্য নয়। পাঁচটি বিষয়ের মধ্যে ঈশ্বর, জীব, প্রকৃতি, কাল, এবং কর্ম বাকী চারটি এই চারটি বিষয় শাশ্বত, যেখানে কি না কর্ম শাশ্বত নয়। | |||
এখন এই চেতন ঈশ্বর, পরম চেতন ঈশ্বর পরম চেতন ঈশ্বর এবং জীবের মাঝে বর্তমানের পার্থক্যটি হল এই রকম। চেতনা, ভগবান এবং জীব উভয়ের চেতনাই, চিন্ময় চেতনা। ব্যাপারটি এমন নয় যে, জড় বিষয়ের সংস্পর্শে এই চেতনা উৎপন্ন হয়েছে। এটি একটি ভুল ধারণা। 'কোন একটি নির্দিষ্ট পরিস্থিতে জড় সংমিশ্রণের মাধ্যমে চেতনা জন্মলাভ করে', এই তত্ত্বটি ভগবদ্গীতায় স্বীকৃত হয় নি। এটি হতে পারে না। জড় পরিস্থিতির আবরণ দ্বারা চেতনা হয়তো বিকৃতভাবে প্রতিফলিত হতে পারে, ঠিক যেমন একটি রঙ্গীন কাঁচের মধ্য দিয়ে প্রতিফলিত আলো সেই রঙের বলে মনে হতে পারে। একইভাবে, ভগবানের চেতনা কখনও জড় কিছুর দ্বারা প্রভাবিত হয় না। যেমন পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন, ময়াধ্যক্ষেণ প্রকৃতি ([[Vanisource:BG 9.10 (1972)|গীতা ৯.১০]]) যখন তিনি এই জড় জগতে অবতরণ করেন, তখন তাঁর চেতনা জড় কিছুর দ্বারা প্রভাবিত হয় না। যদি তাঁর চেতনা জড় সংস্পর্শের দ্বারা প্রভাবিত হত, তবে তিনি এই চিন্ময় বিষয়বস্তু নিয়ে ভগবদ্গীতার জ্ঞান দানে অযোগ্য হতেন। জড় কলুষিত চেতনা থেকে মুক্ত না হয়ে কেউই চিন্ময় জগৎ সম্পর্কে কিছু বলতে পারে না। | |||
সুতরাং ভগবান জড় সংসপর্শ দ্বারা কলুষিত ছিলেন না। কিন্তু আমাদের চেতনা, বর্তমানে জড় সংস্পর্শ দ্বারা কলুষিত। সুতরাং সম্পূর্ন ব্যাপারটি হল, ঠিক যেমনটা ভগবদ্গীতা শিক্ষা দিচ্ছে, আমাদের এই জড় চেতনাকে শুদ্ধ করতে হবে এবং সেই বিশুদ্ধ চেতনায় কর্ম সম্পাদন করতে হবে। সেটি আমাদের সুখী করবে। আমরা থামাতে পারি না। আমরা কাজ করা বন্ধ করতে পারি না। আমাদের কাজ-কর্মসমূহ শুদ্ধ করতে হবে এবং এই শুদ্ধ চেতনায় কাজ করাকে বলা হয় ভক্তি। ভক্তি মানে সেই কাজগুলো বাইরে থেকে সাধারণ কার্যকলাপের মতোই দেখতে মনে হয়, কিন্তু আসলে সেগুলো কলুষিত কর্ম নয়। সেগুলো শুদ্ধ সেবা। সুতরাং একজন অজ্ঞ ব্যক্তি হয়তো দেখতে পারেন যে একজন ভক্ত একজন সাধারণ মানুষের মত কাজ করছে, কিন্তু একজন অল্পজ্ঞানসম্পন্ন ব্যক্তি এটা জানে না যে একজন ভক্তের কার্যকলাপ বা ভগবানের কার্যকলাপ কখনও জড়ের অশুদ্ধ চেতনার দ্বারা কলুষিত হয় না তাতে জড়া প্রকৃতির তিন গুণের অশুদ্ধতা নেই, বরং তা চিন্ময় চেতনার। সুতরাং আমাদের এটি জানা দরকার যে আমাদের চেতনা জড় সংস্পর্শ দ্বারা কলুষিত। | |||
<!-- END TRANSLATED TEXT --> | <!-- END TRANSLATED TEXT --> |
Latest revision as of 07:26, 5 December 2021
Lecture on BG Introduction — New York, February 19-20, 1966
'পরম চেতন', এটি ভগবদ্গীতায় ব্যাখ্যা করা হয়েছে। সেই অধ্যায়ে যেখানে জীব এবং ঈশ্বরের মধ্যে পার্থক্য আলোচনা করা হয়েছে। ক্ষেত্র-ক্ষেত্রজ্ঞ। এই ক্ষেত্রজ্ঞ বর্ণনা করতে গিয়ে বলা হয়েছে ভগবানও ক্ষেত্রজ্ঞ অথবা 'চেতন', এবং জীব বা জীবসত্তা, তারাও চেতন। কিন্তু পার্থক্য এই যে একটি জীবসত্তা কেবল তার নিজ সীমিত শরীর সম্পর্কেই জ্ঞাত। কিন্তু ভগবান সকল শরীর সম্পর্কেই জ্ঞাত। ঈশ্বরঃ সর্বভূতানাং হৃদ্দেশেহোর্জুন তিষ্ঠতি (গীতা. ১৮.৬১) ভগবান প্রত্যেকটি জীবের হৃদয়ের অন্তঃস্থলে বাস করেন, তাই তিনি প্রত্যেকটি জীবের মনস্তাত্ত্বিক গতিবিধি, কার্যকলাপ ইত্যাদি সম্পর্কে পূর্ণরূপে জ্ঞাত। আমাদের এটি ভুলে যাওয়া উচিত নয়। এটিও ব্যাখ্যা করা হয়েছে যে পরমাত্মা, বা পরমপুরুষ ভগবান সকলের হৃদয়ে ঈশ্বর এবং নিয়ন্ত্রণকর্তারূপে বিরাজমান এবং তিনি নির্দেশনা প্রদান করছেন। তিনি নির্দেশনা দিচ্ছেন। সর্বস্য চাহং হৃদি সন্নিবিষ্ট (গীতা.১৫.১৫) তিনি প্রতেকের হৃদয়ে বিরাজ করছেন এবং জীবের বাসনা অনুযায়ী তাদের কাজ করার নির্দেশনা দিচ্ছেন।
কি করতে হবে জীব তা ভুলে যায়। প্রথমে, জীব একটি নির্দিষ্টভাবে কাজ করার জন্য সঙ্কল্পবদ্ধ হয়, এবং তারপর সে তার নিজকৃত কর্মের ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ায় জড়িয়ে পড়ে। কিন্তু এক ধরণের শরীর ত্যাগ করার পর, যখন সে অন্য এক ধরণের দেহে প্রবেশ করে ... ঠিক যেমন আমরা এক ধরণের পোষাক পরিবর্তন করে অন্য এক ধরণের পোষাক পরিধান করি, ঠিক তেমনই, এই ভগবদ্গীতায় এটি বর্ণনা করা হয়েছে যে বাসাংসি জীর্ণানি যথা বিহায় (গীতা - ২.২২) ঠিক যেভাবে একজন ব্যক্তি বিভিন্ন পোষাক পরিবর্তন করে, একইভাবে জীবও বিভিন্ন শরীর পরিবর্তন করে, আত্মা এক দেহ থেকে আরেক দেহে স্থানান্তরিত হয় এবং অতীতের কার্যকলাপের ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া টেনে নিয়ে আসে। সুতরাং এই ধরণের কার্যকলাপ তখনই পরিবর্তন করা যায় যখন জীব সত্ত্বগুণের স্তরে বিরাজ করে, সে তখন প্রকৃতিস্থ হয় এবং বুঝতে পারে তার কি ধরনের কার্যকলাপ গ্রহণ করা উচিত, এবং যদি সে তা করে, তবেই তার অতীত কার্যকলাপের সমস্ত ক্রিয়া-প্রক্রিয়াসমূহ পরিবর্তন করা যেতে পারে। সেজন্য কর্ম নিত্য নয়। পাঁচটি বিষয়ের মধ্যে ঈশ্বর, জীব, প্রকৃতি, কাল, এবং কর্ম বাকী চারটি এই চারটি বিষয় শাশ্বত, যেখানে কি না কর্ম শাশ্বত নয়।
এখন এই চেতন ঈশ্বর, পরম চেতন ঈশ্বর পরম চেতন ঈশ্বর এবং জীবের মাঝে বর্তমানের পার্থক্যটি হল এই রকম। চেতনা, ভগবান এবং জীব উভয়ের চেতনাই, চিন্ময় চেতনা। ব্যাপারটি এমন নয় যে, জড় বিষয়ের সংস্পর্শে এই চেতনা উৎপন্ন হয়েছে। এটি একটি ভুল ধারণা। 'কোন একটি নির্দিষ্ট পরিস্থিতে জড় সংমিশ্রণের মাধ্যমে চেতনা জন্মলাভ করে', এই তত্ত্বটি ভগবদ্গীতায় স্বীকৃত হয় নি। এটি হতে পারে না। জড় পরিস্থিতির আবরণ দ্বারা চেতনা হয়তো বিকৃতভাবে প্রতিফলিত হতে পারে, ঠিক যেমন একটি রঙ্গীন কাঁচের মধ্য দিয়ে প্রতিফলিত আলো সেই রঙের বলে মনে হতে পারে। একইভাবে, ভগবানের চেতনা কখনও জড় কিছুর দ্বারা প্রভাবিত হয় না। যেমন পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন, ময়াধ্যক্ষেণ প্রকৃতি (গীতা ৯.১০) যখন তিনি এই জড় জগতে অবতরণ করেন, তখন তাঁর চেতনা জড় কিছুর দ্বারা প্রভাবিত হয় না। যদি তাঁর চেতনা জড় সংস্পর্শের দ্বারা প্রভাবিত হত, তবে তিনি এই চিন্ময় বিষয়বস্তু নিয়ে ভগবদ্গীতার জ্ঞান দানে অযোগ্য হতেন। জড় কলুষিত চেতনা থেকে মুক্ত না হয়ে কেউই চিন্ময় জগৎ সম্পর্কে কিছু বলতে পারে না।
সুতরাং ভগবান জড় সংসপর্শ দ্বারা কলুষিত ছিলেন না। কিন্তু আমাদের চেতনা, বর্তমানে জড় সংস্পর্শ দ্বারা কলুষিত। সুতরাং সম্পূর্ন ব্যাপারটি হল, ঠিক যেমনটা ভগবদ্গীতা শিক্ষা দিচ্ছে, আমাদের এই জড় চেতনাকে শুদ্ধ করতে হবে এবং সেই বিশুদ্ধ চেতনায় কর্ম সম্পাদন করতে হবে। সেটি আমাদের সুখী করবে। আমরা থামাতে পারি না। আমরা কাজ করা বন্ধ করতে পারি না। আমাদের কাজ-কর্মসমূহ শুদ্ধ করতে হবে এবং এই শুদ্ধ চেতনায় কাজ করাকে বলা হয় ভক্তি। ভক্তি মানে সেই কাজগুলো বাইরে থেকে সাধারণ কার্যকলাপের মতোই দেখতে মনে হয়, কিন্তু আসলে সেগুলো কলুষিত কর্ম নয়। সেগুলো শুদ্ধ সেবা। সুতরাং একজন অজ্ঞ ব্যক্তি হয়তো দেখতে পারেন যে একজন ভক্ত একজন সাধারণ মানুষের মত কাজ করছে, কিন্তু একজন অল্পজ্ঞানসম্পন্ন ব্যক্তি এটা জানে না যে একজন ভক্তের কার্যকলাপ বা ভগবানের কার্যকলাপ কখনও জড়ের অশুদ্ধ চেতনার দ্বারা কলুষিত হয় না তাতে জড়া প্রকৃতির তিন গুণের অশুদ্ধতা নেই, বরং তা চিন্ময় চেতনার। সুতরাং আমাদের এটি জানা দরকার যে আমাদের চেতনা জড় সংস্পর্শ দ্বারা কলুষিত।