BN/Prabhupada 0313 - সমস্ত প্রশংসা কৃষ্ণের প্রতিই যায়

Revision as of 05:06, 13 December 2021 by Soham (talk | contribs)
(diff) ← Older revision | Latest revision (diff) | Newer revision → (diff)


Lecture on SB 3.26.42 -- Bombay, January 17, 1975

ভক্তের কাজ হল প্রশংসা করা। তিনি নিজের জন্য কোনও কৃতিত্ব নেন না। আসলে কৃতিত্ব নেওয়ার মতো এখানে কিছু নেই। সমস্ত কৃতিত্ব কৃষ্ণের। একজন ভক্ত না তো এটা দাবি করতে পারে না তো এটা সম্ভব করতে পারে। এমনকি তিনি খুব বড় ভক্ত হতে পারেন, তিনি তার মহৎ কার্যক্রমের জন্য কোনো কৃতিত্ব দাবি করেন না। তাঁর মহৎ কার্যক্রম মানে কৃষ্ণ কে মহৎ বানানো। এটাই তাঁর মহৎ কার্য, এমন নয় তিনি জাগতিক লোকদের মতো তাঁর কৃতিত্ব নিতে চাইবেন। না। স্ব কর্মণা তমঅভ্যার্চ সিদ্ধিম্‌ বিন্দতি মানবঃ (ভ.গী. ১৮.৪৬)। স্ব-কর্মণা। আপনি যে কোনো ধরনের কাজে বা যে কোনো বিভাগের কাজে যুক্ত হতে পারেন। কিন্তু আপনাকে কঠোর পরিশ্রমের দ্বারা ভগবান কৃষ্ণের অস্তিত্ব স্থাপনা করতে হবে। এবং যাই হোক না কেন, এটি কৃষ্ণের বিশেষজ্ঞ ব্যবস্থাপক দ্বারা করতে হবে। সূর্য সঠিক সময়ে উদিত হয় এবং সঠিক সময়ে অস্ত যায়। এবং তাপমাত্রা বিভিন্ন ঋতু তে পরিবর্তিত হতে থাকে, উত্তরায়ন, দক্ষিণায়ন- সমস্ত কিছু ঘটে পরমেশ্বরের এর আদেশ ও নির্দেশে। ময়াধ্যক্ষেণ প্রকৃতিঃ (ভ.গী. ৯.১০)। এমন ভেবো না যে সূর্য স্বংয়ক্রিয়ভাবে কাজ করছে। স্বয়ংক্রিয়ভাবে। সেখানে তার প্রভু আছেন কৃষ্ণ। যস্যাজ্ঞয়া ভ্রমতি সম্ভৃত কালচক্রঃ। সূর্য ব্রহ্মাণ্ডের সবচেয়ে শক্তিশালী পদার্থ। সেখানে কয়েক লক্ষ সূর্য আছে। এখানে কেবল একটি আছে। কিন্তু সে কৃষ্ণের আদেশ পালন করছে। যচ্চক্ষুরেষ সবিতা সকল গ্রহাণাম্‌ রাজা সমস্ত সুরমূর্তিরশেষ তেজা। অশেষ তেজাঃ, অফুরন্ত আলো, অফুরন্ত অগ্নি, অফুরন্ত তাপ। অশেষ। অশেষ তেজা। সেখানে সূর্যের আলো এবং তাপের কোনো তুলনা হয়না। এই ব্রহ্মাণ্ডের মধ্যে কোনো তুলনাই হবে না। অফুরন্ত। লক্ষ লক্ষ বছর ধরে সূর্যের এই তাপ ও আলো প্রকাশিত হচ্ছে। কিন্তু তা একটুও কম হয়নি। এটা একই আছে যেমন লক্ষ বছর আগে ছিল। এবং লক্ষ লক্ষ বছর ধরে এটি তাপ এবং আলো দেওয়ার পরেও এর তাপ এবং আলো একই ভাবে আছে।

সুতরাং এটা কী একটি জাগতিক বস্তুর পক্ষে সম্ভব, অফুরন্ত আলো এবং তাপ দেওয়ার পরেও তা একই রকম থাকা। কেবলমাত্র পরম প্রভুর শক্তি বিস্তারের দ্বারা তার ক্ষমতা সে এখনও একই রেখেছে। এটি কখন কমে যায় না। পূর্ণস্য পূর্ণমাদায় পূর্ণম্‌ এব অবশিষ্যতে।(ঈশোপনিষদ মঙ্গলাচরণ)। যদি আমরা একটি জাগতিক বস্তু দেখি লক্ষ লক্ষ বছর ধরে তার তাপ বিকিরণ করে চলেছে, এর তাপ আলো একই রকম আছে, কেন এটি পরমেশ্বর এর পক্ষে সম্ভব নয়? কারণ ঈশোপনিষদে বর্ণনা করা আছে যে, পূর্নস্য পূর্নম অদ্য পূর্ণম এব অবশিশ্যতে। যদি আপনি কৃষ্ণের সমস্ত শক্তি কৃষ্ণের থেকে নিয়ে নেন, তখন সেটি তার পরেও একই রকম থাকে। কিন্তু আপনি বর্তমান দিনে আশ্চর্য হবেন। আধুনিক ভগবান- এখন অনেক আধুনিক ভগবান হয়েছে," আমি নাম করবো না। কিন্তু একজন আধুনিক ভগবান তার ক্ষমতা তার শিষ্য কে দিয়েছিলেন, এবং যখন তিনি চেতনা পেলেন, তখন তিনি কান্না করছিলেন। শিষ্য গুরু কে জিজ্ঞাসা করলেন," মহাশয় আপনি কেন কান্না করছেন? এখন আমার সমস্ত কিছু শেষ হয়ে গেছে। আমি তোমাকে সমস্ত কিছু দিয়ে দিয়েছি। আমি তোমাকে সমস্ত কিছু দিয়ে দিয়েছি, তাই আমার সমস্ত কিছু শেষ। এটা আধ্যাত্মিক নয়। এটা জাগতিক। আমি একশ টাকা পেয়েছি। যদি আমি আপনাকে একশো টাকা দিয়ে দি তাহলে আমার পকেট ফাঁকা হয়ে যাবে। কিন্তু কৃষ্ণের সেইরকম নয়। কৃষ্ণ শত হাজার এবং লক্ষ কৃষ্ণ তৈরি করতে পারেন, কিন্তু কৃষ্ণ একই থাকেন। সেটা কৃষ্ণই। তাঁর শক্তি কখনো সমাপ্ত হয় না। তাই বলা হয় পূর্ণস্য পূর্ণমাদায় পূর্ণম্‌ এব অবশিষ্যতে। (ঈশো মঙ্গলাচরন)।

তাই এই নকল ভগবান আমাদের কখনো সাহায্য করবে না। প্রকৃত ভগবান। প্রকৃত ভগবান হচ্ছে,

ঈশ্বরঃ পরম কৃষ্ণ
সচ্চিদানন্দ বিগ্রহ
অনাদিরাদি গোবিন্দ
সর্ব কারণ কারনম
(ব্র. স.৫.১)।

সর্ব কারণ কারনম, তিনি কখন সমাপ্ত হন না। তিনি কখন সমাপ্ত হন না। বলা হয়েছে যে,

যস্যৈক নিশ্বসিত কালম্‌ অথাবলম্ব
জীবন্তি লোমবিলোজা জগদন্ড নাথা
বিষ্ণুর মহান স ইহ যস্য কাল বিশেষ
গোবিন্দম্‌ আদি পুরুষম্‌ তমহম্‌ ভজামি
(ব্রহ্ম সংহিতা ৫.৪৮)

লক্ষ লক্ষ ব্রহ্মাণ্ড তাঁর নিঃশ্বাস ত্যাগ থেকে সৃষ্ট হয়, এবং তিনি যখন নিঃশ্বাস গ্রহণ করেন তখন ব্রহ্মান্ডের বিনাশ হয়। এই ভাবে ব্রহ্মান্ড সৃষ্ট হয়। জগদ অন্ড নাথা। জগদ অন্ড নাথা। জগদ অন্ড মানে ব্রহ্মান্ড, এবং নাথা, ব্রহ্মান্ডের প্রভু, মানে ভগবান ব্রহ্মা। তাঁর জীবনের আয়ুষ্কালের একটি সময় আছে এবং তাঁর জীবনের আয়ুষ্কালটি কতো? সেটি মহা বিষ্ণুর এক নিঃশ্বাস গ্রহণ অবধি।