BN/Prabhupada 0353 - কৃষ্ণ সম্বন্ধে লিখ, পড়ো, বলো, ভাব, পুজা কর, রান্না কর, ভোজন কর - এটাই কৃষ্ণকীর্তন

Revision as of 08:06, 26 July 2018 by Soham (talk | contribs) (Created page with "<!-- BEGIN CATEGORY LIST --> Category:1080 Bengali Pages with Videos Category:Prabhupada 0353 - in all Languages Category:BN-Quotes - 1974 Category:BN-Quotes - L...")
(diff) ← Older revision | Latest revision (diff) | Newer revision → (diff)


Lecture on SB 2.1.2 -- Vrndavana, March 17, 1974

প্রভুপাদঃ সুতরাং আমাদের তথাকথিত গোস্বামীদের থেকে আলাদা হওয়া উচিত। .যে বৃন্দাবনে থাকবে ... সর্বত্র। বৃন্দাবনে সর্বত্র। যেখানে কৃষ্ণের মন্দির, কৃষ্ণের সংর্কীতন সেটাই বৃন্দাবন। চৈতন্য মহাপ্রভু বলতেন যে "আমার মন সর্বদা বৃন্দাবনে।" কারণ তিনি সর্বদা কৃষ্ণের চিন্তা করতেন। তিনি শ্রী কৃষ্ণ - তিনি শ্রী কৃষ্ণ স্বয়ং - শুধু আমাদের শিক্ষার জন্য। সতরাং, আপনি যেখানেই থাকুন যদি আপনি কৃষ্ণের নির্দেশ পালন করেন, কৃষ্ণ বলেছেন, মন্মনা ভব মদ ভক্ত মদযাজী মাং নমস্কুরু (ভ গী ১৮।৬৫), তখন সেটা বৃন্দাবন। যেখানে আপনি বাস করেন। মনে করবেন না যে, "মেলবোর্নে আমাদের একটি মন্দির আছে কারণ, মেলবোর্নের অর্চা বিগ্রহ এখানে আছে, সুতরাং এটি বৃন্দাবন নয়।" এটিও বৃন্দাবন। যদি আপনি অর্চা বিগ্রহ পূজায় মন কে নিয়োজিত রাখেন, পূজার নিয়ম ও বিধির অনুসরণ করেন তাহলে সেটাও বৃন্দাবন। বিশেষ করে বৃন্দাবন ধামে, যেখানে শ্রী কৃষ্ণ প্রকৃতপক্ষে আবির্ভূত হয়েছিলেন। সুতরাং এটি বৃন্দাবন গোলোক বৃন্দাবন। এখানে, যারা এই প্রতিষ্ঠানটি চালাবেন তাদের প্রথম শ্রেণীর গোস্বামী হতে হবে। এটা আমার প্রস্তাব। কোন গৃহমেধী নয়। কোন গৃহমেধী নয়। গোস্বামী। কারণ ...... এই জায়গাটি গোস্বামীদের কাছ থেকে পাওয়া গেছে, ষড়গোস্বামী। সনাতন গোস্বামী এখানে এসেছিলেন, রূপ গোস্বামী এখানে এসেছিলেন। এবং তারপর অন্যান্য গোস্বামী, জীব গোস্বামী, গোপাল ভট্ট গোস্বামী, রঘুনাথ দাস গোস্বামী, সবাই একত্রিত হলেন শ্রী চৈতন্য মহাপ্রভুর আদেশ বাস্তবায়নে - শ্রীকৃষ্ণ, তার লীলা সম্পর্কে সাহিত্য লেখার জন্য; অনেক, আমি বলতে চাচ্ছি, তারা মহান আধ্যাত্মিক বোঝার বই লিখেছেন। নানা-শাস্ত্র-বিচারনৈক-নিপুনৈ সদ-ধর্ম-সংস্থাপকৌ। এই গোস্বামী কাজ, এই লক্ষন। প্রথম লক্ষন হচ্ছে, কৃষ্ণকীর্তন-গান-নর্তন-পরৌ। তারা সর্বদা ব্যস্ত কৃষ্ণ-কীর্তনে। কৃষ্ণ কীর্তন মানে...যেমন আমরা কীর্তন করি মৃদঙ্গ, করতাল সহকারে, এটাও কৃষ্ণ কীর্তন। এবং সাহিত্য রচনা, এটিও কৃষ্ণ-কীর্তন। এবং সাহিত্য পড়া, এটিও কৃষ্ণ-কীর্তন। এটা কেবল এই কীর্তনই কীর্তন নয়। যদি আপনি কৃষ্ণ সম্পর্কে সাহিত্য লেখেন, যদি আপনি কৃষ্ণ সম্পর্কে সাহিত্য পড়েন, যদি আপনি কৃষ্ণ সম্পর্কে কথা বলেন, আপনি কৃষ্ণ সম্পর্কে চিন্তা করেন, আপনি কৃষ্ণের আরাধনা করেন, আপনি কৃষ্ণের জন্য খাবার রান্না করেন, আপনি কৃষ্ণের জন্য খাবার খান - এও কৃষ্ণ-কীর্তন। এ কারণেই গোস্বামী মানে শ্রীকৃষ্ণ-কীর্তনে, চব্বিশ ঘন্টা জড়িত, এইভাবে বা ওইভাবে। কৃষ্ণ - কীর্তন-গান-নর্তন-পরৌ। কিভাবে? প্রেমামৃতাম্ভোনিধী। কারণ তারা কৃষ্ণ-প্রেমের মহাসাগরে মিলিত হয়েছেন। যতক্ষন আমাদের কৃষ্ণের প্রতি প্রেম না হয়, কৃষ্ণের প্রতি ভালবাসা, তাহলে কীভাবে আমরা শ্রী কৃষ্ণের সেবায় সন্তুষ্ট থাকতে পারি? এটি সম্ভব নয়। যারা কৃষ্ণের জন্য ভালোবাসা গড়ে তোলেন না, তারা চব্বিশ ঘণ্টার জন্য শ্রী কৃষ্ণের সেবায় নিযুক্ত হতে পারেন না। আমাদের এই বিবেচনা করা উচিত ... আমাদের সর্বদা সময় সংরক্ষণ করতে হবে, শ্রী কৃষ্ণের সেবায় নিবিষ্ট হতে হবে। যে সময় আমরা ঘুমাই, সেটা অর্থহীন হয়। সেটা অর্থহীন হয়। তাই আমাদের সময় সংরক্ষণ করার চেষ্টা করা উচিত। কীর্তনীয় সদা হরি (চৈ.চ.আদি.১৭.৩১) কৃষ্ণের আরেক নাম হরি। সদা, চব্বিশ ঘন্টা। প্রকৃতপক্ষে, গোস্বামীরা তাহা করতেন। তারা আমাদের উদাহরন। তারা দুই ঘন্টা বা বেশি হলে তিন ঘণ্টার জন্য ঘুমাতেন। তাই নিদ্রাহার-বিহারকাদি বিজিতৌ। তারা জয়ী হয়েছেন। এই হচ্ছে গোস্বামী। তারা এই জিনিসে জয়ী হয়েছেন। কি সেই জিনিস? নিদ্রাহার, নিদ্রা, আহার, বিহার। বিহার মানে ইন্দ্রিয় তৃপ্তি, এবং আহার মানে খাওয়া বা একত্র করা। সাধারনত, ভোজন, আহার এবং নিদ্রা। নিদ্রাহার-বিহারকাদি-বিজিতৌ। বিজয় প্রাপ্ত করেছেন। এই হচ্ছে বৈষ্ণব। এটা নয় যে চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে, ছত্রিশ ঘন্টা ঘুম। (হাসি) এবং একই সময়ে, নিজেকে গোস্বামী বলা। এটা কি? গো-দাস। তারা গো- দাস। গো মানে ইন্দ্রিয় এবং দাস মানে সেবক। তাই আমাদের নীতি হতে হবে, ইন্দ্রিয়ের দাস হওয়ার চেয়ে বরং, আমাদের কৃষ্ণের দাস হতে হবে। এই হচ্ছে গোস্বামী। কারন যতক্ষণ না আপনি জয় করবেন, ততক্ষণ ইন্দ্রিয়গুলি দাবি করবে। "দয়া করে খাবার খান, ঘুমান, সম্ভোগ করুন, দয়া করে তা গ্রহণ করুন।" এটি জড় জীবন। এটি জড় জীবন। এই ইন্দ্রিয়ের অধীন জড় জীবন, এটি জড় জীবন। এবং আমাদের হতে হবে ... গোস্বামী মানে মন পরিচালনা করছে, "দয়া করে আরও খাও, আরও ঘুমাও। আরো যৌন সম্ভোগ করো, দয়া করে আরও তহবিল রাখুন ... " সুতরাং এই হছে জড়বাদ। নিরাপত্তা তহবিল মানে অর্থ রাখা। এই প্রতিরক্ষা তহবিল। তাই ... তাই এই জড়বাদ। আধ্যাত্মিকতা মানে, "না, না।" নিদ্রাহার। ইন্দ্রিয় নির্দেশ করে, "তা কর, তা কর, তা কর" এবং আপনাকে শক্তিশালী হতে হবে, আপনি সঠিকভাবে উত্তর দিন, "না, এটি না।" তারপর গোস্বামী। এই হচ্ছে গোস্বামী। এবং সেই গৃহমেধী, গৃহস্থ একইরকম দেখায়। কিন্তু গৃহস্থ মানে ইন্দ্রিয়ের চাহিদা নয়। তারপর আপনি গোস্বামী হয়ে যান। আবারও, নরোত্তম দাস মত ঠাকুর বলেছেন, গৃহে বা বনেতে থাক হা গৌরাঙ্গ বলে ডাক। হা গৌরাঙ্গ, " সর্বদা নিতাই-গৌরের কীর্তন কর এবং নিতাই-গৌরের চিন্তা কর। এই ধরনের ব্যক্তি, নরোত্তম দাস ঠাকুর বলছেন ... "তিনি একজন সন্ন্যাসী হতে পারেন, অথবা তিনি একজন গৃহস্থ হতে পারেন। এটি কোনো পার্থক্য করে না। কারণ তিনি নিতাই-গৌরের চিন্তায় নিমজ্জিত হয়েছেন।" তাই নরোত্তম মাগে তার সঙ্গ। "নরোত্তম সবসময় এই ধরনের ব্যক্তির সঙ্গ করতে আগ্রহী।" গৃহে বা বনেতে থাক, হা গৌরাঙ্গ বলে ডাক, নরোত্তম মানে তার সঙ্গ। "নরোত্তম সবসময় এই ধরনের ব্যক্তির সঙ্গ করতে ইচ্ছা করেন।" কৃষ্ণ কীর্তন-গান-নর্তন-পরৌ প্রেমামৃতাম্ভোনিধী ধীরাধীর-জন-প্রিয়ৌ। এবং পুরুষদের গোষ্ঠীর সকল শ্রেনীর জন্য গোস্বামী খুব প্রিয়। পুরুষদের দুই শ্রেণী আছে: ধীর এবং অধীর। ধীর মানে যিনি ইন্দ্রিয় নিয়ন্ত্রন করেছেন, এবং অধীর মানে যে পারে নি। গোস্বামী খুব দয়ালু সব শ্রেনীর পুরুষদের জন্য। ধীরাধীর -জন-প্রিয়ৌ। তুমিকিভাবে করতে পারো...? গোস্বামী কিভাবে করতে পারে...? যখন ছয় গোস্বামী বৃন্দাবনে ছিলেন, তখন তারা সবাই খুব জনপ্রিয় ছিলেন। এমনকি এই বৃন্দাবন ধামে, গ্রামের মানুষ, স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে কিছু ঝগড়া হলে, তারপর তারা সনাতন গোস্বামীর কাছে যেতেন, "মহাশয়, আমাদের মধ্যে কিছু মতভেদ রয়েছে, আপনি সমাধান করুন।" এবং সনাতন গোস্বামী তার সিদ্ধান্তের কথা বলবে, "তুমি ভুল।" ব্যাস তারা স্বীকার করবে। তারা কিভাবে জনপ্রিয় ছিল শুধু দেখুন। সনাতন গোস্বামী তা্দের পরিবারের ঝগড়া নিয়েও সিদ্ধান্ত দিতেন। তাই ধীরাধীর-জন-প্রিয়ৌ। এই সাধারণ মানুষ, তারা সন্ন্যাসী ছিল না, তবে তারা সনাতন গোস্বামীর প্রতি উৎসর্গীকৃত ছিল। তাই তাদের জীবন সফল ছিল। কারন তারা সনাতন গোস্বামীর আদেশ পালন করত, তাই তারাও মুক্ত হয়ে যেত। তারা পৃথকভাবে ভুল হতে পারে, কিন্তু তারা সনাতন গোস্বামীকে অনুসরণ করত। এবং সনাতন গোস্বামী তাদের প্রতি সদয় ছিলেন। এই হচ্ছে গোস্বামী। আপনি তাদের ডাকতে পারেন, প্রসাদ দিতে পারেন, আপনি তাদের সম্মান করতে পারেন: "হরে কৃষ্ণ কথা শুনুন, এখানে আসুন, হরে কৃষ্ণ মহামন্ত্র কীর্তন করুন, প্রসাদম গ্রহণ করুন।" তারা আপনার ... আপনার নিয়ন্ত্রণ অধীনে। তারা আপনার নিয়ন্ত্রণে থাকবে। এবং যত তাড়াতাড়ি তারা আপনার নিয়ন্ত্রণ অধীনে আসবে, তারা অবিলম্বে অগ্রগতি করবে। কারণ বৈষ্ণব এর আশ্রয়, যদি তারা অনুসরণ করতে সম্মত হয়, তাহলে তারা হয়ে যায় ... এটি একটি অজ্ঞান সুকৃতি বলা হয়। যেহেতু তিনি আপনাকে প্রদান করছে ...... যেমন যখন আমরা হাঁটছি, তারা বলে, "হরে কৃষ্ণ, জয় রাধে।" এটি সম্মান প্রদানের প্রক্রিয়া। সুতরাং যদি এই সাধারণ মানুষ বৈষ্ণবকে শ্রদ্ধা করে, তারা অগ্রগতি করে। তাই আপনাকে বৈষ্ণব হতে হবে অন্যথায়, কেন তারা আপনার সম্মান করবে? সম্মান জিজ্ঞাসা করা যাবে না এটি উপার্জন করতে হবে। আপনার আচরণ দেখে তারা আপনাকে সম্মান করবে। তাহলে ধীরাধীর-জন-প্রিয়ৌ। এই হচ্ছে গোস্বামী।

আপনাদের ধন্যবাদ।

ভক্তঃ জয় প্রভুপাদ।