BN/Prabhupada 0387 - গৌরাাঙ্গের দুটি পদ - তাৎপর্য দ্বিতীয় ভাগ

Revision as of 08:38, 21 December 2021 by Soham (talk | contribs)
(diff) ← Older revision | Latest revision (diff) | Newer revision → (diff)


Purport to Gaurangera Duti Pada -- Los Angeles, January 6, 1969

গৌরাঙ্গের সঙ্গীগণে, নিত্য-সিদ্ধ বলি মানে। যে কেউ, যে বুঝেছেন, যে ভগবান শ্রীচৈতন্যের পার্ষদেরা তারা সাধারণ আত্মা নয় ... তারা মুক্ত আত্মা। নিত্য-সিদ্ধ বলি মানি। তিন প্রকারের ভক্ত আছে। এক হচ্ছে সাধন-সিদ্ধ। সাধন-সিদ্ধ মানে ভক্তি সেবার নিয়ম নীতি মেনে চলে, যদি একজন সিদ্ধ হয়ে যান, তখন তাকে সাধন-সিদ্ধ বলে। আরেক প্রকার ভক্ত হচ্ছে কৃপা-সিদ্ধ। কৃপা-সিদ্ধ মানে যদিও সে কঠিনভাবে নিয়মনীতি পালন না করে, তবুও আচার্যের কৃপায় অথবা ভক্তের কৃপায়, অথবা কৃষ্ণের দ্বারা, তিনি উচ্চতর স্তরে থাকেন। এটা বিশেষ কৃপা। এবং আরেক প্রকার ভক্ত যাকে নিত্য সিদ্ধ বলা হয়। নিত্য সিদ্ধ মানে তারা কখনও দূষিত হয়নি। সাধনা-সিদ্ধ এবং কৃপা সিদ্ধ জড় স্পর্শ দ্বারা দূষিত হয়ে পড়ে এবং নিয়ম নীতি অনুসরণ করে, ভক্ত আর আচার্যের কিছু দয়া বা কৃপার দ্বারা তিনি এখন উচ্চ স্তরে। কিন্তু নিত্য-সিদ্ধ মানে তারা কখন দূষিত হয় নি। তারা সবসময় মুক্ত। তাই ভগবান চৈতন্যের সকল পার্ষদ, যেমন অদ্বৈত প্রভু, শ্রীবাস, গদাধর, নিত্যানন্দ, তারা বিষ্ণু তত্ত্ব। তারা সকলে মুক্ত ছিলেন। শুধু তারাই নয়, গোস্বামীরা... অন্যান্য অনেকে আছে তাই তারা সবসময় মুক্ত। তাই যারা চৈতন্যের পার্ষদের বুঝতে পারে তারা সবসময়ই মুক্ত। নিত্য-সিদ্ধ বলি মানি, সে যায় ব্রজেন্দ্র সুত পাশ। অবিলম্বে তিনি কৃষ্ণের ধামে প্রবেশ করার যোগ্য হন।

এবং তারপর তিনি বলেছেন, গৌর-মণ্ডল-ভূমি, যেবা জানে চিন্তামণি গৌরমণ্ডল মানে পশ্চিম বঙ্গের একটা স্থান যেখানে ভগবান চৈতন্যের লীলা আছে। নবদ্বীপে, ভগবান চৈতন্যের আবির্ভাব তিথিতে, ভক্তরা যায়। এবং ভগবান চৈতন্যের লীলাস্থলী পরিক্রমা করে। এটা নয় দিন লাগে। বাংলার এই অংশটিকে গৌরমন্ডল বলা হয়। তাই নরোত্তম দাস ঠাকুর বলেছেন, "যিনি বোঝেন যে কোন অন্তর নেই, দেশের এই অংশ এবং বৃন্দাবনের মধ্যে," তার হয় ব্রজ-ভূমে বাস, "এটি বৃন্দাবনে বসবাসের মতোই।" তারপর তিনি বলছেন, গৌর-প্রেম রসার্ণব ভগবান চৈতন্যের কার্যকলাপ হচ্ছে কৃষ্ণ প্রেমের লীলা সমুদ্রের মতো। অতএব, যে এই সমুদ্রের মধ্যে একটি ডুব লাগায়, গৌর-প্রেম-রসার্ণবে, সেই তরঙ্গে যেবা ডুবে। যেমন আমরা একটি ডুব দিই এবং স্নান করি, আর আমরা খেলি সমুদ্র বা সমুদ্রের ঢেউতে। অনুরূপভাবে, যারা ভগবান চৈতন্যের প্রেম বিতরণ রূপ সমুদ্রের ঢেউয়ের সাথে খেলা করছে, এইরকম ব্যক্তি অবিলম্বে ভগবান কৃষ্ণের একজন গোপনীয় ভক্ত হয়ে ওঠে। সে রাধা মাধব-অন্তরঙ্গ। অন্তরঙ্গ মানে কোন সাধারণ ভক্ত নয়। তারা অনেক কাছের ভক্ত। নরোত্তম দাস ঠাকুর বলেছেন, গৃহে বা বনেতে থাকে "এমন ভক্ত, যিনি ভগবানের চৈতন্যের আন্দোলনের ঢেউ উপভোগ করছেন," কারণ তিনি ভগবানের একজন খুব অন্তরঙ্গ ভক্ত হয়ে গেছেন....

সেইজন্য নরোত্তম দাস ঠাকুর বলেছেন, "এইরকম ভক্তের ক্ষেত্রে এটা কোন ব্যাপার না, যে তিনি একজন সন্ন্যাসী বা তিনি একজন গৃহস্থ।" গৃহ। গৃহ মানে গৃহস্থ। তাই চৈতন্য মহাপ্রভুর আন্দোলন আমাদের বলছে না যে সন্ন্যাসী হতে হবে। যেমন মায়াবাদী সন্ন্যাসী, নির্বিশেষবাদী, শঙ্করাচার্যের মতই তারা প্রথম শর্তটি রাখে যে "আপনি আগে সন্ন্যাস নিন এবং তারপর আধ্যাত্মিক অগ্রগতি সম্পর্কে কথা বলুন।" তাই শঙ্কর সংম্প্রদায়ে কাউকে খাঁটি মায়াবাদী হিসাবে গ্রহণ করা হয় না যদি না তিনি সন্ন্যাস নেন। কিন্তু এখানে, চৈতন্যের আন্দোলনে এমন কোন বাধা নেই। অদ্বৈত প্রভু, তিনি গৃহস্থ ছিলেন, নিত্যানন্দ, তিনি গৃহস্থ ছিলেন। গদাধর, তিনিও গৃহস্থ ছিলেন, এবং শ্রীবাস, তিনিও গৃহস্থ ছিলেন। এবং চৈতন্য মহাপ্রভু দুইবার বিবাহিত ছিলেন। তাই এটা কোন ব্যাপার নয়। নরোত্তম দাস ঠাকুর বলেছেন যে, সন্ন্যাসী হবার জন্য, গৃহস্থ জীবনে থাকার জন্য, এটি কোন ব্যাপার না। যদি তিনি চৈতন্যের সংকীর্তন আন্দোলনের কর্মকাণ্ডে অংশ নেন, এবং প্রকৃতপক্ষে তিনি কি বুঝেছেন তিনি এইরকম ভক্তি সাগরের তরঙ্গে বিহার করছেন, তাহলে তিনি সর্বদা মুক্ত এবং নরোত্তম দাস ঠাকুর ক্রমবর্ধমানভাবে তার সঙ্গ আকাঙ্খী। এটি এই গানের সারাংশ।