BN/Prabhupada 0408 - উগ্র কর্ম মানে হিংস্র কার্যাবলী

Revision as of 08:32, 22 December 2021 by Soham (talk | contribs)
(diff) ← Older revision | Latest revision (diff) | Newer revision → (diff)


Cornerstone Laying -- Bombay, January 23, 1975

ঠিক যেমন আমরা শিল্পকারখানা সম্পর্কে কথা বলছিলাম। কারখানা, এটি উগ্র কর্ম হিসাবে ভগবদ গীতায় বর্ণিত হয়েছে। উগ্র কর্ম মানে উগ্র হিংসাত্মক কার্যকলাপ। জীবিকার জন্য, আমাদের রক্ষণাবেক্ষণ প্রয়োজন। আহার-নিদ্রা-ভয়-মৈথুন...এটি এই শরীরের প্রাথমিক প্রয়োজনীয়তা, জড় শরীরের। সেই জন্য, কৃষ্ণ বলেছেন, অন্নাদ ভবন্তি ভুতানি (ভ.গী.৩.১৪) অন্ন-মানে খাদ্যশস্য- আমাদের প্রয়োজনীয়। অন্নাদ ভবন্তি ভুতানি। কৃষি থেকে আমরা খুব সহজেই খাদ্যশস্য উৎপন্ন করতে পারি। অন্য জায়গায়, শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন,কৃষি-গো-রক্ষ্য-বাণিজ্যম্‌ বৈশ্যকর্ম স্বভাবজম (ভ.গী ১৮.৪৪)। আমরা আমাদের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য যথেষ্ট খাদ্য উৎপাদন করতে পারি, এবং সমগ্র বিশ্বের জন্য যথেষ্ট জমি আছে। আমি অন্তত চৌদ্দ বার বিশ্বজুড়ে ভ্রমণ করেছি। গত আট বছরে, আমি সারা বিশ্বে ভ্রমণ করেছি, এমনকি অভ্যন্তরের অংশেও। আমি দেখেছি যথেষ্ট জমি আছে, বিশেষ করে আফ্রিকায়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়ায়, এবং আমরা এত বেশী খাদ্যন্ন উৎপাদন করেতে পারি যে বর্তমান লোক সংখ্যার দশ গুণ খুব সহজেই পালন করা যায়। দশ গুণ। খাদ্যের কোন ঘাটতি নেই। কিন্তু অসুবিধা হল যে আমরা সীমানা করে দিয়েছি, "এটি আমার দেশ।" কেউ বলে "এই আমেরিকা, আমার দেশ" "অস্ট্রেলিয়া, আমার জমি," "আফ্রিকা, আমার জমি," "ভারত, আমার দেশ।" এই "আমার" এবং "আমি।" জনস্য মোহ অয়ম্‌ অহম্‌মমেতি (শ্রী.ভ.৫.৫.৮)। একে বলা হয় মায়া, যে "আমি" এবং "আমার"। "আমি এই শরীর, এবং এটা আমার সম্পদ" একে বলে মায়া। এবং এই মায়া, যদি আমার মায়ার স্তরে দাড়িয়ে থাকি, তাহলে আমরা পশুর চেয়ে ভাল কিছু নই।

যস্যাত্ম-বুদ্ধি কুণপে ত্রিধাতুকে-
স্ব-ধি-কলত্রাদিষু ভৌম- ইজ্জ্যধী।
যৎ-তীর্থ-বুদ্ধি সলিলে ন কহিচিৎ
জনেসু অভিজ্ঞেসু স এব গোখর
(শ্রী.ভা.১০.৮৪.১৩)

গো মানে গাভী, এবং খর মানে গাধা। যারা দেহ চেতনায় আছে, অহম মমেতি (শ্রী.ভা.৫.৫.৮), তারা গাধা এবং গ্রুর চেয়ে ভাল কিছু নয়, মানে পশু। এটা চলছে। আমি আপনাদের অনেক সময় নেব না, কিন্তু আমি বোঝানোর চেষ্টা করব, যে কৃষ্ণ ভাবনামৃত আন্দোলনের উদ্দেশ্য কি। কৃষ্ণ ভাবনামৃত আন্দোলনের উদ্দেশ্য হল মানব সমাজকে গরু এবং গাধারূপ পশু হবার থেকে রক্ষা করা। এই হচ্ছে আন্দোলন। তারা নিজেদের সভ্যতা স্থাপন করেছে... গীতায় বলা হয়েছে পশু অথবা আসুরিক সভ্যতা, আসুরিক সভ্যতা, শুরু হচ্ছে প্রবৃত্তিম চ নিবৃত্তিম চ জনা ন বিদুরাসুরঃ। আসুরিক, রাক্ষস, সভ্যতা, তারা জানে না কোন ভাবে আমরা আমাদেরকে পরিচালনা করব। জীবনে সিদ্ধিলাভ করার জন্য, প্রবৃত্তি এবং নিবৃত্তি, এবং কোনটা আমরা করব না- অনুকূল এবং প্রতিকূল। মনুষ্য জীবনে... প্রত্যেকে জানে, "এটা আমার জন্য অনুকূল, এবং এটা আমার জন্য প্রতিকূল।" তাই অসুর জানে, যারা আসুরিক ভাবাপন্ন মানুষ, তারা এটি জানে না, যে "কোনটা অনুকূল আমার জন্য এবং কোনটা আমার জন্য প্রতিকূল।" প্রবৃত্তিম নিবৃত্তিম চ জনা ন বিদুর অসুরা, ন শৌচম নাপি চাচারোঃ "কোন পরিষ্কার নেই, ভাল ব্যবহার নেই।" ন সত্যম তেষু বিদ্যা..."এবং কোন সত্য তাদের জীবনে নেই।" এটা আসুরিক। আমরা অনেক বার শুনেছি, "অসুররা।" "আসুরিক সভ্যতা," "রাক্ষস সভ্যতা।" এটা শুরু। প্রবৃত্তিম চ নিবৃত্তিম

চ জনা চ বিদুঃ আসুর
ন শৌচম নাপি চাচারো
ন সত্যম তেষু...
(ভ.গী.১৬.৭)

সত্যম, কোন সত্যতা নেই। এবং যেমন প্রথম শ্রেনীর জীবন মানে ব্রাহ্মণের জীবন। সত্যম শৌচম তপ। প্রথমে সত্যম। আসুরিক জীবনে কোন সত্য নেই, সত্য নেই এবং মানব সমাজে প্রথম শ্রেনীর জীবন আছে, ব্রাহ্মণ, সত্যম্‌ শৌচম তপ, এবং তিতিক্ষা আর্জবম্‌ আস্তিক্য জ্ঞানম্‌ বিজ্ঞানম্‌ (ভ.গী. ১৮.৪২ )।

এই হচ্ছে সর্বোত্তম জীবন। তাই আমাদের কৃষ্ণ ভাবনামৃত আন্দোলন আর্দশ মানুষদের একটা সমাজ বানানোর জন্য, সত্যম্‌ শৌচম্‌ তপ শম দম তিতিক্ষা সহ সর্বোত্তম শ্রেণীর মানুষ। এটাই ধার্মিক সভ্যতা। এবং সমগ্র বিশ্বকে, ভারত দ্বারা এই ধর্মীয় সভ্যতাকে দেওয়া যেতে পারে। এটি ভারতের বিশেষ বিশেষাধিকার।

কারণ ভারত ছাড়া অন্য দেশগুলিতে, তারা প্রায় আসুরী-জনা এবং উগ্র-কর্ম। শিল্পকারখানা ও অন্যান্য উগ্র কর্ম পশ্চিম দেশ থেকে এসেছে। কিন্তু এইভাবে মানুষ কখনো সুখী হবে না। এটা ভগবদ্গীতার ষোল অধ্যায়ে বিস্তারিত বর্ণনা করা হয়েছে। দুষ্পূর আকাঙ্ক্ষা। তাদের বাসনা এই জড় প্রগতি থেকে কখনো সন্তুষ্ট হবে না। তারা জানে না। তারা ভুলে যাচ্ছে। তাই আমরা এই বম্বেকে নির্বাচন করেছি। বম্বে শহর সেরা শহর, ভারতে সবচেয়ে উন্নত শহর, ভারতের সেরা শহর। এবং এখানকার মানুষ খুব ভাল। তারা ধর্মমনা। তারা বৈভবশালী। তারা ভাল জিনিস খুব ভালভাবে নিতে পারেন। তাই আমি এই কেন্দ্রটি শুরু করতে চাই, বম্বেতে, এই কৃষ্ণ ভাবনামৃত আন্দোলন বিস্তারের জন্য। যদিও আমার প্রচেষ্টায় অনেক বাধা এসেছে, তবুও, এটি শেষ পর্যন্ত কৃষ্ণের কাজ। এটি সফল হবেই, তাই আজ ... ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন দুই বছর আগে করা হয়েছিল, কিন্তু আসুরিক লোকের থেকে অনেক অনেক বাধা সৃষ্টি হয়েছে। এখন, কোনভাবে, আমরা এই ধরনের বাধা থেকে কিছুটা রেহাই পেয়েছি। তাই আমরা এই শুভদিনে এই ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন পালন করছি, এবং আমি খুব খুশি যে আপনারা আমাদের সাথে যোগদান করছেন।