BN/Prabhupada 0412 - শ্রীকৃষ্ণ চান যেন এই কৃষ্ণভাবনামৃত আন্দোলনটি ছড়িয়ে পড়ে

Revision as of 08:02, 25 December 2021 by Vanibot (talk | contribs) (Vanibot #0005: NavigationArranger - update old navigation bars (prev/next) to reflect new neighboring items)
(diff) ← Older revision | Latest revision (diff) | Newer revision → (diff)


Conversation with Devotees -- April 12, 1975, Hyderabad

শ্রীল প্রভুপাদ: অনাশ্রিতঃ কর্মফলং কার্যং কর্ম করোতি যঃ, স সন্ন্যাসী (ভগবদ্গীতা-৬/১) অনাশ্রিত কর্ম……..প্রত্যেকেই তার ইন্দ্রিয়তৃপ্তি সাধনের লক্ষ্যে কিছু শুভ ফলাফল প্রত্যাশা করে। সেটাই হল আশ্রিতঃ কর্ম-ফলং। সে শুভ ফলাফলের আশ্রয় গ্রহণ করেছে। কিন্তু যিনি তার কর্মফলের আশ্রয় গ্রহণ করেন না... . এটা আমার কর্তব্য। কার্যং। কার্যং মানে হল “এটা আমার কর্তব্য। ফলাফল কি হল, তাতে কিছু যায় আসে না। আমাকে আমার সর্বোত্তম সার্মথ্য দিয়ে আন্তরিকভাবে অবশ্যই এটা করতে হবে। তাহলে আমি আর ফলের ব্যাপারে গ্রাহ্য করি না । ফলাফল শ্রীকৃষ্ণের হাতে। ” কার্যং: “ এটা আমার কর্তব্য। আমার গুরুমহারাজ আমাকে এটা বলেছেন, অতএব এটা আমার কর্তব্য। এটা সফল হবে কি হবে না, তাতে কিছু যায় আসে না। সেটা শ্রীকৃষ্ণের উপর নির্ভর করে।” এইভাবে, যদি কেউ কর্ম করে, তাহলে তিনি একজন সন্ন্যাসী। পোশাক নয়, বরং কাজটি করার মনোভাব। হ্যাঁ, সেটাই হচ্ছে সন্ন্যাস। কার্যং: “এটা আমার কর্তব্য।” স সন্ন্যাসী চ যোগী চ। তিনিই হচ্ছেন যোগী, প্রথম-শ্রেণীর যোগী। ঠিক যেমন অর্জুন। আনুষ্ঠানিকভাবে অর্জুন সন্ন্যাস গ্রহণ করেননি। তিনি ছিলেন একজন গৃহস্থ, একজন সৈনিক। কিন্তু যখন তিনি অত্যন্ত নিষ্ঠা সহকারে এটাকে গ্রহণ করেছিলেন, কার্যং- “ শ্রীকৃষ্ণ চাচ্ছেন এই যুদ্ধ হোক। আমাকে আমার আত্মীয় স্বজনদের হত্যা করতে হবে, আমি তাতে কিছু মনে করি না। আমি অবশ্যই সেটা করব ”-সেটাই হচ্ছে সন্ন্যাস। প্রথমদিকে তিঁনি শ্রীকৃষ্ণের সাথে যুক্তিতর্ক করেছিলেন যে, “ এই প্রকার যুদ্ধ ভালো নয়, আত্মীয়স্বজন হত্যা করা, এবং এটা, ওটা, সেটা। ” তিঁনি যুক্তিতর্ক করেছিলেন। কিন্তু ভগবদ্গীতা শ্রবণ করার পর, তিঁনি যখন হৃদয়ঙ্গম করতে পারলেন যে, “এটা আমার কর্তব্য। শ্রীকৃষ্ণ চান, আমি যেন যুদ্ধ করি।” কার্যং। তাই একজন গৃহস্থ, একজন সৈনিক হওয়া সত্ত্বেও, তিনি একজন সন্ন্যাসী। তিনি সেটা স্বীকার করেছিলেন-কার্যং। কার্যং মানে হল, “ এটা আমার কর্তব্য। ” সেটাই হল প্রকৃত সন্ন্যাস। “শ্রীকৃষ্ণ চান যে, এই কৃষ্ণভাবনামৃত আন্দোলন অবশ্যই প্রসারিত হোক। সুতরাং, এটাই আমার কার্যং। এটাই আমার কর্তব্য। এবং সেটা আমার আধ্যাত্মিক গুরুর নির্দেশ। অতএব, আমি অবশ্যই সেটা করব।” এটাই হচ্ছে সন্ন্যাস। এটাই হচ্ছে সন্ন্যাস, সন্ন্যাস মনোবৃত্তি। কিন্তু সেখানে আনুষ্ঠানিকতারও ব্যাপার রয়েছে। সেটা উচিত……সেটাও গ্রহণ করা যেতে পারে।

ভারতীয় ব্যক্তিঃ তার কিছু মনস্তাত্ত্বিক প্রভাব রয়েছে।

শ্রীল প্রভুপাদঃ হ্যাঁ। বিশেষত ভারতবর্ষে , মানুষ তা পছন্দ করে। সন্ন্যাসীরা প্রচার করতে পারে। অন্যথায়, সন্ন্যাসের এই সূত্রটি দেওয়া হয়েছে-কার্যং। “এটাই আমার একমাত্র কর্তব্য । কেবল সেটাই। কৃষ্ণভাবনামৃত আন্দোলনকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া উচিত। এটাই আমার একমাত্র কর্তব্য।” তিনিই সন্ন্যাসী। কেননা, শ্রীকৃষ্ণ স্বয়ং এসেছিলেন এবং তিনি দাবি করছেন, সর্ব-ধর্মান্ পরিত্যজ্য মামেকং শরণং ব্রজ (ভ.গী. ১৮.৬৬)। এবং শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু যিনি সাক্ষাৎ শ্রীকৃষ্ণ, তিনি বলেছেন, যেই কৃষ্ণতত্ত্ববেত্তা, সেই গুরু হয় (চৈতন্যচরিতামৃত মধ্য ৭/১২৮)। “যিনিই শ্রীকৃষ্ণ সম্বন্ধীয় বিজ্ঞান সম্পর্কে অবগত, তিনিই গুরু। ” আর গুরুদেবের কাজ কি? যারে দেখ, তারে কহো কৃষ্ণ উপদেশ। (চৈতন্যচরিতামৃত মধ্য ৭/১২৮) “আপনি যাকেই দেখবেন, তাকেই শ্রীকৃষ্ণের নির্দেশ সম্বন্ধে প্রভাবিত করার প্রয়াস করুন।” সর্বধর্মান্ পরিত্যজ্য…..তাই এইভাবে, যদি আমরা এটাকে অত্যন্ত নিষ্ঠা সহকারে গ্রহণ করি - “ এটা আমার কর্তব্য ”- তাহলে আপনি একজন সন্ন্যাসী। ব্যস্ এতটুকুই। স সন্ন্যাসী। শ্রীকৃষ্ণ নিশ্চিত করেছেন, 'স সন্ন্যাসী'। মানুষ শ্রীকৃষ্ণের শিক্ষাকে গুরুত্ব সহকারে গ্রহণ করছে না। সেটাই হচ্ছে ভারতবর্ষের দুর্ভাগ্য। তারা শ্রীকৃষ্ণের অনেক প্রতিদ্বন্দীকে নিয়ে আসছে। ইনি শ্রীকৃষ্ণ... এবং “ শ্রীকৃষ্ণ……রামকৃষ্ণ আর কৃষ্ণ একই। ” এই বদমায়েশিই বিনষ্ট করেছে। তারা সবচেয়ে বেশী অপকার করেছে। শ্রীকৃষ্ণের পরিবর্তে, তারা একটা বদমাশ কে নিয়ে এসেছে, রামকৃষ্ণ।

ভাগবতঃ ভুবনেশ্বরে তাদের একটি বিশাল মঠ রয়েছে। ভুবনেশ্বরে, তাদের একটা বিশাল রামকৃষ্ণ মঠ রয়েছে। বিবেকানন্দ বিদ্যালয়, গ্রন্থাগার, অনেক জমি, সবকিছু, অত্যন্ত সুসংগঠিত।

শ্রীল প্রভুপাদঃ সুতরাং আমরাও সেটা করতে পারি। তোমাদেরকে লোকদেরকে বুঝাতে হবে। তাদের সাথে প্রতিযোগিতা করার কোন প্রশ্নই আসে না। কিন্তু তুমি, তুমি যে কোনও স্থানে তোমার নিজের দর্শন প্রচার করতে পার।

ভারতীয় ব্যক্তিঃ উড়িষ্যার লোকদের ব্যাপারে কি হবে……

প্রভুপাদ: হু?

ভারতীয় ব্যক্তিঃ …..তাদেরকে বোঝানোর চেষ্টা করুন। না, সেটি হচ্ছে মিথ্যা আর এটিই হচ্ছে সঠিক পন্থা।

শ্রীল প্রভুপাদঃ না, ওদের জন্য রামকৃষ্ণ মিশনের আকর্ষণ হচ্ছে, দরিদ্র নারায়ণ সেবা এবং হাসপাতাল। সেটাই তাদের একমাত্র আকর্ষণ। তাদের কোন অনুষ্ঠান নেই। কেউই তাদের দর্শন দ্বারা আকৃষ্ট নয়। আর তাদের কিই বা দর্শন রয়েছে? সেটা ব্যপার না । তাদেরকে নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন নই।