BN/Prabhupada 0593 - কৃষ্ণভাবনামৃতে আসার সঙ্গে সঙ্গে তুমি আনন্দপূর্ণ হয়ে যাবে

Revision as of 17:02, 29 June 2021 by Vanibot (talk | contribs) (Vanibot #0023: VideoLocalizer - changed YouTube player to show hard-coded subtitles version)
(diff) ← Older revision | Latest revision (diff) | Newer revision → (diff)


Lecture on BG 2.20 -- Hyderabad, November 25, 1972

প্রভুপাদঃ সুতরাং আমরা সকলেই শ্রীকৃষ্ণের অবিচ্ছেদ্য অংশ, মমৈবাংশ জীবভূতঃ (শ্রীমদ্ভগবতগীতা ১৫.৭)। তাই আমাদের সম্পর্কটি নিত্য। এখন আমরা তা ভুলে গিয়েছি। আমরা ভাবছি যে " আমি শ্রীকৃষ্ণের নই, আমি আমেরিকার।" " আমি ভারতের।" এটিই হচ্ছে আমাদের বিভ্রান্তি। তাই সঠিক উপায়ে... আর উপায়টি হচ্ছে শ্রবণ। এবং তার কানের মাধ্যমে জপ করা। " তুমি আমেরিকান নও। তুমি শ্রীকৃষ্ণের। তুমি আমেরিকান নও।" " তুমি ভারতীয় নও। তুমি শ্রীকৃষ্ণের।" এইভাবে শুনতে শুনতে, সে হয়তঃ "ওহ্‌, হ্যাঁ, আমি শ্রীকৃষ্ণের।" এটি হচ্ছে উপায়। আমাদেরকে ক্রমাগত অনুপ্রাণিত করতে হবেঃ" তুমি আমেরিকান নও। তুমি ভারতীয় নও। তুমি রাশিয়ান নও। তুমি শ্রীকৃষ্ণের।" তখন প্রতিটি মন্ত্র গুরুত্ত্ব পাচ্ছে; এরপর সে উপনীত হবে, "ওহ্‌ , হ্যাঁ, আমি শ্রীকৃষ্ণের।" ব্রম্মভূতঃ প্রসন্ন...... "কেন আমি এভাবে ভাবছিলাম যে আমি ছিলাম রাশিয়ান, আমেরিকান আর এটা সেটা?" ব্রম্মভূতঃ প্রসন্নাত্মা ন শোচতি ন কাঙ্ক্ষতি (শ্রীমদ্ভগবত গীতা ১৮.৫৪)। যেই মুহূর্তে সে এই স্তরে পৌঁছাবে, তার আর কোন অনুশোচনা থাকবে না। এখানে আমরা আমেরিকান, রাশিয়ান বা ভারতীয় হিসেবে দুটো জিনিস পেয়েছিঃ অনুশোচনা আর আকাঙ্ক্ষা। প্রত্যেকেই আকাঙ্ক্ষা করছে তার যা নেই তা নিয়েঃ "আমার এটি অবশ্যই থাকতে হবে।" আর তার যা আছে, তা যদি হারিয়ে যায়, তাহলে সে বিলাপ করে "ওহ্‌, আমি হারিয়েছি।" তো এই দুটো কাজই চলছে। যতক্ষণ তুমি কৃষ্ণভাবনাময় না হবে, তোমার এদুটো ব্যাপার চলতেই থাকবে, অনুশোচনা আর আকাঙ্ক্ষা। যেই মাত্র তুমি কৃষ্ণভাবনাময় হবে, তুমি আনন্দময় হয়ে উঠবে। অনুশোচনা কোন কারন নেই, আকাঙ্খার কোন কারন নেই। সবকিছুই পূর্ণ। শ্রীকৃষ্ণ পূর্ণ। তখন সে মুক্ত হয়। এটিই হচ্ছে ব্রহ্মভূ্রঃ স্তর। আর এটি শ্রবণের মাধ্যমে জাগরিত হতে পারে। তাই বৈদিক মন্ত্রকে বলা হয় শ্রুতি। একজনকে কর্ণের মাধ্যমে এই জাগরনকে গ্রহণ করতে হবে। শ্রবণম্‌ কীর্তনম্‌ বিষ্ণু:(শ্রীমদ্ভাগবতম ৭.৫.২৩)। সর্বদাই শ্রীবিষ্ণু সম্পর্কে শ্রবণ এবং কীর্তন করতে হবে। হরে কৃষ্ণ, হরে কৃষ্ণ, কৃষ্ণ কৃষ্ণ, হরে হরে/ হরে রাম হরে রাম, রাম রাম হরে হরে। তখন চেতদর্পণ-মার্জনম (চৈ চ অন্ত্য ২০.১২)। সবকিছু পরিষ্কার হয়ে উঠবে, তখন সে উপলব্ধি করতে পারবে যে "আমি শ্রীকৃষ্ণের নিত্য দাস।"(বিরতি)

প্রভুপাদঃ যখন তুমি বৈষ্ণব হবে, তখন ব্রাহ্মণ্যত্ব ইতোমধ্যেই এর অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। সাধারণ প্রক্রিয়াটি হচ্ছে, যদি কেউ সত্ত্বগুণের স্তরে না আসে, তাহলে সে কৃষ্ণভাবনামৃত কি তা বুঝতে পারবে না। এটিই হলো সাধারণ নিয়ম। কিন্তু এই কৃষ্ণ, ভক্তিমূলক সেবা, কৃষ্ণভাবনামৃত আন্দোলন এত চমৎকার যে শুধুমাত্র শ্রীকৃষ্ণ সম্পর্কে শ্রবণ করার মাধ্যমে তুমি তৎক্ষণাৎ ব্রাহ্মণের স্তরে উপনীত হবে। নষ্টপ্রায়েষু অভদ্রেষু নিত্যং ভাগবতসেবয়া (শ্রীমদ্ভাগবতম ১.২.১৮)। অভদ্র মানে জড়া প্রকৃতির এই তিনটি গুণ। এমনকি ব্রাম্মণোচিত গুণ গুলোও। শুদ্রের গুণ, বৈশ্যের গুণ অথবা ক্ষত্রিয়ের গুণ বা এমনকি ব্রাহ্মণের গুণগুলোও। এগুলো সব অভদ্র। কারণ ব্রাহ্মণের গুণাবলীতেও পুনরায় সেই একই পরিচিতি আসে। " ওহ্‌, আমি ব্রাহ্মণ। জন্ম ছাড়া কেউ ব্রাহ্মণ হতে পারে না। আমি মহান। আমি ব্রাহ্মণ।" এই মিথ্যা অহংকার আসে। তখন সে আবদ্ধ হয়ে পরে। এমনকি ব্রাহ্মণোচিত গুণাবলীতেও। কিন্তু যখন সে চিন্ময় স্তরে পৌঁছায়, প্রকৃতপক্ষে শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু যেমন বলেছেন, " আমি ব্রাহ্মণ নই, আমি সন্ন্যাসী নই, আমি গৃহস্থ নই, আমি ব্রহ্মচারী নই," না, না, না...... বর্ণাশ্রমের এই আটটি নীতি তিনি প্রত্যাখ্যান করেছেন। তাহলে তুমি কি? গোপীভর্তুঃপদকমলয়োর্দাসদাসানুদাসঃ (চৈ চ মধ্য ১৩.৮০)। আমি হচ্ছি শ্রীকৃষ্ণের দাসানুদাসানুদাস। এটিই হচ্ছে আত্মপোলব্ধি।