BN/Prabhupada 0622 - যারা কৃষ্ণভাবনামৃতের সঙ্গে যুক্ত, তাঁদের সঙ্গ করুন: Difference between revisions

(Created page with "<!-- BEGIN CATEGORY LIST --> Category:1080 Bengali Pages with Videos Category:Prabhupada 0622 - in all Languages Category:BN-Quotes - 1976 Category:BN-Quotes - L...")
 
(Vanibot #0023: VideoLocalizer - changed YouTube player to show hard-coded subtitles version)
 
Line 8: Line 8:
<!-- END CATEGORY LIST -->
<!-- END CATEGORY LIST -->
<!-- BEGIN NAVIGATION BAR -- DO NOT EDIT OR REMOVE -->
<!-- BEGIN NAVIGATION BAR -- DO NOT EDIT OR REMOVE -->
{{1080 videos navigation - All Languages|Hindi|HI/Prabhupada 0621 - कृष्ण भावनामृत आंदोलन लोगों को सिखा रहा है प्राधिकारी के प्रति विनम्र बनना|0621|HI/Prabhupada 0623 - आत्मा, एक शरीर से दूसरे में देहांतरित होता है|0623}}
{{1080 videos navigation - All Languages|Bengali|BN/Prabhupada 0621 - কৃষ্ণভাবনামৃত আন্দোলন আমাদের কর্তৃপক্ষের কাছে বিনয়ী হতে শিক্ষা দেয়।|0621|BN/Prabhupada 0623 - আত্মা এক দেহ থেকে অন্য দেহে স্থানান্তরিত হচ্ছে|0623}}
<!-- END NAVIGATION BAR -->
<!-- END NAVIGATION BAR -->
<!-- BEGIN ORIGINAL VANIQUOTES PAGE LINK-->
<!-- BEGIN ORIGINAL VANIQUOTES PAGE LINK-->
Line 18: Line 18:


<!-- BEGIN VIDEO LINK -->
<!-- BEGIN VIDEO LINK -->
{{youtube_right|JVqwwndndxI|যারা কৃষ্ণভাবনামৃতের সঙ্গে যুক্ত, তাঁদের সঙ্গ করুন। <br />- Prabhupāda 0622}}
{{youtube_right|bhugGythDtg|যারা কৃষ্ণভাবনামৃতের সঙ্গে যুক্ত, তাঁদের সঙ্গ করুন<br />- Prabhupāda 0622}}
<!-- END VIDEO LINK -->
<!-- END VIDEO LINK -->


Line 30: Line 30:


<!-- BEGIN TRANSLATED TEXT (from DotSub) -->
<!-- BEGIN TRANSLATED TEXT (from DotSub) -->
যদি তোমার এই জড় জগতকে উপভোগ করার বাসনাও থেকে থাকে, তবুও কৃষ্ণভাবনামৃত গ্রহণ কর। শ্রীকৃষ্ণ তোমাকে সন্তুষ্ট করবেন। তিনি তোমাকে দেবেন। জাগতিক উপভোগের জন্য তোমাকে আলাদা করে কিছু করার দরকার নেই যদি তুমি চাও...কারণ আমরা জড় উপভোগ সহজে ছাড়তে পারি না, অনাদি কাল ধরে আমরা এতেই অভ্যস্ত। অনেক অনেক জন্ম ধরে; শুধুমাত্র ইন্দ্রিয়সুখভোগের জন্য। এই বাসনা পরিত্যাগ করা এতোটা সহজ নয়। তাই শাস্ত্রে বলা হয়েছে, এমন কি যদি তোমার ইন্দ্রিয়সুখ ভোগেরও ইচ্ছা থাকে, তবুও তুমি কৃষ্ণভাবনামৃত গ্রহণ কর। অন্য কিছুর চেষ্টা কোর না। দেবতাদের ন্যায়। তাঁরা ইন্দ্রিয় সুখ ভোগের সমস্ত সুবিধা পেয়েছেন।  
যদি তোমার এই জড় জগতকে উপভোগ করার বাসনাও থেকে থাকে, তবুও কৃষ্ণভাবনামৃত গ্রহণ কর। শ্রীকৃষ্ণ তোমাকে সন্তুষ্ট করবেন। তিনি তোমাকে দেবেন। জাগতিক উপভোগের জন্য তোমাকে আলাদা করে কিছু করার দরকার নেই যদি তুমি চাও...কারণ আমরা জড় উপভোগ সহজে ছাড়তে পারি না, অনাদি কাল ধরে আমরা এতেই অভ্যস্ত। অনেক অনেক জন্ম ধরে; শুধুমাত্র ইন্দ্রিয়সুখভোগের জন্য। এই বাসনা পরিত্যাগ করা এতোটা সহজ নয়। তাই শাস্ত্রে বলা হয়েছে, এমন কি যদি তোমার ইন্দ্রিয়সুখ ভোগেরও ইচ্ছা থাকে, তবুও তুমি কৃষ্ণভাবনামৃত গ্রহণ কর। অন্য কিছুর চেষ্টা কোর না। দেবতাদের ন্যায়। তাঁরা ইন্দ্রিয় সুখ ভোগের সমস্ত সুবিধা পেয়েছেন। ইন্দ্রিয় সুখভোগ মানে হচ্ছে উদর-উপস্থ-জিহবা ([[Vanisource:NOI 1|উপদেশামৃত শ্লোক ১]]) জিহ্বা, উদর এবং উপস্থ। এগুলো হচ্ছে ইন্দ্রিয়সুখ ভোগের প্রদান উৎস। অত্যন্ত সুস্বাদু খাবার দিয়ে যত বেশি পেট ভরে খাওয়া আর তারপর যৌনসুখ ভোগ করা। এসব জাগতিক। চিন্ময় জগতে এসব নেই। জড় জগতে এইসব জিনিসগুলি খুব প্রবল। তাই প্রহ্লাদ মহারাজ তাঁর বন্ধুদের সাবধান করে দিয়ে বলছেন যে যদি আমরা ইন্দ্রিয়সুখের পেছনে খুব বেশি আসক্ত হয়ে পড়ি, তাহলে বিমোচিতুম্ কাম-দৃশম্- বিহার-ক্রীড়ামৃগ যন্নিগড়ো বিসর্গঃ ([[Vanisource:SB 7.6.17-18|ভাগবত ৭.৬.১৭-১৮]]) নিগড় মানে মূল, এই জড় দেহ প্রাপ্ত হবার মূল কারণ। এইসব জিনিস হচ্ছে ইন্দ্রিয় সুখভোগ। ততো বিদূরাৎঃ দূর থেকে। ততো বিদূরাৎ পরিহৃত্যা দৈত্যা ([[Vanisource:SB 7.6.17-18|ভাগবত ৭.৬.১৭-১৮]]) "আমার প্রিয় বন্ধুগণ, যদিও তোমরা দৈত্য পরিবারে জন্মেছ, আমিও জন্মেছি" - তাঁর পিতাও ছিলেন দৈত্য। দৈত্যেষু সঙ্গম্ বিষয়াত্মকেষুঃ "তাদের পরিত্যাগ কর... " অসৎসঙ্গ ত্যাগ এই বৈষ্ণব আচার ([[Vanisource:CC Madhya 22.87|চৈতন্য চরিতামৃত মধ্য ২২.৮৭]]) শ্রী চৈতন্য মহাপ্রভুও একই কথা বলছেন, "বৈষ্ণব কে?" বৈষ্ণব... তিনি তৎক্ষণাৎ ব্যাখ্যা করছেন যে বৈষ্ণবের কর্তব্য কি? কিছু ভক্তরা শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, "হে প্রভু, বৈষ্ণবের কর্তব্য কি?" তিনি দু'লাইনে তৎক্ষণাৎ উত্তর দিয়েছিলেন, "অসৎসঙ্গ ত্যাগ এই বৈষ্ণব আচার" "জাগতিক বিষয়ী লোকেদের সঙ্গ পরিত্যাগ করা"। সুতরাং পরবর্তী প্রশ্ন আসতে পারে, "বিষয়ী কে?" "অসৎ এক স্ত্রীসঙ্গী"। "যে ব্যক্তি স্ত্রীলোকের প্রতি আসক্ত, সে অসৎ।" এবং 'কৃষ্ণাভক্ত আর' , "আরেকজন হল সেই ব্যক্তি যে কৃষ্ণ ভক্ত নয়'।


ইন্দ্রিয় সুখভোগ মানে হচ্ছে উদর-উপস্থ-জিহবা ([[Vanisource:NOI 1|উপদেশামৃত শ্লোক ১]]) জিহ্বা, উদর এবং উপস্থ। এগুলো হচ্ছে ইন্দ্রিয়সুখ ভোগের প্রদান উৎস। অত্যন্ত সুস্বাদু খাবার দিয়ে যত বেশি পেট ভরে খাওয়া আর তারপর যৌনসুখ ভোগ করা। এসব জাগতিক। চিন্ময় জগতে এসব নেই। জড় জগতে এইসব জিনিসগুলি খুব প্রবল।
সুতরাং আমাদের পরিত্যাগ করতে হবে। তাই জন্য এই বিধিবদ্ধ নিয়মাবলী। কমপক্ষে কোন অবৈধ সঙ্গ কোর না। বিয়ে কর, ভদ্রলোকের মতো বসবাস কর। দায়িত্ব গ্রহণ কর। তাহলে ধীরে ধীরে তুমি এই যৌনবাসনাকে পরিত্যাগ করতে পারবে। যদি আমরা এই যৌনবাসনাকে ত্যাগ করতে না পারি, পূর্ণরূপে অবিক্ষিপ্ত, অবিচল। তাহলে এই জন্মচক্র থেকে রেহাই পাবার কোনই সম্ভাবনা নেই। জন্ম-মৃত্যু-জরা-ব্যাধি। তা সম্ভব নয়। অতএব, প্রহ্লাদ মহারাজ উপদেশ দিচ্ছেন, "দৈত্যেষু সঙ্গম্ বিষয়াত্মকেষু" - ওদের সঙ্গ কোর না। অসৎ-সঙ্গ, সেই একই কথা চৈতন্য মহাপ্রভু বলছেন... "অসৎসঙ্গ ত্যাগ এই বৈষ্ণব আচার।" এই হচ্ছে বৈষ্ণবের কৃত্য। যারা বিষয়ী, অসৎ তাদের সঙ্গ হওয়ার সামান্য সুযোগও নিও না। এটি অত্যন্ত কঠিন সঙ্গ। তাহলেই এটি সম্ভব। উপেত নারায়ণম্ আদিদেবম্ স মুক্তসঙ্গৈঃ ইষিতোহপবর্গ। ([[Vanisource:SB 7.6.17-18|ভাগবত ৭.৬.১৭-১৮]]) তাই সঙ্গ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ... সজাতি সিদ্ধাশয়ে। যারা কৃষ্ণভাবনামৃতের সাথে যুক্ত, ভগবৎসেবার সাথে যুক্ত, তাদের সঙ্গ কর।


তাই প্রহ্লাদ মহারাজ তাঁর বন্ধুদের সাবধান করে দিয়ে বলছেন যে যদি আমরা ইন্দ্রিয়সুখের পেছনে খুব বেশি আসক্ত হয়ে পড়ি, তাহলে বিমোচিতুম্ কাম-দৃশম্- বিহার-ক্রীড়ামৃগ যন্নিগড়ো বিসর্গঃ ([[Vanisource:SB 7.6.17-18|ভাগবত ৭.৬.১৭-১৮]]) নিগড় মানে মূল, এই জড় দেহ প্রাপ্ত হবার মূল কারণ। এইসব জিনিস হচ্ছে ইন্দ্রিয় সুখভোগ। ততো বিদূরাৎঃ দূর থেকে। ততো বিদূরাৎ পরিহৃত্যা দৈত্যা ([[Vanisource:SB 7.6.17-18|ভাগবত ৭.৬.১৭-১৮]]) "আমার প্রিয় বন্ধুগণ, যদিও তোমরা দৈত্য পরিবারে জন্মেছ, আমিও জন্মেছি" - তাঁর পিতাও ছিলেন দৈত্য। দৈত্যেষু সঙ্গম্ বিষয়াত্মকেষুঃ "তাদের পরিত্যাগ কর... " অসৎসঙ্গ ত্যাগ এই বৈষ্ণব আচার ([[Vanisource:CC Madhya 22.87|চৈতন্য চরিতামৃত মধ্য ২২.৮৭]]) শ্রী চৈতন্য মহাপ্রভুও একই কথা বলছেন,
তাই আমরা সকলকে এই ভক্তসঙ্গ পাবার সুযোগ করে দিতে  বিভিন্ন কেন্দ্রসমূহ খুলছি। যতদূর সম্ভব আমরা আশ্রয় দিচ্ছি। আমরা প্রসাদ দিচ্ছি। আমরা উপদেশ দিচ্ছি, আমরা শ্রীকৃষ্ণের পূজা করার সুযোগ দিচ্ছি। কেন? কারণ লোকেরা যেন এই সঙ্গের সুযোগ গ্রহণ করতে পারে। নারায়ণঃ। নারায়ণম্ আদিদেবানাম্। তাঁরা যেন শ্রীনারায়ণের সঙ্গ করতে পারেন। নারায়ণ এবং তাঁর সেবার সাথে আর যা কিছু যুক্ত - নারায়ণ, কৃষ্ণ, বিষ্ণু... একই। নারায়ণ পরোহব্যক্তাৎ। নারায়ণ মানে... যাঁর অবস্থান সর্বদাই চিন্ময়। তাই যেই তুমি নারায়ণের সংস্পর্শে আসছো, লক্ষ্মীদেবী সেখানে রয়েছেন, সৌভাগ্যের অধিষ্ঠাত্রী দেবী সেখানে রয়েছেন। আমরা কল্পিত দরিদ্র নারায়ণের পূজা করি না, না।  
 
"বৈষ্ণব কে?" বৈষ্ণব... তিনি তৎক্ষণাৎ ব্যাখ্যা করছেন যে বৈষ্ণবের কর্তব্য কি? কিছু ভক্তরা শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, "হে প্রভু, বৈষ্ণবের কর্তব্য কি?" তিনি দু'লাইনে তৎক্ষণাৎ উত্তর দিয়েছিলেন, "অসৎসঙ্গ ত্যাগ এই বৈষ্ণব আচার" "জাগতিক বিষয়ী লোকেদের সঙ্গ পরিত্যাগ করা"। সুতরাং পরবর্তী প্রশ্ন আসতে পারে, "বিষয়ী কে?" "অসৎ এক স্ত্রীসঙ্গী"। "যে ব্যক্তি স্ত্রীলোকের প্রতি আসক্ত, সে অসৎ।" এবং 'কৃষ্ণাভক্ত আর' , "আরেকজন হল সেই ব্যক্তি যে কৃষ্ণ ভক্ত নয়'। সুতরাং আমাদের পরিত্যাগ করতে হবে। তাই জন্য এই বিধিবদ্ধ নিয়মাবলী।
 
কমপক্ষে কোন অবৈধ সঙ্গ কোর না। বিয়ে কর, ভদ্রলোকের মতো বসবাস কর। দায়িত্ব গ্রহণ কর। তাহলে ধীরে ধীরে তুমি এই যৌনবাসনাকে পরিত্যাগ করতে পারবে। যদি আমরা এই যৌনবাসনাকে ত্যাগ করতে না পারি, পূর্ণরূপে অবিক্ষিপ্ত, অবিচল। তাহলে এই জন্মচক্র থেকে রেহাই পাবার কোনই সম্ভাবনা নেই। জন্ম-মৃত্যু-জরা-ব্যাধি। তা সম্ভব নয়। অতএব, প্রহ্লাদ মহারাজ উপদেশ দিচ্ছেন, "দৈত্যেষু সঙ্গম্ বিষয়াত্মকেষু" - ওদের সঙ্গ কোর না। অসৎ-সঙ্গ, সেই একই কথা চৈতন্য মহাপ্রভু বলছেন...
 
"অসৎসঙ্গ ত্যাগ এই বৈষ্ণব আচার।" এই হচ্ছে বৈষ্ণবের কৃত্য। যারা বিষয়ী, অসৎ তাদের সঙ্গ হওয়ার সামান্য সুযোগও নিও না। এটি অত্যন্ত কঠিন সঙ্গ। তাহলেই এটি সম্ভব। উপেত নারায়ণম্ আদিদেবম্ স মুক্তসঙ্গৈঃ ইষিতোহপবর্গ। ([[Vanisource:SB 7.6.17-18|ভাগবত ৭.৬.১৭-১৮]]) তাই সঙ্গ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ... সজাতি সিদ্ধাশয়ে। যারা কৃষ্ণভাবনামৃতের সাথে যুক্ত, ভগবৎসেবার সাথে যুক্ত, তাদের সঙ্গ কর। তাই আমরা সকলকে এই ভক্তসঙ্গ পাবার সুযোগ করে দিতে  বিভিন্ন কেন্দ্রসমূহ খুলছি। যতদূর সম্ভব আমরা আশ্রয় দিচ্ছি। আমরা প্রসাদ দিচ্ছি। আমরা উপদেশ দিচ্ছি, আমরা শ্রীকৃষ্ণের পূজা করার সুযোগ দিচ্ছি। কেন? কারণ লোকেরা যেন এই সঙ্গের সুযোগ গ্রহণ করতে পারে। নারায়ণঃ। নারায়ণম্ আদিদেবানাম্। তাঁরা যেন শ্রীনারায়ণের সঙ্গ করতে পারেন। নারায়ণ এবং তাঁর সেবার সাথে আর যা কিছু যুক্ত - নারায়ণ, কৃষ্ণ, বিষ্ণু... একই। নারায়ণ পরোহব্যক্তাৎ। নারায়ণ মানে... যাঁর অবস্থান সর্বদাই চিন্ময়। তাই যেই তুমি নারায়ণের সংস্পর্শে আসছো, লক্ষ্মীদেবী সেখানে রয়েছেন, সৌভাগ্যের অধিষ্ঠাত্রী দেবী সেখানে রয়েছেন। আমরা কল্পিত দরিদ্র নারায়ণের পূজা করি না, না।  
<!-- END TRANSLATED TEXT -->
<!-- END TRANSLATED TEXT -->

Latest revision as of 17:11, 29 June 2021



Lecture on SB 7.6.17-18 -- New Vrindaban, July 1, 1976

যদি তোমার এই জড় জগতকে উপভোগ করার বাসনাও থেকে থাকে, তবুও কৃষ্ণভাবনামৃত গ্রহণ কর। শ্রীকৃষ্ণ তোমাকে সন্তুষ্ট করবেন। তিনি তোমাকে দেবেন। জাগতিক উপভোগের জন্য তোমাকে আলাদা করে কিছু করার দরকার নেই যদি তুমি চাও...কারণ আমরা জড় উপভোগ সহজে ছাড়তে পারি না, অনাদি কাল ধরে আমরা এতেই অভ্যস্ত। অনেক অনেক জন্ম ধরে; শুধুমাত্র ইন্দ্রিয়সুখভোগের জন্য। এই বাসনা পরিত্যাগ করা এতোটা সহজ নয়। তাই শাস্ত্রে বলা হয়েছে, এমন কি যদি তোমার ইন্দ্রিয়সুখ ভোগেরও ইচ্ছা থাকে, তবুও তুমি কৃষ্ণভাবনামৃত গ্রহণ কর। অন্য কিছুর চেষ্টা কোর না। দেবতাদের ন্যায়। তাঁরা ইন্দ্রিয় সুখ ভোগের সমস্ত সুবিধা পেয়েছেন। ইন্দ্রিয় সুখভোগ মানে হচ্ছে উদর-উপস্থ-জিহবা (উপদেশামৃত শ্লোক ১) জিহ্বা, উদর এবং উপস্থ। এগুলো হচ্ছে ইন্দ্রিয়সুখ ভোগের প্রদান উৎস। অত্যন্ত সুস্বাদু খাবার দিয়ে যত বেশি পেট ভরে খাওয়া আর তারপর যৌনসুখ ভোগ করা। এসব জাগতিক। চিন্ময় জগতে এসব নেই। জড় জগতে এইসব জিনিসগুলি খুব প্রবল। তাই প্রহ্লাদ মহারাজ তাঁর বন্ধুদের সাবধান করে দিয়ে বলছেন যে যদি আমরা ইন্দ্রিয়সুখের পেছনে খুব বেশি আসক্ত হয়ে পড়ি, তাহলে বিমোচিতুম্ কাম-দৃশম্- বিহার-ক্রীড়ামৃগ যন্নিগড়ো বিসর্গঃ (ভাগবত ৭.৬.১৭-১৮) নিগড় মানে মূল, এই জড় দেহ প্রাপ্ত হবার মূল কারণ। এইসব জিনিস হচ্ছে ইন্দ্রিয় সুখভোগ। ততো বিদূরাৎঃ দূর থেকে। ততো বিদূরাৎ পরিহৃত্যা দৈত্যা (ভাগবত ৭.৬.১৭-১৮) "আমার প্রিয় বন্ধুগণ, যদিও তোমরা দৈত্য পরিবারে জন্মেছ, আমিও জন্মেছি" - তাঁর পিতাও ছিলেন দৈত্য। দৈত্যেষু সঙ্গম্ বিষয়াত্মকেষুঃ "তাদের পরিত্যাগ কর... " অসৎসঙ্গ ত্যাগ এই বৈষ্ণব আচার (চৈতন্য চরিতামৃত মধ্য ২২.৮৭) শ্রী চৈতন্য মহাপ্রভুও একই কথা বলছেন, "বৈষ্ণব কে?" বৈষ্ণব... তিনি তৎক্ষণাৎ ব্যাখ্যা করছেন যে বৈষ্ণবের কর্তব্য কি? কিছু ভক্তরা শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, "হে প্রভু, বৈষ্ণবের কর্তব্য কি?" তিনি দু'লাইনে তৎক্ষণাৎ উত্তর দিয়েছিলেন, "অসৎসঙ্গ ত্যাগ এই বৈষ্ণব আচার" "জাগতিক বিষয়ী লোকেদের সঙ্গ পরিত্যাগ করা"। সুতরাং পরবর্তী প্রশ্ন আসতে পারে, "বিষয়ী কে?" "অসৎ এক স্ত্রীসঙ্গী"। "যে ব্যক্তি স্ত্রীলোকের প্রতি আসক্ত, সে অসৎ।" এবং 'কৃষ্ণাভক্ত আর' , "আরেকজন হল সেই ব্যক্তি যে কৃষ্ণ ভক্ত নয়'।

সুতরাং আমাদের পরিত্যাগ করতে হবে। তাই জন্য এই বিধিবদ্ধ নিয়মাবলী। কমপক্ষে কোন অবৈধ সঙ্গ কোর না। বিয়ে কর, ভদ্রলোকের মতো বসবাস কর। দায়িত্ব গ্রহণ কর। তাহলে ধীরে ধীরে তুমি এই যৌনবাসনাকে পরিত্যাগ করতে পারবে। যদি আমরা এই যৌনবাসনাকে ত্যাগ করতে না পারি, পূর্ণরূপে অবিক্ষিপ্ত, অবিচল। তাহলে এই জন্মচক্র থেকে রেহাই পাবার কোনই সম্ভাবনা নেই। জন্ম-মৃত্যু-জরা-ব্যাধি। তা সম্ভব নয়। অতএব, প্রহ্লাদ মহারাজ উপদেশ দিচ্ছেন, "দৈত্যেষু সঙ্গম্ বিষয়াত্মকেষু" - ওদের সঙ্গ কোর না। অসৎ-সঙ্গ, সেই একই কথা চৈতন্য মহাপ্রভু বলছেন... "অসৎসঙ্গ ত্যাগ এই বৈষ্ণব আচার।" এই হচ্ছে বৈষ্ণবের কৃত্য। যারা বিষয়ী, অসৎ তাদের সঙ্গ হওয়ার সামান্য সুযোগও নিও না। এটি অত্যন্ত কঠিন সঙ্গ। তাহলেই এটি সম্ভব। উপেত নারায়ণম্ আদিদেবম্ স মুক্তসঙ্গৈঃ ইষিতোহপবর্গ। (ভাগবত ৭.৬.১৭-১৮) তাই সঙ্গ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ... সজাতি সিদ্ধাশয়ে। যারা কৃষ্ণভাবনামৃতের সাথে যুক্ত, ভগবৎসেবার সাথে যুক্ত, তাদের সঙ্গ কর।

তাই আমরা সকলকে এই ভক্তসঙ্গ পাবার সুযোগ করে দিতে বিভিন্ন কেন্দ্রসমূহ খুলছি। যতদূর সম্ভব আমরা আশ্রয় দিচ্ছি। আমরা প্রসাদ দিচ্ছি। আমরা উপদেশ দিচ্ছি, আমরা শ্রীকৃষ্ণের পূজা করার সুযোগ দিচ্ছি। কেন? কারণ লোকেরা যেন এই সঙ্গের সুযোগ গ্রহণ করতে পারে। নারায়ণঃ। নারায়ণম্ আদিদেবানাম্। তাঁরা যেন শ্রীনারায়ণের সঙ্গ করতে পারেন। নারায়ণ এবং তাঁর সেবার সাথে আর যা কিছু যুক্ত - নারায়ণ, কৃষ্ণ, বিষ্ণু... একই। নারায়ণ পরোহব্যক্তাৎ। নারায়ণ মানে... যাঁর অবস্থান সর্বদাই চিন্ময়। তাই যেই তুমি নারায়ণের সংস্পর্শে আসছো, লক্ষ্মীদেবী সেখানে রয়েছেন, সৌভাগ্যের অধিষ্ঠাত্রী দেবী সেখানে রয়েছেন। আমরা কল্পিত দরিদ্র নারায়ণের পূজা করি না, না।