BN/Prabhupada 0648 - স্বভাবগত ভাবেই আমরা জীবসত্ত্বা, কর্ম আমাদেরকে করতেই হবে

Revision as of 17:19, 29 June 2021 by Vanibot (talk | contribs) (Vanibot #0023: VideoLocalizer - changed YouTube player to show hard-coded subtitles version)
(diff) ← Older revision | Latest revision (diff) | Newer revision → (diff)


Lecture on BG 6.2-5 -- Los Angeles, February 14, 1969

ভক্তঃ তাৎপর্য - "যখন কোন ব্যক্তি পূর্ণরূপে ভগবানের চিন্ময় প্রেমময়ী সেবায় যুক্ত হন, তখন তিনি নিজেতেই সম্পূর্ণরূপে তৃপ্ত থাকেন এবং তাই তিনি আর ইন্দ্রিয়সুখভোগ অথবা সকাম কর্মে লিপ্ত হন না। অন্যথায় কেউ যথার্থভাবে নিযুক্ত না হওয়ার ফলে অবশ্যই ইন্দ্রিয়সুখভোগে লিপ্ত হবে।

শ্রীল প্রভুপাদঃ হ্যাঁ, এটি হচ্ছেই মূল বিষয়। আমাদের অবশ্যই নিযুক্ত থাকতে হবে। আমরা চুপ করে বসে থাকতে পারি না। সেই একই উদাহরণ। তুমি কোনও ভাবেই একটি শিশুকে কিছু না কিছু না করতে দিয়ে চুপ করে বসিয়ে রাখতে পারবে না। স্বভাবগতভাবেই আমরা চেতনসত্ত্বা। আমাদের কাজ করতেই হবে। কাজ বন্ধ করে দেয়া সম্ভব নয়। ঠিক যেমন বলা হয়ে থাকে, "অলস মস্তিস্ক শয়তানের কারখানা"। যদি ভাল কিছুতে নিযুক্ত না হও, তাহলে তোমাকে আজেবাজে কিছুতে যুক্ত হতেই হবে। ঠিক যেমন ছোট বাচ্চা, যদি তাকে পড়াশোনায় যুক্ত না করা হয়, সে নষ্ট হয়ে যাবে। তেমনিভাবে, আমাদের দুটো কাজঃ হয় জাগতিক ইন্দ্রিয় সুখ ভোগ , নয়তো কৃষ্ণভাবনামৃত বা ভক্তিযোগ অথবা যোগ। সুতরাং যদি আমি যোগপদ্ধতিতে না থাকি তার মানে হচ্ছে আমি অবশ্যই ইন্দ্রিয়সুখ ভোগে ব্যাপৃত আছি। এবং যদি আমি ইন্দ্রিয়সুখ ভোগে লিপ্ত রয়েছি তাহলে যোগের কোন প্রশ্নই ওঠে না। পড়তে থাকো।

ভক্তঃ কৃষ্ণভাবনাহীন ব্যক্তি নিশ্চিতরূপে সর্বদা নিজ স্বার্থ অথবা বিস্তারিত স্বার্থপর কর্মকাণ্ডে লিপ্ত থাকবে। কিন্তু একজন কৃষ্ণভাবনাময় ব্যক্তি শ্রীকৃষ্ণের সন্তুষ্টিবিধানের জন্য সমস্ত কর্ম করতে পারেন। এবং তাই তিনি যথাযথভাবে ইন্দ্রিয়তৃপ্তির পথ থেকে সম্পূর্ণ অনাসক্ত থাকতে পারেন। যে ব্যক্তির এই ধরণের উপলব্ধি হয় নি, তিনি যোগ সোপানের সর্বোচ্চ শিখরে উন্নীত হওয়ার পূর্বে নিশ্চিতরূপে কৃত্রিমভাবেই কেবল জড় বাসনা থেকে মুক্ত থাকার চেষ্টা করেন।"

শ্রীল প্রভুপাদঃ যোগ সোপান বা সিঁড়ি। এই সিঁড়িকে মইয়ের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। ঠিক যেমন সিঁড়ি, বিশাল বড় কোন অট্টালিকায় উঠতে গেলে যেমন সিঁড়ি থাকে, বাস্তবিকভাবেই সিঁড়ির প্রত্যেকটি ধাপ মানে উন্নতি। এই সিঁড়ির সম্পূর্ণ ধাপগুলোকে যোগপন্থা বলা যেতে পারে। কেউ হয়তো পঞ্চম ধাপে রয়েছে, কেউ হয়তো পঞ্চাশতম ধাপে রয়েছে। আবার কেউ হয়তো পাঁচশতম ধাপে রয়েছে, আবার কেউ বা সেই ভবনটির সর্বোচ্চ অবস্থানে রয়েছে। সুতরাং যদিও এই সম্পূর্ণ মইটিকে যোগপন্থা বা সিঁড়ি বলা হয়, কিন্তু এর মধ্যে যে ব্যক্তি পঞ্চম ধাপে রয়েছে, তাকে কখনই পঞ্চাশতম ধাপে থাকা ব্যক্তির সঙ্গে তুলনা করা যায় না। অথবা যে ব্যক্তি পঞ্চাশতম ধাপে রয়েছে, তাকে কখনই পাঁচশতম ধাপে থাকা ব্যক্তির সঙ্গে তুলনা করা যায় না। ঠিক তেমনই, ভগবদ্গীতাতে আপনারা কর্মযোগ, জ্ঞানযোগ, ধ্যানযোগ, ভক্তিযোগ ইত্যাদি পাবেন, এগুলোর সঙ্গে যোগ শব্দটি বলা হয়। কারণ সম্পূর্ণ সিঁড়িটিই সর্বোচ্চ তলার সঙ্গে যুক্ত। সুতরাং প্রত্যেকটি পন্থাই ভগবান শ্রীকৃষ্ণের সঙ্গে যুক্ত। কিন্তু তার মানে এই নয় যে প্রত্যেকেই সর্বোচ্চ তলায় অবস্থান করছে। যিনি সর্বোচ্চ স্তরে রয়েছেন, তিনি কৃষ্ণভাবনায় যুক্ত বলে বুঝতে হবে। অন্যরা কেবল পঞ্চম, পঞ্চাশ কিংবা পাঁচশতম ধাপে রয়েছে বলে বুঝতে হবে। এই সম্পূর্ণ পন্থাটিকে বলা হয় সোপান।