BN/Prabhupada 0677 - গোস্বামী কোন বংশগত উপাধি নয়, এটি একটি যোগ্যতা: Difference between revisions

(Created page with "<!-- BEGIN CATEGORY LIST --> Category:1080 Bengali Pages with Videos Category:Prabhupada 0677 - in all Languages Category:BN-Quotes - 1969 Category:BN-Quotes - L...")
 
(Vanibot #0023: VideoLocalizer - changed YouTube player to show hard-coded subtitles version)
 
Line 9: Line 9:
<!-- END CATEGORY LIST -->
<!-- END CATEGORY LIST -->
<!-- BEGIN NAVIGATION BAR -- DO NOT EDIT OR REMOVE -->
<!-- BEGIN NAVIGATION BAR -- DO NOT EDIT OR REMOVE -->
{{1080 videos navigation - All Languages|English|Prabhupada 0676 - To Become Controlled By The Mind Means To Be Controlled By The Senses|0676|Prabhupada 0678 - A Krsna Conscious Person is Always in Yoga Trance|0678}}
{{1080 videos navigation - All Languages|Bengali|BN/Prabhupada 0676 - মনের নিয়ন্ত্রনাধীন হওয়া মানে হচ্ছে ইন্দ্রিয়ের নিয়ন্ত্রের অধীন থাকা|0676|BN/Prabhupada 0678 - একজন কৃষ্ণভাবনাময় ব্যক্তি সর্বদা যোগ সমাধিতে থাকেন|0678}}
<!-- END NAVIGATION BAR -->
<!-- END NAVIGATION BAR -->
<!-- BEGIN ORIGINAL VANIQUOTES PAGE LINK-->
<!-- BEGIN ORIGINAL VANIQUOTES PAGE LINK-->
Line 19: Line 19:


<!-- BEGIN VIDEO LINK -->
<!-- BEGIN VIDEO LINK -->
{{youtube_right|zWQCRcMny2c|গোস্বামী কোন বংশগত উপাধি নয়, এটি একটি যোগ্যতা<br />- Prabhupāda 0677}}
{{youtube_right|al8VlhYP9A4|গোস্বামী কোন বংশগত উপাধি নয়, এটি একটি যোগ্যতা<br />- Prabhupāda 0677}}
<!-- END VIDEO LINK -->
<!-- END VIDEO LINK -->


Line 31: Line 31:


<!-- BEGIN TRANSLATED TEXT -->
<!-- BEGIN TRANSLATED TEXT -->
প্রভুপাদঃ তাই যে ব্যক্তি তার ইন্দ্রিয়ের অধীন, সে হচ্ছে গোদাস। গো মানে ইন্দ্রিয়। আর দাস মানে চাকর। আর যিনি ইন্দ্রিয়ের নিয়ন্ত্রণ করেন, তিনি হলেন গোস্বামী। স্বামী মানে প্রভু এবং গো মানে ইন্দ্রিয়। তোমরা এই গোস্বামী উপাধিটি শুনেছ। গোস্বামী উপাধিটির মানে হচ্ছে যিনি তার ইন্দ্রিয়ের নিয়ন্ত্রণকর্তা। যিনি ইন্দ্রিয়ের দাস নন। যতক্ষণ পর্যন্ত কেউ ইন্দ্রিয়ের দাসত্ব করবে, তাকে স্বামী বা গোস্বামী বলা যাবে না। স্বামী বা গোস্বামী, একই জিনিস, এর মানে হচ্ছে যিনি তার ইন্দ্রিয়ের প্রভু। তাই যদি না কেউ তার ইন্দ্রিয়ের প্রভু হতে না পারে, তার পক্ষে এই স্বামী বা গোস্বামী উপাধিটি গ্রহঙ্করা মানে হচ্ছে প্রতারণা করা। নিজেকে অবশ্যই ইন্দ্রিয়ের প্রভু হতে হবে। সেটি শ্রীল রূপ গোস্বামী ব্যাখ্যা করেছেন। গোস্বামী, রূপ গোস্বামী। তাঁরা মন্ত্রী ছিলেন। যখন তাঁরা মন্ত্রী ছিলেন, তখন তাঁরা গোস্বামী ছিলেন না। কিন্তু যখন তাঁরা, সনাতন গোস্বামী ও রূপ গোস্বামী শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর শিষ্য হলেন, এবং তাঁর থেকে শিক্ষা পেলেন, তাঁরা গোস্বামী হলেন। তাই গোস্বামী কোনও বংশগত উপাধি নয়। এটি একটি যোগ্যতা। গুরুর অধীনে। যিনি ইন্দ্রিয় সংযমে, নিয়ন্ত্রণে সফল হন তাঁকে স্বামী বা গোস্বামী বলা হয়। তাই কাউকে স্বামী বা গোস্বামী হতে হবে। তাহলেই তিনি গুরু হতে পারবেন স্বামী বা গোস্বামী না হয়ে বা ইন্দ্রিয়ের প্রভু না হয়ে গুরু হওয়াটা হচ্ছে প্রতারণা। সেটিও শ্রীল রূপ গোস্বামীর দ্বারা সংজ্ঞা দেয়া হয়েছে। তিনি বলেছেন, বাচো বেগম্‌, ক্রোধবেগম্‌, মনসঃ বেগম্‌ জিহ্বা বেগম্‌ উদরবেগম্‌, উপস্থ বেগম্‌ এতান্‌ বেগান্‌ যো বিষহেত ধীরঃ পৃথ্বিম্‌ স শিষ্যাৎ ([[Vanisource:NOI 1|উপদেশামৃত শ্লোক ১]])  
প্রভুপাদঃ তাই যে ব্যক্তি তার ইন্দ্রিয়ের অধীন, সে হচ্ছে গোদাস। গো মানে ইন্দ্রিয়। আর দাস মানে চাকর। আর যিনি ইন্দ্রিয়ের নিয়ন্ত্রণ করেন, তিনি হলেন গোস্বামী। স্বামী মানে প্রভু এবং গো মানে ইন্দ্রিয়। তোমরা এই গোস্বামী উপাধিটি শুনেছ। গোস্বামী উপাধিটির মানে হচ্ছে যিনি তার ইন্দ্রিয়ের নিয়ন্ত্রণকর্তা। যিনি ইন্দ্রিয়ের দাস নন। যতক্ষণ পর্যন্ত কেউ ইন্দ্রিয়ের দাসত্ব করবে, তাকে স্বামী বা গোস্বামী বলা যাবে না। স্বামী বা গোস্বামী, একই জিনিস, এর মানে হচ্ছে যিনি তার ইন্দ্রিয়ের প্রভু। তাই যদি না কেউ তার ইন্দ্রিয়ের প্রভু হতে না পারে, তার পক্ষে এই স্বামী বা গোস্বামী উপাধিটি গ্রহঙ্করা মানে হচ্ছে প্রতারণা করা। নিজেকে অবশ্যই ইন্দ্রিয়ের প্রভু হতে হবে। সেটি শ্রীল রূপ গোস্বামী ব্যাখ্যা করেছেন। গোস্বামী, রূপ গোস্বামী। তাঁরা মন্ত্রী ছিলেন। যখন তাঁরা মন্ত্রী ছিলেন, তখন তাঁরা গোস্বামী ছিলেন না। কিন্তু যখন তাঁরা, সনাতন গোস্বামী ও রূপ গোস্বামী শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর শিষ্য হলেন, এবং তাঁর থেকে শিক্ষা পেলেন, তাঁরা গোস্বামী হলেন। তাই গোস্বামী কোনও বংশগত উপাধি নয়। এটি একটি যোগ্যতা। গুরুর অধীনে। যিনি ইন্দ্রিয় সংযমে, নিয়ন্ত্রণে সফল হন তাঁকে স্বামী বা গোস্বামী বলা হয়। তাই কাউকে স্বামী বা গোস্বামী হতে হবে। তাহলেই তিনি গুরু হতে পারবেন স্বামী বা গোস্বামী না হয়ে বা ইন্দ্রিয়ের প্রভু না হয়ে গুরু হওয়াটা হচ্ছে প্রতারণা। সেটিও শ্রীল রূপ গোস্বামীর দ্বারা সংজ্ঞা দেয়া হয়েছে। তিনি বলেছেন,  
 
:বাচো বেগম্‌, মনসঃ ক্রোধবেগম্‌,  
 
:জিহ্বা বেগম্‌ উদর উপস্থ বেগম্‌  
 
:এতান্‌ বেগান্‌ যো বিষহেত ধীরঃ  
 
:পৃথ্বিম্‌ স শিষ্যাৎ  
 
:([[Vanisource:NOI 1|উপদেশামৃত শ্লোক ১]])  


তিনি ছয় ধরণের প্রণোদনা কথা বলেছেন, বেগম্‌। তুমি এটি বুঝতে পারবে, ঠিক যেমন যখন তুমি প্রকৃতির ডাক অনুভব কর, তোমাকে তখন টয়লেটে যেতেই হবে। তুমি কোনভাবেই থামাতে পারবে না। তোমাকে সাড়া দিতেই হবে। একে বলা হয় বেগ। এই রকম ছয় প্রকার বেগ আছে, সেগুলো কি ? বাচো বেগম্‌ । কথা বলার বেগ। অপ্রয়োজনে কথা বলা। একে বলা হয় বাচো বেগ। ক্রোধ বেগম্‌। কখনঅ কখনও ক্রোধের বেগ আসে। অদি আমি অত্যন্ত রেগে যাই, আমি আমাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না। আমি এমন কিছু করে ফেলি যা আমার করা উচিত নয়। কখনও কখনও রাগে মানুষ নিজের লোককে মেরে ফেলে। একে বলা হয় বেগ। বাক্যের বেগ, ক্রোধের বেগ এবং একইভাবে মনের বেগ । মন নির্দেশ করে, "তোমাকে এক্ষুনি ওখানে যেতে হবে"। তৎক্ষণাৎ। বাক্যের বেগ, মনের বেগ, ক্রোধের বেগ। তারপর জিহ্বা বেগম্‌। জিহ্বা বেগম্‌ মানে জিহবার কারণে যে বেগ। আমি ঐ দারুন জিনিসটির স্বাদ নিতে চাই। কোন রসগোল্লা বা আমি পছন্দ করি এমন কিছু। তাই একে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। অপ্রয়োজনে কথা বলার বেগ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। মনকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে, মনের আদেশ। মনের ওপর যোগ অভ্যাস। কিন্তু আমাদের কৃষ্ণভাবনামৃত অভ্যাস। মন ছাড়াও আরও অনেক কিছু আছে, যেমন ক্রোধ, জিহ্বা। জিহ্বা বেগম্‌ তারপর উদর বেগম্‌। জিহ্বা থেকে কিছুটা নিচে। উদর মানে পেট। পেট ইতিমধ্যেই ভরে গেছে। তারপরও আমি সেটি আরও ভরতে চাইছি। একে বলা হয় বেগম্‌। উদরের বেগ। এবং যখন জিহ্বা আর উদরের বেগ অত্যন্ত বেশি হবে, এর পরের, নিচে, উপস্থ। উপস্থের বেগ রয়েছে। তখন আমার কিছু যৌনসঙ্গের দরকার পড়ে। যদি আমি বেশি খাই, আমার জিহ্বাকে অপ্রয়োজনে ব্যবহার করি যদি আমার মনকে আমি যা খুশি তা করতে অনুমতি দেই, তাহলে আমি আমার উপস্থকেও নিয়ন্ত্রণ করতে পারবো না। যৌন বেগ চলে আসবে যা আমি নিয়ন্ত্রণ করতে পারব না। এইভাবে অনেক ধরণের বেগ রয়েছে। রূপ গোস্বামী বলেছেন, যেই ব্যক্তির এই সমস্ত বেগ ও তাঁর ইন্দ্রিয়ের ওপর নিয়ন্ত্রণ আছে, তিনিই গুরু হতে পারেন। এমন নয় যে গুরু বানানো যায়। এই পদ্ধতিকে জানতে হবে। কীভাবে এই বেগগুলো সহ্য করা যায়। এতান্‌ বেগান্‌ যো বিষহেত ধীরঃ ([[Vanisource:NOI 1|উপদেশামৃত ১]]) যে ব্যক্তি এই সমস্ত বেগের ওপর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে, যিনি ধীর থাকেন, পৃথ্বীম্‌ স শিষ্যাৎঃ তিনি সারা পৃথিবী জুড়ে শিষ্য বানাতে পারেন। উন্মুক্ত। হ্যাঁ। তাই সবকিছুই নির্ভর করছে প্রশিক্ষণের ওপর। সেটি হচ্ছে যোগ পন্থা। সম্পূর্ণ যোগ পন্থাটি হচ্ছে প্রশিক্ষণ দেয়া। আমাদের ইন্দ্রিয়, আমাদের মন, এটা সেটা , কত কিছু। তারপর আমরা আত্মায় স্থিত হই। তুমি কি মনে কর মাত্র ১৫ মিনিটের ধ্যান দিয়ে আমরা আত্ম-উপলব্ধি করব? আর সারাদিন ধরে সব বাজে কাজ করে বেড়াব? না, এর জন্য প্রশিক্ষণ চাই। তুমি জীবনের সব সমস্যার সমাধান করতে চাও। আর সেটি তুমি খুব সস্তায় করতে চাও? না, তাহলে তুমি প্রতারিত হবে। তোমাকে এর জন্য মূল্য দিতে হবে। যদি তুমি সবচাইতে ভাল জিনিসটি চাও, তাহলে তোমাকে তার জন্য মূল্য চুকাতেই হবে। কিন্তু শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর কৃপায় সেই মূল্য প্রদানটি খুব সহজ হয়ে গেছে। হরে কৃষ্ণ মহামন্ত্র জপ কর। সবকিছুই সহজ হয়ে যাবে। এই সমস্ত নিয়ন্ত্রণ করার পন্থা, যোগ পন্থা , সবকিছুই সহজ হয়ে যাবে। সেটিই শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর করুণা। ইহা হৈতে সর্বসিদ্ধি হইবে তোমার (চৈতন্য ভাগবত, মধ্য ২৩/৭৮) শ্রীচৈতন্যদেব আশীর্বাদ করেছেন যে যদি তুমি এই সমস্ত নিয়মনীতি মেনে চল, কীর্তন কর, তাহলে আত্ম-উপলব্ধির সর্ব সিদ্ধি প্রাপ্ত হবে। সেটিই হচ্ছে সত্য।  
তিনি ছয় ধরণের প্রণোদনা কথা বলেছেন, বেগম্‌। তুমি এটি বুঝতে পারবে, ঠিক যেমন যখন তুমি প্রকৃতির ডাক অনুভব কর, তোমাকে তখন টয়লেটে যেতেই হবে। তুমি কোনভাবেই থামাতে পারবে না। তোমাকে সাড়া দিতেই হবে। একে বলা হয় বেগ। এই রকম ছয় প্রকার বেগ আছে, সেগুলো কি ? বাচো বেগম্‌ । কথা বলার বেগ। অপ্রয়োজনে কথা বলা। একে বলা হয় বাচো বেগ। ক্রোধ বেগম্‌। কখনঅ কখনও ক্রোধের বেগ আসে। অদি আমি অত্যন্ত রেগে যাই, আমি আমাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না। আমি এমন কিছু করে ফেলি যা আমার করা উচিত নয়। কখনও কখনও রাগে মানুষ নিজের লোককে মেরে ফেলে। একে বলা হয় বেগ। বাক্যের বেগ, ক্রোধের বেগ এবং একইভাবে মনের বেগ । মন নির্দেশ করে, "তোমাকে এক্ষুনি ওখানে যেতে হবে"। তৎক্ষণাৎ। বাক্যের বেগ, মনের বেগ, ক্রোধের বেগ। তারপর জিহ্বা বেগম্‌। জিহ্বা বেগম্‌ মানে জিহবার কারণে যে বেগ। আমি ঐ দারুন জিনিসটির স্বাদ নিতে চাই। কোন রসগোল্লা বা আমি পছন্দ করি এমন কিছু। তাই একে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। অপ্রয়োজনে কথা বলার বেগ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। মনকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে, মনের আদেশ। মনের ওপর যোগ অভ্যাস। কিন্তু আমাদের কৃষ্ণভাবনামৃত অভ্যাস। মন ছাড়াও আরও অনেক কিছু আছে, যেমন ক্রোধ, জিহ্বা। জিহ্বা বেগম্‌ তারপর উদর বেগম্‌। জিহ্বা থেকে কিছুটা নিচে। উদর মানে পেট। পেট ইতিমধ্যেই ভরে গেছে। তারপরও আমি সেটি আরও ভরতে চাইছি। একে বলা হয় বেগম্‌। উদরের বেগ। এবং যখন জিহ্বা আর উদরের বেগ অত্যন্ত বেশি হবে, এর পরের, নিচে, উপস্থ। উপস্থের বেগ রয়েছে। তখন আমার কিছু যৌনসঙ্গের দরকার পড়ে। যদি আমি বেশি খাই, আমার জিহ্বাকে অপ্রয়োজনে ব্যবহার করি যদি আমার মনকে আমি যা খুশি তা করতে অনুমতি দেই, তাহলে আমি আমার উপস্থকেও নিয়ন্ত্রণ করতে পারবো না। যৌন বেগ চলে আসবে যা আমি নিয়ন্ত্রণ করতে পারব না। এইভাবে অনেক ধরণের বেগ রয়েছে। রূপ গোস্বামী বলেছেন, যেই ব্যক্তির এই সমস্ত বেগ ও তাঁর ইন্দ্রিয়ের ওপর নিয়ন্ত্রণ আছে, তিনিই গুরু হতে পারেন। এমন নয় যে গুরু বানানো যায়। এই পদ্ধতিকে জানতে হবে। কীভাবে এই বেগগুলো সহ্য করা যায়। এতান্‌ বেগান্‌ যো বিষহেত ধীরঃ ([[Vanisource:NOI 1|উপদেশামৃত ১]]) যে ব্যক্তি এই সমস্ত বেগের ওপর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে, যিনি ধীর থাকেন, পৃথ্বীম্‌ স শিষ্যাৎঃ তিনি সারা পৃথিবী জুড়ে শিষ্য বানাতে পারেন। উন্মুক্ত। হ্যাঁ। তাই সবকিছুই নির্ভর করছে প্রশিক্ষণের ওপর। সেটি হচ্ছে যোগ পন্থা। সম্পূর্ণ যোগ পন্থাটি হচ্ছে প্রশিক্ষণ দেয়া। আমাদের ইন্দ্রিয়, আমাদের মন, এটা সেটা , কত কিছু। তারপর আমরা আত্মায় স্থিত হই। তুমি কি মনে কর মাত্র ১৫ মিনিটের ধ্যান দিয়ে আমরা আত্ম-উপলব্ধি করব? আর সারাদিন ধরে সব বাজে কাজ করে বেড়াব? না, এর জন্য প্রশিক্ষণ চাই। তুমি জীবনের সব সমস্যার সমাধান করতে চাও। আর সেটি তুমি খুব সস্তায় করতে চাও? না, তাহলে তুমি প্রতারিত হবে। তোমাকে এর জন্য মূল্য দিতে হবে। যদি তুমি সবচাইতে ভাল জিনিসটি চাও, তাহলে তোমাকে তার জন্য মূল্য চুকাতেই হবে। কিন্তু শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর কৃপায় সেই মূল্য প্রদানটি খুব সহজ হয়ে গেছে। হরে কৃষ্ণ মহামন্ত্র জপ কর। সবকিছুই সহজ হয়ে যাবে। এই সমস্ত নিয়ন্ত্রণ করার পন্থা, যোগ পন্থা , সবকিছুই সহজ হয়ে যাবে। সেটিই শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর করুণা। ইহা হৈতে সর্বসিদ্ধি হইবে তোমার (চৈতন্য ভাগবত, মধ্য ২৩/৭৮) শ্রীচৈতন্যদেব আশীর্বাদ করেছেন যে যদি তুমি এই সমস্ত নিয়মনীতি মেনে চল, কীর্তন কর, তাহলে আত্ম-উপলব্ধির সর্ব সিদ্ধি প্রাপ্ত হবে। সেটিই হচ্ছে সত্য।  

Latest revision as of 17:28, 29 June 2021



Lecture on BG 6.25-29 -- Los Angeles, February 18, 1969

প্রভুপাদঃ তাই যে ব্যক্তি তার ইন্দ্রিয়ের অধীন, সে হচ্ছে গোদাস। গো মানে ইন্দ্রিয়। আর দাস মানে চাকর। আর যিনি ইন্দ্রিয়ের নিয়ন্ত্রণ করেন, তিনি হলেন গোস্বামী। স্বামী মানে প্রভু এবং গো মানে ইন্দ্রিয়। তোমরা এই গোস্বামী উপাধিটি শুনেছ। গোস্বামী উপাধিটির মানে হচ্ছে যিনি তার ইন্দ্রিয়ের নিয়ন্ত্রণকর্তা। যিনি ইন্দ্রিয়ের দাস নন। যতক্ষণ পর্যন্ত কেউ ইন্দ্রিয়ের দাসত্ব করবে, তাকে স্বামী বা গোস্বামী বলা যাবে না। স্বামী বা গোস্বামী, একই জিনিস, এর মানে হচ্ছে যিনি তার ইন্দ্রিয়ের প্রভু। তাই যদি না কেউ তার ইন্দ্রিয়ের প্রভু হতে না পারে, তার পক্ষে এই স্বামী বা গোস্বামী উপাধিটি গ্রহঙ্করা মানে হচ্ছে প্রতারণা করা। নিজেকে অবশ্যই ইন্দ্রিয়ের প্রভু হতে হবে। সেটি শ্রীল রূপ গোস্বামী ব্যাখ্যা করেছেন। গোস্বামী, রূপ গোস্বামী। তাঁরা মন্ত্রী ছিলেন। যখন তাঁরা মন্ত্রী ছিলেন, তখন তাঁরা গোস্বামী ছিলেন না। কিন্তু যখন তাঁরা, সনাতন গোস্বামী ও রূপ গোস্বামী শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর শিষ্য হলেন, এবং তাঁর থেকে শিক্ষা পেলেন, তাঁরা গোস্বামী হলেন। তাই গোস্বামী কোনও বংশগত উপাধি নয়। এটি একটি যোগ্যতা। গুরুর অধীনে। যিনি ইন্দ্রিয় সংযমে, নিয়ন্ত্রণে সফল হন তাঁকে স্বামী বা গোস্বামী বলা হয়। তাই কাউকে স্বামী বা গোস্বামী হতে হবে। তাহলেই তিনি গুরু হতে পারবেন স্বামী বা গোস্বামী না হয়ে বা ইন্দ্রিয়ের প্রভু না হয়ে গুরু হওয়াটা হচ্ছে প্রতারণা। সেটিও শ্রীল রূপ গোস্বামীর দ্বারা সংজ্ঞা দেয়া হয়েছে। তিনি বলেছেন,

বাচো বেগম্‌, মনসঃ ক্রোধবেগম্‌,
জিহ্বা বেগম্‌ উদর উপস্থ বেগম্‌
এতান্‌ বেগান্‌ যো বিষহেত ধীরঃ
পৃথ্বিম্‌ স শিষ্যাৎ
(উপদেশামৃত শ্লোক ১)

তিনি ছয় ধরণের প্রণোদনা কথা বলেছেন, বেগম্‌। তুমি এটি বুঝতে পারবে, ঠিক যেমন যখন তুমি প্রকৃতির ডাক অনুভব কর, তোমাকে তখন টয়লেটে যেতেই হবে। তুমি কোনভাবেই থামাতে পারবে না। তোমাকে সাড়া দিতেই হবে। একে বলা হয় বেগ। এই রকম ছয় প্রকার বেগ আছে, সেগুলো কি ? বাচো বেগম্‌ । কথা বলার বেগ। অপ্রয়োজনে কথা বলা। একে বলা হয় বাচো বেগ। ক্রোধ বেগম্‌। কখনঅ কখনও ক্রোধের বেগ আসে। অদি আমি অত্যন্ত রেগে যাই, আমি আমাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না। আমি এমন কিছু করে ফেলি যা আমার করা উচিত নয়। কখনও কখনও রাগে মানুষ নিজের লোককে মেরে ফেলে। একে বলা হয় বেগ। বাক্যের বেগ, ক্রোধের বেগ এবং একইভাবে মনের বেগ । মন নির্দেশ করে, "তোমাকে এক্ষুনি ওখানে যেতে হবে"। তৎক্ষণাৎ। বাক্যের বেগ, মনের বেগ, ক্রোধের বেগ। তারপর জিহ্বা বেগম্‌। জিহ্বা বেগম্‌ মানে জিহবার কারণে যে বেগ। আমি ঐ দারুন জিনিসটির স্বাদ নিতে চাই। কোন রসগোল্লা বা আমি পছন্দ করি এমন কিছু। তাই একে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। অপ্রয়োজনে কথা বলার বেগ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। মনকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে, মনের আদেশ। মনের ওপর যোগ অভ্যাস। কিন্তু আমাদের কৃষ্ণভাবনামৃত অভ্যাস। মন ছাড়াও আরও অনেক কিছু আছে, যেমন ক্রোধ, জিহ্বা। জিহ্বা বেগম্‌ তারপর উদর বেগম্‌। জিহ্বা থেকে কিছুটা নিচে। উদর মানে পেট। পেট ইতিমধ্যেই ভরে গেছে। তারপরও আমি সেটি আরও ভরতে চাইছি। একে বলা হয় বেগম্‌। উদরের বেগ। এবং যখন জিহ্বা আর উদরের বেগ অত্যন্ত বেশি হবে, এর পরের, নিচে, উপস্থ। উপস্থের বেগ রয়েছে। তখন আমার কিছু যৌনসঙ্গের দরকার পড়ে। যদি আমি বেশি খাই, আমার জিহ্বাকে অপ্রয়োজনে ব্যবহার করি যদি আমার মনকে আমি যা খুশি তা করতে অনুমতি দেই, তাহলে আমি আমার উপস্থকেও নিয়ন্ত্রণ করতে পারবো না। যৌন বেগ চলে আসবে যা আমি নিয়ন্ত্রণ করতে পারব না। এইভাবে অনেক ধরণের বেগ রয়েছে। রূপ গোস্বামী বলেছেন, যেই ব্যক্তির এই সমস্ত বেগ ও তাঁর ইন্দ্রিয়ের ওপর নিয়ন্ত্রণ আছে, তিনিই গুরু হতে পারেন। এমন নয় যে গুরু বানানো যায়। এই পদ্ধতিকে জানতে হবে। কীভাবে এই বেগগুলো সহ্য করা যায়। এতান্‌ বেগান্‌ যো বিষহেত ধীরঃ (উপদেশামৃত ১) যে ব্যক্তি এই সমস্ত বেগের ওপর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে, যিনি ধীর থাকেন, পৃথ্বীম্‌ স শিষ্যাৎঃ তিনি সারা পৃথিবী জুড়ে শিষ্য বানাতে পারেন। উন্মুক্ত। হ্যাঁ। তাই সবকিছুই নির্ভর করছে প্রশিক্ষণের ওপর। সেটি হচ্ছে যোগ পন্থা। সম্পূর্ণ যোগ পন্থাটি হচ্ছে প্রশিক্ষণ দেয়া। আমাদের ইন্দ্রিয়, আমাদের মন, এটা সেটা , কত কিছু। তারপর আমরা আত্মায় স্থিত হই। তুমি কি মনে কর মাত্র ১৫ মিনিটের ধ্যান দিয়ে আমরা আত্ম-উপলব্ধি করব? আর সারাদিন ধরে সব বাজে কাজ করে বেড়াব? না, এর জন্য প্রশিক্ষণ চাই। তুমি জীবনের সব সমস্যার সমাধান করতে চাও। আর সেটি তুমি খুব সস্তায় করতে চাও? না, তাহলে তুমি প্রতারিত হবে। তোমাকে এর জন্য মূল্য দিতে হবে। যদি তুমি সবচাইতে ভাল জিনিসটি চাও, তাহলে তোমাকে তার জন্য মূল্য চুকাতেই হবে। কিন্তু শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর কৃপায় সেই মূল্য প্রদানটি খুব সহজ হয়ে গেছে। হরে কৃষ্ণ মহামন্ত্র জপ কর। সবকিছুই সহজ হয়ে যাবে। এই সমস্ত নিয়ন্ত্রণ করার পন্থা, যোগ পন্থা , সবকিছুই সহজ হয়ে যাবে। সেটিই শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর করুণা। ইহা হৈতে সর্বসিদ্ধি হইবে তোমার (চৈতন্য ভাগবত, মধ্য ২৩/৭৮) শ্রীচৈতন্যদেব আশীর্বাদ করেছেন যে যদি তুমি এই সমস্ত নিয়মনীতি মেনে চল, কীর্তন কর, তাহলে আত্ম-উপলব্ধির সর্ব সিদ্ধি প্রাপ্ত হবে। সেটিই হচ্ছে সত্য।

তাই এই যুগে যখন মানুষ অত্যন্ত অধঃপতিত, আর অন্য কোন পন্থার দ্বারাই তা সফল হবে না। এটিই কেবল একমাত্র পন্থা। এটি অত্যন্ত সহজ এবং মহিমান্বিত। কার্যকরী ও বাস্তব। আর কেউ এর দ্বারা নিজের স্বরূপ উপলব্ধি করতে পারে। প্রত্যক্ষ অবগমম্‌ ধর্মম্‌ (গীতা ৯/২) ভগবদ্গীতায় বলা হয়েছে যে, তুমি এটি প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা লাভ করতে পার। অন্যান্য পন্থায় তুমি কতোটা উন্নতি করেছ সেটির প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা লাভ করবে না। কিন্তু এই পন্থায়, যদি তুমি তা অনুসরণ কর, কয়েক দিনের জন্য হলেও তুমি এটি উপলব্ধি করবে যে, "হ্যাঁ, আমি সত্যিই উন্নতি করছি"। ঠিক যেমন যদি তুমি খাও, তুমি সহজেই বুঝতে পার যে তোমার ক্ষুন্নিবৃত্তি হচ্ছে। ঠিক তেমনই, যদি তুমি কৃষ্ণ ভাবনামৃত আন্দোলনের নীতিসমূহ মেনে চল, তুমি নিজেই দেখতে পাবে যে তুমি পরমার্থ উপলব্ধির পথে অগ্রসর হচ্ছ। পড়।

বিষ্ণুজনঃ "যে ব্যক্তি তার মনকে এবং পরিণামে ইন্দ্রিয়গুলোকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন, তাঁকে বলা হয় স্বামী বা গোস্বামী। আর যে ব্যক্তি মনের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়, তাকে বলা হয় গোদাস। অর্থাৎ ইন্দ্রিয়ের দাসত্ব করা। একজন গোস্বামী জানেন ইন্দ্রিয়ের সুখানুভূতির মানটি কি। চিন্ময় ইন্দ্রিয় তৃপ্তিতে হৃষীকেশ-এর সেবায় ইন্দ্রিয়কে লাগানো হয়। অথবা ইন্দ্রিয়ের পরম প্রভু শ্রীকৃষ্ণের সেবায়। শুদ্ধ ইন্দ্রিয়ের দ্বারা কৃষ্ণসেবা করাকে বলা কৃষ্ণভাবনামৃত। সেটিই হচ্ছে ইন্দ্রিয়গুলোকে পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আনার উপায়। এর চেয়ে বড় আর কি আছে? সেটিই হচ্ছে যোগাভ্যাসের সর্বোচ্চ সিদ্ধি।