BN/Prabhupada 0685 - ভক্তিযোগের পন্থায় দ্রুত ফল প্রাপ্তি - আত্মোপলব্ধি এবং মুক্তি এমন কি এই এক জীবনেই

Revision as of 17:31, 29 June 2021 by Vanibot (talk | contribs) (Vanibot #0023: VideoLocalizer - changed YouTube player to show hard-coded subtitles version)
(diff) ← Older revision | Latest revision (diff) | Newer revision → (diff)


Lecture on BG 6.30-34 -- Los Angeles, February 19, 1969

বিষ্ণুজনঃ মানুষ এমন কি সাধারণ ব্যবহারিক মাধ্যমেও আত্মোপলব্ধির ব্যাপারে ঐকান্তিক নয়, আর সেখানে এই কষ্টসাধ্য যোগ পন্থার আর কী কথা যেখানে কিনা জীবনধারণ পদ্ধতি এবং উপবেশনের পন্থাকে নিয়ন্ত্রণ করা, স্থান নির্বাচন, এবং জড় বস্তু থেকে মন প্রত্যাহার করার মতো বিষয়ে জোর দেয়া হচ্ছে। একজন সাংসারিক ব্যক্তি হিসেবে অর্জুন ভেবেছিলেন যে এই যোগ পদ্ধতি অনুশীলন করা তাঁর জন্য অসম্ভব ছিল।

শ্রীল প্রভুপাদঃ হ্যাঁ। তিনি কোন ভণ্ড যোগী হতে চান নি। কেবল কিছু সস্তা শারীরিক কসরত অভ্যাস করা। তিনি কোন ভণ্ড ছিলেন না। তিনি বলেছিলেন, "আমি একজন সাংসারিক মানুষ, একজন যোদ্ধা, আমার দ্বারা এসব সম্ভব না।" তিনি সরল মনে তা স্বীকার করেছেন। তিনি অসম্ভব কোনকিছুকে ধরতে চান নি। সেটি কেবল সময়ের অপচয় মাত্র। একজন ব্যক্তি কেন তা করবে? পড়ো।

বিষ্ণুজনঃ "যদিও তিনি অনেক ভাল কিছু গুণাবলীর অধিকারী ছিলেন, তিনি রাজকীয় পরিবারের ছিলেন, আরও অসংখ্য গুণে গুণান্বিত ছিলেন তিনি ছিলেন মহান যোদ্ধা, দীর্ঘ আয়ু ছিল তাঁর। প্রভুপাদঃ হ্যাঁ, একটা ব্যাপার হচ্ছে আয়ু। পাঁচ হাজার বছর আগে অর্জুনের সময়কালে, মানুষের আয়ু ছিল অত্যন্ত দীর্ঘ। মানুষ তখন হাজার বছরও বাঁচত। ঠিক যেমন এখনকার যুগে জোরে গেলে ১০০ বছর আয়ু সীমা থাকে। তেমনই, দ্বাপরযুগে মানুষের আয়ু থাকতো এক হাজার বছর। তারও আগে ত্রেতা যুগে আয়ুসীমা ছিল দশ হাজার বছর। আর তারও আগে সত্য যুগের আয়ুসীমা ছিল এক লক্ষ বছর। আয়ুসীমা এইভাবে কমছে। তাই অর্জুনের সময় যখন মানুষ এক হাজার বছরও বাঁচত, তবুও তিনি মনে করেছিলেন সেটি (যোগ) তাঁর জন্য অসম্ভব। পড়ো।

বিষ্ণুজনঃ আর সর্বোপরি তিনি ছিলেন পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের সবচাইতে অন্তরঙ্গ সখা। পাঁচ হাজার বছর আগে অর্জুনের জন্য এখনকার সময়ের চেয়েও আরও বেশি সুযোগসুবিধা ছিল। তবু তিনি এই যোগপদ্ধতিকে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন।

শ্রীল প্রভুপাদঃ এই অষ্টাঙ্গ যোগের কথা বলা হচ্ছে। হ্যাঁ।

বিষ্ণুজনঃ "ইতিহাসেই আমরা এই যোগ পদ্ধতি অনুশীলনের কোন সময়ে কোন নথি পাই না তাই নিঃসন্দেহে এই পন্থা অসম্ভব বলেই ধরা হয়, বিশেষ করে এই কলি যুগে। অবশ্য কিছু অতি বিরল কিছু মানুষের জন্য হয়তো তা সম্ভব হলে হতেও পারে। কিন্তু সাধারণ মানুষের জন্য এটি একটি অসম্ভব প্রস্তাব। পাঁচ হাজার বছর আগেই যদি এই অবস্থা হয়, তাহলে এখনকার কথা আর কীইবা বলার আছে? যারা বিভিন্ন স্কুল বা সমাজে এই যোগপদ্ধতির নকল করার চেষ্টা করছে, যদিও তারা আত্মসন্তুষ্টি পাচ্ছে, কিন্তু তারা নিস্নদেহে তাদের সময় নষ্ট করছে মাত্র। তারা সম্পূর্ণরূপে তাদের কাঙ্ক্ষিত বাসনার অজ্ঞানতায় আছে।

শ্রীল প্রভুপাদঃ হ্যাঁ। এই অষ্টাঙ্গ যোগ সম্ভব নয়। তাই এই যোগ বা ভক্তিযোগের পন্থাটিই এই যুগে সকলের জন্য প্রযোজ্য। তোমরা দেখেছ যে যখন কীর্তন চলতে থাকে, ভক্তিযোগের পন্থা চলতে থাকে, এমন কি একটি ছোট্ট শিশুও তাতে হাততালি দিতে শুরু করে, দেখেছো? কোন প্রশিক্ষণ ছাড়াই, কোন শিক্ষাদীক্ষা ছাড়াই, সে আপনা থেকেই অংশ নেয়। তাই শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু বলেছেন যে এই কলিযুগে এটিই একমাত্র পন্থা। হরের্নাম হরের্নাম হরের্নামৈব কেবলম্‌ (চৈতন্য চরিতামৃত আদিলীলা ১৭.২১) কেবল হরে কৃষ্ণ কীর্তন কর। কলৌ, এই কলিযুগে। কলৌ নাস্ত্যেব নাস্ত্যেব নাস্ত্যেবঃ আর অন্য কোনও গতি নেই, গতি নেই, আর অন্য কোন গতি নেই। যদি তুমি এই ভক্তিযোগের পদ্ধতি অবলম্বন কর, অত্যন্ত সরল কেবল কীর্তন কর। তুমি তৎক্ষণাৎ এর ফল দেখবে। প্রত্যক্ষ অবগমম্‌ ধর্মম্‌। আর যে কোন যোগ পন্থা যদি তুমি অনুশীলন কর, তাহলে তুমি অজ্ঞানতাতেই থাকবে। তুমি জানবেই না তোমার কতদূর কি উন্নতি হল। কিন্তু এই পন্থায় তুমি বুঝতে পারবে যে, "হ্যাঁ, আমি এই এই উন্নতি করছি" এটিই হচ্ছে একমাত্র যোগপদ্ধতি যাতে মানুষ খুব দ্রুতই ফল পেতে পারে এবং আত্মোপলব্ধি ও মুক্তি এক জনমেই পেতে পারে। তাঁকে আর অন্য একটি জন্মের জন্য অপেক্ষা করতে হবে না। এটি অত্যন্ত চমৎকার ব্যপার। কৃষ্ণভাবনামৃত। পড়ো।