BN/Prabhupada 0686 - প্রবল বায়ুকে কেউ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না, এমনকি চঞ্চল মনের বেগ দমন করা আরও কঠিন

Revision as of 17:31, 29 June 2021 by Vanibot (talk | contribs) (Vanibot #0023: VideoLocalizer - changed YouTube player to show hard-coded subtitles version)
(diff) ← Older revision | Latest revision (diff) | Newer revision → (diff)


Lecture on BG 6.30-34 -- Los Angeles, February 19, 1969

বিষ্ণুজনঃ শ্লোক ৩৪ - " হে কৃষ্ণ, মন অত্যন্ত চঞ্চল, শরীর ও মনের বিক্ষেপ উৎপাদক , দুর্দমনীয় ও অত্যন্ত বলবান তাই তাকে বশীভূত করা বায়ুকে বশীভূত করার থেকেও অধিকতর কঠিন বলে আমি মনে করি।" (BG 6.34)

শ্রীল প্রভুপাদঃ এমনকি যদি তুমি বায়ুকেও নিয়ন্ত্রণ করতে পার... তা সম্ভব নয়, কেউই বায়ুকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। কিন্তু এমনকি কথার কথা ধরে নিলেও যে তুমি বায়ুকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে, কিন্তু মনকে নিয়ন্ত্রণ করা কখনই সম্ভব নয়। তা অত্যন্ত কঠিন। মন এতোটাই চঞ্চল এবং দুর্দমনীয়। পড়তে থাকো।

বিষ্ণুজনঃ তাৎপর্য - মন এতোই বলবান ও দুর্দমনীয় যে সে কখনও কখনও বুদ্ধির ওপরে আধিপত্য বিস্তার করে তাকে পরিচালিত করতে থাকে। সাংসারিক জীবনে মানুষকে প্রতিনিয়ত নানারকম বিরুদ্ধ প্রকৃতির সঙ্গে সংগ্রাম করতে হয়। তাই তার পক্ষে মনকে নিয়ন্ত্রণ করা অত্যন্ত কঠিন। কৃত্রিমভাবে বন্ধু ও শত্রুর প্রতি সমদৃষ্টিসম্পন্ন হয়ে মনের ভারসাম্য তৈরি করার অভিনয় করলেও বাস্তবিকভাবে কোন সংসারী মানুষ তা পারে না। কারণ তা প্রচণ্ড বেগবতী বায়ুকে সংযত করার চাইতেও কঠিন। বৈদিক শাস্ত্রে বলা হয়েছে এই দেহরূপ রথের আরোহী হচ্ছেন জীবাত্মা, বুদ্ধি সেই রথের সারথি। মন হচ্ছে সেই রথের বল্‌গা এবং ইন্দ্রিয়গুলো হচ্ছে ঘোড়া। আত্মা সুখ ও দুঃখভোগ করে । চিন্তাশীল মনীষীরা এইভাবে চিন্তা করেন।" বুদ্ধির কাজ হচ্ছে মনকে পরিচালনা করা। কিন্তু মন এতোই শক্তিশালী ও একগুঁয়ে যে তা অনেক সময় নিজের বুদ্ধিমত্তাকে পর্যন্ত পরাভূত করেছিলন। ওষুধের রোগ প্রতিষেধক ক্ষমতাকে অতিক্রম করে যায়। এইরকম এত শক্তিশালী যে মনকে যোগসাধনার মাধ্যমে সংযত করার বিধান দেয়া হছে। কিন্তু অর্জুনের মতো প্রবৃত্তিমার্গের মানুষের পক্ষেও সাধন করা বাস্তবসম্মত নয়। সমস্যাটি এখানে পূর্ণরূপে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। "বেগবতী বায়ুকে দমন করার ক্ষমতা কারও নেই।" তার তুলনায় অস্থির মনকে বশ করা আরও কঠিন।

শ্রীল প্রভুপাদঃ তাই এই হরেকৃষ্ণ মহামন্ত্র কীর্তনের মাধ্যমে তা তৎক্ষণাৎ মনকে নিয়ন্ত্রণ হতে সাহায্য করে। কেবল "কৃষ্ণ কৃষ্ণ" মন্ত্র জপ কর এবং শ্রবণ কর, তাহলে অনায়াসেই তোমার মন শ্রীকৃষ্ণচরণে নিবদ্ধ হবে। তার মানে তৎক্ষণাৎ যোগসিদ্ধি লাভ হয়েছে। কারণ সমস্ত যোগ পদ্ধতির মুল কারণ হচ্ছে শ্রীবিষ্ণুর রূপে মন নিবদ্ধ করা। শ্রীকৃষ্ণ হচ্ছে সমস্ত বিষ্ণু অবতারের মূল উৎস। শ্রীকৃষ্ণ - যেমন এখানে একটি প্রদিপ আছে। এখন এই এক প্রদীপবা মোমবাতি থেকে তুমি আরেকটি মোম জ্বালাতে পার। তারপর, আরেকটা, আরেকটা , আরও একটা নিয়ে এসো। হাজার হাজার মোমবাতিতে বিস্তার করতে পার। প্রতিটি মোমবাতি সেই এই মূল মোমবাতি থেকে আলাদা। এতে কোন সন্দেহ নেই। কিন্তু কাউকে এই একটি মোমবাতিকে মূল মোমবাতি বলে গ্রহণ করতে হবে। ঠিক তেমনই, শ্রীকৃষ্ণ নিজেকে লক্ষ লক্ষ বিষ্ণুরূপে বিস্তার করছেন প্রতিটি শ্রীবিষ্ণু রূপই শ্রীকৃষ্ণের মতো, কিন্তু শ্রীকৃষ্ণ হলেন মূল মোমবাতি বা মূল উৎসের ন্যায়। কারণ তাঁর থেকেই সবকিছু আসছে।

তাই প্রত্যেকেরই তাঁর মনকে যে কোন ভাবেই হোক কৃষ্ণপাদপদ্মে লাগাতে হবে। যিনি করতে পেরেছেন তিনি ইতিমধ্যেই সিদ্ধি লাভ করেছেন এই হচ্ছে কৃষ্ণভাবনামৃতের সারমর্ম। (পড়তে থাক)