BN/Prabhupada 0730 - সিদ্ধান্ত বলিয়া চিত্তে - শ্রীকৃষ্ণকে উপলব্ধি করতে অলস হয়ো না

Revision as of 17:46, 29 June 2021 by Vanibot (talk | contribs) (Vanibot #0023: VideoLocalizer - changed YouTube player to show hard-coded subtitles version)
(diff) ← Older revision | Latest revision (diff) | Newer revision → (diff)


Lecture on SB 7.9.32 -- Mayapur, March 10, 1976

প্রভুপাদঃ ভগবান সর্বদাই মঙ্গলময়। কিন্তু আমাদের গণনা অনুযায়ী, সীমিত গণনায়, যদি আমরা দেখি যে তিনি কিছু পাপ করছেন, এটি পাপকর্ম নয়, এটি জীবাণুমুক্ত করা। ঠিক একই উদাহরনঃ তেজীয়সাং ন দোষায় (শ্রীমদ্ভাগবতম ১০.৩৩.২৯)। তাঁর নাম জপ করে যদি আমরা পাপ মুক্ত হতে পারি, তাহলে তিনি কি করে পাপী হতে পারেন? এটি সম্ভব নয়। এটি সাধারণ জ্ঞান। যদি তাঁর পবিত্র নাম জপ করে, হরে কৃষ্ণ, হরে কৃষ্ণ ......

ভক্তবৃন্দঃ কৃষ্ণ কৃষ্ণ, হরে হরে/ হরে রাম হরে রাম, রাম রাম, হরে হরে।

প্রভুপাদঃ...... সুতরাং আমরা পবিত্র হই , তাহলে শ্রীকৃষ্ণ কিভাবে অপবিত্র হতে পারেন। এটি সম্ভব নয়। পবিত্রম্‌ পরম্‌ ভবান্‌। (BG 10.12) শ্রীকৃষ্ণকে জানার চেষ্টা কর।

এখানে বর্ণনা রয়েছে যে, স্থিত ন তু তমো ন //// এই হচ্ছে শ্রীকৃষ্ণ। এই হচ্ছে শ্রীবিষ্ণু, শ্রীকৃষ্ণ। কখনও না, কখনও ভেবো না... কিছু সম্প্রদায় আছে যারা বলে, " আমরা কৃষ্ণ আরাধনা করি, বালকৃষ্ণ, বালক কৃষ্ণ।" মাঝে মাঝে তারা কারণ দেখায় যে... কেন নয়, আমি বলতে চাচ্ছি, সাবালক কৃষ্ণ কেন নয়? তারা বলে যে, " সাবালক কৃষ্ণ রাসলীলার দ্বারা কলুষিত হয়ে গিয়েছে।" শুধু এদের মহা মুর্খামি দেখ। তা নয় ... শ্রীকৃষ্ণ সর্বদাই শ্রীকৃষ্ণ। এটি বোকার সিদ্ধান্ত যে, ছোট কৃষ্ণ পবিত্র আর বড় কৃষ্ণ অপবিত্র। এটি ভুল ধারণা। শ্রীকৃষ্ণ হচ্ছেন...... ঠিক যেমন শ্রীকৃষ্ণ যখন তিন মাসের শিশু, তিনি একটি বিশাল রাক্ষুসে ডাইনী পুতনাকে বধ করেছিলেন। একটি তিন মাসের ছোট শিশু কি পারে এরকম বিশাল ডাইনীকে হত্যা করতে? না। শ্রীকৃষ্ণ সর্বদাই ভগবান। তিনি দেখতে তিন মাসের হোন, তিনশ বছরের হোন কিংবা তিন হাজার বছরের হন, তিনি একই। অদ্বৈতমনাদিমনন্তরূপমাদ্যং পুরাণপুরুষং নবযৌবনঞ্চ ( ব্রহ্ম সংহিতা ৫.৩৩)। এই হচ্ছেন শ্রীকৃষ্ণ।

তো শ্রীকৃষ্ণকে অধ্যয়ন করার মাধ্যমে তুমি মুক্তি লাভ করতে পার। সুতরাং এই শ্লোকগুলো খুব সাবধানে পরা উচিত, প্রতিটি শব্দ যত্ন সহকারে উপলব্ধি করা উচিত। তখন তুমি শ্রীকৃষ্ণকে জানতে পারবে। কৃষ্ণ দাস কবিরাজ গোস্বামী বলেছেন, সিদ্ধান্ত বলিয়া চিত্তে না কর অলস, ইহা হইতে কৃষ্ণ লাগে সুদৃঢ় মানস। সিদ্ধান্ত, শ্রীকৃষ্ণ কি, যদি তুমি শাস্ত্র থেকে অধ্যয়ন কর, তাহলে সিদ্ধান্ত বলিয়া চিত্তে...... শ্রীকৃষ্ণকে উপলব্ধি করতে অলসতা করোনা। কারণ যদি তুমি শ্রীকৃষ্ণকে জানতে চেষ্টা কর - সাধু-শাস্ত্র-গুরু বাক্যম্‌ চিত্তেতে করিয়া ঐক্য, সাধু, শাস্ত্র এবং গুরুর মাধ্যমে তখন তুমি শ্রীকৃষ্ণকে জানতে পারবে যে তিনি কে। তখন তুমি তাঁকে একজন সাধারণ মানুষ হিসেবে গ্রহণ করবে না, যেমন করে বোকারা গ্রহণ করে থাকে। অবজানন্তি মাং মূঢ়া মানুষীং তনুমাশ্রিতম্‌ (শ্রীমদ্ভগবতগীতা 9.11) মুঢ়, বদমাশরা মনে করে শ্রীকৃষ্ণ তাদেরই মতো একজন। তখন তুমি মূঢ় হবে না। তুমি হবে বুদ্ধিমান। আর এর ফলাফলটি কি হবে? শ্রীকৃষ্ণ স্বয়ং বলেছেন, জন্ম কর্ম চ দিব্যম্‌ মে যো জানাতি তত্ত্বতঃ। যদি তুমি শ্রীকৃষ্ণকে যথাযথভাবে জানতে পার...... অবশ্য তুমি শ্রীকৃষ্ণে সম্পূর্ণরূপে জানতে পারবে না। তিনি এত বিশাল আর আমরা এত ক্ষুদ্র যে এটি অসম্ভব। এটি সম্ভব নয়। কিন্তু তুমি শ্রীকৃষ্ণকে ততটুকু জানতে পারবে যতটুকু তিনি শ্রীমদ্ভগবতগীতায় বর্ণনা করেছেন। এটিই তোমাকে অনেক সাহায্য করবে, তুমি শ্রীকৃষ্ণকে সম্পূর্ণরূপে জানতে পারবেনা , এটি সম্ভব নয়। শ্রীকৃষ্ণ তাঁর নিজেকে জানতে পারেন না। তাই তিনি শ্রীচৈতন্য রূপে এসেছেন, তাঁর নিজেকে জানার জন্য।

তাই শ্রীকৃষ্ণকে জানা সম্ভব নয়, কিন্তু শ্রীকৃষ্ণ সে সম্বন্ধে জ্ঞান দিচ্ছেন তাঁর সম্বন্ধে জ্ঞান দিচ্ছেন, যতটুকু তুমি বুঝতে পারবে। এটি হচ্ছে ভগবদগীতা। সুতরাং ভগবদগীতায় যতদূর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে, অন্তত সেটুকু পরিমাণে তোমাদের জানার চেষ্টা করা উচিত। শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু নির্দেশ দিয়েছেন, যারে দেখ তারে কহ কৃষ্ণ-উপদেশ (চৈ চ মধ্য ৭।১২৮)। মনুষ্য জীবন হচ্ছে শ্রীকৃষ্ণকে জানার জন্য। আর কোন উদ্দেশ্য নেই। তুমি যদি শুধু এই উদ্দেশ্যটার প্রতি কঠোর থাক, তোমার জীবন সফল হবে। আমাদের কৃষ্ণভাবনামৃত আন্দোলনটিি হচ্ছে এই উদ্দেশ্যে। আমরা অনেক কেন্দ্র খুলছি যাতে করে পৃথিবীর মানুষ এই সুযোগটির সুবিধা গ্রহণ করতে পারে এবং শ্রীকৃষ্ণকে জানতে পারে এবং তাদের জীবনকে সার্থক করতে পারে।

অসংখ্য ধন্যবাদ।

ভক্তবৃন্দঃ জয়। (সমাপ্ত)।