BN/Prabhupada 0773 - আমাদের মনোযোগ হওয়া উচিৎ যে আমরা কীভাবে পারমার্থিক জীবন চালাচ্ছি

Revision as of 07:09, 10 June 2021 by Vanibot (talk | contribs) (Vanibot #0005: NavigationArranger - update old navigation bars (prev/next) to reflect new neighboring items)
(diff) ← Older revision | Latest revision (diff) | Newer revision → (diff)


Lecture on SB 2.3.19 -- Los Angeles, June 15, 1972

প্রদ্যুম্নঃ ১৫৩ পৃষ্ঠার তাৎপর্যের দ্বিতীয় অনুচ্ছেদে বলা হচ্ছে "উট নিজের রক্ত খেয়ে তার থেকে স্বাদ আস্বাদন করে। ঠিক তেমনই যে ব্যক্তি সংসার জীবন বা জাগতিক জীবন ভোগ করতে চায় , তার এই তথাকথিত উপভোগ কেবল উটের কাঁটা খাওয়ার সুখের সাথেই তুলনীয়। জাগতিক জীবন কণ্টক পরিপূর্ণ। তাই কেবল বৈদিক শাস্ত্রে দেয়া পদ্ধতি অনুযায়ী জীবন চালানো উচিৎ সমস্ত মন্দের মধ্যে যতটা ভালো করা যায়"।

প্রভুপাদঃ ঠিক যেমন, যদি তুমি কাঁটার মধ্যে দিয়ে চলছো তো তোমাকে খুব সতর্ক হতে হবে। না হলে তোমার গায়ে বা কাপড়ে সেই কাঁটা লেগে যাবে আর তুমি প্রচণ্ড অস্বস্তিতে পড়বে। বেদে বলা হয়েছে, ক্ষুরস্য ধারা নিশিতা দুরাত্যয়া (কঠোপনিষদ ১/৩/১৪) যেমন দেখ আমরা ক্ষুর দিয়ে চুল দাঁড়ি কামাচ্ছি। ক্ষুর অত্যন্ত ধারালো থাকে যদি আমরা সাবধানে ক্ষুর চালাতে পারি তাহলে খুব পরিষ্কারভাবে আমরা দাঁড়ি কামাতে পারব। সেই কাজটি সুন্দরভাবে হবে। কিন্তু সামান্য অসতর্কতায় সঙ্গে সঙ্গে কেটে যাবে এবং রক্তপাত হবে। সামান্য একটু অসতর্কতা। সেই উদাহরণটি দেয়া হচ্ছে ক্ষুরস্য ধারা নিশিতা দুরাত্যয়া দুর্গম পথঃ তৎ কবয়ো বদন্তি (কঠোপনিষদ ১/৩/১৪) মুক্তির পথ অত্যন্ত দুর্গম। ঠিক যেমন আমরা নিজ আলয় ভগবদ্ধামে ফিরে যাতে চাইছি সেই পথ অত্যন্ত কঠিন বেদে বলা হয়েছে, ক্ষুরস্য ধারা নিশিতা দুরাত্যয়া দুর্গম। দুর্গম অর্থ যে স্থান পার করা অত্যন্ত কঠিন কিন্তু সামান্য সতর্কতাই তোমাকে রক্ষা করবে একটু সতর্কতা এই যে, "আমি খুব বিপদজনক একটি পথ দিয়ে যাচ্ছি, তাই আমাকে খুব সতর্ক হতে হবে"। তাই আমাদের সাবধানতা সবসময় এটাই হবে যে কীভাবে আমরা আমাদের ভক্তি জীবন চালাবো।

খুবই সরল। আমরা কঠিন ভাবে চার নিয়ম পালন করছি আর ষোল মালা জপ করছি সেটি আমাদের রক্ষা করবে । কিন্তু আমরা যদি এসবে অসতর্ক হই তাহলে ঐ কাঁটার দ্বারা আঘাত খাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে সম্পূর্ণ পথ জুড়ে কণ্টক বিস্তীর্ণ। অথবা সেই একই উদাহরণ। ক্ষুরস্য ধারা। দাঁড়ি কামিয়ে তুমি তোমার গাল পরিষ্কার করতে পার কিন্তু সামান্য অসতর্কতা অনেক রক্ত বইয়ে দেবে আমাদের অনেক সাবধান হতে হবে। পড়তে থাকো।

প্রদ্যুম্নঃ "জাগতিক জীবন মানে হচ্ছে নিজের রক্ত নিজেই চুষে খাওয়া। জাগতিক জীবনে মূল আকর্ষণ হচ্ছে মৈথুন সুখ মৈথুন জীবন মানে নিজের রক্ত নিজেই চুষে খাওয়া। আর এই ব্যাপারে বেশি কিছু ব্যাখ্যা করার নেই উট কাঁটা চিবিয়ে সেই থেকে নিজের মুখের রক্ত খায়। সেই কাঁটার আঘাত উটের জিহ্বা কেটে সারা মুখে রক্ত প্রবাহিত হয়। রক্ত মিশ্রিত সেই কাঁটা মূর্খ উটের কাছে স্বাদের মনে হয় আর সে ঐ কাঁটা খাওয়ার স্বাদ থেকে এক মিথ্যা আনন্দ পায় ঠিক তেমনই, বড় বড় ব্যবসায়ী, শিল্পপতি যারা কঠোর পরিশ্রম করে বিভিন্ন এবং প্রশ্নবোধক ভাবে অর্থ উপার্জন করে তাদের নিজেদের রক্ত মিশ্রিত পরিশ্রমের কণ্টকময় ফল খায় তাই শ্রীমদ্ভাগবত এইসব অসুস্থ লোকেদের উটদের সাথে তুলনা করা হয়েছে"

প্রভুপাদঃ ওরা ঝুঁকি নেয়, অর্থ উপার্জন আর ইন্দ্রিয় তৃপ্তির জন্য অনেক ঝুঁকি নেয়। চোর ডাকাতেরা জীবনের ঝুঁকি নেয় মানুষের বাড়িতে চুরি ডাকাতি করতে যায় এবং সে জানে যে যদি ধরা পড়ে যায় "এই লোকটা চুরি করেছে" তাহলে বাড়ির মালিক হয়তো তাকে সঙ্গে সঙ্গে গুলি করে দিতে পারে সেই ঝুঁকি সে নেয় শুধু চোর ডাকাতেরাই নয়, আমরা সবাই ... বলা হয়েছে, পদম্‌ পদম্‌ যদবিপদাম্‌ (ভাগবত ১০/১৪/৫৮) জীবনের প্রতি পদে পদে বিপদ আমরা সত্তর মাইল , একশ মাইল বেগে মোটর গাড়ি চালাচ্ছি কিন্তু যে কোন সময় বিপদ ঘটতে পারে সুতরাং জাগতিক জীবনে সত্যি বলতে কোনই শান্তি থাকতে পারে না তা সম্ভব নয়। সমাশ্রিতা যে পদপল্লবপ্লবম্‌ (ভাগবত ১০/১৪/৫৮) তাই আমাদেরকে ভগবানের পাদপদ্মে শরণ নিতে হবে যদি আমরা সুখী হতে চাই, যদি আমরা শান্তি পেতে চাই, তাহলে সেটিই একমাত্র পথ।