BN/Prabhupada 0777 - তুমি যতই তোমার চেতনাকে উন্নত করবে, ততই তুমি মুক্তি পেতে ভালবাসবে

Revision as of 07:10, 10 June 2021 by Vanibot (talk | contribs) (Vanibot #0005: NavigationArranger - update old navigation bars (prev/next) to reflect new neighboring items)
(diff) ← Older revision | Latest revision (diff) | Newer revision → (diff)


Lecture on SB 2.4.2 -- Los Angeles, June 26, 1972

বিরুধাম্‌ মমতাম্‌ (ভাগবত ২/৪/২)। বিরুধাম্‌। ঠিক যেমন তোমরা অনেক বড় বড় গাছ দেখেছো। বহু বহু বছর ধরে দাঁড়িয়ে আছে ঐ গাছগুলোর শেকড় শক্তভাবে মাটির সাথে শক্তভাবে আটকে আছে। সেই অভিজ্ঞতা তোমাদের আছে। ওদের কাজ হচ্ছে ১০,০০০ বছর ধরে দাঁড়িয়ে থাকা। কিন্তু মূল মাটির সাথে যেকোনভাবে আটকে থাকে। একে বলে বিরুধাম্‌, আকর্ষণ। যেমন ধর, যখন তোমাদের চেতনা আছে, উন্নত চেতনা, মানুষ তোমাকে যদি কেউ এখানে এক ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে বলে, সেটা তোমার জন্য খুব কষ্ট হয়ে যাবে। এমনকি জোর করেও যদি তোমাকে ওখানে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়, তুমি অনেক অস্বস্তি অনুভব করবে। কিন্তু যেহেতু গাছের চেতনা বিকশিত নয়, এটি ১০ হাজার বছর ধরে খোলা আকাশের নীচে দাঁড়িয়ে আছে এবং সব ঝড়-ঝঞ্ঝা, রোদ, বৃষ্টি, তুষারপাত সহ্য করে যাচ্ছে। কিন্তু তবু তা দাঁড়িয়ে আছে এই হচ্ছে উন্নত এবং অনুন্নত চেতনের পার্থক্য গাছেরও চেতনা আছে। আধুনিক বিজ্ঞান তা প্রমাণ করেছে যে গাছেরও প্রাণ আছে। অত্যন্ত আবৃত। প্রায় মৃত।

কিন্তু তা মৃত নয়। সামান্য চেতনা আছে এভাবে যতই তোমার চেতনা উন্নত হবে, ততই তুমি আর বেশি স্বাধীনতাপ্রেমী হবে ঠিক এমন মনুষ্য সমাজে স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম হয় কিন্তু পশু সমাজে ওরা জানে না স্বাধীনতা কি আমাদের স্বাধীনতাও তথাকথিত। কিন্তু কমপক্ষে যেহেতু আমাদের কিছুটা চেতনা আছে, আমরা স্বাধীনতার জন্য লড়াই করি। আর ওরা খাওয়ার জন্য লড়াই করে, ব্যাস্‌। এখানে পরীক্ষিত মহারাজ... মুক্তি... কৃষ্ণভাবনামৃত মানে জাগতিক আসক্তি থেকে মুক্তি তিনি এতোটাই উন্নত ছিলেন... কারণ তাঁর শৈশব থেকে, জন্ম থেকে, মায়ের গর্ভ থেকেই তিনি কৃষ্ণ ভাবনাময় ছিলেন তাই যেই মুহূর্তে তিনি বুঝতে পেরেছিলেন যে "কৃষ্ণই আমার জীবনের লক্ষ্য" তৎক্ষণাৎ, বিরূধাম্‌ মমতাম্‌ জহৌ, তিনি সবকিছু পরিত্যাগ করেছিলেন জহৌ মানে পরিত্যাগ করা। তিনি কি পরিত্যাগ করেছিলেন ? সাম্রাজ্য পূর্বে হস্তিনাপুরের সম্রাটরা সারা পৃথিবীর ওপর সাম্রাজ্য করতেন কমপক্ষে ৫০০০ বছর আগে পরীক্ষিত মহারাজ যখন রাজা ছিলেন।

তিনি সারা পৃথিবীর সম্রাট ছিলেন । তিনি সেই সবকিছুই ত্যাগ করেছিলেন ছোটখাটো গ্রামগঞ্জ নয়। এবং সাম্রাজ্যও কোনরকম বিরক্তি ছাড়াই তিনি এতোটাই শক্তিশালী ছিলেন যে কেউই তাঁর বিরুদ্ধে যেতে পারতো না রাজ্যে চ অবিকলে (ভাগবত ২/৪/২)। বিকল মানে নষ্ট বা বিরক্ত কিন্তু তাঁর সাম্রাজ্য কখনও কোন কিছুর দ্বারা বিরক্ত বা নষ্ট ছিল না। এখনকার দিনে সারা বিশ্ব উৎপাতগ্রস্ত, ভগ্নদশাপ্রাপ্ত অনেক দেশে, স্বাধীন দেশে বিভক্ত মানে সারা পৃথিবী ভেঙ্গে টুকরো টুকরো হয়ে গেছে। আগে এই রকম ভেঙ্গে টুকরো হয়ে যাওয়া ছিল না এক বিশ্ব, এক রাজা, এক বিশ্ব, এক ভগবান- শ্রীকৃষ্ণ । একটি শাস্ত্র - বেদ । একটি সভ্যতা - বর্ণাশ্রম ধর্ম। বেশিদিন আগের কথা নয়। ওরা ইতিহাসে বলছে... তারা ভূগ্রহের স্তর নিয়ে গবেষণা করছে কিন্তু যখন এইসব নিয়ে পড়াশোনা করছে তখন দেখছে যে লক্ষ লক্ষ বছর আগে পৃথিবীতে যথার্থ সভ্যতা ছিল আদর্শ সভ্যতা। ভগবদ্ভাবনাময়। সুখী সভ্যতা এখনকার দিনে - ভেঙ্গে যাওয়া, অস্থিতিশীল। কিন্তু আগেকার দিনে তেমনটা ছিল না।

বিরূধাম্‌ মমতাম্‌। মমতা মানে 'এটা আমার- এই মনোভাব' এর নাম মমতা। মমতা মানে আমার । 'আমি' এবং 'আমার' - এই চেতনার নাম মমতা। 'আমি এই দেহ, এবং আমার দেহের সাথে সম্পর্কিত সমস্ত আত্মীয়স্বজন আমার'। আমার স্ত্রী, আমার সন্তান, আমার বাড়ি, আমার ব্যাংক সঞ্চয় আমার সমাজ, আমার সম্প্রদায়, আমার দেশ, আমার জাতি - আমার"। এর নাম মমতা। কীভাবে এই আমার আমার মনোভাব গড়ে উঠে? একটি যন্ত্র রয়েছে - তা মায়ার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। শুরু হচ্ছে। কোথা থেকে? আকর্ষণ। একটি ছেলে একটি মেয়ের দ্বারা আকর্ষিত। একটি মেয়ে একটি ছেলের দ্বারা আকর্ষিত। এটাই হচ্ছে মৌলিক নীতি। এই জড় জগতে এখানে ভগবানের প্রতি কোন আকর্ষণ নেই। কিন্তু আকর্ষণ বস্তুটি আছে সেই আকর্ষণ পুরোটাই হচ্ছে যৌন আকর্ষণ। ব্যাস্‌ সারা জগত, শুধু মানব সমাজই নয়। পশু সমাজেও, পাখি সমাজেও, পশুদের মাঝেও যে কোন সমাজে, যে কোন চেতন জীবের মধ্যে এই মৈথুন আকর্ষণ রয়েছে পুংস স্ত্রীয়া মিথুনীভাবমেতম্‌ (ভাগবত ৫/৫/৮) সেই আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে মৈথুন। তাই ছেলে মেয়েরা , অথবা যে কোন বয়সেই তাদের মধ্যে এই মৈথুন ভাব বৃদ্ধি পেতে থাকে, আর ওরা মৈথুনে লিপ্ত হতে চায় একটি নারী পুরুষকে চায়, আর একটি পুরুষ একটি মেয়েকে চায়। সেটিই হচ্ছে আকর্ষণ সেটিই হচ্ছে বদ্ধ জীবের বন্ধনের মৌলিক নীতি এই জন্মমৃত্যুর দুঃখময় সংসারে। এই আকর্ষণ।