BN/Prabhupada 0819 - আশ্রম মানে পারমার্থিক চর্চার অনুকূল স্থান

Revision as of 07:02, 19 September 2021 by Vanibot (talk | contribs) (Vanibot #0005: NavigationArranger - update old navigation bars (prev/next) to reflect new neighboring items)
(diff) ← Older revision | Latest revision (diff) | Newer revision → (diff)


Lecture on SB 2.1.2-5 -- Montreal, October 23, 1968

প্রভুপাদঃ

শ্রোতব্যাদীনি রাজেন্দ্র
নৃণাং সন্তি সহস্রশঃ
অপশ্য়তামাত্মতত্ত্বং
গৃহেষু গৃহমেধিনাম
(শ্রীমদ্ভাগবত ২।১।২)।

একই বিষয়বস্তু, যে যারা খুব বেশি আসক্ত পারিবারিক বিষয়ের প্রতি, গৃহেষু গৃহমেধিনাম। গৃহমেধী অর্থাৎ যিনি গৃহকে নিজের ক্রিয়াকলাপের কেন্দ্র করে রেখেছেন। তাকে বলা হয় গৃহমেধী। দুটি শব্দ রয়েছে। একটি শব্দ হল গৃহস্থ, এবং একটি শব্দ হল গৃহমেধী। এই দুটি শব্দের তাৎপর্য কী? গৃহস্থ অর্থাৎ যিনি... কেবল গৃহস্থ নয়। এটিকে বলা হয় গৃহস্থ আশ্রম। আমরা যখনই আশ্রমের বিষয় কথা বলি, তার আধ্যাত্মিক সম্পর্ক থাকে । সুতরাং সামাজিক বর্গের এই চারটি বিভাগ - ব্রহ্মচারী আশ্রম, গৃহস্থ আশ্রম, বানপ্রস্থ আশ্রম, সন্ন্যাস আশ্রম। আশ্রম। আশ্রম অর্থাৎ ... যখনই ... আশ্রম, এই শব্দটি আপনার দেশেও অল্প জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। আশ্রম অর্থাৎ আধ্যাত্মিক অনুশীলনের পরিবেশ। সাধারণত, তাই আমাদের অভিপ্রায়। এবং এখানেও, অনেক যোগ-আশ্রম আছে। আমি নিউ ইয়র্কে অনেক আশ্রম দেখেছি। "নিউ ইয়র্ক যোগ আশ্রম," "যোগ সমাজ," সে রকমই। আশ্রমের অর্থ তার একটি আধ্যাত্মিক সম্পর্ক রয়েছে। এতে কিছু যায় আসেনা যদি সেই লোকটি... গৃহস্থ অর্থাৎ পরিবার, স্ত্রী এবং বাচ্চাদের সাথে থাকা।

সুতরাং পরিবার ও বাচ্চাদের সাথে থাকা জীবনের আধ্যাত্মিক উন্নতির জন্য অযোগ্যতা নয়। সেটি কোনও অযোগ্যতা নয় কারণ তৎসত্ত্বেও, একজনকে বাবা এবং মায়ের থেকে জন্ম নিতে হয়। সুতরাং সমস্ত মহান আচার্যবৃন্দ, মহান আধ্যাত্মিক নেতারা, তৎসত্ত্বেও, তারা পিতা এবং মাতার থেকে জন্ম গ্রহণ করেছেন। সুতরাং পিতা এবং মাতার সংযোগ ব্যতীত, এমনকি কোনও মহান আত্মার আবির্ভাব হওয়ারও কোনও সম্ভাবনা নেই। মহান আত্মাদের অনেক উদাহরণ রয়েছে যেমন শঙ্করাচার্য, প্রভু যিশু খ্রিস্ট, রামানুজাচার্য। এমনকি তাঁদেরও কোনও উচ্চ বংশগত উপাধি ছিল না, তথাপি, তাঁরা গৃহস্থদের থেকে, পিতা ও মাতার থেকে জন্ম গ্রহণ করেছেন। সুতরাং গৃহস্থ, বা গৃহী জীবন অযোগ্যতা নয়। আমাদের এটা ভাবা উচিত নয়, যে কেবল ব্রহ্মচারীরা অথবা সন্ন্যাসীরা, তাঁরা আধ্যাত্মিক স্তরে উন্নতি করতে পারেন, পক্ষান্তরে যারা স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে বাস করছেন, তারা পারবেন না। না। শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু শ্রীচৈতন্য চরিতামৃতে স্পষ্টভাবে বলেছেন যে

কিবা বিপ্র, কিবা ন্যাসী, শূদ্র কেনে নয়
যেই কৃষ্ণতত্ত্ববেত্তা সেই 'গুরু' হয়
(শ্রীচৈতন্য চরিতামৃত মধ্য ৮/১২৮)।

শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু বলেছিলেন, "এটি বিবেচ্য নয় যে কোনও ব্যক্তি গৃহস্থ কিনা, বা সন্ন্যাসী বা ব্রাহ্মণ বা ব্রাহ্মণ নয়। তা গুরুত্বপূর্ণ নয়। যদি কেউ কেবল কৃষ্ণ ভাবনাময় হন, যদি তিনি কৃষ্ণ ভাবনাময় উন্নত হন, তবে তিনি উপযুক্ত, আমি বলতে চাইছি, আধ্যাত্মিক গুরু হওয়ার যোগ্য। " যেই কৃষ্ণতত্ত্ববেত্তা সেই গুরু হয় (শ্রীচৈতন্য চরিতামৃত মধ্য ৮/১২৮)। তত্ত্ববেত্তা অর্থাৎ যিনি শ্রীকৃষ্ণের বিজ্ঞান সম্পর্কে জানেন। অর্থাৎ সম্পূর্ণরূপে কৃষ্ণ ভাবনাময়। সেই গুরু হয়। সেই অর্থাৎ "তিনি।" গুরু অর্থাৎ "আধ্যাত্মিক গুরু।" তিনি বলেননি যে "একজনকে সন্ন্যাসী বা ব্রহ্মচারী হতে হবে। তারপর তিনি পারেন ..." না। তবে এখানে শব্দটি গৃহমেধী, গৃহস্থ নয়। গৃহস্থের তিরস্কার করা হয়নি। যদি কেউ স্ত্রী এবং বাচ্চাদের সাথে বিধিনিষেধ অনুসারে থাকেন, তবে তা অযোগ্যতা নয়। তবে গৃহমেধী, গৃহমেধী অর্থাৎ তাঁর আধ্যাত্মিক জীবনের উচ্চতর ধারণা বা উচ্চতর বুদ্ধি নেই। কেবল বিড়াল এবং কুকুরের মতো স্ত্রী এবং বাচ্চাদের সাথে থাকা, তাকে বলা হয় গৃহমেধী। সেটাই এই দুটি শব্দ, গৃহমেধী ও গৃহস্থর মধ্যে পার্থক্য।