BN/Prabhupada 0840 - একটি বেশ্যা ছিল যার পারিশ্রমিক ছিল এক লক্ষ হীরের টুকরো

Revision as of 07:03, 13 August 2021 by Vanibot (talk | contribs) (Vanibot #0005: NavigationArranger - update old navigation bars (prev/next) to reflect new neighboring items)
(diff) ← Older revision | Latest revision (diff) | Newer revision → (diff)


751204 - Lecture SB 07.06.03 - Vrndavana

একটি বারবণিতার কাহিনী আছে , তার নাম লক্ষহীরা ] একটা বেশ্যা ছিল যার ভাড়া ছিল এক লক্ষ হীরে সেটা হীরের বড় টুকরো বা ছোট টুকরো, সেটি বড় নয় , সেটাই ছিল ওর ভাড়া একটা লোক তার কুষ্ঠ হয়েছিল এবং তাকে তার স্ত্রী সাহায্য করেছিল, সে খুব পতিব্রতা ছিল তবু লোকটি খুব দুঃখ করছিল ছিল। স্ত্রী তার স্বামীকে জিজ্ঞাসা করল, "আপনি কেন দুঃখ পাচ্ছেন?" আমি আপনার এতো সেবা করছি। আপনার কুষ্ঠ হয়েছে, আপনি নড়তে পারেন না আমি আপনাকে বহন করতে পারি ... আমি আপনাকে ঝুড়িতে বসিয়ে চলাচল করব, তারপরও কি আপনি দুঃখ পাবেন? সে বলল, "হ্যাঁ"। "ওহ্‌, কেন?" "না, আমি সেই লক্ষহীরা বেশ্যার কাছে যেতে চাই" দেখো। লোকটি কুষ্ঠ রোগগ্রস্ত, গরীব , তাও সে বেশ্যার কাছে যেতে চাইছে যে কিনা ১ লক্ষ হীরের টুকরো ভাড়া নেবে যাই হোক, সে খুব বিশ্বস্ত স্ত্রী ছিল। সে তার স্বামীকে সন্তুষ্ট করতে চেয়েছিল। তাই যে কোন ভাবেই হোক সে তা ব্যবস্থা করল তারপর যখন সেই কুষ্ঠরোগী সেই বেশ্যার বাড়ি এসে উপস্থিত হল বেশ্যা তাকে অনেক ভাল ভাল খাওয়াল কিন্তু সবকিছুই দুটি করে পাত্রে দেয়া। , সবকিছু - একটা স্বর্ণের পাত্রে এবং আরেকটা লোহার পাত্রে খাওয়ার সময় সে বেশ্যাকে জিজ্ঞাসা করল, "তুমি সবকিছু আমাকে দুটি পাত্রে দিচ্ছ কেন?" "কারণ, আমি জানতে চাইছিলাম যে তুমি কি ভিন্ন ভিন্ন পাত্রে খেয়ে ভিন্ন ভিন্ন স্বাদ পাছ কিনা।" সে বলল, "না, আমি তো স্বাদে কোন পার্থক্য পাচ্ছি না, সোনার পাত্রেও সূপ আর লোহার পাত্রেও সূপ , দুটোই তো সমান লাগছে"। "তাহলে তুমি কেন এখানে এসেছ?" এটাই মূর্খতা। সারা দুনিয়াটা এইভাবে চলছে ওরা একই জিনিস কেবল ভিন্ন ভিন্ন পাত্রে পাবার চেষ্টা করছে । ব্যাস্‌। ওরা বিরক্তও হচ্ছে না "আর না মশাই, আমি অনেক খেয়েছি"। তা হচ্ছে না। একে বলে বৈরাগ্য বিদ্যা। আর কোন স্বাদ পাবে না "সবই এক। আমি এই পাত্রেই খাই, আর ঐ পাত্রেই খাই"।

তাই বলা হয়েছে সুখম্‌ ঐন্দ্রিয়কম্‌ এই ইন্দ্রিয় তৃপ্তি তা তুমি কুকুর হয়েই ভোগ কর আর মানুষের দেহেই, আর দেবতার দেহেই ভোগ কর না কেন, সেটা কোন ব্যাপার নয় অথবা ইউরোপিয়ান বা আমেরিকান বা ভারতীয় - স্বাদ একই রকম এটা বোঝা খুব গুরুত্বপূর্ণ। তুমি এতে করে কোন উন্নততর স্বাদ পাবে না উন্নততর স্বাদ কেবল কৃষ্ণ ভাবনামৃতে। পরম্‌ দৃষ্টা নিবর্ততে (গীতা ২/৫৯) তাই যদি তুমি কৃষ্ণভাবনামৃতে স্বাদ বাড়ানোর চেষ্টা না কর, তাহলে এই পাত্র থেকে বা ঐ পাত্র থেকে স্বাদ নেয়ার চেষ্টা করবে সেটাই নিয়ম। এইভাবে এই কাজ চালিয়ে যাবে আর এই ভবরোগও চলতে থাকবে যে, এই পাত্র থেকে স্বাদ, ঐ পাত্র থেকে স্বাদ । "মনে হয় এই পাত্রে স্বাদ পাব, মনে হয় স্বাদ বেশি হবে ... " সারা পৃথিবী এই ভাবে চলছে সবগুলি মূর্খ। ওরা মৈথুন জীবন উপভোগ করতে এক দেশ থেকে আরেক দেশে যায়। প্যারিস যায়... (বিরতি) সুখম্‌ ঐন্দ্রিয়কম্‌ দৈত্যা, সর্বত্র লভ্যতে দৈবাদ্‌ যথা দুঃখম্‌ (ভাগবত ৭/৬/৩) ঠিক যেমন দুঃখম্‌। দুঃখ-কষ্ট যেমন ধর একজন কোটিপতি টাইফয়েড-এ ভুগছে আর আরেকজন দরিদ্র মানুষও টাইফয়েড - এ ভুগছে এর মানে কি এই যে একজন কোটিপতির দুঃখ গরীব লোকটির চেয়ে কম হবে? যখন তোমার টাইফয়েড জ্বর হয়, তুমি ধনী হও আর গরীব হও টাইফয়েডের ভোগান্তিটা একই রকম এমন নয় যে, "উনি খুব ধনী লোক, উনি টাইফয়েডে ভুগবে না "। না। ঠিক যেমন, ভিন্ন ভিন্ন পাত্রে দুঃখ যেমন একই ভিন্ন ভিন্ন পাত্রে সুখও তেমন একই। এই হচ্ছে জ্ঞান। তাই আমি কেন আমার এই জীবনটা স্বাদের পেছনে নষ্ট করব ভিন্ন ভিন্ন পাত্রে সুখ দুঃখ পেতে? আলাদা আলাদা পাত্র মানে আলাদা আলাদা দেহ।

তাই এটা আমাদের কাজ নয় আমাদের কাজ হচ্ছে আমাদের মূল বা আদি চেতনা কৃষ্ণচেতনা ফিরে পাওয়া এটা কোন ব্যাপার নয় যে আমি কোন পাত্রে বর্তমানে আছি। অহৈতুকি অপ্রতিহতা (ভাগবত ১/২/৬) তুমি নিঃসংশয়ে কৃষ্ণভাবনামৃতের স্বাদ নিতে পার কোন রকম বাধা ছাড়াই তা পেতে পার তোমাকে কেবল তোমার ভেতরের চেতনাটা দেখতে হবে এবং তা শুদ্ধ করতে হবে এটাই মানব জীবনের কর্তব্য তাই প্রহ্লাদ মহারাজ শুরুতেই বলেছেন, দুর্লভম্‌ মানুষম্‌ জন্ম (ভাগবত ৭/৬/১) এই চেতনা, এই জ্ঞান কেবল মাত্র মনুষ্য জন্মেই লাভ করা যায় এই যে সুখ দুঃখের বিশ্লেষণ করলাম, তা কেবল মানুষের কাছেই করা যায় এখন আমি যদি এখানে তিন ডজন কুকুর এনে ওদের বলি, "এখন ভাগবত কথা শোন" তা সম্ভব না কুকুর ভাগবত বুঝবে না, কিন্তু মানুষ বুঝবে ওরা যতই নিম্ন মানের হোক না কেন, যদি তাঁদের অল্প বুদ্ধিও থাকে , তাহলেই তাঁরা বুঝতে পারবে তাই প্রহ্লাদ মহারাজ বলেছেন, দুর্লভম্‌ মানুষম্‌ জন্ম তুমি এই জন্মে এই ভাগবত ধর্ম বোঝার সুযোগ পেয়েছ কুকুর বেড়ালের মতো তা নষ্ট কর না।

অনেক ধন্যবাদ।