BN/Prabhupada 0841 - পারমার্থিকভাবে প্রকট ও অপ্রকটের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই
731213 - Lecture Festival Disappearance Day, Bhaktisiddhanta Sarasvati - Los Angeles
- নম ওঁ বিষ্ণুপাদায়
- কৃষ্ণপ্রেষ্ঠায় ভূতলে
- শ্রীমতে ভক্তিসিদ্ধান্ত
- সরস্বতী নামিনে
ভক্তিসিদ্ধান্ত সরস্বতী ঠাকুর এই জগত থেকে অপ্রকট হয়েছিলেন ১৯৩৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর প্রায় ৪০ বছর হয়ে গেছে প্রকট এবং অপ্রকট এই দুটি শব্দ আছে কোন বৈষ্ণবের অপ্রকটে আমাদের শোক করার কিছুই নেই কারণ শ্রীকৃষ্ণ এবং তাঁর ভক্তরা... শুধু ভক্তরাই নয়, এমনকি অভক্তরাও , কেউই মারা শেষ হয়ে যায় না কেউই হারিয়ে যায় না... যেহেতু কৃষ্ণ নিত্য ... বৈদিক সাহিত্যে এই কথা প্রতিপন্ন হয়েছে যে, নিত্যো নিত্যানাম্ চেতনশ্চেতনানাম্ (কঠ উপনিষদ ২.২.১৩) ভগবানের বর্ণনা করতে গিয়ে বলা হচ্ছে তিনি নিত্য, চিরন্তন এবং জীব সমূহও নিত্য। কিন্তু তিনি সর্বশ্রেষ্ঠ নিত্য নিত্যো নিত্যানাম্ চেতনশ্চেতনানাম্ তাই গুণগতভাবে কৃষ্ণ এবং জীবের মাঝে কোন পার্থক্য নেই কিন্তু পরিমাণগত ভাবে পার্থক্য আছে এক বচনের নিত্য এবং বহুবচনের নিত্যের মধ্যে পার্থক্য কি ? বহুবচনের নিত্য হচ্ছে অনুগত, একবচনের নিত্যের নিত্যদাস ঠিক যেমন তুমি যদি কারও সেবা করতে চাও, তাহলে সেই মনিবও ঠিক তোমার মতোই তাঁর দুটি হাত আছে, দুটি পা আছে, এবং একই রকম বিভিন্ন অনুভব আছে তিনিও খান। সবকিছুই এক। কিন্তু পার্থক্য হচ্ছে একজন মনিব ও আরেকজন দাস। ব্যাস্। অন্যথায়, বাকি সবকিছুতে একই
তাই পারমার্থিক ভাবে প্রকট ও অপ্রকট- এর মধ্যে কোন পার্থক্য নেই যেমন জাগতিক দৃষ্টিকোণ থেকে, যদি কোন ব্যক্তি জন্মগ্রহণ করে... ধর, তোমার একটি পুত্র হয়েছে আর তুমি খুব খুশি সেই একই ছেলে যখন মারা যায়, তুমি খুব দুঃখ পাও। এটি জাগতিক আর পারমার্থিকভাবে কোন প্রকট এবং অপ্রকট এর মধ্যে এমন পার্থক্য নেই তাই যদিও আজকে শ্রীল ভক্তিসিদ্ধান্ত সরস্বতী ঠাকুরের তিরোভাব তিথি তাই শোক করার কিছুই নেই যদিও আমরা বিরহ অনুভব করি, সেই অনুভূতিটা আছে কিন্তু পারমার্থিক দৃষ্টিকণ থেকে বাস্তব অর্থে প্রকট ও অপ্রকটের মধ্যে সেইরকম কোন পার্থক্য নেই নরোত্তম দাস ঠাকুরের একটি ভজন রয়েছে, যে আনিল প্রেমধন তোমাদের মধ্যে কেউ জানো? কেউ গাইতে পারবে? ওহ্। যে আনিল প্রেমধন করুণা প্রচুর, হেন প্রভু কোথা গেল আমার পুরো ভজনটা মনে নেই। সেটি হচ্ছে আমাদের শোক... শ্রীল ভক্তিসিদ্ধান্ত সরস্বতী ঠাকুর এই বার্তা সারা জগতে ছড়িয়ে দিতে নিয়ে এসেছেন... অবশ্যই শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু এই ইচ্ছা পোষণ করেছিলেন যে,
- পৃথিবীতে আছে যত নগরাদি গ্রাম,
- সর্বত্র প্রচার হইবে মোর নাম।
তিনি ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন যে, "সারা বিশ্বে যত নগর আর গ্রাম আছে, সব জায়গাতে আমার নাম প্রচার হবে"। শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর নাম যা এখন প্রচেষ্টা করা হচ্ছে... শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর সেই ইচ্ছাকে। তিনি স্বয়ং বলেছিলেন
- ভারত ভূমিতে মনুষ্য জন্ম হইল যার,
- জন্ম সার্থক করি কর পরোপকার
তিনি চেয়েছিলেন যেন তাঁর নাম সারা বিশ্বজুড়ে সব নগরে আর গ্রামে প্রচার হয় আর কে সেটা করবে? তিনি বললেন, যারই ভারতবর্ষে জন্ম হয়েছে ভারত, তাঁরই এটা করা কর্তব্যঃ শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর শিক্ষা বুঝে প্রথমে নিজের জীবন সার্থক করা তারপর তা প্রচার করা। বিতরণ করা। প্রতিটি ভারতবাসীর তা কর্তব্য।
ভারতে বৈদিক সভ্যতা গ্রহণ করার বিশেষ সুযোগ আছে অন্যান্য দেশে সেই সুযোগ নেই তাই কেউ যদি তাঁর জীবনকে সার্থক করতে চায় তাহলে তাঁকে ভারতের এই সুবিশাল পারমার্থিক জ্ঞানভাণ্ডারের সুযোগ নিতে হবে।