BN/Prabhupada 0937 - কাকেরা রাজহাঁসদের কাছে যায় না। রাজহংসরা কাকদের কাছে যায় না

Revision as of 07:04, 1 August 2021 by Vanibot (talk | contribs) (Vanibot #0005: NavigationArranger - update old navigation bars (prev/next) to reflect new neighboring items)
(diff) ← Older revision | Latest revision (diff) | Newer revision → (diff)


730425 - Lecture SB 01.08.33 - Los Angeles

তাই এমন কি প্রাণীদের মধ্যেও বিভেদ রয়েছে। রাজহংসদের স্তর, কাকেদের স্তর নয়। কাক রাজহংসদের কাছে যায় না। রাজহংস কাকদের কাছে যায় না। একইভাবে মনুষ্য সমাজেও, কাক শ্রেণীর মানুষ রয়েছে আবার রাজহংস শ্রেণীর মানুষও রয়েছে। কাক শ্রেণীর মানুষরা এখানে আসবে না কারণ এখানে সব কিছু সুন্দর, পরিষ্কার। ভালো দর্শন, ভালো খাওয়া, ভালো শিক্ষা, ভালো পোশাক, ভালো মন, সবকিছুই ভালো। কাক শ্রেণীর মানুষরা অমুক ক্লাব, তমুক ক্লাবে যাবে, এই পার্টি, সেই পার্টি, নগ্ন নৃত্য, আরও অনেক কিছু। তোমরা দেখেছ?

সুতরাং এই কৃষ্ণভাবনামৃত আন্দোলন হচ্ছে রাজহংস শ্রেণীর মানুষদের জন্য। কাক শ্রেণীর মানুষদের জন্য নয়। কিন্তু আমরা কাকদের রাজহাঁসে পরিবর্তিত করতে পারি। এটিই হচ্ছে আমাদের দর্শন। এক সময় যে কাক ছিল এখন সে রাজহাঁসের মতো সাঁতার কাটছে। এটা আমরা করতে পারি। এটিই হচ্ছে কৃষ্ণভাবনামৃতের সুফল। যখন রাজহাঁস কাকে পরিণত হয়, সেটি হচ্ছে জড় জগত তাই শ্রীকৃষ্ণ বলেছেনঃ যদা যদা হি ধর্মস্য গ্লানির্ভবতি ভারত (ভগবদ্গীতা ৪।৭) চিন্ময় আত্মা জড় দেহের মধ্যে আবদ্ধ হয়ে পড়েছে এবং সে তার ইন্দ্রিয় সমূহের সুখ বিধানের চেষ্টা করছে, একটির পর একটি দেহ, একটির পর আরেকটি, একটির পর আরেকটি দেহ। এই হচ্ছে অবস্থা। আর ধর্ম মানে কাককে ধীরে ধীরে রাজহাঁসে পরিণত করা। এই হচ্ছে ধর্ম।

ঠিক যেমন একজন ব্যাক্তি হতে পারে, হতে পারে খুব অশিক্ষিত, অসভ্য, কিন্তু তাকে শিক্ষিত আর সভ্য মানুষে পরিবর্তিত করা যেতে পারে। শিক্ষা আর প্রশিক্ষনের মাধ্যমে। মনুষ্য শরীরে এই সম্ভাবনাটা রয়েছে। আমি একটি কুকুরকে ভক্ত হওয়ার জন্য প্রশিক্ষন দিতে পারিনা। এটি কঠিন। এটিও করা যেতে পারে , কিন্তু আমি এতো শক্তিশালী নই। শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু যেমনটি করেছিলেন। যখন তিনি ঝারিখন্ডের জঙ্গলের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিলেন, বাঘ, সাপ, হরিণ, সমস্ত প্রাণীরা ভক্ত হয়ে গিয়েছিল, তাঁরা বৈষ্ণব হয়ে গিয়েছিল। তো আমার পক্ষে কি করা সম্ভব, ওহ্‌, শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু... কারণ তিনি ছিলেন স্বয়ং ভগবান। তিনি যে কোন কিছু করতে পারেন। তিনি এটি করতে পারেন। কিন্তু আমরা মানব সমাজে কাজ করতে পারি। একটি মানুষ কতোটা অধঃপতিত সেটি কোন ব্যাপার নয়। যদি সে আমাদের নির্দেশ গুলো অনুসরণ করে, তবে সে পরিবর্তিত হতে পারে।

এটিকে বলে ধর্ম। ধর্ম মানে কাউকে তার প্রকৃত অবস্থায় ফিরিয়ে আনা। এটি হচ্ছে ধর্ম। এখানে বিভিন্ন মাত্রা থাকতে পারে। কিন্তু প্রকৃত অবস্থান হচ্ছে যে আমরা হচ্ছি ভগবানের অবিচ্ছেদ্য অংশ, আর যখন আমরা বুঝতে পারব যে আমরা হচ্ছি ভগবানের অবিচ্ছেদ্য অংশ, এটি আমাদের জীবনের প্রকৃত অবস্থান। এটিকে বলে ব্রহ্মভূত স্তর (শ্রীমদ্ভাগবত ৪.৩০.২০)। তিনি ব্রহ্ম উপলব্ধ এবং ব্রহ্মকে জানেন। সুতরাং শ্রীকৃষ্ণ আসেন... এই বর্ণনা...

ঠিক যেমন কুন্তিদেবী বলেছেন যেঃ অপরে বসুদেবস্য দেবক্যাং যাচিতোহভ্যগাৎ (শ্রীমদ্ভাগবত ১.৮.৩৩)। দেবকী এবং বসুদেব পরম পুরুষোত্তম ভগবানের কাছে প্রার্থনা করেছিলেন যেঃ "আমরা তোমার মতো একটি পুত্র চাই। এটিই আমাদের বাসনা।" যদিও তাঁরা ছিলেন বিবাহিত, কিন্তু তাঁরা কোন সন্তান উৎপাদন করেন নি। তাঁরা তপস্যায় নিয়োজিত হয়েছিলেন, কঠোর তপস্যা। তখন শ্রীকৃষ্ণ তাঁদের সামনে আসলেনঃ "তোমরা কি চাও?" "আমরা তোমার মতোন একটি পুত্র চাই।" তাই এখানে এটি বলা হয়েছেঃ বসুদেবস্য দেবক্যাং যাচিতোঃ। যাচিতঃ। "প্রভু , আমরা তোমার মতন পুত্র চাই।" তাহলে এখন আরেকজন ভগবানের সম্ভাবনা কোথায়? শ্রীকৃষ্ণই হচ্ছেন ভগবান। দুই জন ভগবান হতে পারে না। তাহলে আরেকজন ভগবান কি করে হতে পারেন, যিনি দেবকী এবং বসুদেবের পুত্র রূপে জন্মগ্রহণ করবেন? অতএব ভগবান সম্মত হলেন যেঃ আরেকজন ভগবান খুঁজে পাওয়া সম্ভব নয়। তাহলে আমিই তোমাদের পুত্র হবো।"

তাই মানুষ বলে যে, যেহেতু বসুদেব এবং দেবকী শ্রীকৃষ্ণকে পুত্র রূপে চেয়েছিলেন, তাই তিনি আবির্ভূত হয়েছিলেন। কেচিৎ। কেউ কেউ বলেন। বসুদেবস্য দেবক্যাং যাচিতঃ। প্রার্থিত হয়ে, যাচিত হয়ে, অভ্যগাৎ, তিনি আবির্ভূত হয়েছিলেন। অজস্ত্বমস্য ক্ষেমায় বধায় চ সুরদ্বিষাম্‌। অন্যরাও একই কথা বলেন, যেমনটি আমি ব্যাখ্যা করছিলাম। পরত্রাণায় সাধূনাং বিনাশায় চ দুষ্কৃতাম্‌ (ভগবদ্গীতা ৪.৮)। প্রকৃতপক্ষে শ্রীকৃষ্ণ আসেন তাঁর ভক্তদের আনন্দ বিধানের জন্য। ঠিক যেমন তাঁর ভক্ত দেবকী এবং বসুদেবকে সান্ত্বনা দেয়ার জন্য, তাঁদের আনন্দ বিধানের জন্য তিনি আবির্ভূত হয়েছিলেন। কিন্তু যখন তিনি আসেন, তাঁর আর অন্য কোন উদ্দেশ্য থাকে না। সেটি কি? বধায় চ সুরদ্বিষম্‌। বধায় মানে হত্যা। সুরদ্বিষম্‌।