BN/Prabhupada 0952 - ভগবৎ চেতনার লক্ষণ হচ্ছে সে এই জড় জগতের প্রতি অনীহ হয়ে যাবে

Revision as of 07:17, 10 June 2021 by Vanibot (talk | contribs) (Vanibot #0005: NavigationArranger - update old navigation bars (prev/next) to reflect new neighboring items)
(diff) ← Older revision | Latest revision (diff) | Newer revision → (diff)


740700 - Garden Conversation - New Vrindaban, USA

কৃষ্ণভাবনামৃতের লক্ষণ হচ্ছে সমস্ত জাগতিক কর্মের প্রতি বিরক্তি।

অতিথিঃ আমার মনে হয় না এখন আর আপনার শিষ্যদের আদালতের আসামী হওয়ার বিষয়ে কিছু চিন্তা করতে হবে, তাই না? আমাদের সেই বিষয়ে চিন্তা করতে হবে না। এখানে আপনার নিষ্ঠাবান অনুগামী আছে।

প্রভুপাদঃ হ্যাঁ।

অতিথিঃ এই সম্প্রদায়টি বেশ ভাল।

প্রভুপাদঃ হ্যাঁ।

অতিথিঃ ভাল মানুষ। (বিরতি)

প্রভুপাদঃ একজন ম্যাজিস্ট্রেট অথবা উকিল ইতিমধ্যেই স্নাতক। যদি তিনি একজন উকিল হন তাহলে বুঝতে হবে যে তিনি স্নাতক পরীক্ষা পাস করেছেন। একইভাবে যদি কেও বৈষ্ণব হয় তাহলে বুঝতে হবে যে তিনি ইতিমধ্যেই একজন ব্রাহ্মণ-এর স্তর প্রাপ্ত। বুঝলে? কেন আমরা তোমাদের যজ্ঞোপবীত দেই? তার মানে, একটি ব্রাহ্মণোচিত মান রয়েছে। যদি কেউ ব্রাহ্মণ না হতে পারে তাহলে সে বৈষ্ণব হতে পারবে না। ঠিক যেমন যদি কেউ স্নাতক না হয়, তাহলে সে উকিল হতে পারবে না। তাই একজন উকিল মানে সে ইতিমধ্যে একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্নাতক। তেমনই একজন বৈষ্ণব মানে তিনি একজন ব্রাহ্মণ।

ভক্তঃ তাহলে বৈষ্ণবরা, তারা সব, তাদের রজ ও তম গুনের দ্বারা কলুষিত হওয়া উচিৎ নয়। তাদের উচিৎ এমন স্তরে থাকা...

প্রভুপাদঃ হ্যাঁ, বৈষ্ণব মানে, ভক্তি মানে, ভক্তি পরেশানুভবো বিরক্তিঃ অন্যত্র স্যাৎ (ভাগবত ১১.২.৪২)। ভক্তি মানে ভগবৎ চেতনার উপলব্ধি। এবং ভগবৎ চেতনার লক্ষণ হচ্ছে সমস্ত জাগতিক কার্যকর্মের প্রতি বিরক্তি। তার কোন স্বার্থ নেই।

ভক্তঃ তাহলে ব্রাহ্মণদের কিছু হওয়াতে কোন আগ্রহ নেই, ক্ষমা করবেন, বৈষ্ণবদের কিছু হওয়াতে কোন আগ্রহ নেই একজন ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য অথবা শুদ্র, কিন্তু সে নির্দিষ্ট কিছু পেশা গ্রহণ করে...

প্রভুপাদঃ তিনি আসলে সর্বোচ্চ স্থানে রয়েছেন। তার কোন স্বার্থ নেই। কিন্তু যতদিন অবধি তিনি নিখুঁত না হচ্ছেন, তার স্বার্থ থাকে। তাই সেই স্বার্থটি সংশোধন করা উচিত অথবা বলা যেতে পারে, ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয় গুণের ভিত্তিতে সামঞ্জস্য করা উচিত। (বিরতি)

কারণ, সেই সময়, মানুষ এতটাই নষ্ট ছিল যে, তারা ভগবান যে কে তা বুঝতে পারত না। তাই তিনি এটি তুলে ধরলেন, " প্রথমত তারা সকলে পাপমুক্ত হোক। তারপর একদিন আসবে , যখন সে ভগবান কে বুঝতে পারবে। ভগবান যীশুখ্রিষ্ট বলেছিলেন, " হত্যা কোর না"। সেই সময় লোকেরা হত্যাকারী ছিল। নয়তো তিনি একথা কেন বলবেনঃ " তাদের হত্যা করা উচিত নয়"। এই আদেশটি প্রথমে করা হল কেন? কারণ হত্যাকারী ভর্তি ছিল। খুব একটা ভাল সমাজ ছিল না। যদি কোন সমাজে সব সময় হত্যা হয়, সেটা কি কোন ভাল সমাজ ? তাই তিনি প্রথমে বললেন হত্যা করা বন্ধ করতে, প্রথমে তারা পাপমুক্ত হোক, তারপর তারা ভগবান কে জানতে পারবে। এখানে ভগবদগীতা তে নিশ্চিত করে বলা আছেঃ যেষাম্‌ ত্বন্তগতং পাপং (ভগবদ্গীতা ৭.২৮)। যে ব্যক্তি সমস্ত পাপ থেকে মুক্ত হয়ে গেছে। তাই কৃষ্ণভাবনামৃত হচ্ছে এমন ব্যক্তির জন্য, যে সমস্ত পাপ থেকে মুক্ত। তুমি একই সাথে কৃষ্ণভাবনাময় আর পাপী হতে পার না। তা হবে প্রতারণা। একজন কৃষ্ণভাবনাময় ব্যক্তি মানে তাঁর কোনও পাপ নেই। তিনি পাপকার্যের আওতায় থাকতে পারেন না। সেটাই হচ্ছে কৃষ্ণভাবনামৃত। তুমি একইসাথে কৃষ্ণভাবনাময় এবং পাপী হতে পার না। সেটা সম্ভব নয়। তাই প্রত্যেকেই এটি বুঝতে পারে যে সে কৃষ্ণভাবনাময় আছে কিনা নিজের কার্যকলাপ বিচার করার মাধ্যমে। বাহ্যিক কোন প্রশংসার প্রয়োজন নেই। আমি কি এই নীতিগুলোতে দৃঢ় আছি কিনাঃ অবৈধ সঙ্গ বর্জন, মাংসাহার বর্জন, দ্যূতক্রীড়া বর্জন, নেশা জাতীয় দ্রব্য বর্জন... যদি কেউ ঐকান্তিক হয় তাহলে সে নিজেকে বিচার করতে পারবে যে আসলে সে কোথায় আছে। ঠিক যেমন তুমি যদি ক্ষুধার্ত হও, তখন তুমি যদি কিছু খাও তাহলে তুমি শক্তি পাবে, সন্তুষ্টি পাবে। বাহ্যিক কোন প্রশংসার প্রয়োজন নেই। ঠিক তেমনই, কৃষ্ণভাবনামৃতের অর্থ হল তুমি সমস্ত অপরাধমূলক কার্যকলাপ থেকে মুক্ত হয়েছ কিনা। তখন তুমি হতে পারবে। একজন ভগবদ্ভাবনাময় ব্যক্তির কখনও পাপকর্মের প্রবণতা থাকতে পারে না।