BN/Prabhupada 0954 - যখন আমরা এইসব নিম্নতর গুণাবলী থেকে মুক্ত হব তখন আমরা সুখী হতে পারব

Revision as of 07:17, 10 June 2021 by Vanibot (talk | contribs) (Vanibot #0005: NavigationArranger - update old navigation bars (prev/next) to reflect new neighboring items)
(diff) ← Older revision | Latest revision (diff) | Newer revision → (diff)


750623 - Conversation - Los Angeles

বহুলাশ্বঃ শ্রীল প্রভুপাদ, আমাদের জড়জাগতিক কলুষিত অবস্থায়, যখন আমরা বোকা অথবা পাগলের মতো আচরন করি,তখন আমরা তাকে তমস বা তামসিক বলি। কিন্তু চিন্ময় জগতে জীবাত্মা যখন শুদ্ধসত্ত্বের স্তরে থাকে, কি আচরণ... তখনও কি তাকে মায়ার দ্বারা প্রভাবিত করার জন্য তাঁর ওপর কিছু কাজ করে?

প্রভুপাদঃ হ্যাঁ। ঠিক যেমন জয়- বিজয়।তারা অপরাধ করেছিল। তারা চতুষ্কুমার কে ঢুকতে দেয় নি। সেটা তাদের দোষ ছিল। এবং সেই কুমারগণ অত্যন্ত দুঃখিত হয়েছিল। তখন তারা তাকে অভিশাপ দিল যে " তোমরা এই স্থানে থাকার যোগ্য নও" তো আমরা মাঝে মাঝে ভুল করি। সেটাও স্বাধীনতার অপব্যবহার। অথবা আমাদের মাঝে পতনের সম্ভাবনা আছে কারণ আমরা ক্ষুদ্র। ঠিক যেমন আগুনের ছোট্ট স্ফুলিঙ্গ, যদিও এটি আগুন, এটির নিভে যাওয়ার প্রবণতা আছে। বড় আগুন নিভে যায় না। তাই কৃষ্ণ হচ্ছেন বড় আগুন এবং আমরা তাঁর অবিচ্ছেদ্য অংশ, স্ফুলিঙ্গ, অত্যন্ত ক্ষুদ্র। এই আগুন থেকে স্ফুলিঙ্গ বের হয়, " ফাট ফাট!"এরকম অনেক গুলো বের হয়। তবে স্ফুলিঙ্গগুলি যদি নিচে পড়ে যায় তবে তা নিভে যায়। এটাও এই রকম। পতনের অর্থ, জড়জগতে, তিনটি পৃথক স্তর রয়েছে: তম গুণ, রজ গুণ এবং সত্ত্ব গুণ। যদি ...ঠিক যেমন স্ফুলিঙ্গটি পড়ে যায়। যদি এটি কোন শুকনো ঘাসের মধ্যে পড়ে, ঘাসটি দাউ দাউ করে জ্বলে উঠবে। সুতরাং দাহিকা শক্তিটি এখনও রয়েছে যদিও এটি নিচে পড়ে গেছে। শুকনো ঘাসের আবহাওয়ায়, এটি আবার আগুন তৈরি করে, এবং দাহিকা শক্তি বজায় থাকে। সেটি হল সত্ত্ব গুণ। এবং যদি এটি সবুজ ঘাস এ পড়ে, তখন এটি নিভে যায়। এবং শুকনো ঘাস, যদি সবুজ ঘাস শুকিয়ে যায়, আবার জ্বলতে পাওয়ার সম্ভাবনা আছে। কিন্তু যদি স্ফুলিঙ্গটি জলে পড়ে যায়, তাহলে এটি খুব কঠিন হয়ে যাবে। তেমনি, আত্মা, যখন জড় জগতে পতিত হয়,সেখানে তিনটি গুণ রয়েছে। তাই যদি তিনি তম গুণের সংস্পর্শে থাকেন তবে তিনি সবচেয়ে জঘন্য অবস্থায় আছেন। যদি এটি রজ গুণের সংস্পর্শে থাকে তবে কিছু কাজ করে ঠিক যেমন তারা কাজ করছে। এবং যদি সে সত্ত্ব গুণের সংস্পর্শে আসে, তখন সে অন্ততপক্ষে নিজেকে এই জ্ঞানে রাখে যে " আমি আগুন। আমি এই জড় জগতের অন্তর্ভুক্ত নই।"

তাই আমাদেরকে আবার তাদেরকে সত্ত্ব গুণে ফিরিয়ে আনতে হবে, ব্রাহ্মনচিত গুণাবলী,, যেন সে বুঝতে পারে অহম্‌ ব্রহ্মস্মি, " আমি চিন্ময় আত্মা। আমি এই জড়দেহ নই।" তখন তাঁর পারমার্থিক কার্যকলাপ শুরু হয়। তার মানে আমরা তাকে সত্ত্ব গুণের স্তরে নিয়ে আসার চেষ্টা করছি। রজ এবং তম গুণের কার্যকলাপ পরিত্যাগ করার জন্য। মাংসাহার বর্জন, অবৈধ সঙ্গ বর্জন, নেশা জাতীয় দ্রব্য বর্জন, দ্যূতক্রীড়া বর্জন। বহু ধরণের নিষেধ- ত্রিগুনের প্রভাব থেকে মুক্ত রাখতে। তিনি যদি সত্ত্ব গুণে থাকেন, তখন তিনি যে স্তরে থাকেন... যখন তিনি সত্ত্ব গুণে থাকেন, তখন রজ-তম, অন্যান্য মৌলিক গুণাবলী তাকে বিরক্ত করতে পারে না। মৌলিক গুণ, মৌলিক গুণের স্তর হল এগুলঃ অবৈধ সঙ্গ, মাংসাহার, নেশা, দ্যূতক্রীড়া। তদা রজস্তমোভাবাঃ কামলোভাদয়শ্চ যে (ভাগবত ১/২/১৯) যখন কেও অন্তত এই দুটি মৌলিক গুণ থেকে মুক্ত থাকে... মৌলিক গুণগুলো হল কাম, কাম বাসনা এবন লোভ। জড় জগতে,তারা সাধারনত এই মৌলিক গুণাবলীর মধ্যে থাকে, অর্থাৎ সবসময় কাম বাসনার দ্বারা পরিপূর্ণ থাকে এবং কখনই সন্তুষ্ট নয়, লোভী। তাই যখন আমরা এই মৌলিক গুণাবলী জয় করে নেই, তখন আমরা সুখী হই। তদা রজস্তমোভাবাঃ কামলোভাদয়শ্চ যে চেত এতৈরনাবিদ্ধং...(ভাগবত ১/২/১৯) যখন আমাদের চেতনা এই মৌলিক গুণাবলীর দ্বারা প্রভাবিত হয় না, চেত এতৈরনা... স্থিতং সত্বে প্রসীদতি। সত্ত্ব গুণে অধিষ্ঠিত থেকে, সে আনন্দ অনুভব করে। সেটিই হল ভক্তি জীবনের সূচনা। কখন...যতদিন পর্যন্ত কাম বাসনা ও লোভের দ্বারা মন বিক্ষিপ্ত থাকে, ততদিন পর্যন্ত ভক্তি জীবনের কোন প্রশ্নই ওঠে না। সুতরাং, প্রথম কাজটি হল কিভাবে মন কে নিয়ন্ত্রণ করা যায়, যেন সে প্রভাবিত না হতে পারে মৌলিক গুণাবলী, কাম বাসনা এবং লোভের দ্বারা। আমরা প্যারিস এ একজন বয়স্ক ভদ্রলোক কে দেখেছিলাম, ৭৫ বছর বয়স, সে নাইট ক্লাবে যাচ্ছে, কারণ তার কাম বাসনা আছে। সে ৫০ ডলার ব্যয় করে নাইট ক্লাবে প্রবেশ করার জন্য, এবং তারপর সে আরো ব্যয় করে অন্যান্য জিনিসের জন্য। তাই যদিও তার বয়স এখন ৭৫ বছর তবুও তার মাঝে কাম বাসনা এখনো রয়েছে।