BN/Prabhupada 1021 - অধঃপতিত বদ্ধ জীবাত্মাদের সমব্যথী যদি কেউ থেকে থাকেন, তাহলে তিনি হচ্ছেন এই বৈষ্ণব

Revision as of 07:04, 28 September 2021 by Vanibot (talk | contribs) (Vanibot #0005: NavigationArranger - update old navigation bars (prev/next) to reflect new neighboring items)
(diff) ← Older revision | Latest revision (diff) | Newer revision → (diff)


730408 - Lecture SB 01.14.44 - New York

অধঃপতিত বদ্ধ জীবাত্মাদের সমব্যথী যদি কেউ থেকে থাকেন, তাহলে তিনি হচ্ছেন এই বৈষ্ণব। সুতরাং সমস্ত জীবেরা, এই জড় জগতে পতিত হওয়ার কারণে, তারা খুব কষ্ট পাচ্ছে। তো এই ক্ষেত্রে বৈষ্ণবরা করুনাময়। প্রকৃতপক্ষে অধঃপতিত বদ্ধ জীবাত্মাদের সমব্যথী যদি কেউ থেকে থাকেন, তাহলে তিনি হচ্ছেন এই বৈষ্ণব। তিনি জানেন কিভাবে এবংকেন তারা কষ্ট পাচ্ছে। তাই তিনি তাদেরকে সেই সংবাদ দিতে চানঃ "হে প্রিয় বন্ধু, তুমি কষ্ট পাচ্ছো শুধুমাত্র তোমার প্রকৃত প্রেমিক শ্রীকৃষ্ণকে ভুলে যাওয়ার জন্য।" "তাই তুমি কষ্ট পাচ্ছো।" এটিই হচ্ছে বার্তা, বৈষ্ণবের বার্তা। এই বার্তার কারণে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ স্বয়ং আসেন। তিনিও বলেছেন,

সর্বধর্মান্‌ পরিত্যজ্য
মামেকং শরণং
(ভগবদ্গীতা যথাযথ ১৮.৬৬)।

তোমার ভালোবাসাকে বিভিন্ন জায়গায় বিভক্ত করে দেয়া হয়েছে, কিন্তু তবুও তুমি সুখী নও, কারণ... যদি তুমি শ্রীকৃষ্ণকে ভালো না বাস, তাহলে তথাকথিত ভালোবাসার নামে তুমি যাই কর না কেন, তুমি শুধু পাপপূর্ণ জীবনই অতিবাহিত করবে, অবাধ্য। উদাহরণ স্বরূপ, যদি তুমি রাষ্ট্রের আইন অমান্য কর, এর অর্থ তোমার সমস্ত কর্মই পাপময়। তুমি এটিকে রঙ লাগিয়ে বলতে পার, "ওহ্‌, এটি খুব ভালো," কিন্তু আসলে তা নয়। প্রকৃতি, যেহেতু তুমি শ্রীকৃষ্ণের দাস, জীবের স্বরূপ হয় নিত্য কৃষ্ণ দাস (চৈচ মধ্য ২০.১০৮)। তোমার নিত্য অবস্থান হচ্ছে শ্রীকৃষ্ণের সেবা করা। সুতরাং এই জ্ঞান ছাড়া, তুমি অন্য কাউকে যে কোন ধরণের সেবাই তুমি করতে যাও না কেন, সেটাই পাপময়। এই ক্ষেত্রেও একই উদাহরণ। যদি তুমি রাষ্ট্রের আইন অমান্য কর, আর একজন বিশ্বপ্রেমিকও হও...

আমি ভারতবর্ষে দেখেছি। যখন সেখানে স্বাধীনতা আন্দোলন চলছিল- ঠিক আছে শুধু ভারতেই নয়, প্রত্যেকটি দেশেই যখন সেখানে স্বাধীনতা আন্দোলন চলে, অনেক লোককে ফাঁসি দেয়া হয়, হত্যার আদেশ দেয়া হয়। কিন্তু তুমি একজন মহান দেশপ্রেমিক। কিন্তু দেশের প্রতি তার তীব্র ভালোবাসার কারণে, তাকে ফাঁসিতে ঝুলানো হয়েছে, কারণ আইন... সে সরকারের আইন অমান্য করেছে। শুধু বোঝার চেষ্টা কর। একইভাবে, যদি আমরা পরম সরকারের আইন অমান্য করি, যাকে বলে ধর্ম। ধর্ম মানে পরম বা সর্বোচ্চ সরকারের আইন। ধর্মং তু সাক্ষাদ ভগবৎ প্রণীতম (শ্রীমদ্ভাগবত ৬.৩.১৯)। ধর্ম মানে... আর এই ধর্ম কি? শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন, এটি খুব সহজ জিনিস, সর্বধর্মান্‌ পরিত্যজ্য মামেকং। প্রকৃত ধর্ম হচ্ছে শ্রীকৃষ্ণ বা ভগবানের নিকট আত্মসমর্পণ করা। এটিই আসল ধর্ম। এই মূল বিষয়টি ছাড়া, আর সব ধর্ম, তারা শুধু প্রতারণা করছে মাত্র। ধর্মঃ প্রোজ্‌ঝিতকৈতবোহত্র (শ্রীমদ্ভাগবত ১.১.২), শ্রীমদ্ভাগবতের শুরুতে এটা বলা হয়েছে। প্রতারণার ধর্ম। যদি ভগবানের প্রতি কোন ভালোবাসা না থাকে, তাহলে এটি নয়... শুধু কিছু আচার অনুষ্ঠান মাত্র। এটি ধর্ম নয়। ঠিক যেমন হিন্দুরা ধর্মীয় আচার হিসেবে মন্দিরে যায়, মুসলমানরা মসজিদে যায়, খ্রিস্টানরা গির্জায় যায়। কিন্তু ভগবানের জন্য তাদের কোন ভালোবাসা নেই; শুধুই দায়বদ্ধ নিয়ম। কারণ তারা নিজেদেরকে কোন একটা ধর্মীয় চিহ্নের ছাপ মেরে নিয়েছেঃ "আমি হিন্দু ধর্মের," "আমি খ্রিষ্টান ধর্মের।" এটি হচ্ছে শুধু যুদ্ধ করার জন্য, এই যা, কারণ এখানে কোন ভালোবাসা নেই। কারণ তুমি যদি ধার্মিক হও, এটি এই বোঝায় যে তুমি অবশ্যই ভগবৎ চেতনাময়। কাজেই তুমি যদি ভগবৎ চেতনাময় হও, আমি যদি ভগবৎ চেতনাময় হই, তাহলে যুদ্ধের কারণটা কোথায়? আর এই বিষয়টিই হারিয়ে গিয়েছে; তাই এই ধরণের ধর্ম হচ্ছে কৈতব বা প্রতারণার ধর্ম, কারণ সেখানে কোন ভালোবাসা নেই।