BN/Prabhupada 1056 - কৃষ্ণভাবনামৃত আন্দোলন একটি চিন্ময় স্তরে অবস্থিত। এটি দেহ, মন ও বুদ্ধির স্তরের ঊর্ধে

Revision as of 07:03, 25 June 2021 by Vanibot (talk | contribs) (Vanibot #0005: NavigationArranger - update old navigation bars (prev/next) to reflect new neighboring items)
(diff) ← Older revision | Latest revision (diff) | Newer revision → (diff)


750522 - Conversation B - Melbourne

প্রভুপাদঃ ভারতে এখনও যদি কারও সুন্দর একটা বাগান থাকে আর কেউ গিয়ে বলে, "মহাশয়, আমি আপনার বাগান থেকে কিছু ফুল নিয়ে ভগবানের সেবা করতে চাই" "হ্যাঁ, হ্যাঁ, নিতে পারেন। তাঁরা খুবই খুশি হন।

রেমন্ড লোপেজঃ এই লোকটির জীবিকা এই ফুলগুলির ওপরই নির্ভরশীল এবং আমি... আমার মনে হয়, দুর্ভাগ্যজনকভাবে ওনার আয়ত্ত্বের এইগুলি ওনার কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ

ওয়েলি স্ট্রোবস্‌ঃ এটা একটা মজার গল্প। এর সাথে মজার ঘটনাও আছে, সেই ফুলগুলি দুজন লোকের থেকে আনা যারা নার্সারী চালায় আর আমাদেরকে শেষে পর্যন্ত যাওয়ার জন্য একটা আপিল করতে হয়েছিল। কিন্তু আপিল আসার আগে তাদের বিশেষ গাছগুলির জন্য, বাইরে যেগুলো আছে, সেগুলির জন্য ছেলেদের কাঁচের ঘর দরকার ছিল

শ্রুতকীর্তিঃ তুলসী।

ওয়েলি স্ট্রোবস্‌ঃ আর ওরা গ্লাসহাউস সম্পর্কে কিছুই জানতো না ওরা গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছিল আর বলল, "চল গ্লাসহাউসের খোঁজ নিয়ে দেখা যাক্‌ ওহ্‌ ওখানে একটা ভাল নার্সারি আছে। (হাসি) গাড়ি চালিয়ে ওরা এলো। ভক্তরা বেরিয়ে এলো এবং সে বলল, "ক্ষমা করবেন, আমাদের গ্লাসহাউসের দরকার'। তিনি বললেন, "দয়া করে আপনি আমার নার্সারি থেকে যাবেন কি?" সেই একই নার্সারি। (হাসি) ঐ এলাকায় প্রায় দুশ নার্সারি ছিল। সে ঐ একটাই বেছে নিল।

প্রভুপাদঃ কিন্তু লোকগুলো যদি ভগবৎ ভাবনাময় হতো, তাহলে তাদের হয়তো ক্ষমা করত "ওহ্‌ এরা ভগবানের সেবার জন্য এসেছে, ঠিক আছে, নিতে পার"। তাই সবার প্রথমে কাজ হচ্ছে লোকদের ভগবৎভাবনাময় করা। তাহলে সবকিছুই ঠিক আছে। যস্যাস্তি ভক্তিঃ ... ভাগবতে একটি শ্লোক আছেঃ

যস্যাস্তি ভক্তিঃ ভগবতি অকিঞ্চনা
সর্বৈঃ গুণৈস্তত্র সমাসতে সুরাঃ
হরাবভক্তস্য কুতোমহদ্‌গুণা
মনোরথেনাসতি ধাবতো বহিঃ
(ভাগবত ৫/১৮/১২)

এর অর্থ হচ্ছে যে, "কোন ব্যক্তি যদি কৃষ্ণভাবনাময় হয়, ভক্ত হয়, তাহলে তাঁর মধ্যে সব সদ্‌গুণাবলী থাকবে" আমরা যা কিছুই ভাল গুণাবলী বলে মনে করি, তার মধ্যে সবকিছুই আছে। তেমনই যে ব্যক্তি ভক্ত নয়, তার মধ্যে কোন সদ্‌গুণই থাকতে পারে না কারণ সে কেবল মানসিক জল্পনা কল্পনার স্তরেই থাকবে। বিভিন্ন স্তর আছে। দেহাত্মবুদ্ধি "আমি এই দেহ তাই আমার কাজ হচ্ছে ইন্দ্রিয় তৃপ্তি সাধন করা।" এটা হচ্ছে দেহাত্মবুদ্ধি আর কেউ ভাবছে, "আমি দেহ নই, আমি মন।" তাই তাঁরা মানসিক জল্পনা-কল্পনার স্তরে আছে। দার্শনিক, চিন্তাশীল ব্যক্তি। আর তার ওপর আছে বুদ্ধিমান শ্রেণীর লোক, যোগ অনুশীলনকারী। আর পারমার্থিক স্তর তারও ওপরে। প্রথমে, দেহগত, মনোগত, তারপর বুদ্ধিগত এবং তারও ঊর্ধ্বে হচ্ছে চিন্ময় স্তর।

এই কৃষ্ণভাবনামৃত আন্দোলন হচ্ছে চিন্ময় স্তরের। দেহ, মন ও বুদ্ধির স্তরের ঊর্ধ্বে। কিন্তু আমাদের সেই স্তরে আসতে হবে কারণ আমরা চিন্ময় আত্মা আমরা এই দেহ নই, মন নই, বুদ্ধিও নই। আমরা চিন্ময় আত্মা। তাই যে ব্যক্তি চিন্ময় চেতনার স্তরে উন্নীত হয়েছেন , তিনি সবকিছুই পেয়েছেন বুদ্ধি, মনের যথাযথ ব্যবহার, দেহের যথাযথ ব্যবহার। ঠিক যেমন একজন কোটিপতির কাছে সবকিছুই আছে। দশ টাকা, একশ টাকা, একশ পাউন্ড। সবই আছে। ঠিক তেমনই আমরা যদি লোকদের কৃষ্ণভাবনামৃতের স্তরে আনতে পারি, তাহলে সে সবকিছুই সাম্লাতে পারবে - কীভাবে দেহের যত্ন নিতে হয়, মনের উপযোগ করতে হয়, বুদ্ধির উপযোগ, সবকিছুই কিন্তু সবাই ভগবৎভাবনার স্তরে আসবে, তা সম্ভব নয় সেটি সম্ভব নয়। কারণ বিভিন্ন ধরণের স্তর আছে কিন্তু কমপক্ষে সমাজে অন্তত একটা শ্রেণীর লোক থাকা উচিৎ যারা ভগবৎ চেতনাময় হবে। ঠিক যেমন আমাদের ব্যবহারিক জীবনের জন্য আমাদের উকিল লাগে, প্রকৌশলীর দরকার পড়ে, ডাক্তারের দরকার পড়ে, অনেক কিছুই লাগে ঠিক তেমনই সমাজে এমন একশ্রেণীর মানুষ দরকার যারা সম্পূর্ণভাবে ভগবৎ ভাবনাময় এবং আদর্শ সেটির দরকার আছে